বাবার সাথে শসা বিক্রি করতে যাওয়ার স্মৃতিময় গল্প //পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার জীবনে ঘটে যাওয়া স্মৃতির পাতায় থেকে একটি গল্প শেয়ার করতে এসেছি। আর এই গল্পটি আমার বাবার সাথে, আসলে স্মৃতির পাতায় এই গল্পগুলো যেন বারবার আমাদের মনে করে দেয় সেই পুরনো দিনের কথা। আসলে পুরনো দিনগুলোর কথা মনে করতে পেরে যেন খুবই ভালো লাগে। কারণ পুরনো দিনগুলো যেন অনেক আনন্দ এবং সুখের ছিল।তাই বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করছি, বাবার সাথে শসা বিক্রি করতে হাঁটে গিয়েছিলাম, এই হাঁটে গিয়ে ঘটে যায় একে দুর্ঘটনা। তো বন্ধুরা আশা করছি এই স্মৃতির পাতায় গল্পটি পড়ে আপনাদেরও ভালো লাগবে। আসলে বাবার সাথে আমাদের জীবনের অনেক গল্পই যেন রয়ে গেছে। এই গল্পগুলোই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরেও যেন অনেক ভালো লাগে।


father-and-son-2258681_1280.jpg

source

আমি তখন ক্লাস ফোরে পড়ি।আর বাবার সাথে আমি কোথাও যেতে খুবই ভালবাসতামম কারণ বাবা যদি হাঁটে কিংবা বাজারে যেত আমি বাবার পিছে পিছে যেতাম। বাবাকে আমাকে খুবই ভালবাসতো।আসলে প্রত্যেকটা বাবায় তার সন্তানকে খুবই ভালোবাসি এবং আগলে রাখে। বাবা আমাকে কখনোই মারেনি আসলে ছোট থেকে বড় হয়েছি আজ পর্যন্ত কখনো বাবার হাতে মার খেয়েছি এটা আমার আজও মনে পড়ে না। তবে মার কাছে অনেক মার খেয়েছি।যাইহোক বাবার কাছে অনেক আবদার করতাম। বাবা কখনোই আবদার ফেলে দিত না। আমাদের ফসলের জমি রয়েছে । এই ফসলের জমিতে একবার শসার চাষাবাদ করেছিলো। আর এই শসা অনেকদিন হয়েছিলো। যার কারণে কয়েকজনকে সাথে নিয়ে এই শশা তোলা হয়েছে এবং শসা ভ্যানে করে যেন বাজারে নিয়ে যেতে হয়। আর এগুলোকে পাইকারি বিক্রি করতে হয় সকাল বেলা।যার কারণে খুব ভরে যেতে হয় তাই আমি বাবার সাথে এই শসা বিক্রি করতে হাটে যাওয়ার জন্য বায়না করলাম। বাবা না করল তারপরে শুনলাম না।


তখন আমাদের গ্রামের ফসলিলের জমিতে অনেকেই চাষাবাদ করেছে। যার কারণে এই শসা দেওয়ার জন্য মানে পাহারা দেওয়ার জন্য যখন অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করত। আমরা এসে বিকেলবেলা পাহারা দিতাম। যাতে অন্য কেউ এসে শসা না তুলতো এবং কোন পশু পাখি সে না খেতো। তাই একদিন বাবার সাথে এই শসা বিক্রি করার জন্য যেন বারবার মন যেতে চাচ্ছিল। তাই ভোরবেলা বাবা যখন ভ্যানে করে শসা গুলো তুলেছিল তখন বাবার সাথে বায়না করলাম। যার কারণে বাবা আমাকে সাথে নিয়ে ভোরবেলা এই শসা বিক্রি করার জন্য হাটের দিকে রওনা দিল। আর আমি আনন্দের সাথে বাবার সাথে সেই হাটের দিকে যেতে লাগলাম।


father-79456_1280.jpg

source

ভোরবেলা অনেকেই এই ভ্যানে করে যেন শসা নিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিল। আসলে ভ্যানে করে শসক নেওয়ার পরে আমাদের গ্রাম থেকে হাটে যেতে একটি নদী রয়েছে। এই নদী পারাপারের জন্য তখন ব্রিজ ছিল না। যার কারণে নৌকায় করে পারাপার হতে হয়। আমাদের ভ্যান আস্তে আস্তে এই নৌকায় তোলা হলো এবং আরো কয়েকজনের ভ্যান একসাথে তোলা হলো।নদী পারাপার হতে অনেকগুলো মানুষ একসাথে হতে হয়। তারপরে এই নৌকা গুলো ছাড়ে। কারণ দুটি নৌকা একসাথে যেন পারাপারের জন্য যৌথভাবে তারা বেঁধে রেখেছে। উপরে রয়েছে বাঁশেরচাটা আ,র সকল ভ্যান এবং মানুষ একসাথে যখন জড় হল তখনই এই নৌকাটি নদী পারাপারের জন্য রওনা দিল। আসলে সেই মুহূর্তটা আমার খুবই ভালো লেগেছে। আসলে এভাবে কখনো পারাপার হয়নি। তাই আমি বাবার হাত ধরে নদী পার হচ্ছিলাম। আর বাবা আমাকে নদীর এই সুন্দর আশেপাশের দৃশ্যগুলো হাত দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছিল।


নদীর এই সৌন্দর্যময় দৃশ্যগুলো দেখতে দেখতে নৌকা পার হলো এবং নৌকার এই পার হওয়ার পরেই সকলেই যেন এই ভ্যান গুলো উপরে উঠিয়ে দিল। তারপর আমরা আস্তে আস্তে আসলাম এবং বাবা বলল যে ওই দেখো কত মানুষের ভিড় ওখানেই যেন হাট। আমরা ওখানে যাচ্ছি। আসলে হাটে আমি এভাবে কখন আসিনি। বিশেষ করে এই ভোরবেলা শসা বিক্রি করার জন্য।এই দিনের কখনো আসা হয়নি। তবে সেই দিনগুলো ছিল শীতের দিন। শীতের দিনে এই ভোরবেলা শসা বিক্রি করতে আসার এই মুহূর্তটা আমার কাছে কষ্টকর হলেও বাবার সাথে ছিলাম যার কারণে অনেক ভালো লাগতেছিল।

তারপরে আমরা হাঁটে আসলাম। হাঁটে এসে দেখতে পেলাম শাড়ি বেঁধে যেন অনেক মানুষ এই শসা নিয়ে এসেছে। আসলে এত শসা হাটে উঠে তা আমি কখনোই কল্পনা করিনি। আমাদের ভ্যান থেকে সকল শসা নামানো হলো। আর এত শসা দেখে আমি বাবাকে বললাম আমাদের শশা কি বিক্রি হবে। সবাই শসাই বিক্রি হবে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যাপারী আসবে সে এসে সব বস্তা বস্তা কিনে নিবে যাবে। তো বন্ধুরা আজকে এখানেই শেষ করছি, আগামী পর্বে আপনাদের সাথে বাকি অংশটুকু শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ।🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 9 months ago 

খুব ভালো লাগলো আপনার বাবার সাথে শশা বিক্রির সৃতিচারণ গুলো।বাবা আপনাকে খুব ভালো বাসতেন আসলে সব বাবাই সন্তানকে ভালোবাসে আর মা শাসন করে থাকে।আপনার হাটে শশা নিয়ে যাওয়া এবং নৌকা পাড় হয়ে হাটে যাওয়ার সৃতিচারণ অসাধারণ হয়েছে ভাইয়া।ধন্যবাদ ছোটবেলার সৃতিচারণ করে পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

 9 months ago 

ভাইয়া আপনার ছোটবেলার স্মৃতির সাথে আমার ছোটবেলার স্মৃতি একদম মিলে গিয়েছে। আপনার বাবা গিয়েছেন শসা বিক্রি করতে আর আমার বাবা গিয়েছিল কাঁচামরিচ বিক্রি করতে। আমি তখন খুব ছোট ছিলাম হয়তো ক্লাস ওয়ানে পড়ি তারজন্য আমিও হাটে যাবো বলে বায়না করেছিলাম আর বাবাও ফেলতে পারেনি। আমার মনে আছে সেদিন বাবা আমাকে লাল টুকটুকে জামা কিনে দিয়েছিল। আমাদেরও এমন নৌকায় করে নদী পাড় হতে হয়েছিল। ধন্যবাদ ভাইয়া এভাবে ছোটবেলার স্মৃতি মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 58560.83
ETH 2491.85
USDT 1.00
SBD 2.40