শীতকালে বন্ধুদের সাথে ভ্রমণের স্মৃতিময় গল্প//পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


আমাদের জীবনে অনেক স্মৃতিময় গল্প রয়েছে। আসলে জীবনে অনেক ঘটনা আমরা পার করে এসেছি। তবে স্কুল জীবনের ঘটনা গুলো আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে কারণ স্কুল জীবনে বন্ধুদের সাথে অনেক মুহূর্ত আমরা উপভোগ করেছি আর সেই মুহূর্তগুলো ছিল অসাধারণ, কারণ আমার স্কুল জীবনের মুহূর্তগুলোর ভিতরে কোন চাপ ছিল না পড়াশোনা আর বন্ধুদের সাথে আড্ডা নিয়েই যেন মেতে ছিলাম। বাড়তি কোন ঝামেলা ছিল না যার কারণে আমার মনে হয় প্রত্যেকটা মানুষের স্কুল জীবনের পাঁচটি বছর সবচাইতে আনন্দময় ছিল। তাই আজকে আমি আপনাদের সাথে স্কুল জীবনে বন্ধুদের সাথে শীতকালে ভ্রমণ করার, একটি গল্প নিয়ে এসেছি। আর এই গল্পটি পড়ে আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে, তো বন্ধুরা চলুন গল্পটির প্রথম পর্ব করা শুরু করা যাক।


winter-3197686_1280.jpg

source

তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি, আর তখন ছিল ফেব্রুয়ারি মাস। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ আমরা ঠিক করলাম আমরা ইকো পার্কে ভ্রমণ করতে যাবো।আসলে যমুনা নদীর পাড়ে এই ইকোপার্ক আর যমুনা সেতুর পাশেই এই ইকোপার্ক ওখানে গেলে যমুনা সেতু ও ইকোপার্কের অপরূপ সুন্দর দৃশ্যগুলো উপভোগ করতে পারব। আসলে জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মাসে আমাদের পড়াশোনার কোনো চাপ ছিল না। যার কারণে বন্ধুদের সাথে এই মাস দুটি অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করা যায়। তাই বন্ধুরা মিলে ঠিক করলাম আমরা একদিন ইকোপার্কে যাবো সাইকেল চালিয়ে। আসলে সাইকেল চালিয়ে যেতে তখন খুবই ভালো লাগতো। আমাদের প্রত্যেকেরই সাইকেল ছিল যার কারণে বন্ধুরা মিলে ঠিক করলাম সাইকেল চালিয়েই যাবো।


ইকো পার্কে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আমরা একদিন স্কুল থেকে একসাথে বের হলাম। তখন দশটা বাজে, আর এই দশটার সময় আমরা বন্ধুরা মিলে ইকো পার্কের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আমাদের স্কুল থেকে ইকো পার্কে যেতে ৪৫ মিনিট সময় লাগে। সাইকেলে করে এর আগে আমার কয়েকজন বন্ধু গিয়েছিলো। যার কারণে ওদের কাছ থেকে অনেক ধারণা নিয়েছিলাম। তাই আমরা সকাল দশটায় যাত্রা শুরু করলাম আসলে সেদিন ছিল প্রচন্ড কুয়াশা। সূর্যের কোন দেখা পাচ্ছিলাম না। যার কারণে যেতে অনেক কষ্ট হচ্ছিল। আমরা যখন ২০ মিনিটের মতো সাইকেল চালিয়ে এলাম তখন আমাদের হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসলো। তখন আমরা বন্ধুরা মিলে নিয়ে রাস্তার পাশে অনেকগুলো গাছের পাতা জোগাড় করে আগুন জ্বালিয়ে বসে ছিলাম কিছু সময়। সেই মুহূর্তগুলো অনেক আনন্দেরও ছিল।


cyclist-4910488_1280.jpg

source

তারপরে কিছুক্ষণ পরে আবারো আমরা সাইকেলে করে যাত্রা শুরু করলাম। আসলে শীতের কারণে আমরা বেশি স্পিডে সাইকেল চালাচ্ছিলাম না। আমরা আস্তে আস্তে যাচ্ছিলাম। তবে অনেক আনন্দের সাথে বন্ধুরা মিলে যাচ্ছিলাম। রাস্তাঘাটে তেমন গাড়ি ছিল না, যার কারণে বেশি ভালো হয়েছিল। বন্ধুদের সাথে গল্প করতে করতে আমরা এই ইকো পার্কের কাছাকাছি আসলাম। আসলে অন্যদের ৪৫ মিনিট সময় লাগলেও আমাদের এক ঘন্টা ২০ মিনিট সময় লেগেছে। কারণ আমরা অনেক আস্তে ও রাস্তা দেরি করে এসেছি।গেট এসে দেখি টিকেট কাটকে হবে ১০ টাকা মূল্য ছিলো। তখন আমরা বললাম আমরা স্টুডেন্ট আমরা আজকে প্রথম এসেছি। তাহলে তোমাদের জন্য হাফ। তোমরা অর্ধেক টাকা দাও আসলে সিরাজগঞ্জের ইকোপার্কে ছিল সরকারি। পার্কের ভিতরে অনেক সরকারি সম্পত্তি এবং অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিস রয়েছে। বিশেষ করে এখানে অনেক পশুপাখির ভিতরে রয়েছে। আমরা তাই দেখার জন্য এসেছিলাম।


তারপরে আমরা বন্ধুরা মিলে সবাই পার্কে ভিতরে আসলাম। এবং আমাদের পাঁচজনের পাঁচটি সাইকেল এই গেটের আংকেল বললো এখানে রেখে যাওয়া কোন সমস্যা হবে না। আমরা একসাথে সাইকেলগুলো রেখে ভিতরে ঢুকতে লাগলাম। আর ভিতরে ঢুকে আমার খুবই ভালো লাগলো, কারণ সবুজ প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যময় দৃশ্য রয়েছে পার্কের ভিতরে হাজার হাজার ধরনের গাছ রয়েছে। বিশেষ করে এই পুরনো গাছগুলো দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। তারপরে আমি দেখতে পেলাম রাস্তার পাশে বড় একটি খাঁচা রয়েছে। এই খাঁচার ভিতর অনেকগুলো পাখি রয়েছে এবং আরো একটু সামনে গিয়ে দেখতে পেলাম একটি বিশাল বড় খাঁচার ভিতর অনেকগুলো বানর রয়েছে। খাঁচার ভিতর অনেক জায়গা রয়েছে যার কারণে এই বানরগুলোর খেলাধুলার দৃশ্য আমি ভালোভাবে দেখতে লাগলাম।


এই বানরের কাছাকাছি এসে আমরা অনেক দৃশ্য দেখতে পেলাম। আসলে বানরের লাফালাফি দৃশ্যগুলো দেখতে খুবই ভালো লাগতেছিলো। আমার বন্ধু সাজুর পাউরুটি খাওয়া ছিলো ও পাউরুটি কিনে এনেছিলো। আর সাজুর মাথায় ছিল শীতের একটি টুপি। খাঁচার কাছে দাঁড়িয়ে ফটোগ্রাফি করতেছিল, আসলে সুজনের একটি ছোট মোবাইল ছিল। সেই মোবাইলে আমরা ফটোগ্রাফি করতেছিলাম।সাজু খাঁচার সাথে ফটো উঠতে ছিলো। তখন একটি বান্দর কোথা থেকে এসে যেন সাজুর মাথা থেকে শীতের এই টুপিটি নিয়ে লাফ দিয়ে অন্যদিকে চলে গেল। তখন আমরা অনেক হাসাহাসি করতে ছিলাম। আর কিভাবে এই টুপি পাওয়া যায় সেটাই অপেক্ষা করতেছিলাম। তো বন্ধুরা আজকে এ পর্যন্তই পরবর্তী অংশে আপনাদের সাথে বাকি গল্পটুকু শেয়ার করবে ইনশাআল্লাহ।
🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 6 months ago 

শীতকাল মানেই ঘুরতে যাওয়ার আনন্দ।আর স্কুল জীবনের এই পাঁচটি বছর সবার জীবনেই স্মরণীয়।টুপি হারানোর গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো।আপনারা বন্ধুরা মিলে দারুণ সময় পার করেছেন,ধন্যবাদ ভাইয়া।

 6 months ago 

এত সুন্দর মন্তব্য করে আমাকে উৎসাহিত করেছেন, সেজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ

 6 months ago 

আসলে শীতকালে বন্ধুদের সাথে নিয়ে সাইকেল চালিয়ে পার্কে যাওয়ার মুহূর্ত অসাধারন ছিল। আপনারাও কয়েক বন্ধু মিলে খুবই দারুণ মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। তবে আপনার বন্ধুর শীতের টুপিটা বানর নিয়ে গেছে। পরবর্তী অংশে কি হয় সেই অংশ পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

 6 months ago 

আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57893.29
ETH 3130.56
USDT 1.00
SBD 2.44