|| গল্প : দূরপাল্লার জার্নি ( পর্ব - ০১ ) ||
নমস্কার বন্ধুরা
আজ আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি আবারও নতুন একটি গল্প নিয়ে। প্রতি সপ্তাহে একটি করে গল্প লেখার চেষ্টা করে থাকি, সেই ধারাবাহিকতা থেকেই আমার আজকের এই পোস্ট। গল্পের টাইটেল টা দেখে হয়তো ভাবছেন আমি দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার কোনো গল্প শেয়ার করব।কিন্তু একদমই তা নয়, এখানে দূরপাল্লার জার্নির সাথে আমি একটি বাস্তব প্রেমের জার্নির তুলনা করেছি।চলুন তাহলে দেরি না করে শুরু করা যাক।
আসলে প্রেম অনেকটা দূরপাল্লার জার্নির মত। যার ফল আমরা ভবিষ্যতে ভালো বলে ভেবে নিলেও, সব সময় কিন্তু তা হয় না। আবার সেখানে পৌঁছতে অনেকটাই পরিশ্রম করতে হয় সম্পর্কে জড়িয়ে থাকা দুটো মানুষকেই। যাইহোক আজ কালকার বেশিরভাগ সম্পর্কই মাঝ স্টেশনে গিয়ে থেমে যাচ্ছে, কোনো কোনো সম্পর্ক আবার একটা দুটো স্টপেজ পরেই থেমে যাচ্ছে, আবার কোনো কোনো সম্পর্ক তার নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থলে পৌঁছেছে। আজকে আমি এর মধ্যে থেকেই একটা জার্নির গল্প আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।
আমাদের পাড়াতেই থাকে প্রিয়তা । শুভ নামে কোনো একটা ছেলের সাথে তার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে, প্রথম প্রথম অবশ্য ঘোরাঘুরির সময় আমিও বেশ কয়েকটি জায়গায় গিয়েছি তার সাথে। বেশ ভালো বন্ধুত্ব আমাদের। তবে পড়াশোনার প্রেসার কিছুটা বেড়ে যাওয়ায়, এখন সেটা আর হয়ে ওঠে না। যাই হোক, বেশ ভালোই চলছিল তাদের সম্পর্ক। সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। তবে শুভ সেরকম কোনো ভালো কাজ করতো না, টুকটাক একটু আধটু হাত খরচা চালানোর মতন কাজ করতো। আর পাশাপাশি চেষ্টা করছিল একটা চাকরির। এদিকে প্রিয়তাও সবেমাত্র গ্রাজুয়েশন শেষ করেছে। তাই বিয়ের জন্য তেমন কোনো তাড়াহুড়ো নেই বাড়ি থেকে। তাও সে শুভকে কাজের জন্য চেষ্টা করতে বলতো সব সময়। যাতে তাদের ভবিষ্যৎ সুন্দর আর নিশ্চিত হয়। যাইহোক এক বছরের মাথায় হঠাৎ তাদের কোনো এক পরিচিত তাদেরকে একসাথে দেখে ফেলে ঘুরতে। তখন প্রিয়তা বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিল। বাড়ি ফিরল কিছুটা ভয়ে ভয়ে।
কিছুক্ষণ চুপচাপ ছিল , তার মা বলল , হাতমুখ ধুয়ে আমার ঘরে একটু আয়। তখনই তার মনের মধ্যে ভয়টা যেন আরও বেশি পরিমাণে বেড়ে গিয়েছিল। যাইহোক ভয়ে ভয়ে মায়ের ঘরে প্রবেশ করল। গিয়ে দেখল যে, সে যে আশঙ্কটা মনের মধ্যে তৈরি করেছিল সেই ঘটনাটাই ঘটলো। তার বাড়িতে জেনে গেছে সবাই। বেশ বকাবকিও করল সবাই মিলে। তারপর প্রিয়তা প্রায় তিনদিন ঘরের দরজা বন্ধ করেছিল। বেশ জোরাজোরির পরেও কেউ তাকে ঘর থেকে বার করতে পারেনি। তারপর বাধ্য হয়ে তার বাবা-মা বলল, আমাদের একবার কথা বলিয়ে দিস তার সাথে , ভেবে দেখব। কথাটা শুনে প্রিয়তা ভীষণ খুশি হয়েছিল। আর তার বিশ্বাস ছিল শুভর প্রতি। সে জানতো শুভর থেকে ভালো ছেলে আর হয় না। তবে মাঝেমধ্যে অবশ্য তাদের ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকতো। তবে সেটা ক্ষনিকের। যাইহোক তিনদিন পর ঘর থেকে বার হয়ে, প্রথমে কিছু খেয়ে নিল। খিদে তার পেটে অনেকই ছিল, তবুও জেদের বসে সে কিছুই খায়নি। এদিকে বেশ কান্নাকাটি করেও শরীর খারাপ বাঁধিয়েছে। যাইহোক খাওয়া-দাওয়ার পর মা বাবা তাকে আর বকাবকি করল না।
খাওয়া-দাওয়ার পর সে তার মা-বাবাকে কথা বলিয়ে দিয়েছিল শুভর সাথে। যাইহোক তার বাবা তাকে একদিন দেখাও করতে বলেছিল। মোটামুটি খারাপ লাগেনি তাদের। তবে এটা সতর্ক করে দিয়েছিল, এখনই বেশি মেশামেশি না করতে, আগে নিজে ভালো কিছু করতে। তারপর তারা সকলেই সব কিছু মেনে নেবে। যাই হোক প্রিয়তা এবং শুভ কিছুটা নিশ্চিন্ত হয়েছিল আর খুশিও হয়েছিল। তবে শুভ ঠিক খুশি হয়েছিল নাকি বিপদে পড়েছিল সেটা নিয়েই সন্দেহ।ঝগড়াঝাঁটির পরিমাণ তাদের মধ্যে বেড়েই গেল। প্রিয়তাকে যেন বিরক্ত লাগতে শুরু করলো তার। মাঝে মাঝে নাকি সহ্যই করতে পারতো না। যাই হোক তবুও সবকিছু মেনে নিয়ে, বেশ দুঃখের সাথে দিন কাটাচ্ছিল প্রিয়তা। তবুও যেহেতু বিষয়টা অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছে , তাই মুখ ফিরিয়ে নিতে পারছিল না।
(চলবে..........)
পোস্ট বিবরণ | গল্প |
---|
https://twitter.com/GhoshPuja2002/status/1785713616781730252?t=ROCqljV5dgBcYwx-BSRQ7g&s=19
এরকম ভালোবাসার গল্পের উদাহরণ আমাদের সমাজে অনেক দেখা যায়। যেখানে দেখা যায় বাবা-মা ভালোবাসার সম্পর্কের কথা জেনে গেছে এবং সম্পর্ক মেনে নিতে চাইছে না। তারপর কান্নাকাটি করে সেই সম্পর্ক আবার ঠিক করা হয়। কিন্তু দেখা যায় শেষ পর্যন্ত সেই সম্পর্কে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়। প্রিয়তা এবং শুভ এর প্রেমের গল্পের প্রথম পর্ব টা তো বেশি ইন্টারেস্টিং লাগলো। দেখা যাক, পরবর্তী পর্বে কি হয়।
হ্যাঁ ভাই, বর্তমানে এইরকম ঘটনা প্রায় দেখা যায়।গল্পটি আপনার কাছে ইন্টারেস্টিং লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।