বর্ষাকালে মাছ ধরার স্মৃতিময় গল্প//পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


বর্ষাকালের মুহূর্ত গুলো আমার খুবই ভালো লাগে। বিশেষ করে বর্ষাকালে নৌকায় করে ভ্রমণের সেই স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা আজও মনে পড়ে। আমি যখন বর্ষাকালে মামা বাড়িতে গিয়েছিলাম, আমাদের মামাদের অনেক বড় নৌকা ছিল। এই নৌকায় করে আমরা ভ্রমণ করতাম। আর একদিন এই নৌকায় করে মামার সাথে মাছ ধরতে গিয়েছিলাম। আর এই বর্ষাকালের মাছ ধরার সেই স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা যেন এখনো মনে রয়েছে। আসলে বর্ষাকালে অনেক ঘটনা আমাদের জীবনে ঘটে গেছে। সেই দিনগুলো যেন স্মৃতির পাতায় আজর হয়ে আছে। তাই আজকে আমি আপনাদের মাঝে স্মৃতির পাতা থেকে বর্ষাকালে মাছ ধরার একটি গল্প শেয়ার করতে আসলাম। আশা করছি এই গল্পটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।


fisherman-504098_1280.jpg

source

আমি তখন ক্লাস সেভেনে পড়ি। বর্ষাকালে আমি মামা বাড়িতে গিয়েছিলাম।মামা বাড়িতে গিয়ে দেখতে পেলাম মামা বাড়ি চারপাশের শুধু পানি আর পানি। আর বাড়ির পাশের ঘাটে অনেক নৌকা রয়েছে। প্রতিদিন যেন মামা বাড়ির এই ঘাট থেকে নৌকা নিয়ে নদীতে ভ্রমণ করতে যায় এবং কোথাও যাতায়াত করার জন্য এই নৌকাগুলো ব্যবহার করে। যার কারণে বিকেল বেলায় এই নৌকাতে বসে থাকতাম, আর ছোট নৌকা নিয়ে আমরা ভ্রমন করতাম। সত্যিই সেই দিনগুলো খুবই ভালো লাগতো।একদিন বিকেল বেলা মামা নৌকা নিয়ে যাচ্ছে মাছ ধরতে। আমিও মামার সাথে মাছ ধরতে যেতে চাইলাম। মামা না করল, তবুও শুনলাম না। কারণ এই মাছ ধরার জন্য অনেকখানি পার হতে হয়, সেখানে গিয়ে মামা জাল দিয়ে মাছ ধরে। আমিও মামার সাথে মাছ ধরতে গেলাম। আর মামা অনেক বড় একটি ব্যাগ দিল আমার কাছে এই ব্যাগে করে মাছ নিয়ে আসে। আসলে বর্ষাকালে আগে অনেক মাছ পাওয়া যেত। যার কারণে মামার সাথে নৌকায় করে মাছ ধরার জন্য আমি যাচ্ছিলাম, আমার সাথে আমার মামাতো ভাই ও ছিল। যার কারণে দুই ভাই একসাথে আমরা মাছ ধরতে গেলাম। সেই মুহূর্তগুলো আনন্দের সাথে উপভোগ করতেছিলাম।


মামা নৌকা চালিয়ে আমাদের নিয়ে যাচ্ছিল। আমরা অনেক আনন্দের সাথে উপভোগ করেছিলাম। চারপাশের দৃশ্যগুলো দেখতেছিলাম, শুধু পানি আর পানি এবং অনেক নৌকা চলাচল করতে ছিল। সেই মুহূর্তগুলো আনন্দের সাথে উপভোগ করতেছিলাম। একটুখানি যাওয়ার পরে দেখতে পেলাম অনেকগুলো শাপলা ফুল ফুটে রয়েছে। এই শাপলা ফুল গুলো দেখে আমার খুবই ভালো লাগলো। আমি ফুলগুলো নিতে চাইলাম, মামা বলল ঠিক আছে আমি ফুলগুলো তুলে দিচ্ছি। মামা অনেকগুলো ফুল তুলে দিল আমাদেন আর শাপলা ফুলের এই দৃশ্যগুলো দেখে যেন মন ভরে গেলো।


boat-164977_1280.jpg

source

তারপরে নৌকা চালিয়ে মামা তার জালের কাছে আসলো। আসলে নদীর পারে এই জালটি রয়েছিল। এখানে অনেক স্রোত রয়েছে, স্রোতের মধ্যে এই জালগুলো ফেলে রাখলে মাছ বেশি আসে। যার কারণে এই জাল মাছ উঠেছিল। আর এই জালের নাম ছিল সিপ জাল। আসলে এই জালটা পানির ভিতরে ফেলে রাখতে হয় এবং অনেকক্ষণ পরে জালটা তুলতে হয়। এটার বাঁশ দিয়ে তৈরি করা এবং মাঝখানে সুতার জাল এক দিকে বাঁশ টেনে নিচে নামাতে হয় অন্যদিকে জালটা উপরে ওঠে।তখন মাছ উঠে, কখনো কখনো বড় বড় মাছও পাওয়া যেত। আমরা যখন এই মাছ ধরা জালের কাছে আসলাম, তখন মামা তার ব্যাগ থেকে জালটা বের করে চারটি সিপের সাথে জালটি লাগিয়ে পানির ভিতর রাখল।


এভাবে পানিতে পেতে রাখার পরে মামা ১০-১৫ মিনিট পরপর জাল তুলতে লাগলো। আমরাও মাঝে মাঝে এই জাল তোলার চেষ্টা করতে লাগলাম। তবে জাল তোলা অনেকটাই কষ্ট ছিল। কারণ পানিতে ভিজে থাকে আরও অনেক বড় বাঁশ দিয়ে তৈরি করা যার কারণে টানতে অনেক কষ্ট হয়। আমি আর আমার মামাতো ভাই বসে রইলাম নৌকাতে।মামা মাঝে মাঝে জাল তুলতে ছিল এবং ছোট ছোট অনেক মাছ পাওয়া যাচ্ছিল, তখনই খুবই আনন্দ হচ্ছিল, আসলে এরকম মাঝে মাঝে মাছের ঝাঁক সহ ওঠে তাই আরও বেশি ভালো লাগে।

মামার যে জাল ছিল তারই পাশে অন্য আরেকজনের জাল ছিল। সেটা মামার বন্ধুর, মামার বন্ধু আজকে মাছ ধরতে এসেছে। সেও জাল দিয়ে মাছ ধরছে। তার জালে বড় একটি বোয়াল মাছ ধরা পড়েছে। আসলে এটা নদীর ধারে ছিল আর এই বোয়াল মাছ ধরা পড়াতে সে অনেক খুশি আমরাও অনেক খুশি হলাম। তবে আমার মামাতো ভাই বলতেছিল যদি এই মাছটি আমাদের জালে ধরা পড়তো, তাহলে কতই না ভালো হতো।মামা বলল ধৈর্য ধরো আমাদের জালেও ধরা পড়বে। দেখবে এভাবে আস্তে আস্তে এক সময় অনেক বড় মাছ আমাদের জালে ধরা পড়েছে। এটা ভাগ্যের বিষয়, যার ভাগ্যে মাছ লেখা আছে সে এই জালে মাছ ধরা পড়বেই। তাই আমরা সেই অপেক্ষায় রইলাম, তো বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই আগামী পর্বে বাকি অংশটুকু শেয়ার করবো। আশা করছি সে পর্বের জন্য অপেক্ষা করবেন। 🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 11 months ago 

অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইজান। এ জাতীয় ঘটনাগুলো অতীতের অনেক কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। কারণ গ্রামে বড় হয়েছি তো আমাদের এখানে পুকুরের সংখ্যা বেশি থাকায় বিলের থাকায় মাছ ধরার অনেক স্মৃতি আমাদের রয়েছে। আর কখনো যদি দেখি এমন পোস্ট তখন সেগুলো যেন মনের মধ্যে ভেসে ওঠে।

 11 months ago 

আপনার সুন্দর মন্তব্যের কারণে আমার খুবই ভালো লেগেছে, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 59647.06
ETH 2365.97
USDT 1.00
SBD 2.56