অদ্ভুত প্রেম(পর্ব-২)||

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

||আজ-৩০ই,মাঘ||১৪২৯বঙ্গাব্দ,শীতকাল||


আসসালামুআলাইকুম/আদব। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।আজকে আমি আপনাদের মাঝে অদ্ভুত প্রেমের গল্প(পর্ব-২) নিয়ে লিখতে যাচ্ছি। আশা করছি প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বটিও আপনাদের ভালোই লাগবে।

couple-g37da90c35_1920.jpg

সোর্স

মুক্তা আপুর যেদিন বিয়ে হয়,সেদিন রাতেই তিনি জানতে পারেন তার স্বামীর প্রেমিকা আছে।কারণ বিয়ের দিন রাতেই মুক্তা আপুর স্বামীকে তার প্রাক্তন প্রেমিকা ফোন করেন এবং তারা দু'জন ফোনে দীর্ঘ সময় কথা বলেন।এটা মুক্তা আপু কিছুতেই সহ্য করতে পারেননা।মুক্তা আপু তার স্বামীর কাছ থেকে ফোন নিয়ে ফেলে দিয়ে ফোন ভেঙে ফেলেন।কিন্তু এতে তাকে তার স্বামী কিছু বলেননা।দুইদিন পর মুক্তা আপু তার বিয়ের ছবিগুলো ফেসবুকে পোস্ট করেন।আর ফেসবুকে ছবিগুলো পোস্ট করেই শুরু হলো ঝামেলা।মুক্তা আপুর প্রাক্তন প্রেমিক(সোহান) মুক্তা আপুর বিয়ের ছবিগুলো দেখে আর সহ্য করতে না পেরে সেই মুহূর্তেই রওনা হয় ঝিনাইদহ এর উদ্দেশ্যে।তিনি ঝিনাইদহে এসে মুক্তা আপুর বাড়িতে আসেন এবং মুক্তা আপুর খোঁজ করেন।তখন মুক্তা আপুর বাড়ির লোকেরা বলেন,তুমি কে আর এখানে কি চাও?উত্তরে তিনি বলেন আমি সোহান এবং মুক্তার সাথে আমার একটা প্রেমের সম্পর্ক ছিল।তখন মুক্তা আপুর মা,বোন কিছুটা ভয় পেয়ে যায়।কিন্তু মুক্তা আপুর মা,বোন যে তার কথা জানেতেন সেটা বুঝতে দেন না।তারা বলেন,মুক্তার বিয়ে হয়ে গেছে এখন আর কিছু করার নেই।তখন সোহান ভাইয়া মুক্তা আপুর বাসার সামনে নেশা করে সারা দিন রাত মুক্তা আপুর বাসার সামনেই পড়ে থাকেন।তখন মুক্তা আপুকে ফোন করে তার মা,বোন সবকিছু বলেন।মুক্তা আপুর শশুর বাড়ি মাগুরাতে ছিল,তাই মুক্তা আপুর আসতে বেশি সময় লাগেনি।কারণ ঝিনাইদহ থেকে মাগুরার দূরত্ব ৪৫ কিলোমিটার মতো।মুক্তা আপু দুই ঘণ্টার মধ্যে আসেন কারণ যেহেতু তার বাবার বাড়ির সামনে এসে সোহান ভাইয়া ওরকম করছে,এতে পরিবারের উপর বাইরের মানুষ থেকে চাপ আসছিল।

heart-g11fd455c4_1920.jpg

সোর্স

মুক্তা আপু বাসায় আসতেই সোহান ভাইয়ার সাথে বাসার গেটের সামনে দেখা হয় তখন মুক্তা আপু সোহান ভাইয়াকে বলে,বাসার ভিতরে চলো।বাসায় যেয়ে মুক্তা আপু সোহান ভাইয়াকে বলেন,আমি তো তোমাকে আমার বিয়ের কথা বলেছিলাম তখন বলেছিলে তোমার কোনো সমস্যা নেই।আমি যেন তাড়াতাড়ি বিয়েটা করে নিই।এখন এরকম করছ কেন?।উত্তরে তখন সোহান ভাইয়া বলেন,আমি কিছু জানিনা তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারবোনা মুক্তা আমার সবকিছু এলোমেলো লাগছে।মুক্তা আপু তখন তাকে বলেন তুমি এখান থেকে চলে যাও দয়া করে,এলাকায় আমার বাবার একটা সম্মান আছে।সোহান ভাইয়া বলেন আমি তোমাকে না নিয়ে কোথাও যাবনা মুক্তা।তুমি তোমার বর্তমান স্বামীকে ছেড়ে দেও।মুক্তা আপু বলে এটা আর সম্ভব না কখনো।এভাবে সোহান ভাইয়াকে বুঝিয়ে মুক্তা আপু ঢাকায় পাঠিয়ে দেয় এই শর্তে যে,সোহান ভাইয়ার সাথে মুক্তা আপু ফোনে কথা বলবে নিয়মিত।এই শর্তে রাজি হওয়া ছাড়া কিছুতেই যেতে চাচ্ছিলেন না সোহান ভাইয়া।মুক্তা আপু শর্তের কথা বললেও তিনি ফোন করতেন না কখনোই,কারণ তিনি তার বর্তমান নিয়েই খুশি থাকতে চেয়েছিলেন।যখন সোহান ভাইয়া ফোন করতেন খারাপ ব্যবহার করতেন এবং কান্না করতেন।অন্যদিকে,মুক্তা আপুর স্বামীর সাথে তার প্রাক্তন প্রেমিকার যোগাযোগ ঠিকই ছিল,যার ফলে মুক্তা আপুর সাথে তিনি ভালো ব্যবহার করতেন না এবং মাঝে মাঝে গায়ে হাত তুলতেন।কিন্তু সোহান ভাইয়াকে মুক্তা আপু এগুলো কখনও বলতেন না।একদিন মুক্তা আপুকে তার স্বামী বলে ফেলেন,আমি আমার প্রাক্তনের সাথে থাকতে চাই।তুমি চলে যাও মুক্তা।মুক্তা আপু তখন উত্তরে বললেন, আমার জীবন নষ্ট করলেন কেন?তার স্বামী তখন বলেন ,আমার পরিবারের লোকের কথা শুনে তোমাকে বিয়ে করেছি।মুক্তা আপু আর তাকে কিছু না বলে তার বাবার বাড়ি চলে আসেন এবং সমস্ত কথা তার পরিবারকে জানান।

heart-ge7ba76412_1920.jpg

সোর্স

আজকের মতো এখানেই শেষ করছি বন্ধুরা।গল্পটি বেশ বড়,তাই এ পর্বেও শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না। একজন মানুষের জীবনী থেকে নেওয়া,তাই দুই পর্বেও শেষ করতে পারলাম না।পরবর্তী পর্বে ইনশাল্লাহ শেষ করতে পারবো।খুব শীঘ্রই পরবর্তী পর্ব নিয়ে হাজির হবো বন্ধুরা।ধন্যবাদ সবাইকে আমার আজকের ব্লগটি পড়ার জন্য।আমার আজকের ব্লগটি কেমন লেগেছে কমেন্টে জানাবেন অবশ্যই বন্ধুরা। আবার নতুন কোন ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো। সেই পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।

new.gif

🌺 আল্লাহ হাফেজ🌺
Sort:  
 2 years ago 

আপনার গল্পটা পড়ে মুক্তা আপুর জন্য খারাপ লাগল।আসলে মুক্তা আপুর স্বামীর উচিত ছিল মুক্তাকে মেনে নেওয়া। যেহেতু সে তার পুরানো প্রেমিকের নিয়ে ঘর বাঁধতে চায়। সেক্ষেত্রে মুক্তা আপু তার বাসায় এসে ঠিক করেছে। কিন্তু মুক্তা আপুর পরিবার এখন কি বলে জানার অপেক্ষায় থাকলাম । আপনাকে অনেক ধন্যবাদ মজার গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

সম্পর্ক গুলো এমন হলে কারো জীবনই সুখের হয়না।এখানে ৪জনের জীবনই অসুখী। তবে গল্পের সাথে অনেক বাস্তবতার মিল আছে।তাছাড়া সকলের লিখা গল্পগুলো পড়তে খুবই ভালো লাগে এখন।যাইহোক,যেহেতু গল্পটা বাকী আছে তাই পড়ার অধীর আগ্রহ প্রকাশ করলাম।

 2 years ago 

জি ভাইয়া আপনি একদম ঠিক বলেছেন ৪ জন অসুখী এখানে।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর ও আকর্ষণীয় মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ খুব চমৎকার একটি গল্প আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য এবং আমার মন্তব্যের ফিডব্যাক দেয়ার জন্য।

 2 years ago 

আপনার গল্পটি পড়ে মুক্তা আপুর জন্য অনেক খারাপ লাগলো। আসলেই বিয়ের আগে এগুলো চিন্তা করার দরকার ছিল। বিয়ের আগে একজনের সাথে প্রেম অন্যজনকে বিয়ে করলে এরকম জামিরাতে অনেকেই পড়েছে। আর বিয়ের পর কোন স্বামী বা কোন ওয়াইফ তৃতীয় কোন ব্যক্তি তাদের সংসারে যোগাযোগ করুক এটা কেউ চায় না। আসলে মুক্তা আপুর হাজব্যান্ড তার গায়ে হাত তুলে এটাই অনেক খারাপ লাগলো। এদিকে ব্যাপারটি মুক্তা আপুর ফ্যামিলির কাছে শেয়ার করলো ভালোই হলো। পরে পর্বের অপেক্ষায় রইলাম খুব তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.17
JST 0.032
BTC 63626.54
ETH 2727.44
USDT 1.00
SBD 2.56