গোলামি আমাদের রক্তে,কেন? (10% beneficiaries for @shy-fox)
প্রিয় বন্ধুরা,
"আমার বাংলা ব্লগ" এর সকল সদস্যদের জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সালাম-আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই ভালো আছেন ইনশাল্লাহ, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকের যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি তা এক চরম বাস্তবতা। গোলামি যেখানে আমাদের রক্তে সেখানে আত্মসম্মান থাকা টা বিলাসিতার মতো লাগে। নিছকি আমরা আত্মসম্মান আছে বলে বয়ান দিতে থাকি।আমি আসলে উক্ত বিষয়ে খুবই মর্মাহত হয়েই আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি বিষয় টা। চলুন শুরু করা যাক...
গোলামি আমাদের রক্তে মিশে আছে কেন বললাম?
আমি প্রায়ই দেখে থাকি সমবয়সী বন্ধু কিংবা ভাই একই বয়সী হওয়া সত্বেও, অর্থ,ধন,সম্পদ এর তারতম্যের কারনে ব্যবহার টা বদলে যায় বড়লোকের প্রতি, বদলে যায় আমার সাধারণ ব্যবহারের ধরণ,কেন জানি একটু বেশিই আদিখ্যেতা দেখানোর চেষ্টা করি। বর্তমান সময়ে কেন জানি এই সমস্যা টা বিকট আকার ধারণ করেছে। আমি আজকেও দেখলাম দুই বন্ধু একসাথে শপিং করতে গিয়েছে, যে মধ্যবিত্ত পরিবারের বন্ধু তার সাথে বড়লোক বাবার ছেলে বন্ধু সে আচরন করছে অন্য রকম। বড়লোকের ছেলে শপিং করছে নিজের জন্য,সাথে মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেকে ডেকেছে তার ব্যাগ বহন করার জন্য। না বলেছে একবার নাস্তা খাওয়ার কথা, না বলেছে কিছুনিতে। শুধু শুনিয়েছে নিজের বিলাসিতার কথা এমনকি তাকে শুধু কাজের জন্যই ব্যবহার করে। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে বন্ধুটা ভেবেই নিয়েছিলো হয়তো বা তার জন্যও কিছু কিনবে তাকে উপহার দেয়ার জন্য। কিন্ত না, শেষ অব্দি তাকে বিদায় করে দিলো। ৪-৫ ঘন্টা ঘুরে ঘুরে শপিং করার পর বড়ুলোক বন্ধুকে বিদায় দিয়ে শুকনো মুখে ফিরে যাচ্ছে মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেটা। মনে নেই কোনো অভিমান,নেই কোনো সংকোচবোধ। কারন সে তার বড়লোক বন্ধুকে মন থেকে বন্ধুই ভেবেছিলো। কিন্ত বড়লোক বন্ধুর ক্ষেত্রে অন্য রকম।
..................
কিন্ত কেন এমন হচ্ছে,কেনই বা মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেটি চুপচাপ সবকিছু সহ্য করে যায়? আমি বলেছিলাম যে আমাদের রক্তে আসলে গোলামি টা মিশে গেছে। হয়তো বা মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেটা ভাবছে এখন, আমি যদি তার কথায় না করি,তাকে ইগনোর করে চলি তাতে হয়তো বা আমার উপর মন খারাপ করবে সে,এমনো তে পারে,আমার চুপ থাকায় বড়লোক বন্ধুর কিছুই যায় আসে না।
আসলে আমার ক্ষোভ এর প্রকাশ টা এই একটা জায়গায়। কেন সে নিজের স্বাধীন স্বকীয়িতা হারিয়ে ফেলেছে, কেন সে তার বন্ধুর এমন আচরন মেনে নিবে?? যে আমাকেই বন্ধু ভাবে না আমি তাকে কেন ভাব্বো?? আমার কথা এই একটা জায়গায়।
মানুষের গোলামি করে সেইটা কে নরমালি নিয়ে যদি স্পষ্ট ভাষায় ভাষন দেই দ্যাটস ইজি মান, আবার পরোক্ষনেই যখন আপনার ফেওসবুক ওয়ালে লিখে দিয়েছেন দুনিয়াতে কেউ কারো নয়,তাহলে আমি বলবো আপনার মানষিকতা বদলে ফেলুন। তাতে অন্তত আত্মসম্মানবোধ টুকু কাজ করবে নিজের ভেতরে,ভালো লাগবে। সব কথায় সহমত ভাই এর মানুষের অভাব নেই ,আপনাকে সবসময় মাথায় রাখতে হবে এরা আমার সুসময়ের বন্ধু। দুঃসময়ে আপনি কাউকেই পাশে পাবেন না আজ বলে গেলাম। এটাই বাস্তবতা,এটাই সত্য। অন্যের গোলামী ভাব স্বভাব আমাদের বদলাতেই হবে।
আমার স্বাধীনতা আমার কাছে
আমার স্বাধীনতার জায়গা যদি আমি নিজে করে নিতে না জানি সেইটা আমার ব্যর্থতা, সেখানে অন্য কাউকে দোষ দেয়া ঘোর অপরাধ।আমার তাই মনে হয়। আপনাকে অন্য মানুষ এসে ব্যবহার করবে,আপনাকে প্রয়োজনে, নিজ স্বার্থে ব্যবহার করবে আর সেখানে কোনো প্রকার দ্বিধা না করে নিজেকে যদি উতসর্গ করেন তাহলে আপনি এখনো বোকার স্বর্গে বসবাস করেন।
একটা কথা খুব করে মাথায় রাখতে হবে যে দুনিয়াতে সবাই স্বার্থের পিছনে ঘোরে, আপনার সাথে সবাই কথা বলে কোনো গোপন স্বার্থে, হ্যা কিছু মানুষ বিনাস্বার্থে আপনার সাথে কথা বলে সম্পর্ক ঠিক রাখে।আর তারা সত্যিই আপনাকে ভালোবাসে।
যদি কারন ছাড়া কাউকে বিশ্বাস করেন তাহলে আপনি ঠকে যাবেন। সামান্য কিছু পাওয়ার আশায় যখন কাউকে ভালোবেসে মাথায় তুলে রাখেন তাহলে মাথায় রাখবেন আপনার কাছে তার কোনো বড় স্বার্থ আছে হয়তো বা তা না হলে আপনাকে ঐ সামান্য কিছু দিতো না।
সবশেষে একটায় কথা বলার...
পরউপকারী মনোভাব নিয়ে থাকবেন সময় তাতে নিজের উপকার হওয়ার সম্ভাবনা টাও বেড়ে যাবে। নিজের স্বাধীনতা কখনো অন্যের উপর নির্ভরশীল করবেন না ভুলেও। বন্ধুবান্ধব শুধুমাত্র বিনোদনের মাধ্যম এর মাঝে অর্থসম্পদ দেনা পাওনা রাখেবন না তাতে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার সম্ভাবন সবচেয়ে বেশি। খুব কাছের মানুষ দ্বাড়া সবচেয়ে বড় বড় ক্ষতির সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। মানুষ খুব বিশ্বাস করবেন,খুব বিশ্বাস করবেন কিন্ত মাঝে একটু ফাঁকা রাখবেন কারন এই বিশ্বাসের ছলচাতুরী হতেই পারে। কারন বিশ্বাস শব্দটার পক্ষান্তরেই আছে অবিশ্বাস।
আর সহমত ভাই যারা আছে তাদের থেকে ১০০ হাত দূরে অবশ্যই।
আজকে আমি নিজের এক বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে এসব শেয়ার করলাম আপনাদের সাথে। ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন দয়া করে।
খুব ভালো একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন আপনি 💕
সত্যিই আমরা পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতে পারিনা। আগে নিজের মনের সাথে নিজেকে যুদ্ধ করে মানসিক শক্তি অর্জন করতে হবে। তাছাড়া এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।
আরো একটি বিষয় ভাই। আগে দর্শন তার পর গুন বিচারন। আপনার এই পোস্টটি চাইলে সামান্য কিছু মার্ক ডাউন ব্যাবহার করে অনেক আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন ☺️
এতে আপনার পাঠকের চোখের একটা তৃপ্তি আসবে।
ভালো থাকুন আর পাশে থাকুন 🥀
ইনশাআল্লাহ ভালো কিছু হবে 👌
জ্বি ভাইয়া, মার্ক ডাউনের ব্যবহার ইনশাল্লাহ পরবর্তীতে যথাযথ হবে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।