ভয় নয় সচেতনতা দিয়ে করবো জয় || করোনা সংলাপ || ১০০% পে আউট @abb-charity এর জন্য

@amarbanglablog কমিউনিটির সবাইকে আমার শুভেচ্ছা।আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। আমার গতানুগতিক লেখা পোষ্ট গুলো থেকে আজকে আমি একটি ভিন্নধর্মী পোস্ট করতে যাচ্ছি। আশা করছি লেখাটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং আপনাদের মাঝে সচেতনতা বাড়াবে।

গতবছর ঠিক এমন সময় আমার মা করোনাতে আক্রান্ত হয়।টানা ৮ দিন জ্বরে আক্রান্ত থাকার পর নবম দিনে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট।একবিন্দু সময় অপচয় না করে মাকে নিয়ে যাই কুমিল্লা মেডিকেল এ।মেডিকেলে ঢোকার সাথে সাথে একজন বয়স্ক লোক দেখি শ্বাসকষ্ট নিয়ে আমাদের সামনেই মারা যান।হাসপাতালে প্রবেশ করেই এমন চিত্র দেখে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। আমি মানসিকভাবে খুবই ভেঙে পড়ি কারন আমি মায়ের সাথে একাই ছিলাম।তারপর জানি না কোথা থেকে এক ঐশ্বরিক শক্তি পেলাম এবং সেই শক্তির বলেই নেমে পড়লাম মাকে বাঁচানোর যুদ্ধে ।

মাকে এক জায়গায় বসিয়ে টানা 20 মিনিট ছয়তলা থেকে দোতালায় পাঁচ থেকে ছয় বার আপডাউন করি।অবশেষে অনেক কষ্টের পর সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন সহ একটি বেড ম্যানেজ করি। তারপর টানা ৬ দিন অক্সিজেন পাবার পর আমার মা সুস্থ হয়ে ওঠে।

মার যখন ট্রিটমেন্ট চলছিল তখন আমি একটা জিনিস খেয়াল করি যে ওখানে অবস্থিত সকল রোগীরই একই রকমের চিকিৎসা চলছিল। ভর্তি হওয়া সকল রোগীকে কার্ডিনেক্স নামক ইনজেকশন পুশ করা হয়।এই ইনজেকশনটি যে কোনো রোগীকে পুশ করার অন্যতম কারণ হলো হার্টঅ্যাটাক না হওয়া। এখন করোনার সাথে হার্টঅ্যাটাকের কি সম্পর্ক? এইটা আমার জানার ইচ্ছা জাগে। আমার নিজের বড় বোন একজন নার্স তাই আমি তার মাধ্যমে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাই।

করোনা ভীতি আমাদের মধ্যে এতটাই প্রকট যে যারা একটু বয়স্ক আছেন তাদের করোনা পজিটিভ আসলে অথবা শ্বাসকষ্ট শুরু হলে ভয়ে অনেকে হার্ট এ্যাটাক করে ফেলেন।ঠিক এই কারনে ইনজেকশনটি সকলকে পুশ করা হতো।

আজ দেখলাম আমার এক মিউজিশিয়ান বন্ধু ফতেহ আলী খান আকাশ যে কিনা জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি তে মিউজিক নিয়ে অধ্যায়নরত তাকে ঢাকায় অবস্থিত হেলথ এন্ড হোপ হসপিটাল এ করোনা রোগীদের গান শোনাতে নিয়ে যাওয়া হয়।

এই ভিডিওটি দেখে আমার কুমিল্লা মেডিকেল এর সেই প্রথম দিনের কথা মনে পড়ে। সেদিনের সেই অসহায়ত্ব, চোখের সামনে মৃত্যু আর অক্সিজেনের অভাব এর কথা ভেবে চোখে জল চলে আসে।

সত্যি বলতে করো না একেবারেই মরণব্যাধি নয়। পরিমাণমতো অক্সিজেন এবং সঠিক চিকিৎসা পেলে করোনা রোগীকে সুস্থ করা সম্ভব। আর একজন করোনা রোগীর জন্য সবচেয়ে বড় চিকিৎসা হচ্ছে তাকে অবহেলা না করে সঠিকভাবে সাহস সঞ্চার করা এবং আনন্দে রাখা । আমি হাসপাতালে দেখেছি যারাই করোনা রোগীদের সেবা করছে তাদের কোন সমস্যা হচ্ছে না। ঐশ্বরিক ভাবে কেন জানি তারা সুস্থই থেকে যায়। যেমনটা আমার সাথে হয়েছে। ৬ দিন এত এত করোনা রোগীর মাঝে থেকেও আমার একটি হাঁচি ও কাশি ও হয়নি।

দয়া করে সবার উদ্দেশ্যে বলছি করোনা আক্রান্ত আপনার পরিবারের কাউকে অবহেলা করবেন না। পরিবারের কেউ আক্রান্ত হলে সবচেয়ে ইয়ং যে আছেন সে সাথে থাকার চেষ্টা করবেন এবং সেবা দিবেন। ভয় না পেয়ে সর্বদা সচেতন থাকাটাই জরুরি। সবাইকে মাস্ক ব্যবহারে এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার এ উদ্বুদ্ধ করতে হবে।তবেই করোনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

বি.দ্রঃউপরোক্ত ভিডিওটি আমার বন্ধু তার ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করে। তার আপলোডকৃত ভিডিওর লিংক।ভিডিওটি আমি তার অনুমতি নিয়েই এখানে ব্যবহার করছি।

IMG_20200619_154706.jpg

মাকে সুস্থ করে বাসায় ফেরার সময় তোলা ছবি

সচেতন মূলক পোস্ট, আর বন্ধুর ভিডিও টির জন্য আমি এই পোস্টের সকল প্রফিট @abb-charity কে দিচ্ছি

ধন্যবাদ সবাইকে 💝

Sort:  
 3 years ago 

অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

আপ্নাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাই,পড়ার জন্য

 3 years ago 

লেখাটা পড়ে সত্যি মন খারাপ হয়ে গেলো । এই করোনা সব কিছু শেষ করে দিলো, মানুষের জীবনে সব চাইতে বড় অভিশাপের নাম করোনা ।

আপনাকে লেভেল-০১ এ উন্নীত করা হলো অল টাইম ভালো লেখার জন্য :)

অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা 💝

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 60270.61
ETH 2411.66
USDT 1.00
SBD 2.43