|| অষ্টমীর সকালে খাওয়া দাওয়া এবং পরিবারের সাথে আড্ডা ||
নমস্কার বন্ধুরা
প্রতি বছরই অষ্টমীর সকালে ঘুমটা ভাঙ্গে মায়ের ডাকে। এরপর শুরু হয় তাড়াহুড়ো করে স্নান করা, সাজুগুজু করা, তারপর মন্দির এ অঞ্জলি দিতে যাওয়া। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি, একেবারেই আমি সপ্তমীর দিন বারাসাত থেকে বাড়ি চলে গেছিলাম। যাতে অষ্টমীতে মা-বাবার সাথে গিয়ে অঞ্জলি দিতে পারি। সেটা তো আর এখানে হয় না, এজন্য আমি একটু বেশি উৎসুক থাকি এই কয়টা দিন বাড়িতে যাওয়ার জন্য। যাই হোক রাতের বেলা কাজ টাজ শেষ করে ঘুমাতে ঘুমাতে বেশ খানিকটা রাত হয়ে যায়। তারপরও মনে হচ্ছিল যে সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারবো কিনা। তবে এই ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম যে যেহেতু মা রয়েছে তাই যে করেই হোক ঘুম থেকে তুলে দেবে আমায়। যাইহোক ভোরের সূর্য উঠতে না উঠতেই দেখলাম মা আমার রুমে এসে ডাকাডাকি শুরু করে দিল, আর বলতে শুরু করলো ওঠ তাড়াতাড়ি স্নান করতে হবে তো। এরপর আবার অঞ্জলি দেওয়ার সময় হয়ে যাবে। তারপর আবার বাড়ি এসে রান্নাবান্না করতে হবে অনেক কাজ বাকি।
মা এর ডাকে আমি উঠতে বাধ্য, কারণ এখন যদি না উঠে আবার ঘুমিয়ে পড়ি তাহলে রীতিমতো চেঁচামেচি শুরু করে দেবে। তারপর আরো এক ঝামেলা তৈরি হবে পুজোর দিন। তাই বেশি ঝামেলা না করে লক্ষী মেয়ের মত ঘুম থেকে উঠে পড়লাম। তারপর আবার স্নান সেরে শাড়ি পড়বো নাকি অন্য কি পড়বো সেই টেনশনে পড়ে গেলাম। এরপর মায়ের কাছে শুনতেই মা বলল শাড়ি পরার দরকার নেই, অন্য যা কিছু কিনেছিস পুজোতে তার কিছু একটা পরে চলে যা। যাই হোক মায়ের কথা মতো সেটাই করলাম। এরপর বাড়ি থেকে ফুল প্রসাদ সবকিছু গুছিয়ে চলে গেলাম। মন্দিরে গিয়ে দেখি সেখানে প্রচুর লোকের ভিড় সুতরাং আমি কোথায় দাঁড়াবো সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। তারপর একটা জায়গা নিয়ে মন্দিরের ভিতরে দাঁড়িয়ে গেলাম। যথারীতি অঞ্জলীর সময় হতে না হতেই অঞ্জলি দেওয়া শুরু করা হলো। তবে অঞ্জলিতে যে মন্ত্র গুলো উচ্চারণ করে তার অধিকাংশই আমি ঠিকঠাক করে বুঝতে পারি না। তারপরও মোটামুটি চেষ্টা করি যতটা সম্ভব নিজের মতো করে বলার।
যাইহোক অঞ্জলি দিয়ে বাড়ি ফিরতে ফিরতে প্রায় আমাদের এগারোটা বেজে গেছিল। এরপর শুরু হল বাড়ি এসে লুচি ডাল রান্না করার ধুম। আমি যেহেতু লুচি ডাল খেতে অনেক বেশি পছন্দ করি তাই মা প্রতি বছরই অষ্টমীর দিন সকালবেলা লুচি ডাল করে। আর সাথে থাকে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন। তবে এবার মায়ের শরীর একটু খারাপ থাকায় আমাকে রীতিমতো কাজে হাত লাগাতে হলো। লুচি বেলা থেকে শুরু করে লুচি ভাজা সবকিছু আমার উপর দায়িত্ব দিয়ে দিল মা। তবে আমি কিন্তু একেবারে খারাপ রান্না করি না। হা হা হা... মোটামুটি ময়দার ডো তৈরি করে লুচি বানাতে বানাতে আমাদের প্রায় বারোটার কাছাকাছি বেজে গেল। এরপর শুরু হল প্লেটে করে সাজিয়ে খাওয়ার পালা। আগের বছর দাদা পূজোতে বাড়ি ছিল তবে এই বছর দাদা নেই জন্য একটু খারাপ লাগছিল। তারপরও বাবা দেখলাম বাজার থেকে অনেক প্রকার মিষ্টি নিয়ে এসেছে। বিশেষ করে সন্দেশ এবং কালাকাঁদ আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। তারপর আবার গোলাপ জামুন বা কালো মিষ্টি যেটা আমার অনেক বেশি পছন্দ।
এরপর সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া শেষ করে নিজেদের ভিতর গল্প করতে লাগলাম। তবে বাবা যেহেতু বাড়ি খুব বেশি একটা সময় থাকতে পারে না, এই জন্য খাওয়া-দাওয়া সেরে বাবা বেরিয়ে গেল। শুধু বাড়ি থাকলাম আমি আর মা। এরপর মায়ের সাথে বিভিন্ন কাজে সাহায্য করা, তারপর দুপুরে কি রান্না হবে সেটা নিয়ে তোলপাড় করা সব মিলিয়ে বেশ আনন্দে সময় কাটছিল আজকের দিনটা। অষ্টমী মানেই হল আমার কাছে অনেক বেশি স্পেশাল একটা দিন। এই দিনের জন্য আমি সারাটা বছর অপেক্ষা করে থাকি। এরপর আবার নবমী হয়তো বাড়ির লোকের সাথে ঘুরতে যাওয়া হবে না। তবে দশমীর দিন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি পুরো পরিবার মিলে বনগাঁতে যত ঠাকুর আছে সব ঘোরাঘুরি করব। এদিকে আমার শরীর একটু খারাপ সামান্য পরিমাণে গলা ব্যথা এবং গায়ে ব্যথার কারণে আজকেও বের হতে পারিনি। যদিও আমার তাতে কোন আফসোস নেই, কারণ দুদিন তো আমি ওখানে থাকতে ঘুরে এসেছিলাম। এজন্য খুব বেশি একটা সমস্যা বা মন খারাপ লাগছে না আমার।
পোস্ট বিবরণ | লাইফ স্টাইল |
---|---|
ডিভাইস | realme 8i |
ফটোগ্রাফার | @pujaghosh |
আশাকরি আপনি খুবই দ্রুত সুস্থ্য হয়ে যাবেন। এবং বের হতে পারবেন একটু ঘুরতে পারবেন। আপনার পোস্ট টা পড়ে আমার ঈদের কথা মনে পড়ে গেল। প্রতিটা ঈদে আমার ঘুম ভাঙে আমার মায়ের ডাকে। তারপর তাড়াহুড়ো করে গোসল করে তৈরি হয়ে নামাজে যাওয়া। অঞ্জলি শেষ করে এসে বেশ একেবারে খাবার থালা নিয়ে বসে পড়েছেন। আপনার খাবার তালা টা দেখে বেশ লোভ হচ্ছিল আমার দিদি হা হা। আশাকরি পূজার বাকি দিনগুলো আপনার বেশ ভালো কাটবে।
সুস্থ মনে হচ্ছে হতে পারবো না তাড়াতাড়ি, তবুও কালকে একটু গাড়ি ভাড়া করে বের হবো রাতে। আপনার যখন লোভ লেগে গেছে খাবারের থালা দেখে , আপনার দাওয়াত রইলো ভাই।
আপনার সুস্থতা কামনা করছি। আপনি বারাসাত কার কাছে থাকেন দিদি?? এবার ও মায়ের ডাকে ঘুম থেকে উঠে পূজো দিতে গেলেন।আর এসে প্রচুর খাওয়া-দাওয়া আর গল্প হলো।সময়টা খুব সুন্দর কেটেছে জানতে পারলাম পোস্ট পড়ে। বাকি দিনগুলোও ভালো কাটুক এমনটাই আশাকরি। ধন্যবাদ দিদি অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
বেশিরভাগ সময় একাই থাকা হয় আপু বারাসাতে। তবে কিছুদিন পর পর আমার দাদা বৌদি আসে। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ।
আপু অষ্টমীর সকালের খাওয়া দাওয়া গুলো ভীষণ লোভনীয় ছিল। যদি আপনি অনেক দূর থেকে ছুটে আসলেন মায়ের এমন মজাদার হাতের খাবার গুলো খাবার জন্য। সত্যি বলতে বুন্দিয়া গুলো দেখে আমার লোভ সামলানো যাচ্ছে না। আমার খুবই প্রিয় খাবার বুন্দিয়া। এছাড়া লুচি গুলো বেশ ভালোই দেখাচ্ছে। অনেক মজাদার ছিল খাবারের ডালা টি। অনেক ধন্যবাদ অনেক অনেক সুন্দর অনুভূতি প্রকাশ করলেন।
বুন্দিয়া আপনার প্রিয় খাবার দেখছি আপু। খাবারের থালাটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।