ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরী এবং আমার কিছু দীর্ঘশ্বাস।১০% লাজুক শেয়ালের জন্য।
বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমার ব্লগ টি সম্পূর্ণ অন্যরকম। আমি আলোচনা করব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং আমার কিছু না বলা কথা।
সাফল্যের মাপকাঠি কি? অনেকেই বলবেন ভালো একটা চাকরি। হ্যাঁ সমাজে ভালো একটা চাকরির খুব কদর রয়েছে। চাকরি না পেলে হয়তো বা ব্যক্তিকে সমাজ থেকে অনেক কটু কথা শুনতে হয়। তবে আসলেই কি চাকরি সাফল্যের মাপকাঠি? কিন্তু আমার কাছে মনে হয় একটা চাকরি কখনোই সাফল্যের মাপকাঠি হতে পারে না ।আমি মনে করি এবং বিশ্বাস করি শিক্ষা নিয়ে নিজেকে জানা, জ্ঞান অর্জন করা ,মানুষকে শিক্ষা দেয়া ,আত্মশুদ্ধি হওয়া, স্বশিক্ষিত হওয়া এগুলোই সাফল্যের মাপকাঠি। আসলে আমি এই কথাগুলো কেনো বলছি তারও ব্যাখ্যা দিচ্ছি
সকাল সাতটায়গিয়েছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি তে। সেখানে গিয়ে তো আমার চক্ষু ছানাবড়া। আমি রীতিমতো অবাক হয়েছি দেশ সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা লাইব্রেরীর চিত্র দেখে। সাধারণত লাইব্রেরী খুলে দেয় সকাল আটটায় কিন্তু জায়গার সংকুলান না হওয়ায় সকাল ছয়টা কিংবা সকাল সাতটায় ব্যাগ রেখে আসতে হয় এই তীব্র শীতে সকাল ছয় টায় উঠে এসে ব্যাগ রেখে গিয়ে আবার আটটায় এসে লাইব্রেরীতে লাইন ধরতে হয় ঢোকার জন্য।
লাইব্রেরীতে যারা আসে তাদের মধ্যে প্রায় নিরানব্বই শতাংশ চাকরির পড়ার জন্য লাইব্রেরীতে আসে। সবার লক্ষ্য একটা সরকারি জব পাওয়া। সমস্যাটা আসলে এখানেই। দেশের তথা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় লাইব্রেরি মনে করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরী কে। প্রায় নয় লক্ষ বই তিন হাজার দুর্লভ পান্ডুলিপি তিনশ টি প্রাচীন জার্নাল সংরক্ষিত আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরীতে কিন্তু। কেউ এক দিনও ছুঁয়েও দেখেনি বইগুলো। অথচ গ্রন্থাগারে এই বইগুলো রাখা হয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য। তারা এগুলো পড়বে সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কে জানবে গবেষণা করবে। কিন্তু কি হলো সেই শিক্ষার্থীরা গবেষণা বিমুখ। তাদের কাছে গবেষণা ইতিহাস-ঐতিহ্যের চেয়ে যে চাকরিটা বেশি দরকার। সমাজে ভালো একটা অবস্থান নিয়ে আসাটা দরকার। ফলে যা হওয়ার তাই হয়। একদিকে এসব দুর্লভ বইগুলো ধুলোর স্তরে ঢাকা পড়ছে অন্যদিকে সরকারি চাকরির পিছনে তরুণরা ছুটছে তো ছুটছেই। শিক্ষা যদিও আত্মোপলব্ধি করার বিষয়। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষার সংজ্ঞা কিন্তু সম্পূর্ণ ভাবে পরিবর্তন হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সেই পথে হাঁটছে। এর ফলে বেকারত্বের হার বেড়েই চলছে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতকরা পঁচানব্বই শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে হতাশ। এদের মধ্যে ষাট শতাংশ শিক্ষার্থী শুধুমাত্র ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরী সহ দেশের সকল লাইব্রেরীগুলো আজকে গবেষণা বিমুখ হয়েছে যেটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। কিন্তু এরকমটা তো হওয়ার কথা ছিল না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরীতে না গেলে বুঝতাম না বর্তমান সময়ের করুণ চিত্র। এখানে এখন কে কতটুকু জানলো সেটা বড় বিষয় না কে কত ভালো চাকরি পেলো সেটাই সবচেয়ে বড় বিষয়
বিষয় | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরী এবং বাস্তবতা |
---|---|
লোকেশন | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
ডিভাইস | নোটফাইভ |