শৈশবের সাঁকো পার হওয়ার এক মজার গল্প||

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago
❤️আসসালামুআলাইকুম/আদাব❤️

আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে।


children-602967_1280.jpg

ছবির উৎস


আজকে শৈশবের এক মজার স্মৃতি নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম বন্ধুরা।দিন যায় দিন আসে।তারপরেও আমাদের মনে থেকে যায় কিছু মজার স্মৃতি আবার দুঃখের স্মৃতি।আজকে আমি সেরকমই এক মজার ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।যেকোনো মানুষেরই কিন্তু নতুন নতুন জায়গায় ঘুরতে যেতে ভালো লাগে।অজানাকে জানার আগ্রহ যেন সকলের মাঝেই বিরাজমান।আর সেই জায়গাটা যে দূরে কোথাও হতে হবে বিষয়টা কিন্তু এমন নয়।আমাদের আশেপাশেও কিন্তু অদেখা অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিস রয়েছে।যা আমরা সময় ও সুযোগের অভাবে দেখতে যেতে পারিনা।আর কোনো একদিন সুযোগ মিললে হঠাৎ সেই অদেখা জিনিস গুলো দেখার উদ্দেশ্যে দলবেধে বান্ধবীরা মিলে কোথাও একটা ঘুরতে চলে যেতে হয়।ঠিক এরকম একদিন আমরাও গিয়েছিলাম ঘুরতে আমাদের সংখ্যা ছিল ১১/১২ এর কাছাকাছি।এতজন মিলে ঘুরতে গিয়ে প্রকৃতি উপভোগ করার মজাটা কেমন হতে পারে নিশ্চয় এতক্ষণে আন্দাজ করতে পেরে গিয়েছেন বন্ধুরা।

তখন ২০১১ সাল,আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী সবাই।একদিন হঠাৎ করেই আমাদের ক্লাসগুলো হবেনা দপ্তরী কাকু এসে জানিয়ে দিলেন।দুপুর পর্যন্ত হাতে অনেক সময় ক্লাস নেই।তাই সবাই মিলে চিন্তা করলাম স্কুলের শেষের দিকে যে রাস্তা ওই রাস্তা দিয়ে যাবো আর অচেনা জিনিসগুলো,প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করবো সবাই।তো সেই অনুযায়ী সকাল ১০ টা নাগাদ বেরিয়ে পড়লাম সবাই মিলে।স্কুলে ক্লাসেই বই খাতার ব্যাগ রেখে গিয়েছিলাম।শুরু হলো আমাদের পথচলা।এলাকাটা আমাদের সবারই মোটামুটি অপরিচিত।একজন ছিল আমাদের সাথে যার পরিচিত সব ওই এলাকার বাসিন্দা ছিল ও এজন্য।কারণ একেবারে অপরিচিত জায়গায় যাওয়াটা সবার জন্য ঝুঁকির হতে পারে।

তো যেতে যেতে এবার কিছু পুরনো বাড়ি দেখলাম যেমন ধরুন আগেকার দিনের প্রাসাদ গুলো।কিন্তু বাড়ির বাইরে থেকেই যতটুকু দেখা যাচ্ছিল ততটুকুই দেখেছিলাম আমরা।বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করার সাহস হলোনা কারো।যেহেতু সবেমাত্র ষষ্ঠ শ্রেণীতে আমরা বুঝতে পারছেন সবাই খুব ছোট।এবার যেতে যেতে নদীর ধারে চলে এলাম আমরা।এসে তো সেই বিশাল নদী সামনে।আর নদীর উপরে ভাসমান সাঁকো।এখন সাঁকো পাড়ি দিয়ে আমাদের স্কুলে মাঠ বরাবর আসতে হবে। সাঁকো পাড়ি না দিতে পারলে আবারও একই রাস্তা দিয়ে যেতে হবে বেশ দূর হবে।

এজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম সাঁকো পাড়ি দিয়েই আসবো।এখন একে একে সাঁকো পাড়ি দেওয়ার পালা।সাঁকো ছিল বেশ বড়ো আর হেলানো মতো, মানে অনেকটা ঝুঁকে পাড়ি দিতে হবে আরকি।প্রথমে সীমা উঠলো সাঁকো তে। দুই তিন মিনিটেই সাঁকো পাড়ি দিয়ে ফেললো।খুব দুরন্ত স্বভাবের ছিল সীমা।স্কুলে দৌড় প্রতিযোগিতায় সবসময় প্রথম হতো।এবার আরো কয়জন পাড়ি দিল ,একে একে বেশ দ্রুতই পার হলো তারাও ।তারপর আসলো আমার পালা।এভাবে করে পাঁচ ছয় মিনিটের মধ্যেই পাড়ি দিয়ে দিলাম আমিও সাঁকো।তারপর আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ফাহিমার পালা। ওর কথা তো আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম।ফাহিমা ও পাড়ি দিয়ে ফেললো সাঁকো অল্প সময়েই।তারপর আসলো বান্ধবী ফাতেমার পালা।আর ফাতেমা কোনোভাবেই পাড়ি দিতে পারছিলনা ।কেননা ও আমাদের সকলের চেয়ে একটু ছোট ছিল।যেহেতু সাঁকো হেলানো অনেকটা কষ্ট হচ্ছিল ওর।একটু করে উঠে বারবার সাঁকো থেকে নেমে যাচ্ছিল।তারপর সীমা গিয়ে ওকে নিয়ে সাঁকো পার করলো।তারপর আমরা মাঠ বরাবর স্কুলে চলে আসলাম। স্কুলে এসে সবাই তো খুব খুশি একটা ছোট খাটো ট্যুর ছিল আমাদের।আর কি হাসাহাসি সেই সাঁকো পার হওয়া নিয়ে হাহা।প্রথমবার সাঁকো পার হওয়ার অনুভূতি টা মজার ছিল।প্রথমে ভয় পেলেও সবাই ঠিকমতো পার হতে পেরেছিলাম।


ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।।আজকের মতো এখানেই শেষ করছি বন্ধুরা।আমার আজকের ব্লগটি কেমন লেগেছে কমেন্টে অবশ্যই জানাতে ভুলবেন না কিন্তু।আবার নতুন কোন ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো। সেই পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।

❤️আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি❤️
আমি রাহনুমানূর দিশা।আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী।আমি বর্তমান অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়াশুনা করছি।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সাথে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় থেকে যুক্ত রয়েছি।বাংলা ভাষায় লিখতে, পড়তে এবং নতুন নতুন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার ভালো লাগে।এছাড়াও ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতে অনেক ভালো লাগে।অবসর সময়ে গান শুনতে এবং বাংলা নাটক দেখতে পছন্দ করি।


Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

❤️আল্লাহ হাফেজ❤️

Sort:  
 11 months ago 

খুবই চমৎকার একটি অনুভূতির গল্প আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। প্রথমে আমি গল্পটা যখন পড়ছিলাম তখন ভেবেছিলাম সাঁকো পার হওয়ার সময় হয়তো বা কেউ একজন সাঁকো থেকে পানির মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন তবে ভাগ্যক্রমে সবাই যে সাঁকো ভালোভাবে পার হতে পেরেছেন এটাই অনেক বড় কথা। মাঝে মাঝে এরকম বান্ধবীদের সঙ্গে বন্ধুদের সঙ্গে ছোট একটা ট্যুর দিতে অনেক বেশি ভালো লাগে এই ছোট্ট ট্যুর যেটাতে কোনরকম টাকা খরচ হয়নি কিন্তু এই সময়টা সত্যিই অনেক সুন্দর ছিল এবং সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করেছেন বোঝাই যাচ্ছে। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে এত সুন্দর একটি গল্প তুলে ধরার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

পড়তো শেষের জন কিন্তু আরেকজনের সাহায্যে আর পড়েনি ।এমন হয়েছিল যে ও বলছিল ও সাঁকো পার না হয়ে রাস্তা দিয়েই যাবে😁😁।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 11 months ago 

আপনার এই গল্পটা পড়তে গিয়ে আমি ফিরে পেয়েছি আমার ছোটবেলার অনেক অনেক সুন্দর স্মৃতি। আসলে যখনই কারোর স্মৃতি মূলক লেখা সামনে আসে আমার বেশ ভালো লাগে কারণ সেই শৈশবের স্মৃতিগুলো আমিও স্মরণ করতে পারি যেগুলো আর ফিরে পাবো না। বেশ ভালো লাগলো আপনার অতীতের এই গল্পটা পড়ে।

 11 months ago 

জি ভাইয়া অনেক মিস করি দিনগুলো।ধন্যবাদ আপনাকে।

 11 months ago 

আপনি যেহেতু ২০১১ সালে ষষ্ঠ শ্রেণীর পড়তেন তাহলে আমরা তো একই ব্যাচ, আমি ও ২০১১ সালে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়তাম। আমি সাঁকো পার হওয়ার গল্প করছিলাম আর ভাবছিলাম এই বুঝি কেও একজন নিচে পড়ে যাবে তবে শেষ পর্যন্ত সবাই ঠিকভাবে সাঁকো পার হতে পেরেছিল এটাই বেশি ভালো লাগলো।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

হ্যা।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 11 months ago 

আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে ছোটবেলার দারুন একটি মজার ঘটনা লিখে শেয়ার করেছেন। সত্যিই স্কুলে যাওয়ার পথে এরকম সাঁকো থাকলে বেশ ভালই লাগে সেই সাঁকো পাড়ি দিতে। আসলে প্রায় পাঁচ ছয় মিনিট ধরে আপনারা যেহেতু সাঁকো পাড়ি দিয়েছিলেন তাই বোঝা যাচ্ছে সাঁকোটি অনেক বড়। আপনি ২০১১ সালের দিকে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়তেন আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 11 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59377.35
ETH 2639.75
USDT 1.00
SBD 2.45