স্রষ্টা সৃষ্টি এবং আমাদের অবস্থান

শুভ সন্ধ্যা,

"আমার বাংলা ব্লগ" এর সকল সদস্যদের প্রতি আমার আন্তরিক সালাম জ্ঞাপন করছি-আসসালামু আলাইকুম। আশা করি
মহান আল্লাহর তায়ালার রহমতে সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি যে বিষয়টি নিয়ে আলোকপাত করেছি সেটি হলো-"স্রষ্টা সৃষ্টি এবং আমাদের অবস্থান" আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

alex-hockett-GiP2H_SKh7E-unsplash.jpg

Image Source by Unplash

ধরার বুকে পা ফেলেই মানব শিশু সর্বপ্রথম অপরিচিত পরিবেশের মুখোমুখি হয়ে ভয়ে চিৎকার করে উঠে। কিন্ত অল্প সময়ের মধ্যেই রুপময় এই পৃথিবীর সুষমাদর্শনে তার সব ভয় বিস্ময়ে পরিণত হয়। অবাক চোখে সে তার পারিপার্শ্বিককে অবলোকন করতে থাকে দিনের পর দিন। তার এই বিস্ময় ক্রমে কৌতুহলে পরিণত হয়। ফলে তার মনে জাগে এক অনন্ত জিজ্ঞাসা- সুন্দর এই বিশ্বের আদি কোথায়? এটা কি এমনিতেই সৃষ্টি হয়েছে? নাকি এর পেছনে কোনো স্রস্টার অবস্থিতি রয়েছে? সুন্দর এই জগতে বিচরনকারী জীবকগতই বা এলো কোথা থেকে? মানুষ তার এই জিজ্ঞাসার উত্তর দুইভাবে পেতে পারে। প্রথমত, তার চেয়ে বয়স্ক অবিভাবকদের জিজ্ঞাসা করে। দ্বিতীয়ত,নিজে নিজেই এর চেষ্টা করে। সাধারণত, শিশুরা প্রথম পন্থা বেছে নেয়; আর বয়স্করা নেয় দ্বিতীয়টি।

guillermo-ferla-lLExhYl-cXQ-unsplash.jpg

Image Source Unplash

বিশ্বজগৎ ঈশ্বরের সৃষ্ট,না প্রাকৃতিক শক্তির স্বাভাবিক পরিণতি, না বিশ্বজগতের যাবতীয় বস্তুর ক্রম -পরিবর্তন যান্ত্রিক নিয়মের দাস, না বিশ্বজগতের যাবতীয় বস্তুর ক্রম-পরিবর্তনের আড়ালে কোনো উদ্দেশ্য বা
বুদ্ধিময় সত্তা রয়েছে। এ নিয়ে দর্শনের ইতিহাসে বিভিন্ন মত পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। সৃষ্টিবাদ অনুসারে খোদা বা ঈশ্বর জগতের স্রষ্টা। খোদা বা ঈশ্বর কোনো বিশেষ মুহুর্তে নিজ ইচ্ছায় জগত ও জাগতিক বস্ত সৃষ্টি করেন।
বিবর্তনবাদ অনুসারে ক্রম-পরিবর্তন জগতের রীতি ও প্রধান বৈশিষ্ট। এই ক্রম-পরিবর্তনের ফলেই পুরাতনের
বিলোপ এবং নতুনের আবির্ভাব ঘটে।
মহান সৃষ্টিকর্তান সৃষ্টি আমার ধারনার বাহিরে। তার সৃষ্টি যে কত বিশাল তা আমরা মানবজাতি খুব কমই জানতে পেরেছি। প্রথমে আসি সৌরমন্ডলের কথায়,
সৌরমন্ডলের কেন্দ্রে রয়েছে একমাত্র নক্ষত্র সূর্য-তাকে প্রদক্ষিন করে চলেছে ৮ টি গ্রহ এবং তাদের ১৬৬ টি উপগ্রহ।গ্রহগুলি যথাক্রমে-বুধ,শুক্র,পৃথিবী,মঙল,বৃহঃস্পতি,শনি, ইউরেনাস,নেপচুন।

এবার শুরু করি পৃথিবী থেকে।

চাঁদ আমাদের পৃথিবীর থেকে অনেক ছোট।

nasa-vhSz50AaFAs-unsplash.jpg
Image Source by unplash and some editing me

Image Source by unplash and some editing me

তারপর আছে মার্কিউরি এটি চাঁদের থেকে অনেক বড়

nasa-71W3CWeZF7A-unsplash.jpg
Image Source by unplash

তারপর আছে ভেনাস যা পৃথিবীর থেকে একটু ছোট

nasa-88BMUbQHGlQ-unsplash.jpg
Image Source by unplash

তারপর আছে মঙ্গলগ্রহ,এই লাল গ্রহ সম্পর্কে আমরা মোটামুটি সবাই জানি।

nasa-N3BQHYOVq5E-unsplash.jpg

Image Source unplash

তারপর আছে বৃহস্পতি যা পৃথিবীর থেকে অনেক অনেক গুন বড়

nasa-0DjOJ6Q8wUs-unsplash.jpg
Image Source by unplash

আর তার সাথে আছে শনি এটিও পৃথিবীর থেকে অনেকগুন বড়। এছাড়াও আছে বৃহঃস্পতি ও শনির দুটি উপগ্রহ-টাইটেন এবং গ্যানিমেড।

nasa-2W-QWAC0mzI-unsplash.jpg

Image Source by unplash

এছাড়াও আছে অনেক গ্রহ, অনেক উপগ্রহ। সবকিছুর থেকেও শত শত গুন বড় ,হ্যা সবকিছুর থেকে বড়-আমাদের সূর্য।

nasa-JHyiw_dpALk-unsplash.jpg
Image Source by unplash

আবার সূর্যের থেকেও অনেকগুনে বড় হচ্ছে"সাইরাস" যা একটি নক্ষত্র

এরপর আছে "ভেগা" যা সাইরাস এর থেকেও অনেকগুন বড়

#এসব এর থেকেও অনেক অনেক গুন বড় "আরকেট্রাস"

এবং আরকেট্রাস এর থেকেও একটি বড় তারা "রেজাল"

যেটাকে ব্লু সুপার জায়েন্ট ও বলা হয়

এবং "রেজেল" এর থেকে অনেকগুন বড় "বেটেল গিউস"

বেটেল গিউস এর থেকেও লক্ষ গুন বড় "ক্যানিস মেজনিস"

আর একটা হচ্ছে মানুষের দ্বাড়া খুজে পাওয়া সবচেয়ে বড় নক্ষত্র "ইউ ওয়া এ স্কুটি"

যা সূর্যের থেকে কোটি কোটি গুন বড়

এরপর আমি যা দেখাবো তা দেখে হয়তো বা আপনারা অনেক অবাক হবেন।
এরপর হয়তো আপনি ভাবতে বাধ্য হবেন যে-আমরা মানুষ জাতি কি?
এখন যে দৃশ্যটি দেখতে পাচ্ছেন এখানে লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি তারা রয়েছে। যেসব গ্রহ উপগ্রহ কোটি গুন বড় তারা দেখিয়েছি, এমন তারা এখানে কোটি কোটি রয়েছে। যা আমাদের গ্যালাক্সির মধ্যে রয়েছে,আর লক্ষ কোটি তাড়া সবাই নিজের নিজের জায়গায় রয়েছে। এবং এ লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি গ্রহ, উপগ্রহ,তারা নিয়ে তৈরী আমাদের গ্যালাক্সি। যা হচ্ছে আমাদের আকাশগঙা।

এটি হচ্ছে আমাদের আকাশগঙা,গ্যালাক্সি বা আমাদের মিল্কিওয়ে

এর সীমা অপার

guillermo-ferla-kEEl9csCutg-unsplash.jpg

আর মিল্কিওয়ের মধ্যে ১ কোটি ভাগের এক ভাগ, মানুষ আজ অব্দি
মহাকাশের এতটুকু এক্সপ্লোর করতে পেরেছে। যা আমাদের মিল্কিওয়ের কাছে শুধুমাত্র একটি বিন্দু। যার এক প্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তের দুরতে প্রায় এক লক্ষ আলোকবর্ষ। যেখানে রয়েছে ১০০ বিলিয়নের ও বেশি নক্ষত্র এবং গ্রহ। যা আমাদের পৃথিবীতে সমুদ্রের ধারে এবং নদীর ধারে যত বালুকণা রয়েছে তার চেয়েও কোটি কোটি গুন বেশি।

এছাড়াও আমাদের মিল্কিওয়ের পাশেই রয়েছে আর একটি মিল্কিওয়ে বা গ্যালাক্সি যা আমাদের মিল্কিওয়ের থেকে ৪ গুন বড়। কাছে বল্লেও এটি আমাদের লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে।

guillermo-ferla-YM-jlUioGRc-unsplash.jpg

Image Source by unplash

না জানি এমন কত আকাশগঙ্গা বা মিল্কিওয়ে রয়েছে আমাদের ইউনিভার্সে। এসব গ্যালাক্সি মিলে যা হয় সেটিই হচ্ছে আমাদের ব্রহ্মাণ্ড। এটিই হচ্ছে আমাদের ব্রহ্মাণ্ড, যার ভেতর বিলিয়ন বিলিয়ন গ্যালাক্সি রয়েছে।

graham-holtshausen-fUnfEz3VLv4-unsplash.jpg
Image Source by unplash

আর সবশেষে আমাদের ব্রহ্মাণ্ড দেখতে এরকম

guillermo-ferla-Oze6U2m1oYU-unsplash (1).jpg

Image Source by unplash

না জানি এরকম কত কোটি কোটি ব্রহ্মাণ্ড বা ইউনিভার্স বা মিল্কিওয়ে বা গ্যালাক্সি রয়েছে যা মানুষের চিন্তাভাবনার বাইরে।

এর আয়তন যদি মাপতে হয় তাহলে যতগুলি শূন্য ব্যবহার করতে হবে,শুধু মাত্র এই শূন্যগুলি গুনতে গুনতে মানুষের জীবন পার হয়ে যাবে।

সেকেন্ডের গতিতে সবকিছু সম্ভব। মানুষের এতটুকু মস্তিষ্কে যা কোনোদিন ঢুকবে না। যাকে বলা হয় "প্যারালাল ইউনিভার্স"।
অসীম
না জানি এমন কত প্যারালাল ইউনিভার্স রয়েছে,যা মানুষ কোনোদিন কল্পনা করতে পারবে না।

nasa-rTZW4f02zY8-unsplash.jpg

Image Source by unplash

তাহলে বুঝতে পারছেন বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মাঝে পৃথিবীর জায়গা কোথায়? আপনার জায়গা কোথায় আর আমার জায়গা কোথায়?
আর আমাদের এই ক্ষুদ্র মস্তিস্ক দিয়ে যেটুকু বিচার করি সেটাকেই ভাবি ঠিক। এখন যদি বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের কাছে আমাদের পৃথিবী এমনকি আমাদের মিল্কিওয়ে বা সৌরমন্ডল ও যদি ধবংস হয়ে যায় তাহলে কারও কোনো যায় আসে না। লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরে যদিও কেউ রয়েছে তাহলে কেউ জানতে পারবে না। এবার বুঝতে পারছেন তো যেখানে আমাদের কোনো অস্তিত্বই নেই, সেটাতেই আমরা বর্ন,জাতি,বিশ্বাস-অবিশ্বাস,নিজের তৈরী ফিলোসফি,আইকিউলোজী নিয়ে মরি। আমরা এসেছি পৃথিবীতে দুদিনের জন্য এবং তারপরই চলে যাবো। কিছুদিন পর আমাদের স্মৃতিও মুছে যাবে।আমরা যেমন একটী পিঁপড়া কে তুচ্ছ মনে করি, মহাবিশ্ব হয়তো বা আমাদেরকে নিয়েও ওরকমি ভাবে। আমরা বলে থাকি এসব আল্লাহর তৈরী, আমরা জানি সবই, একবার ও ভেবে দেখেছেন আল্লাহ তাহলে কত মহান? আমাদের এই ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে আমরা অল্পতেই নিজের ভেতর অহংকার পোষন করি, আসলেও কি আমরা অহংকার এর যোগ্য? মতামত জানতে চাই "আমার বাংলা ব্লগ" এর সকল সদদ্যের ।

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  
 4 years ago 
ধরার বুকে পা ফেলেই মানব শিশু সর্বপ্রথম অপরিচিত পরিবেশের মুখোমুখি হয়ে ভয়ে চিৎকার করে উঠে।

আপনার প্রথম লাইনেই আমি অবাক! আগে আমার এই কারণটা জানা ছিল না! আপনার কাছ থেকেই প্রথম জানতে পারলাম!

এরপর পুরো ব্লগ্টি আপনি অনেক সুন্দরভাবে সাজিয়েছেন। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মাঝে আমাদের অবস্থান নিতান্তই একটি ক্ষুদ্র অনুজীবের মত। হয়তো অণুজীবের থেকেও আরো অনেক ছোট হতে পারে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো।

 4 years ago 

কি অসাধারণ চমৎকার ভাবে কত এতগুলা তথ্য লেখা লিখেছেন।আপনার তারিফ না করে উপায় কি বলেন।এভাবেই চালিয়ে জান ভাই আমরা আপনর কাছ থেকে অনেক কিছুই শিখতে পারবো।অনেক অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।🥰🤟

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 4 years ago 

আপনি অনেক সুন্দর করে মহাবিশ্বকে তুলে ধরেছেন। আপনার পোস্টে অনেক কিছু জানার আছে। অনেক কিছু জানলাম তবে মার্কডাউন আমার কাছে খুব এলোমেলো লাগল। আশা করি এই বিষয়টি উপর গুরুত্ব দিবেন। ধন্যবাদ

মার্কডাউন এর ব্যাপার টা আমি পরবর্তী সময়ে ঠিক করে নিবো। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

অসাধারণ লিখেছেন ভাই

এগিয়ে জান
ভালো কিছু আসবে।

সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই, দোয়া রাখবেন।

 4 years ago 

আপনি শিশুর জন্ম থেকে শুরু করে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সম্পর্কে খুব সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।অনেক তথ্য জানতে পারলাম।ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.09
TRX 0.29
JST 0.036
BTC 102308.62
ETH 3385.02
USDT 1.00
SBD 0.53