|| কালী পূজা পরিক্রমণ ( নবপল্লী অ্যাসোসিয়েশন ক্লাব) ||
নমস্কার বন্ধুরা
বারাসাতের কালী পূজাতে এবার ঘোরাঘুরিটা বেশ ভালোই হয়েছিল। যদিও মা আমার সাথে পুজোর কয়দিন ছিল তবে বাবার ব্যস্ততার কারণে একদিন পরেই বেরিয়ে গেছিল। বারাসাতের বেশ কিছু পুজো প্যান্ডেল রয়েছে যেগুলো অনেক বেশি বিখ্যাত বা নামকরা। তার ভিতরে বারাসাত নবপল্লী বয়েজ ক্লাব, পাইওনিয়ার পার্ক ক্লাব, নবপল্লী এসোসিয়েশন ক্লাব সহ আরো বেশ কিছু ক্লাব রয়েছে। তবে বারাসাতের বাইরে যারা থাকেন তারা নবপল্লী এসোসিয়েশন ক্লাব এবং নবপল্লী বয়েজ ক্লাব এই দুটো ক্লাব মোটামুটি গুলিয়ে ফেলেন। যদিও এই দুটো ক্লাব একেবারেই পাশাপাশি মোটামুটি পাঁচ মিনিটের হাঁটার দূরত্ব। তারপরেও অনেকে রাস্তা হারিয়ে ফেলেন যারা বাইরে থেকে আসেন। এর আগে বারাসাত নবপল্লী অ্যাসোসিয়েশন ক্লাবের পুজো দেখতে আমি দুইবার গিয়েছিলাম। তারপরও এইবার ঠিকঠাক করে রাস্তা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। কারণ প্রতিবছরই নবপল্লী অ্যাসোসিয়েশন ক্লাব তাদের রাস্তা বদল করে। কখনো কখনো মেইন রোডের উপর দিয়ে জনসাধারণ এর জন্য রাস্তা তৈরি করে মন্দিরে ঢোকার জন্য। আবার মাঝে মধ্যে গলির ভেতর দিয়ে রাস্তা তৈরি করে। সুতরাং বেশ ভাল রকমের একটা কনফিউশন থাকে।
এই বছরও ঠিক সেরকম একটা ব্যাপার হয়েছিল। গত বছর গলির ভেতর দিয়ে যাওয়ার রাস্তা করেছিল। কারণ নবপল্লী বয়েজ ক্লাব দেখে সেই রাস্তা ধরে আবার ভিতরে ঢুকে যাওয়ার সুব্যবস্থা ছিল। তবে এই বছর নবপল্লী বয়েস ক্লাবের পুজোর দেখে তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে মেইন রোড ধরে লাইন বানিয়ে যেতে হচ্ছিল। এইবার নবপল্লী অ্যাসোসিয়েশন ক্লাবের পুজোর থিম ছিল বদ্রিনাথের মন্দির। যদিও এই মন্দির সামনাসামনি দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি। শুধুমাত্র মোবাইলের বা টিভির স্ক্রিনের উপরে দেখেছি। তবে এই মন্দির সামনাসামনি দেখতে পেরে সত্যিই অনেক বেশি ভালো লাগছিল। মোটামুটি বারাসাতের পূজো হলেই কলকাতার বাইরে থেকেও প্রচুর লোক আসে এবং বারাসাতের লোকজন তো থাকছে। তার সাথে সাথে অন্যান্য জায়গার লোকজনের সাথে এখানে ভিড় জমায়। এই বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মোটামুটি লাইন ধরে মন্দির পর্যন্ত পৌঁছাতে আমাদের প্রায় ঘন্টাখানেক সময় লেগে গেছিল।
তবে সমস্ত ধৈর্যের অবসান হয় যখন সামনাসামনি মন্দির টা দেখতে পারি। মন্দিরের বাইরের অংশটা সুন্দর বাহারি রং এবং ডেকোরেশন এত সুন্দর ছিল যেটা বলে বোঝানো যাবে না। প্রথমত আমরা সেখানে দাঁড়িয়ে বেশ কিছু ফটো তুলে নিয়েছিলাম। তবে ভেতরের ঢোকার সাথে সাথেই এত পরিমাণে ভিড় এবং মানুষের ঠেলাঠেলি যে ঠিকঠাক করে ফটো পর্যন্ত তুলতে পারছিলাম না। এখানেই আসলে শেষ নয়, মন্দিরে ঢুকে তারপর আবার ভেতরে ঢোকার লাইন অন্য আলাদা ভাবে ছিল এজন্য আরও কিছু সময় বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছিল কখন ভেতরে ঢোকার পারমিশন দেবে। বাইরে আমাদের কমপক্ষে ১৫ মিনিটের মতো দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল। এরপর আবার পেছন থেকে প্রচন্ড ঠেলাঠেলি সবমিলিয়ে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তবে পুজোতে এরকম হবে এটাই স্বাভাবিক। সেজন্য এটা মেনে নিয়েই আমরা সামনের দিকে এগোচ্ছিলাম। তবে মায়ের একটু কষ্ট হচ্ছিল যেহেতু মা খুব বেশি একটা হাঁটাহাঁটি করতে পারে না তাই।
সবকিছু শেষ করে এরপর ভিতরে ঢুকেই প্রথম চমক টা হল লাইটিং, যেটা ছিল অসাধারণ। এখানকার ভেতরে লাইটিং টাও নাকি ওই মন্দিরের আদলেই করা হয়েছিল। এরপর দেখলাম মায়ের মূর্তি যেটা একটু অন্যভাবে তৈরি করা হয়েছিল। অন্যান্য সময়ে আমরা মায়ের মুখ যেমন দেখি এটা কিন্তু একেবারে ব্যতিক্রম ছিল। যেটা আমার কাছে বেশ খানিকটা ইউনিক লেগেছে। যাই হোক তারপর ভেতরে কিছু সময় দাঁড়িয়ে বেশ একটা ফটো তুলে নিলাম। যদিও ভিতরে আমাদের খুব বেশি একটা দাঁড়াতে দিচ্ছিল না। এরপর সেখান থেকে আবার ঠেলাঠেলি করে বাইরে বেরিয়ে আসতে হলো। তবে মন্দিরের সামনের অংশটাই আসলে সুন্দর করে করা হয়েছিল পেছনের অংশটা একেবারেই বাঁশের কাঠামো। যাই হোক সেখানে আমরা বেশি সময় দাঁড়ালাম না, মোটামুটি আরো দুই একটা ফটো তুলে অন্য প্যান্ডেলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
ডিভাইস | realme 8i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @pujaghosh |