আমাদের প্রত্যেকের জীবনে অনেক স্মৃতিময় গল্প জমা হয়ে রয়েছে। এই স্মৃতিময় গল্পগুলোর কথা মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। আসলে স্মৃতির পাতায় হাজারো দিনের গল্প জমা হয়ে রয়েছে। এই দিনগুলো যেন আমরা পার করে এসেছি। আর এই দিনগুলো এখন আমাদের স্মৃতি হয়ে জমা রয়েছে। আসলে প্রত্যেকটা দিন এবং প্রত্যেকটা সময় আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যে সময় চলে যায় সেই সময় আর আমরা কখনোই ফিরে পাই না। তবে সময় যে চলে যায় সেই সময়টাকে যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারি তাহলে সময়ের পূর্ণতা পায়। আসলে আমাদের গ্রামে অপরূপ সৌন্দর্যময় একটি নদী রয়েছে। এই নদীর পাড়ে হাজারো স্মৃতি বন্ধুদের সাথে আমার রয়েছে। সেই নদীতে পাড়ে আমরা বিকেল হলেই আড্ডা দিতে যেতাম। নদীর পাড়ে গেলে অনেক ভালো লাগতো। আর তখনই একটি দুর্ঘটনা ঘটে যায়। সেটি হল দুটি নৌকা ছুটে চলছিল প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। আর তাদের ধাক্কা লেগে একটি নৌকাটি এই ব্রিজের পাশে ডুবে যায়। যার কারণে আমরা অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। আর স্মৃতিময় এই গল্পটি আপনাদের সাথে শেয়ার করতেছিলাম। আজকে তাই দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে এসেছি। আশা করছি দ্বিতীয় পর্বের গল্প করি আপনাদের ভালো লাগবে।
আসলে প্রতিযোগিতা দিয়ে যে দুটি নৌকা চলছিল,ব্রিজের পাশের একটি ছোট নৌকা ছিল। এই নৌকা দিয়ে মাছ ধরতেছিল। সেই নৌকাটিকে ভালোভাবে সাইট দিতে না পেরে সেই নৌকাকে ধাক্কা লেগে যায়। আর সেই নৌকাটি সাথে সাথে ডুবে যায় এবং এই নৌকাটি ধাক্কা লাগার কারণে এই নৌকা থেকে অনেকেই পানিতে পড়ে যায়। আমরা তাড়াতাড়ি করে এসে এবং বাজারের সবাই এসে ছোট নৌকার মাঝিকে রক্ষা করা হলো। নৌকায় অনেকগুলো মাছ ধরেছিল তার সকল মাছসহ যেন নৌকাটি ডুবে যায় এবং এই নৌকা থেকে যারা যারা পানিতে পড়ে গিয়েছে, অন্য একটি নৌকা ঘাটে থেকে তাড়াতাড়ি নিয়ে এসে তাদেরকে উদ্ধার করতে লাগলাম।
এই নৌকা থেকে অনেকে পানিতে পড়ে যায়। আমরা সকলে এসে উদ্ধার করতে লাগলাম। আসলে বাজারে অনেক বড়রা ছিল। তারা এসে উদ্ধার করল। সবাইকে উদ্ধার করা হলো অনেকেই অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল।তাদেরকে হসপিটালে পাঠানো হলো। আমাদের এখান থেকে সদর হসপিটাল খুব একটা দূরে নয়। যার কারণে সিএনজির মাধ্যমে তিন /চার জন যারা বেশি খারাপ ছিল তাদেরকে হসপিটালে পাঠানো হলো। দুঃখের বিষয় হলো পাঁচ বছরের একটি বাচ্চাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এই বাচ্চাকে খোঁজার জন্য সকলেই যেন ব্যস্ত হয়ে পড়ল এবং মুহুর্তের মধ্যে গ্রামের সব মানুষ চলে আসলো নদীর পাড়ে।শুধু এই বাচ্চাটিকে পাওয়া যাচ্ছিল না। বাচ্চার বাবা মা দুজনই ছিল, তারা নদীর কিনারায় পাগলের মত বসে কান্না করতে লাগলো।
সকলে যেন এই বাচ্চাটিকে খোঁজার জন্য পানিতে নেমে পরলো। ইতিমধ্যে পুলিশকে খবর দেওয়া হল। পুলিশে চলে আসলো এবং ডুবরিরাও আসলো। তারা এই বাচ্চাটিকে উদ্ধার করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে লাগলো। আর নৌকার দুই মাঝিকে যেন গ্রামের মানুষ ধরে রাখল ওরাই তো এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। কিসের জন্য প্রতিযোগিতা দিতে হবে। নৌকা নিয়ে আস্তে আস্তে নদীতে চলবে হতো। এমনিতেই নদীতে নৌকা চলাচল করার বিপদের মতো, হঠাৎ কখন দুর্ঘটনা ঘটে যায় তারপরে এরা প্রতিযোগিতা দিয়েছে।আমাদের গ্রামের মানুষ তো অনেক রেগে রয়েছে,এই নৌকার মাঝির উপরে। তারা নৌকার মাঝিকে ধরে মারবেই কারণ তারা প্রতিযোগিতা দিয়েছে যাদের কারণে এত বড় একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু গ্রামের চেয়ারম্যান তাদেরকে মারতে দিল না। তাদেরকে নিয়ে ইউনিয়ন বোর্ডে রেখে দিল। ইউনিয়ন পরিষদে তাদেরকে বলল আপনারা এখানে থাকুন আগে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করা হোক। তাহলে আপনাদের একটা কিছু ব্যবস্থা করব। তবে তাদেরকে বলা হলো আপনারা দোয়া করতে থাকুন যাতে এই বাচ্চাটি সুস্থভাবে আমরা পাই। তাহলে আপনাদের অনেকটাই ক্ষমা করা হবে।
ডুবুরিরা এই বাচ্চাটিকে উদ্ধার করার জন্য পানিতে ডুব দিচ্ছিল এবং প্রায় বিশ মিনিট পার হয়ে গেল তারপরে বাচ্চাটিকে পাওয়া যাচ্ছিল না। নৌকার নিয়ে অনেকেই যেন এই নদীর আশেপাশে খোঁজ করতেছিল। মাঝেমধ্যে জেলেরা ঝাল দিয়ে এই বাচ্চাটিকে পাওয়ার জন্য চেষ্টা করতেছিল। আসলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছিল আর গ্রামের সবাই যেন এই ব্রিজের উপরে আর নদীর পাড়ে এসে জমা হয়ে রয়েছে। এই বাচ্চাটিকে উদ্ধার দেখবে বলে। আসলে গ্রামে তখন একটা অন্যরকম মুহূর্ত উপভোগ করতে ছিল। সবাই সবাই দোয়া করতে ছিল, যেন আল্লাহতালা বাচ্চাটিকে সুস্থভাবে ফিরিয়ে দেয়।