|| মহালয়ার শুভারম্ভ এবং মা দুর্গার আগমনী ||
নমস্কার বন্ধুরা
মহালয়া হলো পিতৃপক্ষ এবং দেবীপক্ষের সন্ধিক্ষণ। এর মাধ্যমে দুর্গাপূজা উৎসবের সূচনা হয়। দেবী দুর্গা এই দিন পৃথিবীতে অবতরণ করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। তবে মা দুর্গার অবতরণের কারণ কি সেটা কি আপনারা কেউ জানেন...? আমার এই স্বল্প জ্ঞানে এবং বিগত বছরের অভিজ্ঞতা যেটা বলছে সেটা হলো যে সমস্ত অসুররা যখন দেবলোক দখল করে নেয় এবং দেবলোক থেকে সমস্ত দেবতাদের তাড়িয়ে দেয়, তখন সমস্ত দেবতারা অসহায় হয়ে যায় এবং সেই অবস্থায় তারা স্বয়ং ব্রহ্মান নিকট যায় পরামর্শের জন্য এবং তখনই স্বয়ং ব্রহ্মা তাদের বলেন যে সমস্ত দেবতাদের একত্রিত শক্তির মাধ্যমে এক নতুন রূপের সৃষ্টি হবে। সেই কেবলমাত্র পারবে এই অসুরদের বধ করতে। ঠিক এই সময়ে দেবতারা সকলে মিলে মা দুর্গার সৃষ্টি করেন এবং মা দুর্গা সেই সময় অসুরদের ধ্বংসের জন্য যুদ্ধ করে এবং যুদ্ধে মা দুর্গা জয় যুক্ত হয় এবং দেবতার আবার তাদের দেবালোক ফিরে পায়। তবে সব থেকে মজার বিষয় হল যে এই মহালয়ার মধ্য দিয়েই দুর্গাপূজার শুভারম্ভ হয়।
খুব ছোটবেলায় যখন আমি বাড়ি থাকতাম তখন দেখতাম যে মা খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাবাকে ডেকে দিতে এবং পরিবারের সকলকে ডেকে দিত। এরপর আমরা সবাই মিলে একসাথে রেডিওতে মহালয়া শুনতাম। সেই সময় একটা অন্যরকম মজা ছিল। তবে সময়ের সাথে সাথে সেই ব্যাপার অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু এতটাও পরিবর্তন হয়নি যে পুরোপুরি ব্যাপারটা থেকে বেরিয়ে এসেছি, সেটা কিন্তু নয়। এখনো কিছু কিছু বছর মহালয়া টিভিতে দেখা হয় এবং মাঝেমধ্যে রেডিওতে শোনা হয়।গতকাল রাতে ঘুমানোর আগে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠবো এবং তারপর মহালয়া শুনবো। তবে রাতের বেলা ঘুমাতে গিয়ে আমার বেশ খানিকটা দেরি হয়ে যায়। তারপরও অ্যালার্ম দিয়ে রেখেছিলাম। যাই হোক ভাগ্যক্রমে অ্যালার্ম দেওয়ার আগেই আমার ঘুম ভেঙে যায়। এর পিছনে কারণ হলো যে আমাদের পাড়াতেই দেখলাম যে মাইকে জোরে খুব ভোরে অর্থাৎ পাঁচটা নাগাদ মহালয়া বাজানো হচ্ছে। বিশেষ করে মহালয়াতে উচ্চারিত বিভিন্ন মন্ত্র এবং অসুর বধের বিভিন্ন মন্ত্র রীতিমতো আমাকে অনেক বেশি প্রাণবন্ত করে তোলে। যাইহোক সকালে ঘুম থেকে উঠেই চোখ ডলতে ডলতে চলে গেলাম ব্যালকনিতে। গিয়ে দেখি আমাদের পাড়ার মাঠে দুটো তিনটে মাইক ফিট করা হয়েছে এবং সেখানে মহালয়া চলছে।
বেশ কিছুটা অন্ধকার ছিল তবে আশপাশটা বেশ সুন্দর সাজানো-গোছানো। বিশেষ করে আমাদের পাড়ার মন্দিরে তখন দেখছিলাম মা দুর্গা এবং অন্যান্য দেব- দেবীদের শাড়ি পরানো হচ্ছে। বিশেষ করে এই দিনে মায়ের চোখ আঁকা হয়। যাই হোক মোটামুটি আধা ঘন্টা মত মাইকে মহালয়া চললো। তারপর চলে আসলাম রুমে এবং রুমে এসেই টিভি চালাতে দেখলাম যে আবারও টিভিতে মহালয়া শুরু হয়েছে এবং সেটাও আধাঘন্টা ধরে দেখলাম। এরপর টুকটাক কিছু খেয়ে নিজের কাজ সেরে নিলাম। যেহেতু রাতের বেলা খুব বেশি একটা ঘুম হয়নি এজন্য আবারও মহালয়া শুনে ঘুমিয়ে পড়লাম। যদিও প্রতিবছর এরকমই হয়, মহালয়া শোনার পর আবারও একটা ঘুম না দিলে কেন জানি না ভালো লাগে না।
সত্যি কথা বলতে আজকের মহালয়ার মধ্য দিয়েই দুর্গাপুজোর যে আনন্দ বা আমেজ সেটা কিছুটা হলেও বুঝতে পারলাম। যদিও দুই একদিন আগে থেকেই কলকাতায় দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল খুলে দেয়া হয়েছে এবং সেখানে রীতিমতো লাইন পড়ে গেছে মা দুর্গাকে একবার দেখার জন্য। তবে মহালয়ার পর থেকে বেশি ভিড় হয় আর কি। মোটামুটি এটাই ছিল আমার মহালয়া দেখার অভিজ্ঞতা। তবে সকালে ঘুম থেকে উঠতে একটু কষ্ট হলেও সময়টা এত সুন্দর কেটেছিল সেটা হয়তো আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না।
পোস্ট বিবরণ | জেনারেল রাইটিং |
---|
আপু হয়তো এই বিষয়গুলো নিয়ে খুব একটা অভিজ্ঞতা নেই। তবে আপনার পোস্ট পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। মহালয়ার অনেক কিছু বুঝতে পারলাম। দেখতে দেখতে পুজো চলে এলো। অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি আপনাকে।
আমার পোস্টটি পড়ে আপনি অনেক কিছুই জানতে পারলেন দেখে ভালো লাগলো আপু। ধন্যবাদ আপনাকে শুভেচ্ছা বার্তার জন্য।
আগে ছেলেবেলা মহালয়ার অনুষ্ঠান টিভিতে দেখাতো।আমি খুব আগ্রহ নিয়েই বসে বসে দেখতাম।তবে এখন আর দেখা হয় না।আসলে সব ধর্মকে শ্রদ্ধা করি।আর আমার জানার আগ্রহ প্রচন্ড তাই দেখতাম।ধন্যবাদ দিদি আপনি আপনার অনুভুতি গুলো শেয়ার করলেন বলে।
আপনি সব ধর্মকে শ্রদ্ধা করেন জেনে,খুব ভালো লাগলো আপু।ধন্যবাদ আপনাকে অনেক সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।