||বারাসাতের কালীপুজো ভ্রমণ: পর্ব - ০২ , (বালকবৃন্দ স্পোর্টিং ক্লাব)||

in আমার বাংলা ব্লগlast year

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

আজ আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি আবারো নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আমার আজকের পোষ্টের বিষয়বস্তু বারাসাতের কালীপুজো ভ্রমণ । এর আগে আমি প্রথম পর্বটি শেয়ার করেছিলাম আজ তারই দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে চলে এলাম। চলুন তাহলে আর দেরি না করে শুরু করা যাক।


InShot_20231127_160644151.jpg


বেশ কিছুদিন পর আবার নতুন করে বারাসাতের কালীপুজোর নতুন একটা পর্ব নিয়ে হাজির হলাম। আমাদের বারাসাতে কালী পূজা একটু ভিন্নভাবে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবছরই। প্রত্যেক পুজো মণ্ডপ চেষ্টা করে তাদের কালীপুজো একটু আলাদাভাবে সুন্দর করে উদযাপন করার জন্য। এই জন্যই আসলে বিভিন্ন বড় বড় পূজা মন্ডপের ভিতর বেশ ভালো রকমের কম্পিটিশন তৈরি হয়। যে কারা সব থেকে ভালোটা উপস্থাপন করবে সাধারণ মানুষের সামনে। বিভিন্ন থিম, বিভিন্ন কায়দা অবলম্বন করে বড় বড় প্যান্ডেল করা হয়ে থাকে এবং সেই প্যান্ডেল দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ ছুটে চলে আসে আমাদের বারাসাতে পুজো দেখার জন্য। আমি সাধারণত পুজোতে খুব বেশি একটা ঘোরাঘুরি করতে পছন্দ করি না। তবে যেহেতু বাড়ির পাশে পুজো এবং বাবা-মা এসেছিল ঘুরতে যাওয়ার জন্য, এই জন্য বেরিয়েছিলাম। তবে ঘুরতে বেরিয়ে বুঝতে পেরেছিলাম যে একেবারে ভুল করিনি। কারণ বাইরে এতটা জাঁকজমক এবং সুন্দর সুন্দর থিম তৈরি করে কালী পুজো করা হচ্ছিল যেটা দেখে আমি রীতিমত অবাক হয়ে যাই।


20231113_204546.jpg


20231113_204629.jpg


এর আগের দিন আপনাদের বলেছিলাম যে আমাদের বারাসাতের কালীপূজা টোটাল দুটো ভাগে বিভক্ত। একটা বারাসাত স্টেশনের ডান সাইডে এবং অন্যটা বাম সাইডে। সব সময় কমপিটিশন চলে এই দুই দিকের পূজা মন্ডপ গুলোর ভিতরে। তবে বারাসাত স্টেশন থেকে বেরিয়ে চাঁপাডালি যাওয়ার রাস্তার দিকগুলোতে যে পুজোগুলো হয় সেগুলো সাধারণত একটু বড় করে করা হয় এবং লোকজন এখানে সবসময় বেশি হয়। এজন্য কালীপুজোর পরের দিন আমি বাবা এবং মা একসাথে বেরিয়েছিলাম পুজো দেখার জন্য। যেহেতু মা খুব বেশি একটা হাঁটাহাঁটি করতে পারেনা এজন্য অনেকটা টেনশন হচ্ছিল যে মাকে নিয়ে, যে এত দূরে কি করে যাব। তবে আমাদের একটা সুযোগ হয়েছিল সেটা হলো যে এই পূজা প্যান্ডেলের ভিতর দিয়ে ভ্যান গাড়ি গুলো চলাচল করছিল যাতে করে যারা অসুস্থ বা বয়স বেশি তারা পূজা মন্ডপ গুলো দেখতে পারে। এজন্য বাবাকে বললাম একটা ভ্যান ভাড়া করার জন্য যাতে করে আমরা ঘুরতে পারি সঠিকভাবে এবং কষ্ট কম হয়।


20231113_204532.jpg


20231113_202745.jpg


যাই হোক অনেক কথাই বলে ফেললাম,চলুন এবার পূজো মণ্ডপ নিয়ে কিছু কথা বলা যাক। দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা এর কথা তো আপনারা সবাই শুনেছেন। গত বছর কলকাতার বড় একটা দুর্গা পূজা মন্ডপ এই থিমের আয়োজন করেছিল। তবে এই বছর বারাসাতের বালক বৃন্দ স্পোর্টিং ক্লাব তৈরি করে দেখালো সেটা। যদিও পূজা মন্ডপটা খুব বেশি বড় ছিল না মোটামুটি ছোট করে করা হয়েছিল তবে দেখতে অনেকটা ঐরকমই লাগছিল। অর্থাৎ আপনি দুবাই না গিয়েও কলকাতা থেকে এই সর্বোচ্চ উঁচু বিল্ডিং এর মজা নিতে পারবেন। হা... হা...হা.. তবে মানুষ তো হুজকে মেতে থাকে এজন্য দূর দূরান্ত থেকে এখানে এত লোক এসেছিল যে ভিড়ের ঠেলায় রীতিমতো ঢুকতে অনেক কষ্ট হয়ে গেছিল। সব থেকে বড় সমস্যা মাকে নিয়ে হচ্ছিল। কারণ মা হাঁটতে পারছিল না তাই অনেকটা কষ্ট করে পূজা মন্ডপের ভিতর ঢুকতে হয়। প্রথমে তো আমরা জায়গাটা চিনতে পারছিলাম না। এরপর চাপাডালি মোড় এসে লোকের কাছে শুনে প্রায় কুড়ি মিনিট হাঁটার পরে এই পূজা মন্ডপ আমাদের চোখের সামনে পড়ে।


20231113_204907.jpg


20231113_204912.jpg


যাই হোক মোটামুটি ভিড় থেলে ভিতরে ঢুকতেই বেশ কিছুটা অবাক হলাম। বাইরে থেকে যতটা সুন্দর লাগছিল ভেতরের কাঠামোটা তত বেশি সুন্দর করে করা হয়নি। শুধুমাত্র বাইরে থেকে সুন্দর দেখানোর জন্য এরকম ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে যেটুকু জায়গা মন্দির প্রাঙ্গণ ছিল অর্থাৎ মা কালীর মূর্তি রাখা হয়েছিল সেই জায়গাটা সুন্দর করে লাইটিং করা হয়েছিল এবং সুন্দর ডেকোরেশন করা হয়েছিল। আমাদেরকে বেশি সময় ভেতরে দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি, তবে অন্যান্য জায়গার তুলনায় এই জায়গার মা কালী আমার কাছে একটু অন্যরকম সুন্দর লেগেছিল। মনে হচ্ছিল যেন দুর্গা প্রতিমা রাখা হয়েছে। এরপর আবার ওই ভিড়ের ভিতর একজন পরিচিত লোকের সাথে আমাদের দেখা হয়ে গেল। তারপর আবার গল্প শুরু হলো। তবে এর ফাঁকে ফাঁকে আমি কিছু ফটো তুলে নিয়েছিলাম। এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে আবার বাইরে থেকে বেশ কিছু ফটো তুলেছিলাম যেহেতু কাছ থেকে ফটো পুরোপুরি আসছিল না ক্যামেরায়। এজন্য অনেকটা পিছিয়ে তারপর পুরো ফটো নিতে হয়েছিল।


20231113_205205.jpg


ডিভাইসrealme 8i
ফটোগ্রাফার@pujaghosh

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

বালক বৃন্দ স্পোর্টিং ক্লাব এইবার যে দুবাইয়ের বুর্জ খলিফার আদলে পুজো প্যান্ডেলটি করেছিলে সেখানে আমি নিজেও গেছিলাম দিদি। এই প্যান্ডেলটি বাইরে থেকে যতটা সুন্দর লাগছিল, সেই হিসাবে ভিতরে বেশি কিছু ছিল না। আমি এর ভিতরে গিয়ে ৩০ সেকেন্ড এর মধ্যে সব কিছু দেখে বের হয়ে যায়। তারপর বাইরে এসে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে এই পুজো প্যান্ডেলটির লাইটিং আর মিউজিক এর মজা নিয়েছিলাম।

 11 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাই , বাইরে থেকে দেখতে অনেক সুন্দর হলেও ভিতরে তেমন কিছুই ছিল না বললে চলে। আপনি দেখছি বাইরে এসে বেশ ভালোই মজা করেছিলেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.18
JST 0.031
BTC 87795.00
ETH 3172.09
USDT 1.00
SBD 2.82