গল্প: ভুল (শেষ পর্ব ) ।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আমি @rahimakhatun
from Bangladesh

১১ ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খৃস্টাব্দ ।

মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগন কেমন আছেন ?আমি ভালো আছি । আশা করি আপনারা ও ভালো আছেন ।প্রতিদিনের মত নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি ,আমি আজকে একটা গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।আসলে এই গল্পের প্রথম অংশ অনেক আগে করেছিলাম ,পরে দ্বিতীয় অংশ পোস্ট করতে পারিনি ,হঠাৎ অসুস্থ হওয়ার কারণে ,তাই আজকে ভাবলাম গল্পের বাকি অংশ লিখে পোস্ট করে ফেলি। যদিও আমি গল্প এত বড় করি না ,চেষ্টা করি ২টা কিংবা ৩ টা পর্বের মধ্যেই শেষ করতে। তাতে পাঠকের গল্পের প্রতি আগ্রহ থাকে।

girl-g811408ca1_1920.jpg

source

একদিন অবনি আর ফয়সাল কাছাকাছি ঘুরতে গিয়েছে ,সেই সময় এলাকার এক ছেলে দেখে ফেলেছে। কিন্তু অবনীর ছেলেটিকে দেখে নি। যখন তাদের দেখেছে সাথে সাথে অবনির বাবার কাছে গিয়ে বলে দিয়েছে। অবনির বাবা বেশ ভালো মানুষ ঠিক তবে অনেক রাগি মানুষ।

যাই হোক ছেলেটি অবনির বাবার কাছে বলে দেওয়াতে ,অবনীর বাবা খুব রেগে আছে। অবনি বাসায় আশা অব্দি অপেক্ষা করছে। যেই অবনি বাসায় ফিরলো সাথে সাথে তার বাবা ক্ষেপে গিয়ে তাকে মারধর শুরু করলো ,এত বড় মেয়েকে অনেক মেরেছে। অবনি সারারাত কেঁদেছে। যাই হোক পরের দিন সব স্বাভাবিক ভাবেই কলেজে যাচ্ছে ,কিন্তু তার ফয়সালের সাথে সম্পর্ক থেমে থাকেনি। ঐদিন অবনির বাবা মেরে অবনির ফোন নিয়ে গিয়েছে ,তাই ফয়সালের সাথে কলেজ শেষ করে একটু দেখা করে আর কথা বলে।


ফয়সাল কে ব্যাপারটা অবনি জানায় ,তখন ফয়সাল অনেক কষ্ট করে একটা ফোন অবনিকে কিনে দেয়। তারপর থেকে অবনি লুকিয়ে লুকিয়ে ফোন ব্যবহার করে,রাতের দিকে কথা বলে। একটা সময় অবনির মা টের পায় ,সে এখন কি করবে যদি অবনির বাবা কে বলে তাহলে এইবার অবনিকে মেরেই ফেলবে। তাই সে বুদ্ধি করে অবনীর বাবা কে অবনির বিয়ে এর সম্পর্কে বলে ,আর বলে ঘটক কে যেন বলে ভালো একটা ছেলের খোঁজ দিতে।


ঘটক একটা ছেলের সন্ধান দেয় ,ছেলেটা গ্রামের কিন্তু একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভালো একটা জব করে ,দেখতে শুনতেও খুব ভালো। একটাই সমস্যা গ্রামের ছেলে শহরে অবনীদের মত বাড়ি নেই ,তাছাড়া এত বড়োলোক ও না। যাই হোক তারপর ও অবনির বাবা মা রাজি ছেলেকে দেখে ,বেশ সুন্দর এবং স্মার্ট। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে অবনি এই বিয়ে তে রাজি না।


কারণ সে ফয়সালকে অনেক ভালোবাসে। কিন্তু বাবার উপর দিয়ে কোন কথা বলতে পারবে না ,কারণ এতে করে অবনি আর অবনির মাকে মেরে ফেলবে। যাই হোক দেখাদেখির এক পর্যায়ে অবনির মতের বিরুদ্বে বাবার পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে কোন ভাবেই অবনি তার স্বামীকে সহ্য করতে পারছে না। কিন্তু অবনির স্বামী খুব ভালো মানুষ ,সে ভেবেছে হয়তো ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু অনেক দিন যাওয়ার পর ও ঠিক হচ্ছে না।


এই দিকে আস্তে আস্তে অবনির স্বামীর অনেক সন্দেহ হয় ,কেন অবনি এমন করে। একটা সময় সরাসরি অবনির মায়ের সাথে কথা বলে অবনির স্বামী। তার স্বামীর নাম ছিল বাদল। একটা সময় বাদল আস্তে আস্তে অবনির দিক থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ,তার জন্য আগের মত এত টেক কেয়ার করে না। অবনির ও পাগলামি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ,আর বাদল ও আগের মত সহ্য করতে পারছে না। আস্তে আস্তে তাদের মাঝে অনেক দুরুত্ব হয়ে যায়। এই দিকে দুই পরিবারের মা বাবা বেশ টেনশনে পরে যায় কি করবে বুঝতে পারছে না।


কাউকেই কোন বুঝ দেওয়া যাচ্ছে না ,আস্তে আস্তে বাদল অবনির খুঁজে খবর নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ,এই দিকে অবনি ও তার স্বামী সহ্য করতে পারছে না ,আর ফয়সাল ও তার সাথে যোগাযোগ করা বন্ধ করে দিয়েছে ,সেই প্রায় পাগল হয়ে গিয়াছে। পাগল বলতে পুরোপুরি পাগল সে কাউকেও সহ্য করতে পারে না ,নিজেই নিজের মাথার চুল নিজেই কেটে ফেলেছে ,যাকে তাকেই মারে। সে এখন পুরোপুরি পাগল ,এখন তার বাবা মা ডাক্তার কবিরাজ যে যেটা বলে সেটাই দেখাচ্ছে।

আমার মনে কি কিছু কিছু সময় বাবা মায়ের ছাড় দিতে হয়,এখন হয়তো তারা ভাবছে ফয়সাল গরিব হলেও তার সাথে বিয়ে দিলে হয়তো এমন তা হতো না। আসলে কখন কি হয়ে যায় তা বলা যাই না। অবশেষে বাদল অবনিকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেয়।

অবশেষে গল্প শেষ হলো , আজ এই অব্দি ,আবার আসবো অন্য কোনো দিন ,অন্য কোন ব্লগ নিয়ে ,সেই অব্দি ভালো থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায়।


এতক্ষন সাথেই থাকার জন্য ধন্যবাদ

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  
 last year 

আপু আপনার গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগল, আসলে এটা বর্তমান আমাদের সমাজের বাস্তব চিত্র। তবে অবনির বাবা রাগের কারণে তার জীবন ধ্বংস হয়ে গেল। আর অবনির স্বামী প্রথম দিকে ভেবেছিল এটা ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু যখন অবনির পাগলামি আরো বাড়তে লাগল তখন তার স্বামী অবনিকে ছেড়ে দিল। যাইহোক আপু ভালো লিখেছেন, ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আসলেই রাগ মানুষকে ধ্বংস করে দেয়,যার জন্য অন্যেনো মানুষের কষ্ট হয়।ধন্যবাদ আপনাকে

 last year 

গল্পের শেষটা খুব দুঃখজনক হয়েছে। ভালোবাসার জয় যেমন হলো না ঠিক তেমনি বিয়ের পরও সংসার টিকলো না। কিন্তু এরকম ভাবে বাবা মায়ের কারণে মেয়ের জীবনটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এমন কত চিত্র সমাজে দেখা যায়।যাই হোক আপু গল্পটা খুব সুন্দর লিখেছেন। অনেক ভালো লাগলো গল্পটা পড়ে।

 last year 

কিছু কিছু মানুষের ভাগ্য এমনই হয়।এ কুল হলো না ঐ কুল ও হল না।ধন্যবাদ আপনাকে

 last year 

সত্যি বলতে এই রকম মানুষ অনেক রয়েছে আমাদের সমাজে। ধন্যবাদ আমার মন্তব্যের সুন্দর ফিডব্যাক দেয়ার জন্য।

 last year (edited)

অবনির জীবনে আর সুখ আসলো না। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সেই অসহায়। একটি সম্পর্ক বিচ্ছেদ হওয়া সত্যি এইটা খুবই দুঃখজনক । বলা যায় যে, বাবা মায়ের কারণে মেয়েটির জীবন নষ্ট হয়ে গেলো। আমাদের পরিবারগুলোতে এ ধরনের ঘটনা প্রায় ঘটে থাকে। গল্পটি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন । আমাদের মাঝে গল্পটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 last year 

আসলে ফয়সালের সাথে মিলিয়ে দিলেই ভালো হতো।আসলে ভাগ্যে ছিলো না তাই এমন হলো।ধন্যবাদ

 last year 

আমাদের সমাজের বাস্তব এরকমই হয়ে থাকে। বাস্তবতা জানি আপনি অনেক সুন্দর একটি সাজিয়ে-গুছিয়ে গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।হাজারো ছেলে-মেয়ের জীবন এভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বাবা-মায়ের কারণে। যদিও সবসময় পিতা-মাতারা সব সন্তানের ভালোটাই চাই। কিন্তু তারা এটা বুঝনা আমরা ভালো চাইতে চাইতে সন্তানের খারাপ চাই ফেলেছি। যাইহোক আপনার গল্পটা বেশ দারুন ছিল। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে এত সুন্দর একটি গজল শেয়ার করার জন্য।

 last year 

বাস্তব কিনা জানি না,আমি আমার নিজ থেকে এটা লিখেছিলাম। ধন্যবাদ আপনাকে