ছোটবেলা বাবার সাথে স্মৃতিময় গল্প//পর্ব-১||🫣[১০% @shy-fox ]
হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।
বাবা ছেলের সম্পর্ক যেন পৃথিবীর অন্যতম একটি সম্পর্ক। এই সম্পর্ক মধ্যে হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে থাকে। স্মৃতির পাতায় থেকে আজকে আমি আমার বাবার সাথে ঘটে যাওয়া একটি গল্প শেয়ার করতে এসেছি। আসলে বাবারা সবসময় সুপারহিরো। প্রতিটা সন্তানের কাছে বাবারা সবসময় সুপার হিরো হিসেবে থাকে। বাবাদের সুপার কোন পাওয়ার থাকে না, কিন্তু বাবাদের মনের ভিতর সুপার শক্তি থাকে।যে শক্তি দিয়ে কাজ করে যায় সন্তানের জন্য। বাবারা কখনোই সন্তানের কষ্ট দেখতে পারে না। জীবনের রক্তকে পানি করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে হলেও সন্তানের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য হাজারো কষ্ট বুকে বেঁধে কাজ করে যায়। আর সন্তানদের সুখের জন্য সব সময় চিন্তা করে। একজন বাবা সন্তানের জন্য হাজার কষ্ট সহ্য করতে পারে।তাই আমাদের প্রত্যেকের জীবনে বাবার অবদান অপরিসীম।বাবার এই অবদান আমরা কখনোই ভুলতে পারবো না। আর আমাদের প্রত্যেকের জীবনে বাবার সাথে হাজারো স্মৃতিময় গল্প রয়েছে। আজকে তাই আমি সেই স্মৃতিময় গল্প থেকে একটি গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতে আসলাম।আশা করছি এই গল্পটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।
আজকে আমি যে গল্পটি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। এই গল্পটি অনেকদিন আগের। তখন আমি ক্লাস ফোরে পড়ি। আর আমি যখন ফোরে পড়ি তখন বাবার সাথে হাটে এবং বাজারে যাওয়ার জন্য বায়না করতাম। বাবা কোথাও গেলে বাবা কিছু ছাড়তাম না। বাবা আমাকে মাঝে মধ্যে লুকিয়ে এবং অন্য জায়গায় যাবে এরকম অনেক বাহানা দিয়ে আমাকে রেখে চলে যেত কিন্তু আমিও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র ছিলাম না। বাবার পিছু ছারতাম না।বাবা যেখানেই যেতো আমিও সেখানে যেতাম।
গ্রামে আমাদের ফসলের অনেক জমি রয়েছে। আর এই ফসলের জমিতে বাবা নিজেও চাষ করে আবার মানুষ দিয়ে চাষ করার।আসলে আমাদের সংসারে অন্য কোনো কাজ করার মানুষ ছিলো না বাবা একাই ছিল। যার কারণে বাবা সবগুলো জমিতে চাষ করতে পারতো না।তাই অন্য মানুষদের দিয়ে চাষ করতো। আমাদের গ্রামে অনেকেই খিরার চাষাবাদ করে ছিলো এবং আমার বাবা এসে বলল যে আপনি খিরার চাষ করেন।আমাদের একটি ভাল জমি ছিলো। এটি জমিতে নাকি অনেক ভাল খিরা হবে।আর জমিটি আমাদের বাড়ির পাশে ছিল। এই জমিতে চাষ করলে নাকি অনেক ভালো ফলন হবে। তাই আমার চাচাতো ভাই এর পরামর্শে বাবা এই জমিতে খিরা চাষ করলেন।চাষ করার পর থেকেই আমাদের প্রত্যেকের মনে অনেক আনন্দ। কবে খিরা ধরবে এবং বন্ধুদের সাথে নিয়ে খাব। তখন থেকে আমাদের আশেপাশের বন্ধুরা আমার পিছে পিছে থাকতো। যে আমাদের জমিতে খিরা ধরলে তখন তাঁরার সাথে খাবে। সেইজন্য হয়তো মিল দিতো।তো অনেকদিন কেটে গেল যখন আমাদের ফসলের জমিতে ঘিরে ধরলো তখন খুবই আনন্দ হলো। মাঝেমধ্যে বিকেলবেলা গিয়ে আমি সেই জমির পাহারা দিতাম এবং বন্ধুদের নিয়ে খিরা জমিতে পাখি পরলো কিনা সেটা দেখতাম।
এভাবে খুব আনন্দের সাথে খিরা ক্ষেত পাহারা দিতাম। খুবই ভালো লাগতো। খুবি মজা করে খিরা খাইতাম আর পাহারা দিতাম।বন্ধুরা মরিচের গুড়া আর লবণ দিয়ে মাখিয়ে আনতো। পাহারা দিতাম আর খায়তাম। যখন দুই মাস চলে গেল তখন আমাদের জমিতে অনেক খিরা ধরেছে। আর এই খিরা আমাদের পাশের বাজারে বিক্রি করতে হবে। এটা বিক্রি করতে হলে খুব সকালে যেতে হয়। আর বাবা সেই ফজর নামাজ পড়েই খিরার জমিতে গিয়েছে এবং দুজন লোক নিয়েছে তাদের খিরা তোলার জন্য। সকাল সকাল তারা খিরা তুলবে।সেই ফজর নামাজ পড়েই তোলা শুরু করলো।বাবাকে বলেছিলাম তোলার সময় আমাকে ডাক দিতে।কিন্তু তখন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম যার কারণে আমাকে ডাকে নাই।সকালে ঘুম থেকে উঠে আমি বাবাকে না পেয়ে কান্না করে দিলাম যে কানো আমাকে নিয়ে গেলো না ।তার পর আমার বন্ধুদের সাথে নিয়ে আমি খিরার জমিতে গেলাম।তো আমি জমিতে গিয়ে দেখি প্রায় তিন বস্তা খিরা হয়েছে।অনেক খিরা দেখে খুবই ভালো লাগলো বাবা বড় একটি জায়গায় সব গুলো খিরা ঢেলে দিয়ে ভালো গুলো বেছে নিলো। সেগুলো বাজারে বিক্রি করবে তাই তিনটি বস্তাতে নিলো।
আমাদের গ্রামে ছিল নদী আর এই নদীতে তখন যাতায়াতের ব্যবস্থা খুব ভাল ছিল। অনেক নৌকা চলাচল করতো।সকালবেলা অনেকেই তাদের জমি থেকে খিরা তুলেছে এবং এগুলো বিক্রি করার জন্য নৌকায় তোলা হচ্ছে। আমাদের বস্তাগুলোও নৌকা তুলা হলো। নৌকায় করে বিক্রি করতে নিয়ে যাবে। আমিও বাবাকে বললাম বাবা আমি বিক্রি করতে আপনার সাথে যাবো।বাবা বললো যাওয়া যাবে না, অনেক দূরে বাজার। তারপরে আমি শুনলাম না বললাম আমাকে না নিয়ে গেলে হবে না। আমি অনেক বায়না করলাম। পরে বাবা বলল ঠিক আছে চলো যাই। আমিও তখন বাবার সাথে সকাল ৯ টার দিকে নৌকায় করে বাবার সাথে খিরা বিক্রি করার জন্য বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সত্যিই আমাদের নৌকা যখন অনেকের খিরা ছিলো, খুবই ভালো লাগতেছিল, কারণ নৌকাতে অনেকেরই রয়েছে এবং সবাই খিরা বিক্রি করার জন্য বাজারে নিয়ে যাচ্ছে। মুহূর্তটা খুবই ভাল লাগতে ছিল। আজকে প্রথমবার আমাদের জমি থেকে খিরা বিক্রি হবে।তাই বাবার মুখে হাসি ছিলো।আর আমি তো খুবি খুশিতে ছিলাম।নৌকায় করে বাজারের উদ্দেশ্য ভ্রমণের মুহূর্তটা খুবই আনন্দের ছিল।
গল্পটি চলমান
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
বাবার সাথে প্রতিটি মূহুর্ত আনন্দের। আমি পড়ছিলআম আর ছোটবেলায় বাবির(আমি বাবি ডাকি) কাঁধে চড়ে ঘূরে বেড়ানোর স্মৃতিগুলো মনে করছিলাম। তখন ভাই হয় নি। আমিই সর্বেসর্বা। আপনাদের জমিতে শসা চাষ থেকে নৌকোয় করে বাজারে যাওয়আর পর্বটই পড়ে ভালো লাগলো। ছেলে মেয়েরাই বাবা মায়ে বল।পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের কারণে আমার খুবই ভালো লেগেছে, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ছোটবেলা বাবার সাথে কোথাও যেতে আমার খুব ভালো লাগতো আমিও প্রায় বায়না ধরতাম যাওয়ার জন্য। তবে আপনাদের খিরা গুলো আপনি খুব পাহারা দিতেন। এবং বন্ধুদের নিয়ে খেতেন। বিক্রি করার সময় বাবার সাথে যাওয়ার জন্য বাজারে যেতে বায়না ধরতেন। এরকম হাজারো বায়না আমিও বাবার সাথে ধরতাম যাওয়ার জন্য কোথাও। ক্লাস ফোর থেকে আপনি বাবার সাথে যাওয়ার জন্য অনেক কিছু বায়না ধরেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর করে গল্পটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের কারণে আমার খুবই ভালো লেগেছে, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আসলে বাবা এমন একজন মানুষ যার সাথে ছোটবেলায় কাটানো স্মৃতির কোন অভাব নেই। আপনার বাবার সাথে এত সুন্দর সুন্দর স্মৃতি লিখেছেন বেশ ভালই লেগেছে। বিশেষ করে বাবা কোথাও যাওয়ার সময় আপনিও বায়না ধরতেন বিষয়টি বেশ আমরা সবাই করতাম কিন্তু। আর আপনাদের খিরা ক্ষেতের পাহারা দিতেন আর বন্ধুদের নিয়ে লবন মরিচ দিয়ে খেতেন বিষয়টি বেশ আনন্দের। পাহারা দিতেন আর খেতেন বাহ বেশ ভালো। আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে।
আপনার সুন্দর মতামতের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ 🌻🌹
সবার জীবনে বাবাকে নিয়ে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। যেগুলো কখনো ভোলা যায় না। বাবা এমন একটা জিনিস যাকে ছাড়া কিছুই কল্পনা করা যায় না। আপনি সত্যি বলেছেন বাবা হচ্ছে সুপার হিরো। আপনি আপনাদের খিরা ক্ষেত পাহারা দিতে দিতে বন্ধুদের সাথে লবন মরিচ দিয়ে খেতেন এইটা আমার কাছে খুবই মজার লেগেছে। বাবাকে নিয়ে খুবই সুন্দর একটি গল্প লিখেছেন। সবাই বাবার সাথে যাওয়ার জন্য বায়না ধরতো আপনার মত।
আপনার এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ