নারী তুমি কোথায় নিরাপদ?

in আমার বাংলা ব্লগ7 days ago
❤️আসসালামুআলাইকুম/আদাব❤️

আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে।

dark-1869803_1280.jpg

ছবির উৎস

আজকে আপনাদের মাঝে কোন টপিক নিয়ে হাজির হয়েছি সেটা নিশ্চয়ই কিছুটা আন্দাজ করতে পেরে গিয়েছেন এতক্ষণে।পৃথিবীতে সবচেয়ে নিরাপত্তাহীতায় ভোগেন একজন নারী।যখন একজন মেয়ের জন্ম হয় সেদিন থেকেই তার জীবনটা আশঙ্কার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়।আগেকার দিনে মেয়ে সন্তানদের সেইভাবে মূল্যায়ন করা হতো না।অনেক সময় দেখা যেত কোনো ঘরে কন্যা সন্তান জন্ম নিলে সেই ঘরের মায়ের উপর অত্যাচার শুরু করে দিতেন পুরুষেরা।অথচ কিছু নির্বোধ পুরুষ এটাই বোঝেনা যে তাদের জীবনটা একজন নারীই দিয়েছিল।যখন একজন কন্যা শিশু সাত আট বছরে পা দেয় তখন থেকেই তাকে নিরাপত্তা শেখানো হয়।কেউ কোথাও ডাকলে না যেতে ইত্যাদি।আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক তারপরেও আমাদের মেয়েদের স্বাধীনতা কোথায়?একজন পুরুষের ভয়ে আমাদের সবসময় মাথা নিচু করে চলতে হয়।তারা হাজার অন্যায় করলেও চুপ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।কেন শুধু মাত্র আমরা মেয়ে আর তারা ছেলে সেজন্য।পৃথিবীতে আর কত বৈষম্য দেখতে হবে।যেখানে রাষ্ট্রীয় আইন করা হয় নারী পুরুষ সমান অধিকার।তাহলে কেন নারীরা মাঝরাত অব্দি বাইরে থাকতে পারেনা? বাড়ি থেকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয় সন্ধ্যার মধ্যে বাসায় আসার।শুধুমাত্র একারণেই রাস্তায় একজন বখাটে পুরুষ একজন নারীর উপর সহজেই হামলা করতে পারে।

একজন মেয়ে স্কুল,কলেজ থেকে শুরু করে কর্মস্থল সবজায়গায় যৌন হয়রানির শিকার হয়।আর হ্যাঁ আজকের এই সমাজ ব্যবস্থায় এসেও এটি বিরাজমান।স্কুলে সিনিয়রদের ইফটিজিং , কিছু সময় অসৎ স্যারদের কুনজর আবার কর্মস্থলে কলিগ এবং বসদের থেকে হয়রানি।আজকে পৃথিবীতে ২০২৪ সাল, পৃথিবী সৃষ্টির কয়েকশ বছর পরে এসেও একটি মেয়ের নিরাপত্তা নেই।আধুনিক যুগে মানুষের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে কিন্তু কোথাও কি একজন নারীর আলাদা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে?না ,তাইনা।তার মানে একজন নারী এখন পর্যন্তও পুরুষের থেকে পিছিয়ে ।শুধুমাত্র এই জন্য তাদের ট্যাগ পাওয়া হয়েছে নারী শুরু থেকে।অথচ এই নারী আজকে দেশ চালায়,সংসারের আর্থিক সচ্ছলতা বৃদ্ধির জন্য একজন পুরুষের পাশে দাঁড়ায়।ঘরের কাজ সামলে পরিবার,সমাজ এবং দেশের দায়িত্ব নেয়। নারী আসলেই খুব স্বার্থপর এজন্যই তাদের প্রাপ্য সম্মান দেওয়া হয়না আজকেও।

woman-1867127_1280.jpg

ছবির উৎস

আপনারা নিশ্চয়ই মৌমিতা দিদির হত্যাকান্ড সবাই জেনেছেন এই কদিনে।গতকাল রাতে নিউজটি বিস্তারিত পড়ে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিনা।একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র কিভাবে নরপিচাশদের হাতে শেষ হয়ে যেতে পারে।একটা মানুষের স্বপ্ন তার পরিবারের স্বপ্ন কিভাবে শেষ হয়ে যেতে পারে নিমিষেই।মেয়েটি তো তার কাজে কোনরকম অবহেলা করেনি।সে একজন চিকিৎসক হিসেবে সারাদিন ডিউটি করে যখন দুচোখের পাতা এক করতে গেল তখনি ঘাতকরা তাকে সারা জীবনের জন্য ঘুম পাড়িয়ে দিল।জীবনটা কতটাই না ঠুনকো কয়েকঘন্টা আগে অনলাইন থেকে অর্ডার করা প্রিয় খাবারটা খেয়েছিল মেয়েটি।কে জানত সে তার প্রিয় খাবারটা দ্বিতীয়বার আর খেতে পারবেনা ।শেষ বারের মতো মায়ের মুখখানি আর দেখতে পারবেনা ।গনধর্ষন তারপর লোমহর্ষক মৃত্যুর ঘটনার লেখাটি পড়ে মনে হচ্ছিল ওই মানুষগুলোর মধ্যে একজনও কি মানুষ ছিল আদৌ?মানুষরুপী পিচাশ গুলোর একজনেরও কি মনে হলোনা তাদের মা, বোনের কথা।মেয়েটির সেই নির্মম মুহূর্তের আহাজারি যখন বলছিল আমাকে ছেড়ে দেও কাউকে কিছু বলবোনা।তখন পিচাশদের একজনের মনেও কি দয়ার সৃষ্টি করলোনা?আজকে সারা দুনিয়ার মানুষ মেয়েটির মৃত্যুতে ব্যথিত ।মেয়েটির নিথর দেহ দেখে কত শত অশ্রু ফেলছে সারা বিশ্বের মানুষ সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা ।নর পিচাশ গুলোর বিচার হয়তোবা হবে।কিন্তু মৌমিতার মা ,বাবা কি তাদের ডাক্তার মেয়েকে আর ফিরে পাবে?নারী তুমি পৃথিবীতে দ্বিতীয়বার আসলে অসীম শক্তি নিয়ে এসো।কারণ পৃথিবীতে কেউ তোমার নিরাপত্তা দিতে পারবেনা।পৃথিবীতে যে রক্ষক থাকে সেই হয় ভয়ঙ্কর রকমের ভক্ষক।

ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আমার আজকের ব্লগটি কেমন লেগেছে কমেন্টে জানতে ভুলবেন না কিন্তু বন্ধুরা । আবার নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো।


❤️আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি❤️
আমি রাহনুমানূর দিশা।আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী।আমি বর্তমান অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়াশুনা করছি।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সাথে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় থেকে যুক্ত রয়েছি।বাংলা ভাষায় লিখতে, পড়তে এবং নতুন নতুন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার ভালো লাগে।এছাড়াও ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতে অনেক ভালো লাগে।অবসর সময়ে গান শুনতে এবং বাংলা নাটক দেখতে পছন্দ করি।

Post by-@rahnumanurdisha
Date- 16th August,2024


Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 6 days ago 

আসলে আপনার প্রশ্নের এই ক্যাপশন সম্পর্কে কি বলবো তার ভাষা আমার কাছে নেই। পৃথিবীর মানুষগুলো এমন কেন এ প্রশ্নটা নিজের কাছে আমি মাঝে মাঝেই করি। জাতি হিসেবে আমরা লজ্জিত, কালকে মৌমিতাদির ঘটনাটি আমিও পুরোপুরি পড়েছি অনেক বেদনাদায়ক আমরা লজ্জিত।

 6 days ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া।

 6 days ago 

আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে সময় উপযোগী একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। আসলে আমাদের সমাজে সব সময় নারীরা অনেক হয়রানি শিকার হয়। তাই আমি মনে করি প্রত্যেক ছেলেরা যদি নারীদেরকে প্রত্যেকের মায়ের চোখে দেখে তাহলে হয়তো আমাদের সমাজ সুন্দরভাবে গড়ে তোলা সম্ভব। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 6 days ago 

জি মেয়েদের মা, বোনের চোখে দেখলে সমাজটা ভালো হয় আপনি ঠিক বলেছেন একদম,ধন্যবাদ।

 6 days ago 

মেয়েরা কখনোই নিরাপদ আশ্রয় পায় না। যদিও মাঝেমধ্যে বিষের নিয়ম শৃঙ্খলা একটা নিরাপত্তা এনে দেয় অথবা পরিবার সমাজ নিরাপত্তার পথ সৃষ্টি করে, অনেক সময় লক্ষ্য করা যায় হাতে গোনা কয়েকজন মানুষের জন্য সেই নিরাপত্তা নষ্ট হয়ে যায়। তবে সবার মনে নারীদের প্রতি সম্মান নারীদের মর্যাদা গুরুত্ব আসুক। এটাই দোয়া করি। আরো দোয়া করব মা বোনেরা যেন তাদের নিজেদেরকে সেভাবে সেভে রাখতে পারে, তেমন নিয়ম শৃঙ্খলা আইন দেশে কঠোরভাবে চলমান হোক।

 6 days ago 

জি আপনি ঠিকই বলেছেন,ধন্যবাদ ভাইয়া।

 6 days ago 

এই নিউজটা কয়েকদিন ধরে যখনই দেখছি তখনই অস্থির লাগে। আসলে মেয়েদের জীবন কি এতই সস্তা। মুহূর্তের মধ্যে একটি সাজানো গোছানো জীবনকে এভাবে তছনছ করে দিতে পারে। আর এদের ঠিকমতো শাস্তি হয় না তার জন্য এরা বারবার বিভিন্ন রূপে ফিরে আসে। যাইহোক আপু ভালো লাগলো আপনার লেখাটি পড়ে।

 6 days ago 

ধন্যবাদ আপু।

 6 days ago 

এই নিউজটা সম্পূর্ণভাবে গতকালকে জানতে পেরেছি। আর তখন জেনে সত্যি এত খারাপ লেগেছে যে কিছু বলার ভাষা নেই। আমরা নারীরা এখনো পর্যন্ত মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারছি না। আমাদের স্বাধীনতা এখনো পর্যন্ত আমরা সঠিকভাবে পাইনি। রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসার সময়ও মাথায় নিচু করে হেটে আসতে হয় আমাদের। সব সময় একটা আতঙ্কে একটা ভয় থাকা লাগে কেন?? এগুলোর কি কোন বিচার হবে না একদিন?? একটা নারীর নিরাপত্তা এখনও পর্যন্ত কেউই দিতে পারছে না, আর ভবিষ্যতেই বা কিভাবে দিবে?? একটা নারী কোথায় আর নিরাপদ থাকলো। এই নরপিশাচ গুলোর যেন কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি হয় এটাই কামনা করি।

 6 days ago 

জি আপু ওদের কঠোর শাস্তি হোক এটাই চাই বিশ্ব,ধন্যবাদ।

 6 days ago 

ঘটনাটা এতদিন পর্যন্ত জানতাম না। কিন্তু দুইদিন আগেই জেনেছি পুরো ঘটনা। নারীরা কোথায় আর নিরাপদে থাকবে এটাই ভাবছি। সমাজে নারীরা এখনো পর্যন্ত পারছে না মাথা উঁচু করে বাঁচতে। এখনো বাড়ছে না স্বাধীনভাবে চলতে। তাহলে কখন পাবে তারা তাদের এই স্বাধীনতা। কখন এই অমানুষগুলোর শাস্তি হবে। তারা তো মুক্ত আকাশের নিচে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর কত দেখতে হবে এই দৃশ্যগুলো। জাতি হিসেবে আসলেই আমরা অনেক লজ্জিত। পুরুষদের তো উচিত নারীদেরকে মা-বোনের চোখে দেখে তাদেরকে নিজেরাই আগলে রাখা। তারা যেন এর থেকে হাজার গুণ বেশি কষ্ট পায় এটাই কামনা করি।

 6 days ago 

আসলেই ভাইয়া এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত,ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.031
BTC 60970.88
ETH 2634.17
USDT 1.00
SBD 2.59