বাবার সাথে নদীতে মাছ ধরার স্মৃতিময় গল্প//পর্ব-১//

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম/আদাব🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


আমাদের প্রত্যেকের জীবনের ছোট বেলার দিন গুলো খুবই আনন্দের ছিল। সত্যি ছোটবেলার দিনগুলো মনে করলেই মনে ভিতরে শান্তি লাগে।কত স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে সেই ছোটোবেলার দিনগুলোতে। কোন চিন্তা ভাবনা ছিল না, শুধু আনন্দ-হাসি ছিলো। বন্ধুদের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো এবং বাবার সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো খুবই আনন্দের ছিল। আসলে ছোটবেলার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে আমার জীবনে।আজকে সেখান থেকে বাবার সাথে কাটানো একটি স্মৃতিময় গল্প শেয়ার করতে আসলাম। আসলে ছোটবেলা যখন বর্ষাকাল হতো তখন বাবার তার বন্ধুদের সাথে মাছ ধরত। আর আমিও বাবার সাথে মাছ ধরতে যেতাম। আসলে বাবা তার বন্ধুর সাথে মাছ ধরতে যেতো যখন মাছ ধরে নিয়ে বাড়িতে আসতো সেই মুহূর্তগুলোকে আমার অনেক আনন্দ হতো।আর ভাবতাম আমিও বাবার সাথে যাবো।তারপর আমি বায়না করে বাবার সাথে মাছ ধরেতে যেতাম।বাবা মাছ ধরে আমার কাছে রেখে দিতাম। এটা খুবই ভাল লাগত, তো বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে,এসেছি আমার বাবার সাথে নদীতে মাছ ধরার গল্প নিয়ে আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।


আমি তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি, আর তখন ছিল বর্ষাকাল। বাবা প্রায় প্রতিদিনই মাছ ধরতে যেত তার বন্ধুদের সাথে। আমিও বায়না করলাম, আর বাবা বলল ঠিক আছে তাহলে চলো যাই। আমরা নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে যাচ্ছিলাম।আমার বাবার ছোট একটি নৌকা ছিলো। সেই নৌকা করে মাছ ধরা হয়। আর এই মাছ ধরা হয় কারেন্ট জাল দিয়ে।আমাদের এলাকায় এই জালকে কারেন্ট জাল বলা হয়।তো বাবার সাথে নদীর পারে আসলাম নৌকা নিয়ে।বাবা আর তার বন্ধু মিলে নদীরতে কারেন্ট জাল ফেলতে লাগলো আমি নৌকাতে বসে সেই দৃশ্য দেখতে লাগলাম। নদীতে একসাথে আরও অনেকেই জাল ফেলকে ছিলো।জাল ফেলা হয়ে গেলে ২/৩ ঘন্ট অপেক্ষা করতে হয়।তারপর জাল তুললে মাছ পাওয়া যায়।জাল ফেলা হয়ে গেলো তখন আমাদের নৌকাটি নদীর পারে আনলো আমি সেখানে বসে ছিলাম আর অপেক্ষা করতে লাগলাম,কখন জাল তুলবে আমি মাছ ধরবো।


fisherman-g8509c5acb_1920.jpg

source

আসলে অপেক্ষা সময় যেন যাচ্ছিল না। আমি বাবাকে বারবার বলতে ছিলাম যে কখন জাল তুলব, বাবা বলতে ছিল আরও কিছুখন অপেক্ষা করতে হবে। আসলে ২/৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করার বিষয়টা আমার মন মানতে ছিলো না।কিন্তু অপেক্ষা তো করতেই হবে,কারণ জাল ফেলে তো আর সাথে সাথে মাছ ধরবে না। তাই আমি নদীর পাড়ে কাশফুলগুলো দেখতে ছিলাম। সেই কাশফুলের দৃশ্য গুলো ছিলো অসাধারণ।নদীর পাড়ের দৃশ্য উপভোগ করতেছিলাম।এভাবে অনেক সময় পার হয়ে গেল।আমি বাবাকে মাঝেমধ্যে জিজ্ঞেস করতেছিলাম চল এখুন জাল তুলি মাছ ধরেছে।আসলে মনটা বারবার জাল তোলার জন্য চাচ্ছিলো।


অবশেষে অপেক্ষার সময় শেষ হলো। বাবা বললো চলো এখন তাহলে জাল তুলি। বাবার কথা শুনে খুবই খুশি হলাম। আমি তাড়াতাড়ি নৌকায় উঠে পরলাম। বাবার ও তার বন্ধু মিলে জাল তুলতে ছিলো।একটা জল তুললো কিন্তু মাছ দেখতে পাচ্ছিলাম না। আমি বললাম মাছ কেন ধরা পারেনি।বাবা বললো পরেছে তুমি দেখতে থাকো।আস্তে আস্তে আরও জাল তোলা হলো।তখন দেখতে পেলাম একটি নদীর টেংরা মাছ, মাছটি নরতে ছিলো, আর সেই মাছটি ধরা দেখে আমি খুশিতে চিৎকার দিয়ে উঠলাম।বাবা বলো আরও অনেক মাছ আছে , দেখতে থাকো। তারপর পুঁটি মাছ ধরা পরেছে। আবার দেখতে পেলাম অনেক টেংরা মাছ ধরা পরেছে। দেখতে পেয়ে খুবই খুশি লাগতে ছিলো।তারপর বাবাকে বললাম আমিও মাছগুলো জাল থেকে ছাড়াবো,তারপর আমি জাল থেকে একটি পুঁটি মাছ ছাড়ালাম সেই মূহুর্তটা অনেক আনন্দের ছিলো।


animal-ge91e426f2_1920.jpg

source

এভাবে আমি জাল থেকে মাছ ধরতে ছিলাম। সত্যি জাল থেকে মাছ ধরার এই মুহূর্তে অনেক আনন্দের ছিল। খুবই ভালো লাগতেছিল। আমার এমন সময় আমার বাবার বন্ধু বাবাকে বলল দেখ বন্ধু একটা সাপ যাচ্ছে। সাপের কথা শুনে আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তারপরে আমি বাবাকে বললাম বাবা সাপ কেন ভয় লাগছে চলো বাড়ি যায়।বাবা বললো বলল যে ভয় নেই। এরকম নদীতে অনেক সাপ দেখতে পাওয়া যায়।সাপ গুলো এভাবে সাঁতরে নদী পার হয়। আর বেশি তারপর ভয় পেলাম না।তারপর আর সাপটি দেখতে পেলাম না।সাপটি হয়তো দম দিয়ে অন্য কোথাও চলে গেছে। আমরা আর সেখানে দেখতে পেলাম না। তারপরে বাবা ও তার বন্ধু আবারো জাল থেকে মাছ তুলতে লাগলো।জাল তুলতে তুলতে চারটি জাল তোলা শেষ হলো। আমাদের আর একটি জাল রয়েছে। বাবার বন্ধু আমাদের পাঁচ নম্বর জলটি তুলতে লাগলো, আর পাঁচ নাম্বার জাল যখন তুলতে লাগল তখন সাপের মতো কি জান ধরা পরেছে।ঐটা দেখেই বাবার বন্ধু জালটি পানিতে ভেলে দিয়ে বললো সাপ ধরা পরেছে।এটা শুনেই আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম।


এই মাছ ধরার মুহূর্তগুলো সত্যিই অনেক আনন্দ ছিল, কিন্তু বাবার বন্ধু যখন বলল সাপ ধরা পড়েছে তখন খুবই ভয়ে ছিলাম। তো বন্ধুরা প্রথম পর্ব আজকে এখানে শেষ করছি। দ্বিতীয় পর্বের মাধ্যমে আপনাদের সাথে শেয়ার করব, যে আসলেই জালে সেই সাপ না অন্য বড় মাছ ধরা পরে ছিল। দ্বিতীয় পর্বটা অনেক ইন্টারেস্টিং হবে।আশা করছি দ্বিতীয় পর্বের জন্য আপনারা সবাই অপেক্ষা করবেন। 🙏🤲🙏

গল্পটির চলমান

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 2 years ago 

ছোটকালের স্মৃতি কমবেশি সবাইরে মনে পড়ে। আপনার বাবার সাথে মাছ ধরার গল্পটি লিখে আমারও ছোটকালের কথা মনে করিয়ে দিলেন। কারণ আমাদের পাশে নদী আছে। বাবার সাথে আমিও এভাবে মাছ ধরতে গেলাম। আমার কাছে বাবা মাছ দরে দিয়েছিল রাখার জন্য। একটি লোক আমার সাথে দুষ্টামি করে মাছগুলো খুঁজলো আমি তাকে দিয়ে দিলাম। পরে সবাই অনেক হাসাহাসি করতে লাগলো আমাকে নিয়ে। আর আপনার পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম আপনি সাপকে অনেক ভয় পান। প্রথম পর্ব অনেক সুন্দর করে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করেছেন। আশা করি দ্বিতীয় পর্ব খুব তাড়াতাড়ি সুন্দর করে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করবেন। অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

 2 years ago 

আমাদের সবাই ছোট কালে অনেক স্মৃতি আছে। ছোটকালে স্মৃতিগুলো মনে পড়লে এখনো মাঝেমধ্যে হাঁসি আসে। আপনি ছোটকালে আপনার বাবার সাথে মাছ ধরার জন্য বায়না ধরতেন। এরকম আমরাও বাবার সাথে কোথাও যাওয়ার জন্য এবং মাছ ধরার জন্য বায়না ধরতাম। তবে সাপকে আমি অনেক ভয় পেতাম ছোটকালে। আপনাদের কারেন্ট জালের মধ্যে সাপ ধরা পড়ল তাহলে তো আপনি অনেক ভয় পেলেন সামনে থেকে দেখে। প্রথম পর্ব খুব চমৎকারভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আশা করি দ্বিতীয় পর্ব আরও তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন।

 2 years ago 

আপনার সুন্দর মন্তব্যের কারণে আমার খুবই ভালো লেগেছে, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আমাদের সবার জীবনে ছোটবেলার অনেক স্মৃতি রয়েছে যেগুলোর মধ্যে রয়েছে আনন্দ এবং খুশির স্মৃতি এবং দুঃখ ও বেদনা। ছোটবেলায় সবাই বন্ধু-বান্ধবের সাথে এবং বাবা-মায়ের সাথে বেশ ভালই সময় কাটাতাম। আপনি তো দেখছি আপনার বাবার সাথে নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বেশ ভালোই মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। ৫ নাম্বার জালে যখন সাপের মতো কি যেন ধরা পড়েছিল তখন আপনার বাবার বন্ধু জালটি ফেলে দিল এরপর কি হয়েছে তা জানার অনেক আগ্রহ আমার।আপনি মনে হয় সাপ একটু বেশি ভয় পান তাই তো সাপের নাম শুনলেই আপনার ভয় লাগে। দ্বিতীয় পর্ব দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

 2 years ago 

আপনার এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

 2 years ago 

ছোটবেলার স্মৃতিগুলো আসলেই খুব আবেগপ্রবণ করে তোলে। মাছ ধরা আমার কাছে খুবই বিরক্তিকর একটি কাজ মনে হয়। তাছাড়া জাল ফেলে দুই তিন ঘন্টা বসে থাকা তো খুবই কষ্টকর তাছাড়া আপনার ছোট ছিলেন জন্যই আপনার আরো বেশি বিরক্ত লাগছিল অবশেষে বেশ মাছ পেয়েছিলেন দেখছি। তাছাড়া শেষে জালে সাপ ধরা পরার কারণে জাল আবার পানিতে ফেলে দেওয়া লাগলো যাইহোক বেশ ভালো লাগলো আপনার ছোটবেলার স্মৃতি পড়ে।

 last year 

আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

 2 years ago 

কমবেশি আমাদের সবারই ছোট কালের কিছু না কিছু গল্প রয়েছে।তেমনি আপনারও একটি গল্প আপনি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। আমার মনে হয় মাছ ধরা এক ধরনের নেশা।আমি আমার বাবার সঙ্গে মাছ মারতে যেতাম জাল নিয়ে পুকুরে। তবে নদীতে মাছ ধরা অনেক কষ্টকর বিষয়। আমি আমার এক চাচাতো ভাইয়ের কাছ থেকে নদীতে মাছ ধরা শিখেছ। নিয়মিত বাড়িতে থাকলে আমি আর আমার চাচতো ভাই নদিতে মাছ মারতে যাই।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর কিছু মুহূর্ত আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য ।

 last year 

আপনার সুন্দর মতামতের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ 🌻🌹

 2 years ago 

আমি তো সাপের নাম শুনে একেবারেই ভয় পেয়ে গেলাম। ছোটবেলা থেকে আমিও সাপ ভীষণ ভয় পাই। আপনি তো দেখছি ছোটবেলায় বেশ ভালোই মুহূর্ত কাটাতেন। আপনার বাবার সাথে নদীতে মাছ ধরতে যেতেন মনে হয় মুহূর্তটির সত্যি অন্যরকম। আপনাদের জালে যখন সাপের মতো কি যেন ধরেছিল তা শুনে তো আমি নিজেই ভয় পেয়ে গিয়েছি। যাই হোক পরবর্তী পর্বে কি হল তা দেখার অপেক্ষায় আছি।

 last year 

আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 68148.22
ETH 3249.65
USDT 1.00
SBD 2.67