|| গল্প হলেও সত্যি ( ভূতের গল্প, শেষ পর্ব) ||
নমস্কার বন্ধুরা
গত পর্বে যেখানে শেষ করেছিলাম--
এদিকে হ্যারিকেনের তেল প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ার পথে। কোন উপায় না পেয়ে ঠাকুর দাদা অনেক জোরে জোরে পা ফেলে সেখান থেকে দৌড়ে প্রস্থান করতে লাগলো। কিন্তু তৎক্ষণাৎ বুঝতে পারলো তাদের পিছু কেউ নিয়েছে অর্থাৎ কেউ একই গতিতে তাদের পিছনে হেঁটে হেঁটে আসছে।
তারপর থেকে---
এটা অনুমান করার পর আমার ঠাকুর দাদা নাকি তার সেই ভাইকে বলেছিল যে ভয় পাওয়ার কিছু নেই হয়তো কোন কুকুর বা শিয়াল হতে পারে, যেহেতু গ্রামের দিকটা তাই। তবে তারপরও ঠাকুর দাদার সেই ভাইয়ের মন মানছিল না। তাই কোন কিছু চিন্তা না করেই ঠাকুর দাদার হাত জোরে চেপে ধরল এবং বলল যে তুমি তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলো, আমার আর ভালো লাগছে না। এদিকে ঠাকুরদাদার ও মনে মনে প্রচন্ড ভয় করছে, সেটা আর বুঝতে দেয়নি তাকে। তখন ঠাকুর দাদা বলল যে ঠিক আছে তুই কোন ভয় পাস না আমি তোর সাথে আছি। চল যত দ্রুত সম্ভব এখান থেকে থেকে বেরিয়ে যাই। মোটামুটি কিছু দূর এগোতেই একটা ফাঁকা মাঠ দেখল তারা। কিন্তু এই মাঠের কাছে যখন তারা আসলো তখন আর পিছনে সেই জিনিসটাকে অনুমান করতে পারল না। তার পরিবর্তে দেখল যে একদম মাঠের অপজিট প্রান্তে কি যেন একটা আলো স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রথম কথা হচ্ছে এত রাতে তো কেউ আলো নিয়ে মাঠের ভিতর দাঁড়িয়ে থাকার কথা নয়। তারপরও মনে সাহস যুগিয়ে ভগবানের নাম করতে করতে সামনের দিকে এগিয়ে গেল।
কিন্তু মাঠ পেরোতেই সেই জিনিসটা আবারও তাদের পিছু নিল। কিন্তু মজার বিষয় হল যে আমার ঠাকুর দাদা এবং সেই অদ্ভুত জিনিসটার ডিসটেন্স সব সময় একই রকম ছিল অর্থাৎ খুব কাছে আসছিল না জিনিসটা। কিছুটা দূরে দূরে থাকছিল। পরবর্তীতে বুঝতে পারল যে আমার ঠাকুর দাদার ভাইয়ের হাতে একটা মাদুলি পরা ছিল, সেটার কারণে নাকি কাছাকাছি আসতে পারছে না। এই কারণে আমার ঠাকুর দাদা বেশ খানিকটা সাহস পেল এবং চিৎকার করে বলল যে তুই যেই হোস না কেন আমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবি না। তার থেকে ভালো তুই যেখান থেকে এসেছিস ওখানেই চলে যা। কিন্তু অপজিট প্রান্ত থেকে কোন উত্তর আসলো না। এতে করে আমার ঠাকুর দাদা তো আরো ভয় পেয়ে গেল। তবে তার ভাইকে কখনো বুঝতে দেয়নি। এইভাবে কিছু দূর ভগবানের নাম করে হাঁটতে হাঁটতে একটা বড় ফাঁকা বিলের মধ্যে চলে আসলো এবং এই বড় বিলটাই ছিল সব থেকে ভয়ঙ্কর। তারপর এই বিলটা পার করলেই আমার ঠাকুর দাদার গ্রাম ছিল। অর্থাৎ এটা যে করেই হোক পার করতে হবে।
মোটামুটি বিল যেখান থেকে শুরু হল সেখান থেকেই যখন তারা হাঁটা শুরু করল তখন আবার ওই জিনিসটা গায়েব হয়ে গেল এবং বিলের মাঝখান দিয়ে একটা বড় লাইটের মত ঠাকুর দাদাদের সাথে সাথে চলতে লাগলো। কিছু সময় পর পর লাইটটা নিভে যায় আবার কিছুদূর সামনে এগোতেই সেই লাইট আবার পুনরায় জ্বলে ওঠে। এই জিনিসটা আমার ঠাকুর দাদার কাছে অনেক বেশি যন্ত্রণাদায়ক ছিল। তারা যে করেই হোক বাড়িতে পৌঁছানোর জন্য যত দ্রুত সম্ভব সেখান থেকে প্রস্থান করতে লাগলো। কিন্তু রাস্তা যেন শেষ হয় না, যতই সামনের দিকে এগোই মনে হচ্ছিল যে রাস্তা শেষই হচ্ছে না। মোটামুটিভাবে হাঁটতে হাঁটতে যখনই তারা গ্রামের ভিতর ঢুকে যায় তখন সেই লাইটটা পেছন থেকে গায়েব হয়ে যায় এবং সেই অদ্ভুত জিনিসটা হঠাৎ করেই কোথায় মিলিয়ে যায়।
এরপর নাকি ঠাকুর দাদা বাড়িতে এসে প্রচুর ঝাড়ফুঁক করেছিল এবং তার পরপরই দুজনের প্রচন্ড জ্বর এবং প্রায় ১০ দিনের মত অসুস্থ ছিল। তারপর ধীরে ধীরে সুস্থ হয় সবাই। এরপর কখনোই আর আমার ঠাকুর দাদা বাইরের গ্রামে, মাঝরাতে মিটিং করতে যায়নি। যদি কখনো আবার রাতের বেলা যেত তবে ২-৩ জন লোক সাথে করে নিয়ে তারপর বাড়ি আসতো।
পোস্ট বিবরণ | গল্প লিখন |
---|
https://twitter.com/GhoshPuja2002/status/1769789128160194866?t=504L792nNXmQGXVDZNbQ1A&s=19
গল্পটার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বেশ ভয়ঙ্কর ছিল বলতে গেলে গা ছমছমে অবস্থা। জিনিসটা মোটেই পিছু ছাড়ছিল না হয়তো সম্ভব হলে বড় কোন ক্ষতি করত। যখন গ্রামের এরিয়ার মধ্যে প্রবেশ করল তখন জিনিসটা পিছু ছাড়লো। তখন যেন মন থেকে ভয়টা একটু দূর হলো। গল্পটা বেশ ভালো লেগেছে দিদি।
সত্যি কথা বলতে হয়তো হাতে বাধা ওই মাদুলিটির কারণেই তাদের কাছে সেই অদ্ভুত অবয়ব টি আসতে পারেনি। যে কারণে মাঠের কাছে দাঁড়িয়ে তাদের ভয় দেখাতে চেয়েছিল এবং দাদার থেকে সে সবসময় একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রুত বজায় রেখে চলেছিল। আর বিলের মধ্যে লাইট জ্বলা নিভার মধ্য দিয়েও তাদেরকে ভয় দেখাতে এসেছিল। কিন্তু আপনার ঠাকুর দাদা বেশ সাহসী মানুষ হওয়ার দরুন তাকে কোনভাবেই বিভ্রান্ত করতে পারেনি। বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হওয়ার কারণটা স্বাভাবিক যেহেতু তিনি নিজেও অনেক বেশি ভয় করছিলেন। যাইহোক আপু গল্পটা অনেক বেশি ভালো লাগলো। আর এরকম গল্প গুলো রাতেই পড়তে বেশি ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে এরকম একটি গল্প আমাদের মাঝেই শেয়ার করার জন্য।
দিদি গল্প হলেও সত্যিই এই গল্পটার প্রথম পর্ব আমার করা হয়েছিল। আর আজকে শেষ পর্ব পড়ে খুব ভালো লাগলো। আমার তো প্রথম পর্ব পড়তে যেমন একটু ভয় লেগেছিল, শেষ পর্ব টা পড়তেও ভয় লেগেছে। আর সবকিছুর পর বাড়িতে ফিরে আসতে পেরেছে দুজনে ভালোভাবে এটা জেনে ভালো লেগেছে। এত কিছু হওয়ার পর অনেকদিন পর্যন্ত উনারা অসুস্থ ছিল। আসলে গ্রামে এরকম ঘটনা নাকি আগে অনেক বেশি ঘটতো, এটা আমি শুনেছিলাম বড়দের মুখে। সুন্দর করে পুরো গল্পটা লিখে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এই গল্পের পূর্ববর্তী পর্ব আমার পড়া হয়েছিল৷ আজকে এর পরবর্তী পর্ব পড়েও ভালো লাগলো৷ আর আপনি সব সময় খুব সুন্দর কিছু গল্প শেয়ার করে আসছেন৷ এই গল্পটি পড়েও যেন একটু ভয় ভীতি বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে৷ ওই জিনিসটি তাদের যেন পিছু ছাড়ছিল না৷ যখন গ্রামের দিকে প্রবেশ করল তখন ওই জিনিসটা তাদের পিছু ছাড়লো এবং যখন সবকিছুর পরে তারা বাড়িতে ফিরে এলো তখন খুবই ভালো লাগল৷ তারপরেও তারা অনেকদিন পর্যন্ত অসুস্থ ছিল৷ কারণ এরকম ঘটনা ঘটলে অনেকটাই ভয় পেয়ে যায় এবং আতঙ্ক চলে আসে৷ যার ফলে অসুস্থতাও বাসা বাধে অসংখ্য ধন্যবাদ এই গল্পটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷
দিদি আমার না ভূতের গল্প গুলো পড়তে বা শুনতে বেশ ভালো লাগে। আবার ভয় ও লাগে। আপনি তো দেখছি বেশ সুন্দর করে ভয় লাগিয়ে সম্পূর্ণ গল্পটি আমাদের মাথে শেয়ার করলেন। যতক্ষন পড়ছিলাম বেশ ভয়ই পাচিছলাম। বেশ দারুন লিখেন আপনি।
ব্যাপার টা সত্যি বেশ ভয়ের ছিল। অতো রাতে ঐরকম পিছু করা তারপর ঐরকম কাজ কোন মানুষের হতে পারে না। ওটা নিশ্চয়ই অস্বাভাবিক কিছু ছিল। আপনার ঠাকুর দাদার জায়গাই আমি থাকলে অবস্থা খারাপ ছিল হা হা। গল্পটা বেশ ভালো লাগল দিদি। আমাদের চারপাশে এমন অনেক কিছুই আছে যেগুলোর অস্তিত্ব আছে কিন্তু আমরা দেখতে পাইনা বলে স্বীকার করি না।
আপনার ঠাকুরদাদার দেখছি অনেক সাহস ছিল দিদি। আপনার ঠাকুরদার সাথে অনেক ভয়ংকর কিছু ঘটনা ঘটেছে, গল্পটি পড়ে যা বুঝলাম। আমি হলে তো ওখানেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে যেতাম। যাই হোক, গল্পটা পড়ে যথেষ্ট ভালো লাগল এবং কিছুটা ভয়ও পেয়েছি।
সত্য একটা ঘটনা অবলম্বন আপনি এটা গল্পের মাধ্যমে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে, খুব ভালো লাগলো আবার অনেক বেশি ভয় লেগেছে। আপনার ঠাকুর দাদা যদিও ভয় পাচ্ছিল, তবে ওনার ভাইকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য বুঝিয়েছিল তিনি ভয় পাচ্ছেন না। এই গল্পটার প্রথম পর্বটা যখন পড়েছিলাম, তখন তো শুধু ভাবছিলাম যে আপনার ঠাকুর দাদাদের সাথে কি হয়েছিল। তবে ওই জিনিসটা উনাদের কোন ক্ষতি করতে পারেনি এটাতেই অনেক। আর এরকম কাহিনী যে কারো সাথে ঘটলে অসুস্থ তো হয়ে পড়বেই। অনেকদিন পরে উনারা সুস্থ হয়েছিল দেখছি। বাস্তবিক ঘটনাটা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।