|| গল্প হলেও সত্যি ( পর্ব - ০১ ) ||

in আমার বাংলা ব্লগ11 hours ago

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

আজ আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি আবারও নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে একটি গল্প লিখব। গত সপ্তাহে একটি গল্প লিখেছিলাম। তবে আজকে একটি ভূতের গল্প লিখব। ভূতের গল্প পড়তে এবং লিখতে দুটোই বেশ ভালো লাগে আমার। আজকের এই গল্পটা আমার এক বন্ধুর মুখে শুনেছিলাম। তার সাথেই নাকি ৩ বছর আগে এই ঘটনা ঘটেছে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে শুরু করা যাক।


1000073714.jpg

সোর্স


কলকাতায় এরকম বেশ বড় বড় পুরনো বাড়ি রয়েছে। যেগুলোকে দিনের বেলা দেখলেই বেশ ভয় লাগে। মনে হয় যেন ভূতেদের আড্ডা। কোনো কোনো বাড়ির মধ্যে দিয়ে বড় বড় গাছ পালাও গজিয়েছে। যাইহোক ঘটনাটি প্রায় তিন বছর আগের। এরকমই একটি পুরনো বিল্ডিং ছিল কলকাতার রাস্তাতেই। শোনা গেছে ইংরেজরা সেখানে এককালে বসবাস করত। তারপর থেকে বিল্ডিংটি ওই ভাবেই পুরনো অবস্থাতে রয়েছে। না কোনো মানুষের আনাগোনা সেখানে , আর না কোনো আলোর ব্যবস্থা। বছর পার হওয়ার সাথে সাথে জমেছে ধুলো, বালি , উঠেছে দেওয়ালের রং, গজিয়েছে গাছপালা আর বেড়েছে ভূতের উপদ্রব। কি বিশ্বাস হলো না তো? আমারও প্রথমে বিশ্বাস হয় নি । তারপর ভয়ে বিছানা ছেড়ে উঠতেও পারিনি। এরকমই বেশ কয়েকটা বিল্ডিং কলকাতার রাস্তাতে আমার চোখে পড়েছে। দিনের বেলাতেই যে কোনো মানুষ একা একা এইসব বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই ভয় পাবে।

আমার বন্ধু একজন ইঞ্জিনিয়ার। সে যে কোম্পানিতে চাকরি করে, সেই কোম্পানির মালিক ভুতুড়ে এই বিল্ডিংটিকে কিনেছিল নতুন করে সেখানে বড় কিছু করার জন্য। যাইহোক, প্রথম দিন যখন বেশ কয়েকজন মিলে পুরাতন এই বাড়িটিতে ঢুকে ছিল, গায়ের মধ্যে আচমকা যেন একটা আতঙ্ক কাজ করে উঠেছিল তাদের। চাকরি চলে যাওয়ার ভয়ে কোনো অবজেকশন জানাতে পারেনি তারা । বিল্ডিংটিতে কোনো প্রকার আলোর ব্যবস্থা ছিল না। তারপরে আবার বিভিন্ন ধরনের গাছপালা বাড়িটির মধ্যে, ভয় পাওয়ারই কথা। তবুও তারা বেশ কয়েকজন মিলে পুরো বিল্ডিংটিকে ঘুরে দেখার চেষ্টা করল। এক একটা ঘরে যাচ্ছিল আর মনে হচ্ছিল যেন নতুন কোনো চমক তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। এমন একটা অনুভূতি হচ্ছিল যেন তাদের পাশ দিয়ে কেউ ঘোরাফেরা করছে।

বর্তমানে আসলে ভূত বলে কিছু হয় না বলেই আমরা জানি। তবুও এরকম ভয়ানক পরিবেশে আতঙ্ক তো এসেই যায়। সমস্ত ঘর ঘুরে দেখার পরে, মাটির নিচের গুপ্ত ঘরটিতে যখনই তারা প্রবেশ করার জন্য কয়েকজন মিলে ফোনের আলো জ্বালিয়ে প্রবেশ করল, ভয়ে দুজন পেছন থেকে উধাও হয়ে গেল। তবে আমার বন্ধু যেহেতু খুবই সাহসী, সে সেখানে প্রবেশ করেছিল। কিন্তু সেখানে প্রবেশ করার সাথে সাথে হঠাৎই, পেছন থেকে কেউ তাকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার তার পিছনে কেউই ছিল না। সে ওখানে কিছুক্ষণ অজ্ঞান অবস্থায় পড়েছিল। পরে খোঁজাখুঁজি করতে করতে, তাদের দলের কিছু লোক তাকে খুঁজে পেয়েছিল। তার সারা গা-হাত-পা জলে ভিজে গিয়েছিল, এদিকে তার ভালো ফোনটাও একেবারে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কোনো ভাবেই সেটাকে আর সারাই করা গেল না। সেই দিনের মতো তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল।

পরের দিন জানা গেল তার ভীষণ জ্বর এসেছে, তার ওপর আবার সারা গা, হাত, পা সাদা হয়ে গিয়েছিল। প্রায় ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা সে ওইভাবেই ভিজে অবস্থাতে ছিল তাই জন্যই হয়তো এটা হয়েছিল। যাই হোক বাড়ির লোক তাকে আর কিছুতেই ওখানে যেতে দিচ্ছিল না। এর আগেও বহু লোক সেখান থেকে কাজ ছেড়ে পালিয়েছে। বাড়িতে অনেক বলার সত্ত্বেও সে কারোর কথা শোনেনি, যেহেতু তার প্রথম চাকরি ছিল সেটাই । তাই সেটা সে হারাতে চাইনি। তাই সুস্থ হয়ে ওঠে সে আবারও, তাদের দলের লোকেদের সাথে ওই পোড়ো বাড়িটিতে গিয়েছিল।


(চলবে.......)


পোস্ট বিবরণগল্প

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।





🪔আমার পরিচয়🪔

InShot_20240217_224020693.jpg

আমি পূজা ঘোষ(রাজশ্রী)। বনগাঁতে বসবাস করি। আমি বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয় থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, বিজ্ঞান বিভাগে ।পাশাপাশি কম্পিউটার এবং স্পোকেন ইংলিশের কোর্স করেছি। বর্তমানে আমি ফার্মাসিতে অধ্যায়নরত । ভবিষ্যতে এইগুলো নিয়ে ভালো কিছু করার আশায় এগোচ্ছি। কবিতা আবৃত্তি করতে আমি খুবই ভালোবাসি। ছোটো বয়েস থেকেই কবিতা আবৃত্তি শিখছি। এছাড়া ছবি আঁকতে,ঘুরতে যেতে,নতুন নতুন খাবার খেতে,গান শুনতে,ফোটোগ্রাফি করতে আর মানুষের সাথে মিশতে ভালোবাসি।

🎯 সমাপ্ত🎯

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 11 hours ago 

আপনার গল্পটা পড়ছিলাম আর ভয় ভয় করেছিল। আসলে আপু এখন ভূত বলে কিছুই নেই তবে মনের ভয় বড় ভয়। আপনার বন্ধুর কথা শোনে অনেক খারাপ লাগলো। তারপর ও সে সুস্থ হয়ে সেই অফিসে চাকরি করবে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়।ধন্যবাদ আপু সুন্দর লিখেছেন।

 9 hours ago 

বাহ বেশ চমৎকার ভয়উদ্রেককর গল্প বটে। ভালো লিখেছেন। পোড়োবাড়ি বা অনেক পুরনো দিনের পরিত্যক্ত বাড়িগুলো মানুষের বসবাস না থাকলে তাতে নানান রকমের উচ্ছিষ্টের উপদ্রব হয় - এটা বেশ স্বাভাবিক ঘটনা।
তবে একাকী এসব বাড়িতে যাওয়া উচিত নয়, সাপ বিচ্ছুর ভয় ও ক্ষতির আশঙ্কাকেও তো উড়িয়ে যায় না।
গল্পটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 57346.65
ETH 3107.45
USDT 1.00
SBD 2.40