বন্ধুদের সাথে নদীর বালু চরে পিকনিক খাওয়ার স্মৃতিময় গল্প//পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম/আদাব🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


বন্ধুদের সাথে হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। বন্ধুদের স্মৃতি গুলো কখনো ভোলা যায়না। এই স্মৃতিগুলো হৃদয়ের পাতায় রয়ে যাবে সারা জীবন। শুধু সময়টা পার হয়ে যায়। কিন্তু স্মৃতিময় দিনগুলো যেন চোখের সামনে ভাসে এবং বন্ধুদের সাথে কাটানো সেই মুহূর্তগুলো ভাবতেও খুবই ভালো লাগে। আজকে আমি আপনাদের মাঝে বন্ধুদের সাথে সেই স্মৃতির পাতা থেকে একটি গল্প শেয়ার করতে এসেছি। আসলে আমরা চার বন্ধু মিলে নদীর চরে পিকনিকের আয়োজন করেছিলাম। এই পিকনিকের সেই স্মৃতিময় গল্পটি আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে আমার খুবই ভালো লাগছে। আশা করি আপনাদেরও ভালো লাগবে।


সময়টা ছিল ২০১৫ সাল আমরা তখন ক্লাস টেনে পড়ি। তখন আমার বন্ধু হাসান বলল যে আমরা যমুনা নদীর পাড়ে ভ্রমণ করতে যাব। আর যমুনা নদীর থেকে নৌকায় করে আমরা এই নদীর চরে যাব। চলে বালুর মধ্যে অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করবো। তো হাসানের মতের সাথে আমিও রাজি হয়ে গেলাম এবং সাজুকে বললাম সাজুও রাজি হয়ে গেল। তারপরে ইয়াসিনকে বললাম। আমরা চারজন বন্ধু মিলে নদীর চরে আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করব।তখন ইয়াছিন বলল আমরা চারজন যেহেতু নদীর চরে যাবো তো আমরা ছোটমোটো পিকনিক করলে কেমন হবে। আমরা এখান থেকে মুরগি কিনে নিয়ে যাব এবং নদীর চরে আমরা নিজেরাই রান্না করে আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করব।


people-gcfd30ab00_1920.jpg

source

তো ইয়াসিনের কথা শুনে আমাদের ইচ্ছা হলো,যে নদীর পাড়ে গিয়ে সেই বালু চরে আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করা যাবে এবং নদীর চরে অনেকেই পিকনিক করে তো আমরা যদি একটা মুরগি কিনে নিয়ে এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনে নিয়ে নদীর চরে আনন্দময় মুহূর্ত সালে রান্না করি তাহলে খুবই ভালো লাগবে । আর এই দিনটি স্মৃতির পাতায় রয়ে যাবে। তাই বন্ধুদের সাথে নিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে শুক্রবার সকালে আমরা যমুনা নদীর চলে যাব এবং তখন হাসান বলব সকালবেলা অনেক রোদ হবে। তখন সাজু বলল যে তার ভাইয়ের একটি তাম্বুর হয়েছে। আমরা সেই তাম্বু নিয়ে চরে যাবো।বন্ধুদের সাথে যমুনা নদী বালু চরে পিকনিক হবে শুনে আমার খুবই ভালো লাগলো। তো আমি বললাম ঠিক আছে তাহলে আমরা শুক্রবারে সকাল বেলা রওনা দিব এবং বৃহস্পতিবার এ আমাদের বাজার করতে হবে। তো আমরা চার বন্ধু টাকা তুলে বৃহস্পতিবারের মুরগি কিনলাম এবং অন্যান্য প্রযোজনীয় দ্রব্য নিয়ে শুক্রবারে সকাল বেলা যমুনা নদীর পাড়ে আসলাম সেখানে একটি নৌকা ভাড়া করে আমরা যমুনা নদীর বালু চরের দিকে রওনা দিলাম।


adults-g949170784_1920.jpg

source

তো আমরা বন্ধুরা মিলে যখন নৌকায় করে যমুনা নদীর চরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। তখন খুবই ভালো লাগলো, সত্যি মুহূর্তটি অনেক আনন্দের ছিল। চার বন্ধু মিলে যমুনা নদীর পাড়ে এসে পিকনিক করবো এবং নৌকা ভ্রমনের মুহূর্তটা অনেক আনন্দ করলাম। হাসান গান গাইতে লাগল, আমরা নদীর পানি হাত দিয়ে ধরতে ছিলাম। মুহূর্তে অনেক আনন্দের ছিল। সত্যিই সেইদিন অনেক মজা করেছি। যাইহোক তো আমাদের নৌকা যখন বালু চলে এসে থামলো।তখন আমরা বালু চরে নামলাম। আমরা হাঁটতে ছিলাম যে কোথায় তাম্বুরা স্থাপন করব। তো দেখে দেখে একটা সুন্দর জায়গা দেখতে পেলাম। আর সেই সুন্দর জায়গাটিতে কাশবনের সুন্দর দৃশ্য ছিলো।তাই সেখানে এসে আমরা প্রথমে খুবি আনন্দিত হয়েছিলাম।কাশবনের সৌন্দর্যময় এই জায়গাটি আমার খুবই ভালো লাগলো। এখানেই অনেক সৌন্দর্যময় পরিবেশ বাতাসের সুন্দর মুহূর্ত ছিল। তাই আমরা সেখানে তাম্বুরি স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং আমরা চার বন্ধু মিলে খুব তাড়াতাড়ি তাম্বু স্থাপন করতে লাগলাম। একসাথে কাজ করার মধ্যে অনেক আনন্দ রয়েছে। যখন বন্ধুরা মিলে তাম্বু স্থাপন করলাম। তখন খুবই ভালো লাগলো। আমরা প্রথমে তাম্বু করে তার মধ্যে অনেক আনন্দের সাথে খেলা করতে লাগলাম।


hd-wallpaper-g99d94ac05_1920.jpg

source

তারপর আমি আর হাসান মিলে চুলা সঠিক করতেছিলাম রান্না করার জন্য। আর এদিকে নৌকাতে আমাদের মুরগির মাংস ছিল। ওই মাংস আনতে পাঠানো হয়েছে ইয়াসিন আর সাজুকে। ওরা যখন মুরগির মাংস নিয়ে আসতে ছিল, তখন কোথা থেকে যেন একটা কুকুর এসে ওদের দিকেই আসছিল এবং ইয়াসিন কুকুরটিকে দেখে দৌড় দিয়েছে এবং সাজুকে বলছে তাড়াতাড়ি দৌড়া সাজু ইয়াছিনের কথা শুনে কুকুরটাকে না দেখে দৌড়াতে শুরু করেছে।ওরা খুবই ভয় পেয়েছিল। তারপরে দৌড়ে দৌড়ে আমাদের তাম্বুর কাছে এসে বলছে একটা লাঠি দেহ, কুকুরকে মারতে হবে।পরে আমাদের তাম্বুর কাছ থেকে একটি বাঁশের লাঠি নিয়ে সাজু যখন কুকুরটিকে মারতে গিয়েছে। তখন দেখতে পেল সেই কুকুরটি তাদের পোষা কুকুর। আর এই কুকুরটি এখানে কিভাবে আসলো। এটি সত্যি অবাক হয়ে গেল সাজু। সাজু তখন আমাদের বললো এটিতো আমার পোষা কুকুর টমী।আর এই টমী কিভাবে আমাদের এখানে আসলো। সাজু পোষা কুকুরটির কাছে এসে চুপ করে বসলো।কুকুরটিও সাজুর কাছে এসে বসে পরলো।


dog-gf151328e8_1920.jpg

source

আমরা বন্ধুরা সবাই অবাক হয়ে গেলাম। কিভাবে কুকুরটি নদী পার হয়ে আসলো এটি সত্যি আশ্চর্যজনক, আমরা অনেকেই কৌতুহল ছিলাম। কিভাবে কুকুরটি আসলে। এটা অসম্ভব এত বড় নদী সাঁতরে আসা সম্ভব না। কিভাবে আসলো এটা আমরা আলোচনা করতে লাগলাম। তো বন্ধুরা প্রথম পর্বে এখানে শেষ করছি এবং দ্বিতীয় পর্বের মাধ্যমে আপনাদের সাথে শেয়ার করব কুকুরটি কিভাবে নদী পার হয়ে আমাদের কাছে এসে ছিলো আর আপনারা কমেন্ট করে জানাবেন আপনাদের কি মতামত, কিভাবে কুকুরটি আমাদের কাছে এসেছিলো।আপনাদের ধারণা কি সেটা জানাবেন।🙏🤲🙏

গল্পটির চলমান

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 2 years ago 

বেশ ভালো লাগলো আপনাদের চার বন্ধুর যমুনার চরে পিকনিক খাওয়ার গল্প পড়ে ৷ আসলে বন্ধুদের সাথে কাটানো হাজারও রঙ্গিন স্মৃতির কথা ভুলা যায় না ৷ বন্ধুগুলো যখন পাশে ছিলো তখন এমন পিকনিক আমরাও অনেক খেয়েছি , তবে বালুর চরে খাওয়া হয়নি ৷ যাই হোক গল্পের শেষে কুকুটির কথা পড়ে আমিও বেশ অবাক হলাম ৷ আপনাদের পিছনে পোশা কুকুর চলে গেলো এতো দূর , সত্যিই অবাক লাগছে ৷ যাই হোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ৷ আরো মজার কিছু স্মৃতি আপনার জানার জন্য ৷

 2 years ago 

আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

 2 years ago 

বন্ধুরা মিলে এভাবে সময় কাটানোর মজাই আলাদা। আপনারা চার বন্ধু মিলে নিশ্চয়ই যমুনা নদীর তীরে খুব সুন্দর একটি সময় কাটিয়েছেন। কুকুরটি মনেহয় আপনার বন্ধু সাজুকে ফলো করতে করতে পৌঁছে গেছে। যাইহোক আপনাদের গল্পের পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে, আমার পোস্টে এত চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 
 2 years ago 

আসলে বন্ধু-বান্ধব কিংবা প্রিয়জনদের নিয়ে ঘুরে বেড়ানো পিকনিক করার মজাই অন্যরকম।
যমুনা নদীর তীরে এত চমৎকার একটি পিকনিকের আয়োজন নিঃসন্দেহে মনে রাখার মত।তবে এটা ঠিক বুঝতে পারছি কুকুরটি কিন্তু আপনার বন্ধু সাজু কে ফলো করে করে পৌঁছে গেছে সেখানে। যাইহোক বন্ধুদের সাথে নদীর বালু চরে পিকনিক খাওয়ার স্মৃতিময় মুহূর্তগুলো অমলিন হয়ে থাক সারা জীবন। প্রত্যাশা রইল আগামী পর্ব পড়ার,,,,,♥♥

 2 years ago 

আপনার সুন্দর মন্তব্যের কারণে আমার খুবই ভালো লেগেছে, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 2 years ago 

বন্ধুত্বের স্মৃতিগুলো হৃদয়ের পাতায় রয়ে যাবে সারা জীবন একদম সত্যি। নদীর চর এমনিতেই অনেক ভালো জায়গা। তারপর যদি প্রিয় জনদের সাথে হয় পিকনিক, তাহলে আর আনন্দের শেষ থাকে না।সাজু কুকুরটিকে মারতে গিয়ে দেখতে পেলেন তার পোষা কুকুর। সত্যি প্রিয় জনরা এভাবেই কাজে আসে,হয়তো সাজুকে ফলো করেছে । আপনাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক এভাবে রয়ে যাক আজীবন।

 2 years ago 

আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

 2 years ago 

ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে দারুন লাগলো। আসলে পিকনিকের স্মৃতিগুলো সব সময় অনেক মধুর হয়। কিন্তু মাঝে মাঝে ভিন্ন অভিজ্ঞতার শিকার হতে হয়। কুকুরের দৌড়ানি খেয়ে সত্যি তারা অনেক ভয় পেয়েছিল। কিন্তু সেটা যেহেতু ছিল পোষা কুকুর তাই ভয়টা দূর হয়েছে। আসলে কুকুর তার নিজের মালিককে অনেক পছন্দ করে। তাইতো মালিকের টানে ছুটে এসেছে।

 2 years ago 

আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

 2 years ago 

আসলে দেখছি প্রায় অনেক আগের ঘটনা একেবারে আপনার ক্লাস টেনে থাকার সময়। বন্ধুদেরকে নিয়ে এভাবে পিকনিক করতে ভীষণ ভালোই লাগে। আপনারা একসাথে নদীর পাড়ে গেলেন এমনকি নদী ভ্রমণ করলেন। তার সাথে পিকনিক সবকিছু মিলিয়ে যেন ভীষণ আনন্দের মুহূর্ত। আরে এ ধরনের মুহূর্ত গুলো আমি ভীষণ পছন্দ করি। আপনারা চারজন মিলে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। সত্যি আপনাদের এত সুন্দর সময় কাটানোর মুহূর্ত পরে ভীষণ ভালো লাগলো।

 2 years ago 

আপনার এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64349.87
ETH 2775.11
USDT 1.00
SBD 2.65