|| কালী পূজা পরিক্রমণ (চন্ডিগড় ইউনাইটেড অ্যাথলেটিক ক্লাব) ||
নমস্কার বন্ধুরা
আমরা সব সময় বলে থাকি যে বারাসাতের কালীপুজো বিখ্যাত। তবে বারাসাত ছাড়াও কিন্তু একটা জায়গা রয়েছে যেখানে কালীপুজো অনেক বেশি বিখ্যাত এবং জাকজমকপূর্ণ হয়, সেটা হল মধ্যমগ্রাম। আমরা যারা বারাসাতের বাসিন্দা তারা সবসময় মনে করি যে বারাসাত থেকে ভালো এবং কম্পিটিশন কোথাও হয় না কালীপুজো নিয়ে। তবে মধ্যমগ্রাম এমন এমন পুজো প্যান্ডেল তৈরি হয়। যেখানে বারাসাত কেও হার মানিয়ে দেয়। সেরকম একটি ক্লাবের নাম হল চন্ডিগড় ইউনাইটেড অ্যাথলেটিক ক্লাব। এটা সাধারণত মধ্যমগ্রাম স্টেশন থেকে কিছুটা হৃদয়পুরের দিকে আসতে অবস্থিত। এইবারে তাদের পুজোর থিম ছিল রাজস্থানী মানুষের জীবন যাপন এবং সেখানকার পরিবেশ পরিস্থিতি। সর্বপরি সেখানে তুলে ধরা হয়েছে রাজস্থানীদের বিভিন্ন কালচার, তাদের ঘরবাড়ি এবং ব্যবহার্য জিনিসপত্র। যাই হোক এই প্যান্ডেলে আমাদের যাওয়ার কথা ছিল না বা আমি চিনতামও না রুপাই আমাকে হঠাৎ করে ফোন করে বলল যে মধ্যমগ্রামে খুব সুন্দর একটা ক্লাব রয়েছে সেখানে বেশ ভালো একটা প্যান্ডেল করে পুজো হচ্ছে। যদি আমার সময় হয় তাহলে তার সাথে একটু যেতে। যেহেতু পড়তে এসেছিলাম এজন্য মনে হল যে বলছে তাই দেখে আসা যাক। কারণ সময় বের করা এখন বেশ চাপের হয়ে গেছে।
মোটামুটি পড়া শেষ করে বেরোতে আমার সন্ধ্যা সাতটা বেজে যায়। এদিকে রুপাই স্টেশনে এসে বসেছিল আমার জন্য। এরপর দুজনের একসাথে দেখা হয়। সত্যি কথা বলতে আমার নিজের একটু ওয়াকওয়ার্ড লাগছিল। কারণ পূজোতে যারা ঘুরতে বেরিয়েছিল সবাই সেজেগুজে বেরিয়েছিল এবং সবাইকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগছিল। কিন্তু আমি সেজে বের হওয়ার পরিবর্তে নরমালি যেমন পড়তে বের হয় সবাই আমি সেরকম ভাবে বের হইছিলাম। তবে মন ভালো হয়ে যায় রুপাইয়ের কমপ্লিমেন্ট এ। আমাকে দেখতে নাকি অনেক সুন্দর লাগছিল তাই আর কোন কথা চিন্তা করিনি দুজনে বেরিয়ে পড়লাম পুজো মণ্ডপের উদ্দেশ্যে। তবে বেশ আশ্চর্য লাগলো পুজো মন্ডপে পৌঁছে। কারণ আমাদের বারাসাতে যে পরিমাণ ভিড় হয় কালী পূজার সময় এখানে দেখলাম তার কিছুই নেই। তবে এখানকার থিম হয়তো আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন যে কত সুন্দর এবং সাজানো গোছানো। কিন্তু লোকজন একেবারেই নেই, সবাই চলে গেছে কালী পূজা দেখার জন্য বারাসাত তাই এই জায়গা গুলো প্রচন্ড ফাঁকা। একটা কথা আছে না যে ঘরের পাশের সুন্দর জিনিস আমাদের চোখে পড়ে না ওই দূরে কোথায় সুন্দর জিনিস দেখা যাচ্ছে সেটা দেখার আগ্রহ আমাদের সব সময়। এ ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা সেরকম হয়েছিল। তবে আমরা যেহেতু বারাসাত থেকে গিয়েছিলাম তাই আমাদের কাছে কিন্তু ব্যাপারটা বেশি ইন্টারেস্টিং এবং সুন্দর লাগছিল।
যাইহোক আমরা ভেতরে ঢুকতেই দেখলাম যে আস্তে আস্তে লোকজন ঢুকছে। তবে পরবর্তীতে একটা জিনিস যেটা ভুল ভাঙলো সেটা হলো যে একসাথে অনেক লোক এখানে ঢুকতে দিচ্ছে না। প্রতি ধাপে কুড়িজন করে লোক ঢোকাচ্ছে তারপর যখন তারা সব জায়গা দেখে ঘুরে বেড়িয়ে চলে আসছে তারপর আর কুড়িজন করে ঢুকাচ্ছে। এভাবেই চলছে আরকি ভিতরে লোক ঢুকানো। সত্যি কথা বলতে ভেতরে ঢুকে মরুভূমির একটা ভাইব পাওয়া গেল। তারপর চলছিল রাজস্থানীদের বিভিন্ন কালচার এবং গান বাজনা যেগুলো অনেকটা রাজস্থানে না গিয়েও রাজস্থানের মত ভাইব দিচ্ছিল। এরপর আমরা দুজনে মিলে খুব সুন্দর করে সব জায়গা দেখলাম এবং বেশ কিছু ফটো তুলে নিলাম। এরপর সামনে দেখলাম একটা উট দাঁড়িয়ে আছে যদিও ওটা অরজিনাল উট নয়। বাঁশ খড় জাতীয় জিনিস দিয়ে তৈরি করা। তবে দেখে এতটা ভালো লাগছিল মনে হলো যে পাশে গিয়ে একটা ফটো তুলে নিয়ে আসে। এরমধ্যে রুপাই আবার আমাকে একটা টাস্ক দিল যে ওই উঠকে গিয়ে প্রপোজ করতে হবে। ব্যাপারটা আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং লাগলো তাই সেটা করেও ফেললাম আর কি।
আমাদের এই কর্মকান্ড দেখে বেশ কিছু লোক দেখলাম আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তবে তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। আমরা আমাদের মত ঘুরাঘুরি করতে থাকলাম। এরপর সব জায়গায় ঘোরা শেষ করে চলে গেলাম মায়ের মূর্তি দর্শন করার জন্য। একদম ভিন্নভাবে তৈরি করা হয়েছিল এবারের কালীপুজোর মা কালীর মূর্তি। যাক সেখান থেকেও বেশ কয়েকটা ফটো তুললাম। তারপর আবার পুনরায় ব্যাক করে এসে বাকি জায়গা গুলো আবারো আর একবার সুন্দর করে দেখলাম। তারপর বাইরের রাস্তা দিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে গেলাম। তবে বারাসাতের কালীপূজায় যেরকম ভিড় হয় এখানে না হওয়ার কারণে অনেকটা স্বাচ্ছন্দ পূর্ণভাবে পুজো মণ্ডপ দর্শন করতে পেরেছিলাম। যেটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছিল। এরপর আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে ফুচকা আইসক্রিম তারপর চকলেট এগুলো খেয়ে নিলাম। এরপর দেখলাম রুপাই আমার জন্য একটা গোলাপ ফুল কিনে রেখে দিয়েছে। সেটা আমার হাতে তুলে দিল। যাইহোক এভাবে সুন্দর করে ঘুরে দুজনে সুন্দর সময় কাটিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
পোস্ট বিবরণ | লাইফ স্টাইল |
---|---|
ডিভাইস | realme 8i |
রুপাইদার কথায় তাহলে আপনি গিয়েছিলেন। আর সেখানে গিয়ে দুজনে খুব ভালো সময় কাটিয়েছিলেন যেটা বুঝতেই পারছে দেখে। তবে এখানে তো দেখছি কুড়িজন ছাড়া আর কাউকে ঢুকতেই দিচ্ছিল না। কুড়িজন বের হলে তারপরে আরো কুড়িজন ঢুকাচ্ছিল। মূর্তির সাথে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন ভাবে ফোস দিয়ে ছবি তুলেছেন যেগুলো খুব সুন্দর হয়েছে। যাই হোক বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন এবং সবার মাঝে সেগুলো ভাগ করে নিয়েছেন দেখে খুব ভালো লাগলো।
মূর্তির সাথে দাঁড়িয়ে তোলা ফটোগুলো আপনার কাছে ভালো লেগেছে শুনে খুশি হলাম ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।