স্মৃতির পাতায় থেকে বন্ধুদের সাথে নিয়ে মেলায় যাওয়ার গল্প //পর্ব-১||🫣[১০% @shy-fox ]🌹steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম/আদাব🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


স্কুল জীবনে হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে বন্ধুদের সাথে, আর এই বন্ধুত্বের স্মৃতি কখনো ভোলা যায়না। সত্যি বন্ধুদের সাথে ঘোরাফেরা এবং বন্ধুদের সাথে আনন্দের সময় উপভোগ করার মুহূর্ত গুলো ছিল অসাধারণ। আমরা তিন বন্ধু সবসময় একই সাথে থাকতাম এবং মিলেমিশে থাকতাম। এই বন্ধুত্বের বন্ধন আজীবন রয়ে আছে আমাদের হৃদয়ের মাঝে। বন্ধুত্বর বন্ধন হৃদয়ের মাঝে রয়েছে। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এবং কর্মের কারণে বন্ধুরা এখন আর আগের মত একসাথে থাকতে পারিনা কিন্তু বন্ধুত্বের এই বন্ধন রয়ে গেছে স্মৃতির পাতায়। সত্যিই বন্ধুত্বের এই স্মৃতিময় দিনগুলো কথা ভাবতেই খুবই ভালো লাগে। তাই আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার স্কুল লাইফের বন্ধুদের সাথে নিয়ে মেলায় যাওয়ার অনুভূতি গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতে আসলাম, আশা করি গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে।


সময়টা ছিল ২০১৩ সাল,তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি। নাইনের স্কুল জীবনের মুহূর্তটা ছিল সত্যিই অসাধারণ। সত্যিই এই মুহূর্তটা সবচাইতে আনন্দের দিন ছিল, কারণ তখন বন্ধুদের সাথে নিয়ে ঘোরাফেরা এবং স্কুল জীবনের আনন্দময় মুহূর্ত গুলো খুব ভালোভাবেই উপভোগ করতাম। এই বন্ধুদের সাথে স্মৃতিময় দিন গুলো আমি কখনোই ভুলবো না। হাসান ও সাজু ছিল আমার প্রকৃত বন্ধু।আমরা তিন বন্ধু সবসময় মিলেমিশে থাকতাম। এই বন্ধুত্বের সময় গুলো কখনো ভোলা যায় না।স্কুল জীবনের বন্ধুদের স্মৃতি আর কলেজ লাইফের বন্ধুদের স্মৃতি অনেক পার্থক্য। আসলে স্কুল লাইফের বন্ধুত্বের বন্ধন আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছে।আর এই হাই স্কুল লাইফের জীবনটা আমি খুবই ভালো ভাবে উপভোগ করেছি, কারণ ক্লাসে আমরাই ছিলাম প্রধান।সব সময় আমরা আনন্দের সাথে থাকতাম এবং আমাদের কথা মত সবকিছু হত। হাসান ছিল আমাদের ক্লাসের ক্যাপ্টেন এবং আমরা তিন বন্ধু সবসময় একই সাথে থাকতাম ভাল স্টুডেন্ট হওয়ার কারণে স্যার ম্যাডামদের কাছে সবসময় আদরে থাকতাম এবং স্কুলের মধ্যে আমাদের উপরে কেউ কথা বলার সাহস পেত না, কারণ সাজুর বাবা ছিলো এই স্কুলের কমিটির সভাপতির ছেলে। যাই হোক আমরা স্কুলের প্রতিটা মুহূর্তগুলো আনন্দের সাথে উপভোগ করত।


friends-gcd6e63f0c_1920.jpg

source

আমাদের স্কুলের পাশেই বড় একটি বাজার রয়েছে। বাজারে প্রতিবছর এ মেলার আয়োজন করা হয়। আসলে বছরের প্রথমে এখানে অনেক বড় মেলার আয়োজন করা হয়। আর এই মেলা দুইদিনের জন্য। দুইদিন মেলা থাকার কারণে আমরা বন্ধুদের সাথে নিয়ে এখানে অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করি। তবে মেলার প্রথম দিনে মেলাতে আসার মুহূর্তটি অনেক আনন্দের। আমরা বন্ধুরা মিলে প্রতিবছরই মেলার প্রথম দিনে এখানে আসি,এ বছরে মেলার আয়োজন করা হলো, তখন আমাদের ক্লাস থেকে ছুটি চেয়ে ছিলাম।আমাদের স্কুলে প্রতিবছরই মেলার প্রথম দিন ছুটি দেওয়া হয়। কিন্তু এ বছরে আমাদের হেডস্যার নতুন আসার কারণে এ বছর ছুটি দেওয়া হয়নি। বলছে তোমরা ১/২ ক্লাস করবে তার পরে তোমাদের ছুটি দেওয়া হবে। তো আমরা ভেবেছি ১/২ ক্লাস করার পরে ছুটি হবে। তাই আমরা মেলা আগের দিন বন্ধুরা সবাই মিলে ক্লাস থেকে চাঁদা উঠেছি। আমরা সকলে ৫০ টাকা করে দিয়েছি। আমাদের ক্লাসের মধ্যে ২০ জন ৫০ টাকা করে তুলে মেলাতে যাব এবং একসাথে ঘুরব ফিরব খাওয়া-দাওয়া করব। কত সুন্দর পরিকল্পনা করেছি। ক্যাপ্টেন হাসান এই টাকাগুলো তুলেছে। আমরা যখন একটা ক্লাস পরে ছুটি চায়লাম। তখন হাসান ক্লাসের স্যারকে বললো আমরাদের তো ছুটি দেয়ার কথা ছিল।


people-gc0bbdc6f1_1920.jpg

source

ক্লাসের স্যার বলল ছুটি দেওয়ার কথা ছিল। ছুটি পাবে তোমরা একটু পরেই নোটিশ আসবে। নোটিশ পেলেই বুঝতে পারবা, তো আমরা ভাবে নিয়েছিলাম তাহলে ছুটির বিষয় হয়তো নোটিশ আসবে। আর একটা ক্লাস করি তো আমরা ক্লাস করতে লাগলাম। এর মধ্যেই নোটিশ আসল,নোটিশ দেখেই তো আমরা খুশি, যেটা আমাদের মেলার ছুটির নোটিশ।কিন্তু নোটিম শুনে তো মাথা খারাপ হয়ে গেলো,নোটিশে ছিলো মেলার কারণে স্কুলের ক্লাস মিস হবে না। স্কুলের ক্লাস হবে।ক্লাস শেষে যার যার ইচ্ছা মেলাতে যাবে। এই কথাটা যখন শুনলাম সত্যি আমার খুবই খারাপ লাগলো। সকল বন্ধুদের নিয়ে সুন্দর প্ল্যান করলাম। আর কি হলো সত্যি মাথায় যেন রক্ত উঠে গেলো। হাসান বলল ক্লাসের মধ্যেই সব পাগল-ছাগলের স্যার হেড ম্যাস্টার এইছে। আমাদের আগের স্যারই ভালো ছিল।এই স্যারের আর কথার কোন দাম নেই। কথার কোন দাম নাই। ক্লাসের সব স্টুডেন্টরা তখন হাসানের সাথে একমত আমরা ক্লাস করব না।ক্লাসের মধ্যে হইহুল্লোর শুরু হয়ে গেল অন্যান্য স্টুডেন্টরা ক্ষেপে গেল। বলল এক সময় এক এক কথা আমরা ক্লাস করব না। আমরা মেলায় যাব। যেভাবেই হোক। হাসান বলো ঠিক আছে তোমরা সবাই চুপ করো। আমরা ব্যবস্থা করছি। রাগ করে আমাদের ক্লাস টিচার বের হয়ে গেল।এত হৈ হুল্লোড় কারণে। তারপরে আমরা বললাম স্যার আমাদের বলেছিল একটা দুইটা ক্লাস করে ছুটি দেবে, কিন্তু স্যার কথা রাখেনি তো আমরাও স্যারের কথা রাখবো না। আমরা মেলায় যাব, এই বলে হাসান এবং আমরা ২০ জন টাকা তুলে ছিলাম তারা ক্লাস থেকে বের হয়ে আসলাম।আমাদের ক্লাস থেকে বের হয়ে আসা দেখে, ক্লাস টেনের বড় ভাইদের মধ্যে ১০/১৫ জন বের হয়ে আসলো। বড় ভাইদের আসা দেখে মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলতে লাগলাম।


market-g46b3ce7de_1920.jpg

source

মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে বড় ভাইদের সাথে কথা বলতে লাগলাম।হাসান বললো ভাই দেখেন স্যার আমাদের কথা দিয়েছিল যে প্রতিবছর তো মেলার প্রথমদিন ছুটি থাকে, এবার ছুটি হবে না এবার একটা দুইটা ক্লাস করে মেলায় যেতে দেবে। কিন্তু স্যার কথা দিয়ে এটা কি করলো। বড় ভাই বললে ঠিকই তো আমাদের তো একই কথা দিয়েছিল। যাই হোক আমরা সবাই মেলাতে যাবো।টেনের বড় ভাইরা বললো কোন টেনশন নাই। চলো আমরা সবাই মেলায় যাই। আনন্দ ফুর্তি করি। পরের দিন কি হয় সেটা দেখব। যদি স্যার ঝামেলা করে সবাইকে নিয়ে বিচার বসাবো। এবং আমাদের কথা দিয়েছিল এবং তোমাদের কথা দিয়েছিল এটা তখন বলবা। তখন স্যার কি করে দেখা যাবে। বড় ভাইয়ের কথা মতো এবং আমরা সকল আমরা বন্ধুরা মিলে মেলাতে গেলাম। আমরা ২০ জন বন্ধু সবসময় একই জায়গায় থাকলাম। সত্যিই আনন্দ হচ্ছিল কিন্তু খারাপ লাগতেছিল স্কুল থেকে বের এভাবে মেলায় এসেছি যার কারণে একটু খারাপ লাগতে ছিল। তার পরেও বন্ধুদের সাথে নিয়ে মেলার প্রথম দিন অনেক আনন্দ মুহূর্ত উপভোগ করলাম। আমরা প্রথমেই একটি জিলাপির দোকানে গেলাম এবং জেলাপির দোকানে থেকে ৫ কেজি জেলাপি কিনে নিয়ে মাঠের মধ্যে এসে সবাই গোল হয়ে জেলাপি খেতে লাগলাম।


amusement-g533054014_1920.jpg

source

সকল বন্ধুরা একসাথে জিলাপি খাবার মুহূর্তটা অনেক আনন্দ করেছি। অনেক হাসাহাসি করেছি,আসলেই সকল বন্ধুরা মিলে যখন একসাথে খাওয়া-দাওয়া এবং গল্প করা যায় সেই মুহূর্তটা সত্যিই অনেক আনন্দের হয়। মেলাতে আরো অনেক আনন্দ মজা করেছি। বাকি অংশটুকু দ্বিতীয় পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করছি এই পর্বটা আপনাদের ভাল লেগেছে। তো বন্ধুরা সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং দ্বিতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষা করবেন,,,,,,,,........! 🙏🙏🙏

গল্পটি চলমান

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 2 years ago 
 2 years ago 

ছোট বেলায় মেলায় যাবার একটা আনন্দ অন্যরকম ছিল। এই অনুভূতিগুলো ভোলার নয়। আপনার লিখাটি পড়ছিলাম আর স্মৃতির পাতায় হারিয়ে যাচ্ছিলাম। আপনাদের শিক্ষক ছুটি দেবে বলে দিলেন না, আর আপনারা বেশ সাহসিকতার সাথে নিজেরাই টাকা উঠিয়ে মেলায় চলে গেলেন। আর এতো গুলো জিলাপি খেলেন একসাথে 😋 সবমিলিয়ে কিন্তু দারুন উপভোগ করলাম গল্পটা। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

আপনার সুন্দর মতামতের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া🌻🌹

 2 years ago 

ছোটবেলার স্মৃতি গুলো সবসময়ই অনেক মধুর স্মৃতি হয় যা মনে পড়লে খুবই ভালো লাগে আপনার গল্প টি পড়ে কিছুক্ষণের জন্য নিজের ছোটবেলায় ফিরে গেছিলাম মনে হয় স্কুল জীবনের অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। স্যারদের উপেক্ষা করে মেলায় যাওয়া জিলাপি কিনে মাঠে বসে হৈ-হুল্লোড় করে খাওয়া সবমিলিয়ে অসাধারণ লেগেছে গল্পটা। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে, আমার পোস্টে এত চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

বাহ আপনার মেলা যাওয়ার অনুভূতিটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। প্রথমে শিক্ষকের কাছে ছুটি চেয়েছেন ছুটি দেবে বলে দিল না। এরপর বন্ধুরা টাকা তুলে মেলায় গেলেন। এবং ২০ জন বন্ধু যে দিকে যান একসাথে যান। পাঁচ কেজি জিলাপি একসাথে সব বন্ধু মিলে বসে খেয়ে ফেলেন। খুব সুন্দর করে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করেছেন। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আপনার সুন্দর মন্তব্যের কারণে আমার খুবই ভালো লেগেছে, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64349.87
ETH 2775.11
USDT 1.00
SBD 2.65