শীতের দিনে ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রস খাওয়া নিয়ে বন্ধুদের সাথে ঘটে যাওয়া গল্প//পর্ব-২//[১০% @shy-fox ]🌹

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম/আদাব🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


শীতকালে আমাদের প্রত্যেকের জীবনে অনেক স্মৃতিময় গল্প রয়েছে, আর শীতের এই প্রকৃতির মুহূর্তগুলো সত্যিই অসাধারণ শীতকালে বন্ধুদের সাথে নিয়ে খেজুরের রস খাওয়ার স্মৃতিময় গল্পের আজকের দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। খেজুরের রস খাওয়ার এই মুহূর্তগুলো ছিল অসাধারণ। বন্ধুদের সাথে নিয়ে এই খেজুরের রস খেকে যাওয়ার মুহূর্তগুলো অনেক আনন্দের সাথে উপভোগ করেছি। তাই আজকে আপনাদের মাঝে দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হলাম।শীতের সকলে এই খেজুরের রস খাওয়ার মূহুর্ত গুলো আপনাদেরও রয়েছে।শীতকালে এই খেজুর রস খাওয়া যেনে একটা ঐতিহ্য। আর আমাদের সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়াতে এই খেজুরের রস পাওয়া যায়। শুধু রসই পাওয়া যায় না,সেখানে গাছ থেকে খেজুর রস দিয়ে খেজুর গুড় বানিয়ে বিক্রি করা হয়। সত্যিই এই মুহূর্তগুলো অসাধারণ। তো বন্ধুরা দ্বিতীয় পর্বের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন আমরা খেজুর রস নিয়ে আনন্দময় মুহূর্ত সেই স্মৃতিময় গল্পের কথা।


তো আমরা যখন মোটরসাইকেল নিয়ে এসেই খেজুরের বাগানে পৌঁছালাম। তখন দেখতে পেলাম অনেকেই খেজুর গাছের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। খেজুর গাছের মালিক তারা গাছের পাশেই ছিলো।আমরা বললেই তারা গাছে উঠে খেজুরের রস পেরে দিবে। আমরা এক মালিকের সাথে কথা বললাম, সে বলল আমাদের অনেক গাছ রয়েছে,তবে এই দুটি গাছের খেজুরের রস আপনাদের খেয়ে দেখবেন কতটা মজা হয়। যদি ভাল না হয় তাহলে টাকা দিবেন না।তো আমরা বললাম কত টাকা নিবেন সেটার কথা এখন বলবো না। খেয়ে দেখবো, ভালো লাগলে তারপরে দেখবো।আমার বন্ধুরাও বললো সমস্যা নাই টাকা নিয়ে, কোনো কথা হবেনা। আমরা খেজুর রস খেতে এসেছি আগে খেজুর রস খাবো। যদি ভালো লাগে খুশী হই টাকা দেবো। আমার বন্ধুর কথায় সে গাছে উঠলো এবং খেজুর রস পারল। সত্যিই এভাবে খেজুরের রস আজকে প্রথম খাচ্ছি না, এবার দ্বিতীয় বার।এর আগে এতোটা মজা হয়নি মামার সাথে এসে ছিলাম তাই।তারপর খেজুরের রস পেরে আমাদের গ্লাসে ঢেলে দেওয়া হল। গ্লাসে করে সত্যি বন্ধুরা একসাথে খেজুরের রস খেলাম,আর এই খেজুরের রস মিষ্টি ছিল এর আগে আমি খেজুর রস খেয়েছি এবার খেজুর রস খেয়ে খুবই ভাল লাগল। আমার বন্ধুরা বলল আসলে তো আপনার খেজুর গাছের রসে অন্যরকম স্বাদ পেলাম।


beach-g419ee6eb1_1920.jpg

source

আসলেই খেজুর গাছ এর মালিকের কথার সাথে কাজের মিল রয়েছে। তার খেজুর-গাছের-রস অনেক সুস্বাদু লেগেছিলো। আমরা বন্ধুরা মিলে এই খেজুর রস খেলাম, সত্যিই শীতের মধ্যে আমরা তখন আগুন জ্বালিয়ে চারপাশে বসে,আগুন তাপাতে লাগলাম আর খেজুর রস খাচ্ছিলাম। মুহূর্তটা খুবি ভালো লাগতে ছিলো, যা বলার মতো নয়। আমাদের আসে পাশে দেখি আরো অনেক মানুষ এসেছে। তারা একসাথে খেজুরের রস খাচ্ছে।মুহূর্তগুলো অনেক আনন্দের ছিল। আমার এক বন্ধু বলল আচ্ছা এই খেজুরের রসের কি আমাদের সামনেগিড় বানিয়ে দিতে পারবেন। তখন সে বলল হ্যাঁ অবশ্যই দিতে পারবো। আপনারা একটু সময় দিলেই হবে। আমি বললাম কত সময় সে বললো প্রায় দুই, তিন ঘণ্টার মতো সময় দিলেই হবে। আমরা বন্ধুরা বললাম সমস্যা নাই, আজকে আমরা পুরাই ফ্রী রয়েছি। আমাদের সামনে আপনি গুড় বানিয়ে দেন আমরা সেই দৃশ্য দেখব।


তারপরে সেই মালিকের আরো অনেক গাছে আছে।সেই গাছ গুলো থেকে খেজুর রস পেরে নিয়ে কড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে আগুনের তাপ দিতে লাগলো। খেজুরের রস জ্বাল দিতে যে ধোঁয়া উঠেছিল সেই দৃশ্যগুলো দেখতেছিলাম খুবই ভালো লাগতেসিলো। অনেকক্ষণ জ্বাল দেওয়ার পরে রস গুলো অনেক গাড়ো হল এবং আরও কিছুক্ষণ পরে দেখতে দেখতে আমাদের চোখের সামনেই খেজুরের গুড় তৈরি কলো। প্রায় আড়াই ঘন্টা সময় লেগেছে, তার পরেও যেন বন্ধুদের সাথে অনেক আনন্দঘন মুহূর্ত মধ্যে সেই দৃশ্য উপভোগ করলাম।গাছের থেকে রস পেরে গুড় বানিয়ে নেওয়ার মুহূর্ত গুলো যেন অনেক আনন্দ সাথে উপভোগ করেছি।গুড় বানানো শেষ হলো, তখন খুবই ভালো লাগলো। আর আমরা গুড় খেয়ে দেখলাম, খুবই সুস্বাদু ছিলো এই খেজুরের রসের গুড়।বাজার থেকে কিনে খাওয়া আর চোখের সামনে বানানো গুড় অনেকটায় আলাদা।তারপর চার বন্ধু মিলে খেজুরের রস আর গুড়ের জন্য তিন হাজার টাকা দিলাম।গাছের মালিক খুবি খুশি হলো।


source

bike-g0dd41dd72_1920.jpg

শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার এই মুহূর্তগুলো সত্যিই খুবই ভালো লেগেছে। আমাদের এলাকার প্রায় প্রত্যেকেই এই খেজুরের রস খাওয়ার জন্য এখানে আসে। আমরা বন্ধুরা মিলে এসে খুবই আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করেছি।তারপরে আমরা সেই উল্লাপাড়া থেকে সিরাজগঞ্জ এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। বন্ধুরা মিলে অনেক আনন্দ উপভোগ করলাম। আসলে খেজুর রস খাওয়ার মুহূর্তটা আমরা ঠিক ভাবে উপভোগ করতে পেরেছি,তাই বেশী ভালো লেগেছিলো।আমরা শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার অনুভূতিটা ও স্মৃতিময় দিনটি এখুন খুব মনে পড়ে।বন্ধুদের সাথে নিয়ে এভাবে স্মৃতিময় দিনগুলো আর কখনো ফিরে পাবো কিনা জানি না। হয়তো আবার কোন দিন আসবে কিন্তু কর্মব্যস্ততার কারণে বন্ধুরা আজ অনেক দূরে রয়েছে।


আসলে বন্ধুদের সাথে স্মৃতিময় দিন গুলো কখনো ভুলা যায় না।বন্ধুদের সাথে অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করেছি এবং অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে হৃদয়ের পাতায়।খেজুরের রস খেতে যাওয়ার এই গল্পটি আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আশা করছি আমার আজকের এই গল্পটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে। তো বন্ধুরা আপনারা সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, পরবর্তীতে আবার আপনাদের মাঝে ভিন্ন কোনো পোস্ট নিয়ে হাজির হব, ইনশাল্লাহ।🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 2 years ago 

জী ভাইয়া আপনাদের সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া অনেক পরিচিত। গত বছর এক ভাই আমাকে সেখান থেকে খেজুরের রস আর গুড় এনে দিয়েছিলে। তার বাড়ি সেখানেই। গুড়টা আমার কাছে খুবই ভাল লেগেছে। সে চাকরি ছেড়ে চলে গেছে তাই এবছর আনতে পারছি না। আপনাদের বন্ধুদের অনুভূতি পড়ে অনেক ভাল লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

ছেলেবেলার বন্ধুদের কে তো কখনও ভুলা যায় না। আর বন্ধুদের নিয়ে একসাথে ঘুরতে যাওয়ার মজাই যে আলাদা। আপনি তো দেখছি একবার মামার সাথে আর একবার বন্ধুদের সাথে শীতের খেজুরের রস কিনে খেলেন। আসলে খেজুর রস খাওয়ার মজাই আলাদা। আমি অবশ্য শুনেছি। খাইনি। আপনারা খেজুরের রস খাওয়ার জন্য সেই উল্লাপাড়ায় গেলেন, বাপরে বাপ। খেতে

 2 years ago 

একটু কথা সত্যি বলেছেন বন্ধুদের সাথে স্মৃতিময় ঘটনা সত্যি ভুলে থাকা যায় না কখনো। আমিও কয় দিন আগে আমার বাংলা ব্লগের সদস্য মারুফের সাথে খেজুরের রস খেয়েছি। তবে তা খালাম দীর্ঘদিন পরে। আমাদের বাড়িতে গাছ থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন পশুপাখিতে এই রস পান করে বলে খাওয়া হয় না। আর শীতের দিনে আগুনে হাত পা তাপানোর অনুভূতিটা একদম ছোটকালের বন্ধ হয়ে গেছে। এগুলো আমাদের এখানে প্রচলন বেশি ছিল।‌‌ এখন নেই বললে চলে।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.18
JST 0.032
BTC 86998.67
ETH 3233.80
USDT 1.00
SBD 2.92