স্কুল জীবনের স্মৃতিময় একটি গল্প//পর্ব-৩//শেষ পর্ব||🫣[১০% @shy-fox ]🌹
হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।
বন্ধুদের সাথে হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে স্কুল লাইফে। স্কুল লাইফের স্মৃতি গুলো কখনোই ভোলার নয়। আমার বন্ধুদের সাথে অনেক মজার কিছু ঘটনা রয়েছে। এই স্মৃতি গুলো কখনো ভোলার নয়। এই স্মৃতিগুলো আজও মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। বন্ধুদের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো অনেক আনন্দের ছিল। বিশেষ করে স্কুল লাইফের বন্ধুদের সাথে হাজারো আনন্দময় মুহূর্ত এবং স্মৃতিময় গল্প রয়েছে। আপনাদের সেই স্মৃতিময় গল্প থেকে একটি গল্প শেয়ার করছি। সেই গল্প আজকের তৃতীয় পর্ব বা শেষ পর্ব নিয়ে এসেছি। এই গল্পটি হল আমার বন্ধু হাসান এবং আমি একসাথে আমাদের এসএসসি এডমিট কার্ড হারিয়ে ছিলাম। সেই এডমিট কার্ড পাওয়ার অনুভূতি। সত্যিই এডমিট কার্ড আমাদের জীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যদি এই এডমিট কার্ড না পেতাম তাহলে হয়তো আমরা পরীক্ষা দিতে পারতাম না। তো বন্ধুরা চলুন আজকে শেষ পর্বটি পড়া শুরু করা যাক,,,।
আমরা দুই বন্ধু যখন সিরাজগঞ্জে সিএনজি স্টেশনে আসলাম এবং ইস্টিশনে এসে এডমিট কার্ডের সন্ধান পেলাম না। তখন খুবই খারাপ লাগলো, অনেক চিন্তা হচ্ছিল। এই চিন্তা ভরা মন নিয়ে বাড়ি ফিরলাম। হাসান বাড়িতে গেল না, আমাদের বাড়িতে আসলো এবং আমরা দুই বন্ধু রুমের ভিতর কারো সাথে কোন কথা হচ্ছে না। শুধু একটাই চিন্তা আমরা কিভাবে পরীক্ষা দিব। আমাদের জীবনকে এখানে শেষ হয়ে গেল। খুবই চিন্তা করছিলাম, এমন সময় আমার আম্মা বলছে তোদের স্যার ফোন দিয়েছে। তোদের স্কুলে যেতে বলছে।তোরা স্কুলে নাকি তোদের ব্যাগ রেখে এসেছি। এই কথাটি শুনে অবাক হয়ে গেলাম এবং আমরা তখনই স্কুলের দিকে রওনা দিলাম। স্কুলে গিয়ে দেখি রফিক স্যার আমাদের ক্লাস রুমে ব্যাগটি নিয়ে বসে আছে। সত্যিই ব্যাগটি দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। হাসান তাড়াতাড়ি করে রফিক স্যারের কাছ থেকে ব্যাগটি নিয়ে খুলে আগে এডমিট কার্ড দেখল। তারপর আমরা জিজ্ঞেস করলাম স্যার আমাদের ব্যাগটি এখানে কিভাবে আসলো।
তখন রফিক স্যার আমাদের বলছে তোমরা আগে শান্ত হউ। আমি তোমাদের বিষয়টি বুঝতে পারছি। কিভাবে ব্যাগ হারিয়েছিল এটাও জানতে পেরেছি। আসলে এত উদাসীন হলে চলেনা। সিএনজিতে কোন জিনিস রাখলে সে জিনিসটা নেওয়ার আগে বারবার মনে করতে হবে। আর এটা তোমাদের অনেক মূল্যবান একটি ব্যাগ ছিল। একের ভিতরে এডমিট কার্ড ছিল, এভাবে কেয়ারলেস কিভাবে হলা তোমরা।যদি এই ব্যাগটি ভালো সিএনজি আলার কাছে না পড়ে অন্য কোন মানুষের কাছে পড়তো তাহলে আজ তোমাদের কি হতো। তখন রফিক স্যার বলল বেশি টেনশন করো না। আমি তোমাকে সব খুলে বলছি। কিভাবে ব্যাগটি আমাদের স্কুলে আসলো। তখন আমি বললাম যে আমার এখন বুঝতে পারছি এবং আমরা এটা বুঝতে পেরেছি আমাদের ব্যাগটি হারিয়ে আমরা কতটা কষ্টে ছিলাম।
রফিক স্যার তখন বলল তাহলে তোমরা শোনো কিভাবে ব্যগটি স্কুলে আসলো। তোমরা যে সিএনজিতে উঠসিলে, সেই সিএনজিটা সিরাজগঞ্জ গিয়েছিল এবং সিরাজগঞ্জ থেকে আসার পথে যখন অন্য কেউ উঠলো তখন সে বলল যে ভাইয়া আপনার সিএনজি পিছনে একটি স্কুল ব্যাগ দেখতে পাচ্ছি। তখন সিএনজি ড্রাইভার ব্যাগটি খুললো এবং রহিম সিএনজি ড্রাইভার শিক্ষিত ছিলো।আর সে রফিক স্যারের গ্রামে বসবাস করেন। ব্যাগে এডমিট কার্ড এবং আমাদের স্কুলের নাম দেখে সে ভেবেছে তোমদের এই ব্যাগ।তোমরক দুজনেই এসএসসি পরীক্ষার দিবে।আর এটি এডমিট কার্ড ছিলো। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর মাত্র দু দিন বাকি আছে তারপর এসএসসি পরীক্ষায়। এখনই স্কুলে গিয়ে ব্যাগটি জমা না দিয়ে তোমাদের বড় ক্ষতি হবে।তাই রহিম ভাবলো এখুনি জমা দিতে হবে। আর রহিম আমার পরিচিত ছিলো।তাই স্কুলে এসে আমাকে খুঁজে, বললো স্যার আপনার স্কুলের স্টুডেন এবার এসএসসি পরীক্ষা দিবে। তাদের মধ্যে কোন ছাত্র আমার সিএনজিকে এই ব্যাগ রেখে গিয়েছে এবং এর ভিতরে এডমিট কার্ড রয়েছে। আপনি তাদের সাথে যোগাযোগ করে ব্যাগটি দিয়ে দিয়েন। আমি বললাম রহিম ভাই আপনি খুবই বড় উপকার করলেন। ওই দুইজন খুবই ভালো স্টুডেন্ট এবং আজ তারা বড় বিপদ খেকে বেঁচে গেল এবং আপনি অনেক বড় উপকার করলেন ওদের।আপনার সাথে পরে ওদের পরিচয় করে দিব।
সত্যি সিএনজি ড্রাইভার রহিম ভাইয়ের এই মহৎ কাজের কথা শুনে খুবই ভালো লাগলো। রহিম ভাইয়ের মতো এতো ভালো মানুষ আছে বলেই আজ আমরা বেঁচে গেলাম। রহিম ভাই আমাদের কত বড় একটি উপকার করলেও এটি কখনোই কল্পনা করা যায় না। এই উপকারের মূল্য টাকা দিয়ে হয়না।সত্যিই রহিম ভাই এর উপকারটি সারা জীবন মনে রাখার মতো। আমি স্যারকে বললাম স্যার যেভাবে হোক রহিম ভাইয়ের সাথে আমাদের দেখা করে দিন এবং আমরা কৃতজ্ঞতাবোধ জানাবো। আমাদের রহিম ভাই এর সাথে দেখা করা উচিত। এত বড় একটি মহৎ কাজ করেছে। সে যদি না হতো তাহলে আমাদের যে কি হত সেটি কল্পনা বাইরে। তখন স্যার তখন বলল ঠিক আছে এখন তোমরা তাহলে বাসায় গিয়ে পড়াশোনা করো এবং আমি একদিন সময় করে তোমাদের সাথে রহিম ভাইকে দেখা করিয়ে দেব এবং দরকার হলে তোমাদের সাথে নিয়ে আমি রহিমের বাড়িতে যাব।তখন স্যারকে অনেক ধন্যবাদ দিলাম এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলাম।
আপনার গল্পের আগের পর্বটা আমি পড়েছিলাম। আপনারা এডমিট কার্ড হারিয়ে একেবারে চিন্তায় পড়ে গেলেন। স্যার যখন আপনার আম্মুকে ফোন দিল সত্যিই তখন যেন মনে হয়েছে বেশ ভালো একটা খবর। সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে সিএনজি ওয়ালার কথা শুনে। সত্যিই রফিক সিএনজিওয়ালা না থাকলে যা আপনাদের কি হত। উনি নিজে দায়িত্ব নিয়ে স্যারের কাছে ব্যাগটা স্কুলে এসে পৌঁছে দিল। বেশি ভালোই হয়েছে শেষ পর্যন্ত এডমিট কার্ড পাওয়া গেছে।
আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
আমি চিন্তা করছি ঐ মুহূর্তে আপনাদের মনের অবস্থা কি ছিলো।ভাগ্যিস রহিম ড্রাইভার ভালো ছিলো, বিদায় স্কুলে এসে দিয়ে গিয়েছে যদি না দিত তাহলে কেমন হতো।আসলে কিছু কিছু মানুষের উপকার কখনো টাকা দিয়ে মাপা যায় না।আপনাদোর ভাগ্য ভালো বিদায় এডমিড কার্ডগুলো পেয়েছেন। ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
ঠিক বলেছেন আপু, আপনার এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ