||শিক্ষা পর্বঃ১|| মূল্যবোধ(values)
শুভ দুপুর,
@amarbanglablog- পরিবারের সকল সদস্যদের জানায় শুভকামনা ও শুভেচ্ছা। সকলের সুস্থ্যতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। আশা করি সকলেই ভালো আছেন নিজ নিজ জায়গায় থেকে। আমিও আমার অবস্থানে আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি। আপনাদের সকলের পরিবারের সদস্যদের আল্লাহ্ হেফাজত করুক।
আজকে আমার শিক্ষনীয় পর্বের আলোচনার বিষয় হচ্ছে মূল্যবোধ( @values)। কিছুদিন আগে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা আমার মনকে নাড়া দিয়েছে এবং আমার মনকে আঘাত করেছে। তাই ভাবলাম আমাদের 'জানা' ভুলে যাওয়া বিষয় নতুন করে জানা দরকার নতুবা আমাদের মাঝে সম্প্রদায়িক দাঙ্গা কখনোই যাবে না। মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে সমস্যার দানা বাধতেছে । তাই আজকে আমি মূল্যবোধের বিষয়টি আপনাদের সামনে তুলে ধরতে যাচ্ছি।
মূল্যবোধ (values)
মূল্যবোধ হলো সমাজ কাঠামোর অবিচ্ছেদ্য অংশ। মূল্যবোধ হল মানুষের সমাজ স্বীকৃত এমন কার্যক্রম বা আচারণ যা সামগ্রিকভাবে প্রশংসিত হয়। মূল্যবোধ হল একটি আপেক্ষিক বিষয় যা স্থায়ী কোনো বিষয় নয়। স্থান এবং সময় ভেদে মূল্যবোধ পরিবর্তিত হয়। আমি উপরের চিত্রের মাধ্যমে দেখিয়েছি সকল ভালো গুণগুলোই মূল্যবোধের অন্তর্ভুক্ত যেমন: সততা, ন্যায় পরায়নতা ,পরোপকার এবং সহানুভূতি। উপরিক্ত সন্ধান থেকে বলা যায়,
- মূল্যবোধ হল ভাল এবং মন্দ সম্পর্কে সামাজিক ধারণা;
- কাঙ্খিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় সম্পর্কে সমাজের বিশ্লেষণমূলক রায়;
-সমাজের মানুষের সাধারণ আচরণ, যাতে আবেগ বিদ্যমান;
মূল্যবোধের কতিপয় কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী এবং দার্শনিকগণ মূল্যবোধের সংজ্ঞা দিয়ে গিয়েছেন। তাদের অধিকাংশের মতেই সকল ভালো কাজে এবং ভালো গুণগুলোই মূল্যবোধের অন্তর্ভুক্ত। মন্দ কাজগুলো মূল্যবোধের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না। মন্দ কাজ গুলোকে মূল্যবোধের বহির্ভূত বলে অভিহিত করেছেন।
কতিপয় মূল্যবোধের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য:
- মূল্যবোধ ব্যক্তির আচরণ এর সমষ্টি, ব্যক্তির আচরণের মাধ্যমে মূল্যবোধ প্রকাশ পায়।
- কতিপয় কিছু মূল্যবোধ আছে যা সর্বজনস্বীকৃত উদাহরণ হিসেবে বলা যায় সততা ,ন্যায়পরায়নতা ও পরোপকার ইত্যাদি।
- ন্যায়বোধ, সহনশীলতা, আইনের শাসন ইত্যাদির প্রভাবে মূল্যবোধ বিকশিত হয়। ন্যায়বো ও আইনের শাসনের ফলে মানবসমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা ও সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। সহনশীলতার প্রভাবে মানুষের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ ,দ্বন্দ্ব-সংঘাত দূর হয়। (কিন্তু আজ সর্বত্রই দেখা যায় মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দানা বাধতে শুরু করেছে। তাই আমাদের মূল্যবোধের বৈশিষ্ট্য গুলো চর্চার মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। তাছাড়া মূল্যবোধ আমরা ধারণ করতে পারবোনা।)
- সমাজে বসবাসকারী মানুষের শ্রদ্ধাবোধ মূল্যবোধ এর মূল ভিত্তি।
আমি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধ এখানে তুলে ধরছি আশা করি আমি যে বিষয়টি বুঝাতে চাচ্ছি সেটা ক্লিয়ার হবে।
- সামাজিক মূল্যবোধ: সামাজিক মূল্যবোধ হলো সামাজিক মানুষের আচরণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করার নীতি ও আদর্শ। কিন্তু সমাজ কল্যাণে এটি আরও ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ব্যাপক অর্থে সামাজিক মূল্যবোধ হল সমাজের মানুষের সামাজিক সম্পর্ক ও আচরণ বিভিন্ন নীতিমালা, বিশ্বাস, দর্শন ও চিন্তাভাবনার মাধ্যমে পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত উপাদান গুলোর সমষ্টি।
- ধর্মীয় মূল্যবোধ: ধর্ম মানুষের মূল্যবোধ গঠনের এক বড় নিয়ামক ধর্মবিশ্বাস অনুভূতি ও আচার অনুষ্ঠান পালনের মাধ্যমে এবং ধর্মীয় শিক্ষা দ্বারা মানুষের যে মূল্যবোধ জন্মায় তাই মূলত ধর্মীয় মূল্যবোধ সমাজের মানুষকে নিয়ন্ত্রণের জন্য ধর্মীয় মূল্যবোধের নেই উপযুক্ত এবং যুগোপযোগী উপাদান আর কোনোটিই হয় না।
ধর্মীয় মূল্যবোধের শিক্ষা:
সম্পূর্ণ বিশ্বের প্রতিটি দেশেই বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বসবাস করে ।ধর্মীয় মূল্যবোধ থেকে আমরা যে শিক্ষা গ্রহণ করেছি। যার যার ধর্ম উৎসব এবং আচার-অনুষ্ঠান তাদেরকে শান্ত সৃষ্ট ভাবেই পরিচালনা করতে দিতে হবে। যদি আমরা সেখানে দাঙ্গা সৃষ্টি করি তাহলে তাদের ধর্মে আঘাত করা হবে। যে কোন ধর্মই আমাদের এটা শেখায় না যে কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা। কয়েকদিন আগে পূজার মন্ডপে হামলা করায় আমরা গভীরভাবে ভারাক্রান্ত। কারণ আমাদের ধর্মীয় অনুভূতি এবং ধর্মীয় শিক্ষা এটা নয় যে অন্যের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাধা সৃষ্টি করা। আর এই বিষয়টি হয়েছে একমাত্র ধর্মীয় মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে। আমরা যদি ইসলাম ধর্মের দিকে তাকাই এবং মূল্যবোধের দৃষ্টান্ত হিসেবে যদি দেখি তাহলে হযরত মুহাম্মদ (সা) কে দেখতে পাবো। তিনিও কখনো কোন ধর্মের মানুষদের জুলুম-অত্যাচার করেননি এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেননি তিনি তার সহানুভূতি প্রদর্শন করিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু আজ আমরা লজ্জিত বাঙালি লজ্জিত জাতি যে আমরা অন্যের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করি। আমরা অনেকেই মূল্যবোধ সম্পর্কে কিছুই জানিনা যদিও অল্প জানি সেটুকু কোন কাজে আসে না । যার কারণে প্রতিনিয়ত ও মূল্যবোধের অবক্ষয়ের দৃষ্টান্ত আমাদের চোখে পড়ে। এখানে আরেকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেটি হচ্ছে কেন বলতে আমরা কি বুঝি? আপনারা অনেকেই অনেক সময় দিবেন-তবে জ্ঞান বলতে সত্যের অন্বেষণ কি বুঝায়! যদি আমাদের জ্ঞানের ভান্ডার সীমিত হয় তাহলে আমরা সত্যের অন্বেষণ করতে পারবোনা। তাই আমাদের বেঁচে থাকার জন্য এবং সৎ ভাবে বেঁচে থাকার জন্য জ্ঞান অর্জন করতে হবে যাতে আমাদের মাঝেই মূল্যবোধ এবং অন্যান্য বিষয়গুলো পরিপূর্ণরূপে বিদ্যমান থাকে।
ভাইয়া,অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন। মূল্যবোধ আমাদের আচরণ পরিচালনাকারী নীতি ও মানদণ্ড। তাছাড়া আমাদের ভালো-মন্দ ঠিক বেঠিক সম্পর্কে ধারণা দেয়। ধন্যবাদ আপনাকে।
বুঝতে পারার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
লেখার শুরুতে মূল্যবোধের জায়গায় মূল্যবান লেখা হয়েছে, ওটা ঠিক করে নিন।
ধর্ম এবং রিলিজিয়নের মূল্যবোধ পরে দিলেও চলবে। আগে মানুষ হওয়ার মূল্যবোধের পাঠ হোক।
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে
আপনার প্রায় কয়েকটা পোস্ট ই আমি পড়েছি।
আমি খুব গঠনমূলক লেখালেখি করতে পারেন যা আমার খুব ভালো লাগে।
শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপু নিয়মিত আমার লিখা পড়ার জন্য।
মূল্যবোধ ছাড়া মানুষ মূল্যহীন। যাদের মূল্যবোধ নেই তারা পশুর ন্যেয়।
ধন্যবাদ ভাই
শিশুর মানসিক বিকাশে মূল্যবোধ শিখানো গুরুত্বপূর্ণ। এই মূল্যবোধ শেখে পরিবার ও প্রতিষ্টানে। আমাদের স্কুল ও পরিবার ভালো হলে দেশ ও জনগন ভালো হবে।অনেক সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছেন আপনি মূল্যবোধ নিয়ে। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার সুন্দর এবং গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় আপু।
খুবই চমৎকার ভাবে মূল্যবোধ বিষয়টি নিয়ে আপনি আপনার অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন সত্যি বর্তমান সময়ের যেভাবে মূল্যবোধের অবক্ষয় দেখতে পাচ্ছি তা অনেকটাই। হতাশাজনক ভালো মানুষ হওয়ার। তাই আসুন আমরা সবাই আমাদের মূল্যবোধকে জাগ্রত করি।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ কবি আপু আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য। আমরা একসঙ্গে গর্জে উঠে মূল্যবোধকে লালন করি।
আপনি খুবই তথ্যবহুল পোষ্ট করেছেন।দিন দিন মানুষের মধ্যে বিবেক,মূল্যবোধ হ্রাস পাচ্ছে।তবে তা জাগিয়ে তোলার জন্য আমাদের এখনই সচেতন হওয়া দরকার এবং শিশুদেরকেও মূল্যবোধ সম্পর্কে জ্ঞান দেওয়া প্রয়োজন।ধন্যবাদ আপনাকে।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে আপু