|| রতন জেলে (পর্ব - ০১ ) ||

in আমার বাংলা ব্লগlast year

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

fishing-3062034_1280.jpg

সোর্স


পাড়ার সকলে তাকে" রতন জেলে" বলে চেনে। ১২ বছর বয়সেই বাবা- মা কে হারিয়েছে ছোট্ট রতন। তারপর থেকে মামা বাড়িতে থেকেই বড় হয়েছে সে। রতনের দাদু বেঁচে থাকাকালীন রতনের পড়াশুনার খরচ সেই চালাত। তবে রতন যখন ক্লাস নাইনে উঠলো, তখনই হঠাৎ একদিন ঘুমের মধ্যেই তার দাদু শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করল। স্বাভাবিকভাবেই, একটা ইনকামের পথ বন্ধ হয়ে গেল। মধ্যবিত্ত পরিবারে একটা ইনকামের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়া মানে , কোনরকমে অভাবের মধ্যে দিয়ে দিন কাটানো। কোনো রকমে জমানো টাকা থেকে রতন আর রতনের দিদার খাওয়া ,পড়া চলে যাচ্ছিল। কিন্তু পড়াশোনার খরচ কে চালাবে? তাই স্বাভাবিকভাবেই কিছুদিনের মধ্যে রতনের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেল।


কিন্তু জমানো টাকা দিয়ে আর কদিন চলবে? এইভাবে বসে বসে খেলে তো, সামান্য পরিমাণে জমানো ওই টাকা টুকুও একদিন শেষ হয়ে যাবে। তখন উপায়? কোনো পথ না পেয়ে, রতন একটা জামা কাপড়ের দোকানে কাজ করতে শুরু করলো। কিন্তু দোকানের লোকটি, রতনের উপর নানা ধরনের চোটপাট করা শুরু করল। কাজের সময় ছাড়াও লোকটি তাকে ছেলেমানুষ পেয়ে আলাদা করে নিজের বাড়ির কাজ করাতে লাগলো। ছোট হলেও, রতন প্রতিনিয়ত এটা মেনে নিতে পারছিল না। তাই সে কিছুদিনের মধ্যেই সেখান থেকে কাজ ছেড়ে দিল। তবে অন্য উপায় তো বার করতে হবে, কিন্তু কে তাকে কাজ দেবে! এই চিন্তা করতে করতে, রতন একদিন মনের দুঃখে ছিপ নিয়ে পুকুরের পাড়ে বসে একা একা মাছ ধরতে বসে পড়ল।


boy-909552_1280.jpg

সোর্স


তখন রতন হঠাৎ খেয়াল করলো , তার বড়শিতে টান পড়ছে। সাথে সাথে সে বড়শি ধরে টান দিতেই দেখল একটা, বেশ বড় সাইজের মাছ উঠে এসেছে। রতন তো খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেল। তারপর মাছটি নিয়ে, এক দৌঁড়ে দিদার কাছে চলে গেল রতন । মাছটি দেখে তার দিদাও খুব খুশি হল। তখন তার দিদা মাছ টিকে ভালো করে কেটে ধুয়ে রান্না করে ফেলল। তারপর দুপুরে যখন রতন আর তার দিদা, খেতে বসেছে, তখন তার মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল । সে ভাবলো, এইভাবে যদি সে কয়েকটা করে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করতে পারে তাহলে মন্দ হয় না। এতে করে টুকটাক কিছু রোজগারও হবে। তার সাথে, তার দিদাও সহমত পোষণ করলো।


তখন রতন ঠিক করে নিল, পরের দিন থেকেই সে ছিপ আর জাল নিয়ে পুকুরে মাছ ধরতে যাবে। সেই মতোই রতন পরের দিন সকাল সকাল বেরিয়ে পড়লো মাছ ধরতে, কিন্তু প্রথম দিনে সে খুব বেশি মাছ ধরতে পারল না। তবে যা ধরেছে, তাতে তাদের সেই দিনের খাওয়াটা হয়ে গেল। এইভাবেই রতন কিছুদিন সকাল সকাল মাছ ধরতে বেরোলো, তবে খুব বেশি লাভজনক ফলাফল কিছুই পেল না। তবে যেটুকু পাচ্ছিল ,সেটাও কিন্তু কম নয়।


boy-909554_1280.jpg

সোর্স


(চলবে.......)


পোস্ট বিবরণগল্প লিখন

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

মা বাবা হারানো ছোট্ট রতন প্রথমে কাপড়ের দোকানে কাজ শুরু করেছিল তবে মালিকের কারণে সেই কাজ ছেড়ে চলে আসে। পুকুর থেকে মাছ ধরার পরে তার মনে হয় মাছ ধরে সে জীবন যাপন করতে পারবে কিন্তু প্রতিদিন যে পরিমাণে মাছ পড়তো তাতে কোন মত তার জীবন পার হতো, পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম বড় কোন মাছ ধরে তার জীবন পরিবর্তন হয় কিনা সেটা জানার ইচ্ছা তো থেকেই যায়।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

পরবর্তী পর্বটি নিয়ে খুব শীঘ্রই হাজির হবো ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

রতন ছেলেটা ছোটবেলা থেকেই বেশ দুঃখী দেখছি। বাবা মা দাদা সবাইকে হারিয়ে লেখাপড়া বন্ধ হয়েছে। এখন মাছ ধরা শুরু করল। এতে করে তার জীবনে আবার নতুন কোন মোড় আছে সেটার জন্য অপেক্ষায় রইলাম। বেশ চমৎকার লিখেছেন গল্পটা আপু। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

হ্যাঁ ভাই, রতন ছোটবেলা থেকেই বেশ দুঃখী। গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ।ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 68859.42
ETH 2732.07
USDT 1.00
SBD 2.73