আমার বাংলা ব্লগের সকল বাংলাভাষী সদস্যগনকে আমার সালাম এবং আদাব। সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে অনেক ভাল আছি।সবাইকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ। আজকে আমি আপনাদের জন্য প্রতিদিনের মত নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমি আজ "আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা ২০ অংশগ্রহণের জন্য
প্রথম প্রেমের অনুভুতি নিয়ে কিছু লিখবো। ধন্যবাদ জানাই আমাদের সকলের প্রিয় দাদা @rme দাদাকে বাংলা ভাষায় সুন্দর একটি কনটেস্ট এর আয়োজন করার জন্য।
![heart-gb94de83b6_1920.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmVoeaWPDCqR11FGAWv1YGXmNuUsrJq2QqaeAfJFFLCWmF/heart-gb94de83b6_1920.jpg)
[source]
আসলে সত্যি কথা বলতে কি কিছু কিছু অনুভূতি মুখে বলে কিংবা লিখে প্রকাশ করা যাই না। ঠিক তেমনি প্রেম কিংবা ভালোবাসার অনুভূতিগুলা প্রকাশ করা যাই না ,হয়তো ঘটনা গুলো বলা যায় ,কিন্তু অনুভূতি প্রকাশ করা বিশেষ করে মেয়েদের। কথায় আছে ,মেয়েদের বুক ফাটে তো মুখ ফুটে না। প্রতিযোগিতায় অনেকে ভালোবাসা কিংবা প্রেম নিয়ে অনেক কিছু লিখছে । তাই আমি আর নতুন করে তেমন ব্যাখ্যা করবো না।
প্রতিযোগিতায় অনেকের পোস্ট পড়ে বেশ ভালোই লেগেছে। অনেকে বেশ ছোটবেলায় অর্থাৎ স্কুল লাইফের প্রেমে পরে তার অনুভুতিগুলো প্রকাশ করেছে। আসলে আমার স্কুল লাইফ কিংবা কলেজ লাইফ কেটেছে গার্লস স্কুল কিংবা কলেজে। আর বেশ কড়া ছিল ,তাই প্রেমে পরার মতো সাহস কিংবা সময় ছিল না।
সময় টা ছিল ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে,কেবল ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম। আমার ছিল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট। যাই হোক ক্লাসের রুটিন চেক করে সময় অনুযায়ী গেলাম ভার্সিটিতে। তখন অলরেডি ক্লাসে টিচার চলে এসেছে ,যাই হোক পারমিশন নিয়ে ক্লাসে ভিতরে যেয়ে দেখি সব ছেলে শুধু মাত্র দুইটা মেয়ে। যাই হোক কোনো রকম চেয়ার এ বসলাম। ক্লাস শেষ হওয়ার পর সবাই সবার পরিচয় জানার জন্য ব্যস্ত। আমি একটু লাজুক প্রকৃতির ছিলাম ,তাই আগ বারিয়ে কখনো কারো সাথে কথা বলতাম না। তবে খুব সহজে মেয়েদের সাথে মিশে গিয়েছিলাম । আর যে আসে কথা বলতে তার সাথে কথা বলি। কয়েকদিনে মোটামুটি সকলের সাথে একটা ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায়। ক্লাসে নয়ন নামের একটা ছেলে ছিলো। ওকে আমি শুধু নয়ন নামেই চিনতাম। ওকে বেশ ভালো লাগতো। একদিন হঠাৎ রোল কল হচ্ছে সুবিনয় বিশ্বাস নামে ও প্রেজেন্ট দিচ্ছে। আমি ভাবলাম অন্য কারো প্রেজেন্ট দিয়ে দিচ্ছে। কিছুক্ষণ পরে জানতে পারি আসলে নয়ন হিন্দু। কি আর করার আর যাই হোক বন্ধু এর চেয়ে বেশি ভাবা কোন অপশন নাই। একদিন কি কারণে যেন ওর সাথে আমার অনেক ঝগড়া হলো। আমার একটু রাগ বেশি। আমি ওর সাথে কথা বলিনা ও আমার সাথে কথা বলে না। কেন জানি ঝগড়ার পর ওকে আমি দেখতেই পারতাম না। ওর রোল আর আমার রোল কাছাকাছি ছিলো বিদায় প্রেকটিকালে এক সাথে গ্রুপে নাম পরতো। গ্রুপ চেঞ্জ করার অপশন যদি থাকতো তাহলে চেঞ্জ করে নিতাম। এভাবে প্রায় ২ সেমিষ্টার শেষ হয়ে গেলো ,কেউ কারো সাথে কথা নাই। হঠাৎ স্ট্রাকচার আর ডিজাইন ক্লাসে গ্রুপ করা হলো ,খুব সম্ভবত আমাদের ৫ জন একসাথে স্যার গ্রুপ করে দিলো। এই খানে আমরা একসাথে এখন আর চেঞ্জ করার অপশন নেই। আমি বেশ চিন্তায় পরে গেলাম কিভাবে ওর সাথে কথা বলবো ,অন্য সবার সাথে কথা বলি কিন্তু ওর সাথে কথা বলি না। একদিন হঠাৎ ও আমার ফোনে একটা মেসেজ পাঠালো সরি বলে ,আমি চিনেও না চিনার ভান করলাম। যাই হোক কিভাবে কিভাবে রাগ ভেঙে গেলো। গ্রুপের সবাই লাইব্রেরিতে আমরা একসাথে পড়তাম। কেউ আগে এসাইনমেন্ট করে একে আরেকজনকে হেল্প করতাম। ক্লাস শেষ করে আমরা বাসায় যেতাম একসাথে। অনেক সময় গাড়ি না পেলে দুইজনে হেটে হেটে গল্প করতে করতে বাসার কাছাকাছি চলে যেতাম আমার বাসা ছিল ওর বাসা থেকে অনেক দূর তারপর ও এগিয়ে দিয়ে আসতো। আস্তে আস্তে ওর প্রতি কেমন জানি ভালো লাগা কাজ করতো ,তবে ও আমাকে বেশ পছন্দ করতো ,আমি বুঝেও না বুঝার ভান করতাম। কারণ দুই জন দুই ধর্মের মানুষ ছিলাম। যাই হোক বাসায় আসলে আবার ফোনে কথা। আমি বেশ ঘুম পাগল মানুষ ছিলাম,যে আমি রাত ১০.৩০ টার পর আমাকে খুজে পাওয়া যেত না ,সেই আমি ওর সাথে রাত জেগে কথা বলতাম। বেলি রোডের ফুটপাথে বসে আড্ডা দেওয়া ,ছোট ছোট টং দোকানে বিভিন্ন খাবার খাওয়া। প্রতিদিনের একটা অভ্যাস হয়ে দাড়ালো।প্রেমে পরলে অনেক অভ্যাস পরিবর্তন হয়। গাড়ি দিয়ে তাড়াতাড়ি বাসায় পৌঁছাবো বলে ,অনেক খানি পথ হেটে হেটে বাড়ি যাওয়া। বিভিন্ন ওকেশনে ছোট ছোট গিফট দেওয়া। বৃস্টি আসলে এক সাথে ভিজতে ভিজতে হেটে বাসায় যাওয়া। তবে কেউ কারো ধর্মকে কথনোই ছোট করতাম না। ক্লাস শেষ হলে একজন আরেকজনের জন্য অপেক্ষা করতাম। সত্যি একদিন ও আমাকে প্রপোস দিয়ে বসলো। কিন্তু আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না ,এক দিনে ভালো লাগা অন্য দিকে ধর্ম। আমি ওকে বললাম ও আমার পক্ষে সম্ভব না।ভালো লাগে ঠিক কিন্তু কোনো ভাবেই সম্ভব না।
প্রস্তাব একপেক্ট করিনি ঠিক কিন্তু আগের মতো এভাবেই দিন যাচ্ছে। আমারও ওর প্রতি দুর্বলতা কাজ করতো,কিন্তু কখনো আমি প্রকাশ করিনি। প্রায়ই ভাবতাম কেন এক ধর্ম হলো না। ওর বাড়ি ছিল খুলনা ,ঢাকায় ফ্রেন্ডরা মিলে ভাড়া বাসায় থাকতো। একদিন খুলনা থেকে আমার নম্বরে ফোন আসে ,ওপর প্রান্তে একটি মেয়ে কেঁদে কেঁদে বললো ,ও নয়ন কে অনেক ভালোবসে ,কিন্তু আমার জন্য নয়ন ওকে পাত্তা দেয় না। নয়নের বাবা মা রাজি ,কিন্তু নয়ন রাজি হয় না। আমাকে বেশ কাকুতি মিনুতি করে বললো আমি যেন ওর জন্য কিছু করি।আমার সম্পর্কে এবং আমার নম্বরটা পেয়েছে ,নয়ন এর রুমমেট ও আমাদের ক্লাস মেট থেকে। নিজের অনেক কষ্ট হয় সত্বেও কোনো একটা ব্যবস্থা করা লাগবে। এক তো ধর্ম ভিন্ন। তার উপর মেয়েটার কান্না ,অনুরোধ কোন ভাবেই ফেরাতে পারলাম না। তাছাড়া নিজের পরিবারের এবং নয়নের পরিবারের কথা চিন্তা করে নয়ন কে অনেক বুজিয়ে এ ওর সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিলাম।
এইদিকে আমাদের প্রায় সেমিস্টার শেষের দিকে।থিথিস করার পালা,দুইজন দুই রকমের সাবজেক্ট পেলাম। ক্লাস ও দুইজনের আলাদা। আসলে কিছু কিছু ভালোবাসা অপূর্ণ থেকে যায়। এই হচ্ছে আমার প্রথম কিংবা শেষ প্রেম কাহিনী। আজ এই অব্দি পরবর্তীতে আসবো অন্য কোনো সময় অন্য কোনো ব্লগ নিয়ে।সেই অব্দি ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায়।
ধন্যবাদ সবাইকে
![Banner.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmb3BFz7hyBPPmThuqBCVXvndwCY2yKRkj98hN8bp3LYeT/Banner.png)
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
![20211003_112202.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZsuDeCgts3nWsFqMzfWo5mp7DVXb65nGmBJrZ5ffny8p/20211003_112202.gif)
JOIN WITH US ON DISCORD SERVER
![banner-abb4.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmc9CnNzGCsSQM35LBaeZUni1qLmJa6pyjH1wCVbjFvTY9/banner-abb4.png)
Follow @amarbanglablog for last updates
Support
@heroism Initiative by Delegating your Steem Power
আপনার প্রথম প্রেমের অনুভূতি জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। আসলে সেদিন হয়তো ধর্ম-বর্ণের কারণে আপনার ভালোবাসাটা একে অপরকে সারা জীবন এক সাথে রাখতে পারেনি, তবে হৃদয় ভালোবাসাটা ঠিকই রয়ে গেছে।
হয়ত বা। ভালো লাগলো আপনি আমার পোস্ট টা পড়েছেন। ধন্যবাদ
আপনার জীবনের প্রথম প্রেমের অনুভূতি জেনে খুবই ভালো লাগলো আপু । আসলে ধর্ম-বর্ণ এগুলোর কারণেই হয়তো আপনাদের ভালোবাসাটা শেষ পর্যন্ত এক হতে পারেনি । তবে কিছু ভালোবাসা আজীবন মনে স্মৃতি হিসেবে থেকে যাবে , আপনার ও নয়নের মাঝে যে সম্পর্কটা তৈরি হয়েছিল । ধন্যবাদ
আসলেই কিছু কিছু স্মৃতি ভুলা যায় না। ধন্যবাদ আপনাকে।
কিছু কিছু অনুভূতি হয়তো কাউকে বলে বোঝানো যায় না। হয়তো অনেক ভালোবাসায় পূর্ণতা পায় না। আপু আপনার প্রথম প্রেমের অনুভূতি আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো।
কিছু কিছু অনুভুতি কখনোই প্রকাশ করা যায় না। ধন্যবাদ আপু পাশেই থাকবেন।
প্রথমে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই এই সুন্দর কন্টেস্টে অংশগ্রহণ করার জন্য। আপনার এত সুন্দর প্রেম অনুভূতি আমাকে মুগ্ধ করেছে। আসলে কে কখন কার প্রেমে পড়ে সেটা বোঝা কঠিন। আপনি ভালোবাসেন যাকে, উনাকেও আর একজন ভালোবেসেছে!অনেকটা সিনেমার ঘটনার মতো। তবে অনেক ভালোবাসা রয়েছে যেগুলো পূর্ণতা পায় না, ভালোবাসার মানুষের মনের অগোচরে রয়ে যায়। বেশ ভালো লাগলো আপনার অনুভূতিগুলো।
দয়া কমেন্ট করার আগে একটু ভেবে চিন্তে এবং পড়ে নিবেন। ধন্যবাদ।
আসলে আপনি ঠিক বলেছেন আপু সব অনুভূতি আসলে প্রকাশ করা যায় না। তবে আপনার প্রথম প্রেমের অনুভূতি পরে ভালোলাগার থেকে খারাপই বেশি লাগছে। তবে কাকে কখন ভালো লেগে যায় এটা আসলে আমরা নিজেরাও জানিনা। তবে নিজের ভালবাসার মানুষকে অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার মাঝেও একটি প্রশান্তি কাজ করে।
আসলেই কখন কাকে ভালো লেগে যায় বলা যায় না।ধন্যবাদ আপনাকে।