ছোটবেলা বাবার সাথে আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। আর এই দিনগুলোর কথা মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। বিশেষ করে বাবা যখন কোথাও যেত আমি সাথে যেতাম। বাবার সাথে হাটে যাওয়ার মুহূর্ত এবং মাছ ধরার মুহূর্তগুলো আমার জীবনের সবচাইতে আনন্দময় মুহূর্ত ছিল। আসলে বাবা কোথাও গেলে আমি পিছু ছাড়তাম না। বিশেষ করে বাবা ছোটবেলায় অনেক মাছ ধরত। আসলে আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে নদী বয়ে চলেছে। আর এই নদী থেকে সকলে মাছ ধরতো। যার কারণে আমার বাবা ও মাছ ধরত। তার বন্ধুদের সাথে গিয়ে মাছ ধরত।আর বাবা যখনই মাছ ধরতে যেতেন,আমি সাথে যেতাম। বাবা মাছ ধরে আমাকে দিত। আমি সেগুলো ব্যাগে রাখতাম। সেই মুহূর্তগুলো অনেক আনন্দময় ছিল। বিশেষ করে বাবার সাথে মাছ ধরার অনেক স্মৃতিময় গল্প রয়েছে। সেখান থেকে আজকে রাতের বেলা পলো দিয়ে মাছ ধরার একটি গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতে আসলাম। আশা করছি এই মাছ ধরার গল্পটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।

মাছ ধরার জন্য দিনের বেলা অনেক ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে। বিভিন্ন রকমের জাল দিয়ে মাছ ধরা হয়, কিন্তু রাতের বেলায় মাছ ধরা হয় সেটা হল পোলো দিয়ে অর্থাৎ লাইটের আলো দিয়ে এই মাছগুলো ধরা হয় আর গ্রাম অঞ্চলে এই লাইটের আলো দিয়ে মাছ ধরার মুহূর্তগুলো সত্যিই অসাধারণ। দল বেঁধে সবাই মিলে নদীর ধারে যেত লাইট জ্বালিয়ে এই মাছগুলো ধরতো হাতে অনেক বড় একটি লাইট,বা ভালো মানের একটি লাইট থাকতো।আর বাঁশের তৈরি পলো অর্থাৎ যেটা দিয়ে মাছ ধরা হয়, এরকম একটা মাছ ধরার পাত্র থাকতো। এটা দিয়েই যেন রাতের বেলা মাছ ধরা হয়।

প্রায় কয়েকদিন হল আমাদের গ্রামে অনেকেই পোলো দিয়ে রাতের বেলা মাছ ধরছে এবং বড় বড় মাছও তারা ধরে। এই পলো সাহায্যে বাবার বন্ধুও মাছ ধরেছিল, একটা বোয়াল মাছ ও কাতল মাছ ধরেছিল। যার কারণে বাবা বলল যে আমিও সাথে যাব মাছ ধরার জন্য। বাবার এই মাছ ধরার কথা শুনে আমিও রাজি হলাম। তাই আমি আর বাবা পরের দিন আমাদের গ্রামের হাটে গেলাম। হাটে গিয়ে অনেক দামি এবং ভালো মানের একটা লাইক কেনা হলো। আসলে এই মাছ ধরার জন্য লাইটিং এর আলোটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।লাইট কেনা হয়ে গেলে মাছ ধরার পলো কিনলাম। আসলে এই পলো অনেকেই নিজ হাতে বানায়, যেহেতু বাবা বানাতে পারে না এবং বানাতেও অনেক সময় লাগবে। যার কারণে হাটে এই মাছ ধরার পলো বিক্রি করা যায়, সেখান থেকে আমরা একটি ভালো পলোও কিনলাম।

লাইটার আর পলো কেনা হয়ে গেলে আমার খুবই ভালো লাগলো। মনের ভিতর অনেক আনন্দ হচ্ছিল। কারণ আজকে আমরা এই মাছ ধরার জিনিসগুলো কিনেছি। কালকে বাবার সাথে রাতের বেলা মাছ ধরতে যাব। আসলে দিনের বেলা অনেকবার আমি বাবার সাথে মাছ ধরতে গিয়েছি, কিন্তু রাতের বেলা কখনো যাওয়া হয়নি। যার কারণে রাতের বেলা মাছ ধরার এই মুহূর্তটা আমার কাছে অসাধারণ ছিল। আর বাবারও খুবই ইচ্ছা ছিল তার বন্ধুদের সাথে পলো দিয়ে মাছ ধরবে। আসলে লাইটের আলো দিয়ে রাতের বেলায় মাছ ধরার মধ্যে অনেক আনন্দ রয়েছে। নদীর কিনারা দিয়ে মাছগুলো ভেসে আসে। আর লাইক দিলে এই মাছগুলো একদম নীরব থাকে। এবং মাছগুলো দেখতে পাওয়া যায়। নদীর এই মাছের ভেসে বেড়ানো দৃশ্যগুলো দেখে যেন আমার মনের ভিতর অনেক আনন্দ হচ্ছিল।

তারপরে দিন বাবার সাথে মাছ ধরতে যাবো, আমি মাছ ধরার একটি পাত্র নিলাম এবং বাবা বলল খেয়ে যেতে হবে। রাতে ফিরতে অনেক সময় লাগবে। যার কারণে আনন্দের সাথে বাবার সাথে আমি খাওয়া-দাওয়া করলাম এবং খাওয়া-দাওয়া করে আমরা পলো নিয়ে বের হলাম। আমাদের পলোটি নতুন ছিল এবং লাইটের নতুন ছিল। যার কারণে আমার বেশি ভালো লাগতেছিল এবং বাবার বন্ধুরা আসলো বাবার বন্ধুদের ছেলেদের দেখতে পেলাম। আসলে রাতের বেলা এই নদীর কিনারায় অনেকেই মাছ ধরতে আসে। কারণ রাতের বেলায় মাছ ধরতে গেলে পোলো দিয়ে বড় বড় মাছ পাওয়া যায়। যার কারণে বাবার সাথে আমরা নদীর কিনারার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম আর দেখতে পেলাম আমাদের গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের স্যার রফিক স্যারও মাছ ধরতে এসেছে। আসলে এই মাছ ধরাটা একটা নেশা। যার কারণে কেউ এই মাছ ধরা ছাড়তে পারে না। রফিক স্যারের এই মাছ ধরাতে বলে খুবই ভালো লাগে। যার কারণে সেই রাতের বেলা মাছ ধরতে আসে।