দাবা খেলার ইতিহাস নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা||

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

আজ-২ রা আশ্বিন|১৪২৯ বঙ্গাব্দ,শরৎকাল|


আসসালামুআলাইকুম/আদাব। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা? আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন।আমিও ভালো আছি।আজকে আমি একটি নতুন লেখা নিয়ে আপনাদের মধ্যে উপস্থিত হলাম।আমার আজকের লেখাটি খুবই জনপ্রিয় একটি খেলা নিয়ে। এই খেলাটির সাথে আমরা প্রায় সারা বিশ্বের মানুষই পরিচিত।দাবা একটি জনপ্রিয় খেলা।যিনি দাবা খেলেন,তাকে দাবাড়ু বলে।দাবায় দুজন খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেন। দাবা খেলায় জিততে হলে বোর্ডের উপর গুটি চাল দিয়ে বিপক্ষের রাজাকে এমন স্থানে আনতে হয় যেখান থেকে রাজা কোণঠাসা হয়ে আর স্থানান্তরিত হতে পারে না, দাবার পরিভাষায় একে বলে কিস্তিমাত।

chess-1993141.jpg
সোর্স

ঐতিহাসিকগণই মনে করেন যে, প্রাচীন ভারতবর্ষেই দাবা খেলার জন্ম।বিভিন্ন জাতির পক্ষে নানারকম দাবি থাকলেও বহু গবেষণার পর গবেষকগণ একমত হয়েছেন যে ভারতীয় উপমহাদেশেই খেলাটির আদি উৎপত্তিস্থান। আসলে কোথায় দাবা খেলার উৎপত্তি সেটা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। বেশিরভাগ ইতিহাসবিদের ধারণা ভারত,পারস্য কিংবা চীনই দাবা খেলার জন্মস্থল।মিশরে দাবার মতো এক ধরনের খেলার সন্ধান পাওয়া যায় তিন হাজার অব্দে যার নাম ছিল শতরঞ্জ।তবে ভারতবর্ষের দাবা খেলার নাম ছিল চতুরঙ্গ।চতুরঙ্গ নামক দাবা খেলাটি সূচনা হয় ষষ্ঠ শতাব্দীর আগে ভারতবর্ষে তখনো গুপ্ত সাম্রাজ্য বিরাজমান। তখন দাবাকে চতুরঙ্গ বলার কারণ ছিল খেলাটিতে হাতি,ঘোড়া,রথ ও সৈন্য এই চারটি অংশ বিদ্যমান ছিল।

chess-433071.jpg
সোর্স

আঠারো শতকের মাঝামাঝি দাবা খেলার অগ্রগতি ছিল খুবই ধীর।এরপর থেকে দাবা খেলার নিয়মকানুন এ ব্যাপক পরিবর্তন এসে বর্তমান রূপ ধারন করেছে। পূর্বে দাবার গুটিগুলোর সঠিক আকার আকৃতি ছিলনা।অর্থাৎ বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন হাতি, ভিন্ন ভিন্ন রাজা ছিল।এই ভিন্নতার কারণের জন্য বেশ বিভ্রান্তিতে পড়তে হতো এর ফলে দাবাকে আন্তর্জাতিক খেলা হওয়ার পথে বাঁধা সৃষ্টি করতো। এরপর ১৮৪৯ সালে লন্ডনের একটি খেলনা নির্মাতা কোম্পানি, দাবার গুটি গুলোর একটি বিশেষ ধরনের ডিজাইনের সেট তৈরি করে,যা স্টন্টন প্যাটার্ন নামে পরিচিত।স্টন্টন হচ্ছে এই সময়ের সেরা দাবাড়ু খেলোয়াড়। তিনি এই মডেলটি সমর্থন করেছিলেন বিধায় এই প্যাটার্নটির নামকরণ করা হয়েছে স্টন্টন প্যাটার্ন।এই প্যাটার্নই বর্তমানে দাবার গুটি গুলোর ডিজাইন হিসেবে সারাদেশে ব্যবহৃত হচ্ছে।উনিশ শতকে দাবা খেলায় যুক্ত হয় 'চেস ক্লক'।পূর্বে দাবাতে ধরা বাধা কোন সময় ছিল না। তাই এক একটি দাবা খেলায় সময় লেগে যেত ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা। এত দীর্ঘ সময় বসে থেকে ফলাফলে না আসতে পারায় দাবা খেলা কিছুটা বিরক্তিকর ও অনিশ্চিত খেলায় পরিণত হচ্ছিল। তাই 'চেস ক্লক' এর মাধ্যমে সমাধান করা হয়। এই সময় দাবা খেলায় বিভিন্ন পরিবর্তনও আসে। প্রতিরক্ষামূলকভাবে দাবা খেলা শুরু হয় উনবিংশ শতাব্দীতে।

ধন্যবাদ আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আমার লেখাটি কেমন লাগলো কমেন্টটা অবশ্যই জানাবেন বন্ধুরা। আবার নতুন কোন লেখা নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের সামনে হাজির হবো। সেই পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।

আল্লাহ হাফেজ

Sort:  
 2 years ago 

একটা সময় অনেক দাবা খেলতাম। তবে এখন আর খেলা হয় না। কিন্তু খেলা সম্পর্কে এতটা ইতিহাস জানা ছিল না। আজকে আপনার পোস্ট পড়ার মাধ্যমে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। আসলে প্রতিটি খেলার পিছনেই এমন অনেক ইতিহাস লুকিয়ে আছে। যেগুলো আমাদের কাছে একেবারেই অজানা। গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো শেয়ার করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

 2 years ago 

জি আপনি ঠিকি বলেছেন একদম।সব খেলার পেছনেই ইতিহাস অনেক।ধন্যবাদ আপনাকে।শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

দাবা খেলার ইতিহাস সম্পর্কে কিছুটা জানা ছিল। কিন্তু আজকে আপনার পোস্টের মাধ্যমে ইতিহাসের অজানা জিনিসগুলো জানতে পারলাম।
এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া

 2 years ago 

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59631.75
ETH 2622.60
USDT 1.00
SBD 2.41