🔥আমার বাংলা ব্লগ 🔥

---

---

💞হ্যালো আসসালামুয়ালাইকুম আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা।সবাই কেমন আছেন।আশা করছি মহান সৃষ্টিকর্তার দোয়ায় সবাই ভালো আছেন।আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি।সবার কাছে আশা করবো সবাই সাবধানে থাকবেন।কিছুদিন আগে যখন শুভ ভাই একটা সুন্দর প্রতিযোগিতা নিয়ে আয়োজন করেছিলো আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিল।আসলে আমার বাংলা কমিউনিটির এইরকম প্রতিযোগিতার আয়োজন আমার কাছে বেশ ভালো লাগে।এই জন্য আমি প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই সকল এডমিন এবং মডারেটরদের।আর আজকের এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন আমাদের সবার প্রিয় শুভ ভাই তাঁকে আসলে ধন্যবাদ না জানালেই না।আজকে আপনাদের সাথে আমার বৃষ্টির দিনের মজার অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।বেশি কথা না বলে চলেন শুরু করি।

---

_{ছবির সোর্স 🧭}

আজকে আমি বৃষ্টির দিনের একটি ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।আমি মনে করি যে আজকের আমার গল্পটা একটু ভিন্ন রকম হবে।সেই ছোট বেলার কথা।ক্লাস টু বা ওয়ানে পড়ি।আসলে ঠিক মনে করে করতে পারতেছি না।আগেই বলে নেই আমি আমার বাবা মার একমাত্র সন্তান।আমার কোনো ভাই বোন নাই।এইজন্য ছোট বেলা থেকেই আমার প্রতি আমার বাবা মা এর একটু নজর বেশি ছিল।খুব চাপে রাখতো।কোথাও ঘুরতে যেতে দিত না।সন্ধার আগেই বাসায় আসা লাগতো।বিশেষ করে আমার আম্মু আমাকে খুব শাসন করতো।অনেক মাইর খেয়েছি জীবনে আমি আমার আম্মুর হাতে।যাই হোক এবার আসি আমাদের বৃষ্টির দিনের গল্পে।

---

---

---

_{ছবির সোর্স 🧭}

সময়টা ছিল দুপুরের পরে।আকাশে খুব মেঘ করলো।আবার সেই সাথে মুশলধারে বৃষ্টি পরতে লাগলো।আমার আম্মু আমাকে কখনো বৃষ্টিতে ভিজতে দেয় না।আম্মুকে অনেক কিছু বলার পর আম্মু আমাকে বাহিরে যেতে রাজি হইলো। আমিতো মহা খুশি যা বলে বোঝানো যাবে না।কারন এর আগে আমি দেখেছি আমার বড় বোন ভাইরা মিলে খুব সুন্দর করে বাহিরে বৃষ্টিতে ভিজে।আসলে সেই সময়টা ছিল বৈশাখ মাস যে সময় আম ধরেছে কিন্ত পাকে নাই।আমি বাহির হয়ে আমার এক বোন এবং ভাই এর সাথে বৃষ্টিতে কিছুক্ষণ ভিজলাম।এর পরে আমার বোন বললো যে চল আম কুড়ে নিয়ে আসি।আমি আগেই বলে আমি এতো মহা খুশি ছিলাম যে আমার আম্মু আমাকে তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে বলছে আমার মনেই নেই।আর আমাকে এইটাও বলেছিল যে বেশি দূরে না যেতে।কিন্তু আমিতো খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেছি আমার কিছু মনে নাই।আমাদের এলাকার একটা জায়গা আছে যার নাম বড়ডিঘি বলে।এখানে অনেক আম এবং কাঁঠালের গাছ রয়েছে।ঝড়ের দিনে এখানে অনেক আম পাওয়া যায়।আমার আপুর কথা মতো চলে গেলাম আম কুড়াতে।

---

---

---

_{ছবির সোর্স 🧭}

যখন ওখানে আমরা তিনজন জাচ্ছিলা খুব জোরে বৃষ্টি এবং সেই সাথে দমকা বাতাস।এমন বাতাস যে আমাকে উড়ে নিয়ে ফেলে দিবে এমন অবস্থা।আসলেই খুব বাতাস ছিল।আসলে আমার খুব ভালো লাগতেছিল কারন আমি এইরকম পরিবেশ দেখি নাই।আমি খুশিতেই আপুদের সাথে গেলাম।আমার আপু আমি এবং আমার ভাই মিলে আমরা কাঁচা আম কুড়াতে শুরু করলাম।আমার আপুরা বেশি বড় ছিলো না সেই সময়।তারা ক্লাস সিক্সে পড়তো।যখন আম কুরাচ্ছিলাম বাতাসে আমাকে উড়ে নিয়ে যাচ্ছিলো এমন লাগেতেছিল।সেই সাথে বৃষ্টি আছেই।আমরা অনেক সময় ধরে আম কুরাচ্ছিলাম।আমি কিন্তু বাসার কথা ভুলে গেছি।কারন আসলে এইরকম আনন্দ আমি কখনো আমি জীবনে পাই নাই।আসলে কখন যে সময় কেটে গেছে আমি বুঝতেই পারি নাই।যখন আমার আমার আমার গেঞ্জির ভিতরে ভরে গেলো তখন আমার আপুকে বললাম যে আপু আমি বাড়িতে যাবো।আপু আমার দিকে তাকিয়ে বললো তোর আম্মু কিন্তু রাগ হয়ে যাবে।আসলে আপুর নিজেরই মনে নাই।ভাই অন্য দিকে চলে গেছে তখন।তখন আপু আমাকে বললো যে আর দেরি করা ঠিক হবে না।তোর আম্মু তোকে মারবে।চল আমরা চলে যাই।এই কথা বলে আমার সেই সাদা গেঞ্জির ভিতরে করে কাঁচা আমগুলো নিয়ে আমি আর আপু বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।

---

---

---

_{ছবির সোর্স 🧭}

বাড়িতে আসতেছিলাম আর আমার ভিতরে তখন ভয় কাজ করছিলো।কারন আমি আমার আম্মুকে অনেক ভয় পেতাম ছোট বেলায়।আসার সময় যাওয়ার মতো আর সেই আনন্দ কাজ করতেছিল না।আমি শুধু ভাবতেছিলাম যে আজকে বাসায় গিয়ে কি হবে।আমি ছোট বেলা থেকে একটা জিনিস করতাম সেইটা হচ্ছে যে,আল্লাহর কাছে বলতাম যে আজকে আল্লাহ আমাকে বাচিয়ে দেও।আমি আর এগুলো করবো না।এগুলো ভাবতে ভাবতে বাসার কাছে এসে গেছি।আমার আপু আমাকে পৌঁছে দিয়ে তার বাসায় চলে গেলো।আমি বাসার ঢুকতেই দেখি আমার আম্মু একটা কাঁচা কঞ্চি নিয়ে আমার জন্য বসে আছে।আসলে সেই মুহূর্তের কথা কিভাবে বলবো আমি জানি না।আসলে আমার কলিজা শুকে গিয়েছিলো।আমি ভিতরে ঢুকতেই আমার আম্মু আমাকে ধরে আম গুলো প্রথমে ফালায় দিলো।এরপর এক হাত ধরে কাঁচা কঞ্চি দিয়ে ঝাপাঝাপ মাইর শুরু।আমিও বলতেছি আমি আর করবো না।কে শোনে কার কার কথা।এমনি অনেক বৃষ্টি পরতেছিল আমাকে বলতেছিল তোকে আমি এখানে বৃষ্টিতে ভেজার জন্য বলছি তুই এতো দূরে কেন আম কুড়ানোর যাবি।যদি তোর কিছু হতো এগুলো বলছে আর সেই কাঁচা কঞ্চি দিয়ে কি আর বলবো।আসলে আমি যে জায়গায় গিয়েছিলাম এই জায়গা বেশি ভালো ছিল না।আবার আমাদের বাড়ি থেকে বেশ দূরে।এই জন্য আম্মু আসলে সেদিন আমাকে এইরকম মেরেছিল।আসলে সেদিনের কথা আমি আজ অব্দি ভুলি নাই।বিভীষিকার মতো স্মরণীয় দিন ছিল আমার জন্য।কারন এই দিনের মতো কখনো আমি আসলে এতো মাইর খাই নাই।হয়তো সারাজীবন আমার মনে থাকবে।আজকে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে আমি এই গল্প শেয়ার করলাম প্রথম।যদিও আমার আম্মু পরে আমাকে নিয়ে নিজেই অনেক কান্না করেছিল কারন আমাকে কাঁচা কঞ্চি দিয়ে মেরেছিল ওই জায়গা গুলো লাল হয়েছিল।

---

---

---

_{ছবির সোর্স 🧭}

আসলে আমি এখন বুঝি যে আমার মা সেদিন আমাকে কেন এতো মেরেছিল।আসলে আমি যেহেতু আগেই বলেছিলাম যে আমি একা।এই জন্য আমার বাবা মা একটু বেশি টেনশন করতো আমার জন্য।আর ওই জায়গায় যাওয়ার জন্য আমার আম্মু আসলে ভয় পেয়ে গিয়েছিলো যে আমার কিছু হয়েছে কিনা না।কারন আমার আম্মু আমাকে খুজে পাচ্ছিল না।কারন আমার আম্মুকে আমি বলে যাই নাই সেদিন।আসলে সেদিন কিন্তু আমি আমার এই কথগুলোর উত্তর খুজে পাই নাই।আমি আমার আম্মুকেই দোষ দিচ্ছিলাম যে আমার আম্মু ভালো না আমাকে শুধু মারে।আমার আম্মু আমাকে বলে শুধু তুই যেদিন আমাদের মতো বাবা -মা হবি সেদিন বুঝবি বাবা মা দের কিরকম টেনশন হয় তাদের ছেলে মেয়েকে নিয়ে।তাই বাবা মা এর কথা আমাদের ভালো না লাগলেও আসলে তারা আমাদের কখনো খারাপ চায় না।আসলে আমাদের কাছে খারাপ মনে হয়।কারন কেউ তার ভুল কখনো সাথে সাথে বোঝে না।তাই আমাদের সবার উচিৎ বাবা মা এর কথা অনুস্মরণ করে চলা।কারন জীবনের সঠিক সিদ্ধান্ত এক মাত্র বাবা মাএর কাছ থেকেই পাওয়া যায়।

---

---

আর এভাবেই আমি শেষ করলাম বৃষ্টির দিনের মজার অনুভূতি।যানি না কতটুকু তুলে ধরতে পেরেছি আপনাদের মাঝে।যদি কোন ভুলত্রুটি হয়ে থাকে ক্ষমার চোখে দেখবেন।সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকে এখানেই বিদায় নিচ্ছি।দেখা হবে অতি শীঘ্রই।

ফটোগ্রাফি	রবিউল ইসলাম
ডিভাইস	Realme 7 Pro

আমার পরিচয়

---