সততার সাথে জীবন গড়লে সেই সততা মানুষকে মহৎ করে তোলে। আসলে সততার সম্মান মানুষ সবসময় পেয়ে থাকে। আমাদের সমাজে অনেক ধনী মান্যবান ব্যক্তি রয়েছে। তারা প্রকাশ্যে হয়তো সম্মান পেয়ে থাকে কিন্তু তাদের কর্মের কারণে তারা মানুষের ঘৃণার পাত্র হয়ে যায়। কারণ তারা অসৎভাবে জীবন যাপন করে। যারা সৎ ভাবে জীবন যাপন করেছে এবং সাদা মাঠা জীবন যাপন করেছে তাদেরও যেন সম্মান অনেক বেশি। কারণ তারা প্রত্যেকটা মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। সততা একটি মহৎ গুণ। আর এই মহৎ গুণ সবাই অর্জন করতে পারে না। তাই সত্য নিয়ে আপনাদের সাথে একটি গল্প শেয়ার করতেছিলাম। আজকে সেই গল্পের শেষ পর্ব নিয়ে এসেছি। আশা করছি শেষ পর্বের গল্প পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে। তো বন্ধুরা চলুন গল্পটি পড়া শুরু করা যাক।

মানিক ভাই ও তার বাবা যখন সেই টাকার ব্যক্তি নিয়ে হসপিটালের মালিকের রুমে আসলো। মালিক দেখেই ব্যাগটি চিনতে পারল। বলল এই ব্যাগটি আপনার কাছে কিভাবে আসলো। তখন মানিক ভাই বলল আমার সিএনজিতে কালকে আপনাদের এখানকার ম্যানেজার সিএনজিতে উঠে ছিল এবং ম্যানেজার এই ব্যাগটি আমার সিএনজির পেছনে রেখে হঠাৎ নেমে যায়। আমি বাড়িতে গিয়ে এই ব্যাগটি দেখতে পায় এবং ব্যাগটি খুলে দেখতে পেলাম ব্যাগের ভিতর অনেক টাকা আর এই টাকাগুলো দেখে আমি আমার বাবাকে বললাম। বাবা বলল এই টাকার মালিককে ফেরত দিতে হবে। ব্যাগের ভিতরে দেখো কোন পরিচয় পত্র আছে কিনা। আমি ব্যাগের ভিতর থেকে পরিচয় দেখাম আপনাদের হসপিটালে। এই কথাটি শুনে মালিক অবাক হয়ে গেল বলল এত টাকা পেয়ে তুমি মালিকের ফেরত দিতে এসেছো। তুমি তো এই টাকা দিয়ে অনেক কিছু করতে পারতে। তখন বলল যে আমি অন্যের টাকা দিয়ে বড়লোক হতে চাই না। এটা মনের ভিতর কখনো শান্তি দিবে না। কারণ আমি সৎ ভাবে জীবন যাপন করতে চাই। এই কথা শুনে মালিক অনেক খুশি হল এবং ম্যানেজারকর ডাক দিল ম্যানেজার তাড়াতাড়ি এই রুমে আসে।

ম্যানেজারের মন খুবই খারাপ ছিল, কারণ ম্যানেজারের কাছ থেকে এতগুলো টাকা হারিয়েছে। আর হসপিটালে কর্তৃপক্ষ এটা বিশ্বাস করতে পারছে না। যার কারণে ম্যানেজারের খুবই মন খারাপ ছিল। আর ম্যানেজার যখন এই রুমে আসলো এসে দেখতে পেলো টাকার ব্যাগ এবং ম্যানেজকরে হসপিটালের মালিক বলল যে এই টাকাগুলো এভাবে আমরা পেয়েছি সেই ঘটনাটি।আর বললো আপনি তো দায়িত্বহীন টাকাগুলো কিভাবে সিএনজির পিছনে রেখে দিলেন। এতগুলো টাকা আপনি নিজের কাছে রাখতে পারলেন।ম্যানেজার কিছু বলল না।যখন মানিক ভাইয়ের বাবার হাত ধরে বলল চাচা আজকে আপনি আমার জীবন রক্ষা করেছেন এবং মানিক ভাইকে বুকে জড়িয়ে ধরে ম্যানেজার কান্না করে দিলো।

ম্যানেজার তখন বলল যে এই টাকাটা ফেরত দিয়ে আপনারা শুধু সততার পরিচয় দেননি, আমার জীবন রক্ষা করেছেন। কারণ আমার মান-সম্মান সব চলে যেতো এবং আমার চাকরিটাও থাকত না, আমার ফ্যামিলি আজ খুবই বিপদে পড়ে যেত। ম্যানেজার যেন বারবার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ছিল। এবং হসপিটালের মালিক সকল কর্মকর্তাকে ডাক দিয়ে এই ঘটনাটি বলল এবং মানিক ভাইকে এক লাখ টাকা পুরস্কার দিতে চাইলো, কিন্তু মানিক ভাই টাকা নিলো না। বললো আমার পুরস্কার লাগবে না যদি আমার টাকা নিতাম তাহলে তো আমি টাকা ফেরত দিতাম না। ম্যানেজার এই কথাটি শুনে সত্যি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। আর বলল যে আচ্ছা তাহলে তুমি কি চাও আমরা তোমাকে কিছু দিতে চাই।মানিক ভাইয়ের বাবা বললো আমরা গরিব মানুষ আমাদের কিছু লাগবে না, আমাদের অনেক সম্মান করেছেন এটাই আমাদের কাছে অনেক বড় পাওয়া। হাসপাতালের মালিক বললো এমন সৎ ব্যক্তিকে আমরা কখনো ছেড়ে দিতে চাই না। কারণ এরকম সৎ ব্যক্তি আর পাওয়া যায় না। যার কারণে মানিক ভাই বলল আজকে থেকে মানিকে আমরা কেশিয়ার বানাতে চাই। আমাদের হসপিটালের ক্যাশিয়ার সহকারী হিসাবে মানিক থাকবে।মানিক তুমি কি করবে এই চাকুরী।

এই কথা শুনে মানিক ভাইয়ের বাবা বলল আমার ছেলে অনেক ভালো ছাত্র ছিল। কিন্তু পরিবারের দায়িত্ব কাঁদে নেওয়ার কারণে সে আর পড়তে পারেনি। এখন মানিক সিএনজি চালিয়ে সংসার চালাচ্ছে। আপনারা যদি এই চাকরিটা দেন তাহলে মানিক অবশ্যই করবে। মানিক বলল জি স্যার আমিও করতে রাজি আছি। তখন ম্যানেজার বলল যে ঠিক আছে তাহলে কালকে থেকে তুমি জয়েন করবো। আমরা খুবই খুশি হবো। আর মানিকেন যাতায়াতের জন্য হসপিটাল থেকে মালিককে বললো আমরা একটি মোটরসাইকেল কিনে দেবো। এই কথা শুনে খুবই খুশি হল।