|| গল্প হলেও সত্যি ( ভূতের গল্প, পর্ব-০১) ||
নমস্কার বন্ধুরা
ভূতের গল্প লেখার অভিজ্ঞতা যে আমার খুব ভালো, সেটা বলবো না। তাছাড়া গল্প লেখায় আমি খুব বেশি একটা এক্সপার্ট নই। তারপরও মাঝেমধ্যে চেষ্টা করি আপনাদের সামনে টুকটাক নিজের তৈরি করা কিছু গল্প শেয়ার করার জন্য। তবে আজকের যে গল্পটা আপনাদের সাথে শেয়ার করব, এটা মোটেই কোন গল্প নয়। এটা একটা বাস্তবিক ঘটনা যেটা ঘটে গেছিল আমার ঠাকুর দাদার সাথে। যখন ছোটবেলায় আমি গল্প শুনতে চাইতাম আমার ঠাকুর দাদার কাছে, তখন এই গল্পটা আমাকে শুনিয়েছিল। আজ হঠাৎ কোন একটা কারণে এই গল্পটা আমার মনে পড়ে গেল। সেই ঘটনাটাই আপনাদের সাথে আজকে শেয়ার করতে চলেছি। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন তাহলে গল্প শুরু করা যাক।
আমি তখনও হইনি, আমার ঠাকুর দাদা ছিল গ্রামের মাতব্বর। এই কারণে আমার ঠাকুর দাদাকে গ্রামের বিভিন্নসালিশে ডাকাতো সেটা দিন হোক কিংবা রাত। বেশিরভাগ সময় রাতেই ঠাকুর দাদাকে যেতে হতো গ্রামের মিটিং করার জন্য। আর তখন এমন পরিস্থিতি ছিল যে আমার ঠাকুর দাদা যে গ্রামে থাকতো ওই গ্রামে বিদ্যুতের তেমন কোনো সুব্যবস্থা ছিল না। বেশিরভাগ বাড়িতেই ছিল হারিকেনের আলো। যাই হোক একদিন সন্ধ্যাবেলা নাকি আমার ঠাকুর দাদার সাথে দেখা করতে তিন চারজন লোক আসলো এবং তারা বলল যে পাশের গ্রামে নাকি বেশ ভালো রকম একটা চুরি হয়ে গেছে এবং চুরি করেছে ওই গ্রামের এক ছেলে। তবে সে চুরি করে থেমে থাকে নি। যার থেকে চুরি করেছে তার গলা থেকে সোনার চেইন নিয়ে তাকে প্রচুর মারধর করে এক জায়গায় ফেলে রেখে দিয়েছে। এখন সেই বিচার করতে যেতে হবে আবার ঠাকুর দাদাকে।
যেহেতু গ্রামের ভিতরে বিচার সালিশ আমার ঠাকুরদাই করত। এজন্য গ্রামের বাইরে গিয়ে সেটা করতে প্রথম দিকে একটু দ্বিধাবোধ করছিল। কিন্তু বারবার বলার পরে ঠাকুর দাদাকে যেতেই হল। তবে বাড়িতে একা একা আসতে হবে জন্য সাথে করে ঠাকুর দাদা তার এক ছোট ভাইকে সাথে করে নিয়েছিল। যাইহোক সেখান থেকে বিচার সালিশ শেষ করে বেরিয়ে আসতে আসতে প্রায় রাত বারোটার কাছাকাছি বেজে যায়। আর গ্রাম অঞ্চলে সেই সময় রাত বারোটা মানে অনেক বেশি।। কোন মানুষ জেগে থাকা তো দূরের কথা রাস্তার কুকুর পর্যন্ত এত রাতে জেগে থাকে না। তবে তাতেও সমস্যা হতো না যদি তখন গ্রামে ইলেকট্রিসিটি থাকতো। সবাই লাইট বন্ধ করে দিয়ে এমন ভাবে ঘুমিয়েছিল, যে বাইরে বেরিয়ে নিজের চেহারাটুকু ঠিকঠাক করে দেখা যাচ্ছিল না।
যদিও প্রথম থেকে গ্রামের কিছু লোক বলেছিল যে ঠাকুর দাদাকে এগিয়ে দিয়ে যাবে কিনা। কিন্তু ঠাকুর দাদা বলল যেহেতু আমাদের সাথে হারিকেন আছে তাহলে আর সমস্যা নেই। আমরা নিজেরাই যেতে পারবো। যে কথা সেই কাজ, গ্রামের মাটির রাস্তা ধরে আমার ঠাকুরদাদা এবং সাথে তার এক ভাই রওনা দিল। মোটামুটি বেশ কিছুদূর আসার পরে একটা বটগাছ বাঁধে তাদের সামনে এবং এখানে আসার পরপরই তাদের গায়ে কেমন যেন একটা ঠান্ডা অনুভূতি হল। তারপর বট গাছের উপর থেকে কিরকম একটা বিকট কান্নার শব্দ আসতে লাগলো। কিন্তু ঠাকুর দাদারা এই বিষয়ে যথেষ্ট অবগত ছিলেন এজন্য সেদিকে নজর না দিয়ে সামনের দিকে চলতে শুরু করল।
তবে বিপদ যেহেতু একবার পিছু নিয়েছে, এই বিপদ খুব সহজে যে ছাড়া দেবে না এটা তারা বুঝতে পেরেছিল। এজন্য ভগবানের নাম করতে করতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো। কিন্তু সমস্যা হল গ্রামের রাস্তা তো শেষ হচ্ছে না। এখনো যে রাস্তা রয়েছে সেটা পার করতে রীতিমতো ঘন্টাখানেক সময় লাগবে এবং ঠাকুর দাদা এবং তার ভাই চিন্তা করছিল যে এতটা রাস্তা তারা কি করে যাবে। এদিকে হ্যারিকেনের তেল প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ার পথে। কোন উপায় না পেয়ে ঠাকুর দাদা অনেক জোরে জোরে পা ফেলে সেখান থেকে দৌড়ে প্রস্থান করতে লাগলো। কিন্তু তৎক্ষণাৎ বুঝতে পারলো তাদের পিছু কেউ নিয়েছে অর্থাৎ কেউ একই গতিতে তাদের পিছনে হেঁটে হেঁটে আসছে।
চলবে....👉👉
পোস্ট বিবরণ | গল্প লিখন |
---|
https://twitter.com/GhoshPuja2002/status/1768332997395415373?t=xqaWf2OTL2In6mg521lEzA&s=19
একটা সময় ছিল গ্রামে মাতব্বরেরা সব কিছু বিচার করতো আর সেই সময়ে বিদ্যুতের ব্যবহারও গ্রামে তেমনটা শুরু হয়নি। আর হ্যাঁ আমাদের এলাকাতেও শুনেছি এরকম বটগাছের আশেপাশে অনেক ভূতের ঘটনা ঘটেছে। যাইহোক মাঝরাতে যেহেতু তারা আসছিল তাই হুট করেই কিছু একটা তাদের পিছু নিয়েছিল আর বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি ভয় লাগলো যখন আপনার ঠাকুরদা দ্রুত হাঁটছিল আর কিছু একটা একই গতিতে তাদের পিছু নিয়েছিল।
হ্যাঁ ভাই, মূলত বিদ্যুতের ব্যবহার না থাকার জন্যই মানুষজনদের এরকম সমস্যার মধ্যে পড়তে হত মাঝরাতে যাতায়াতের সময়।
ছোটবেলায় আব্বুর কাছ থেকে এরকম ভূতের গল্প অনেক শুনতাম। আগেকার দিনে এরকম ঘটনাগুলো খুব ঘটতো। যাই হোক আপনার ঠাকুর দাদারা এত রাতে একা যাচ্ছে তার উপর আবার হারিকেনের আলো শেষ হয়ে যাচ্ছে। বটগাছ থেকে হয়তো কেউ তাদের পিছু নিয়েছে। শুনেইতো হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। যাই হোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ভালো লাগলো।
আগেরকার দিনে আসলে বিদ্যুৎ না থাকার জন্যই এরকম শোনা যেত বলে মনে হয় আপু। পরবর্তী পর্বটিও পোস্ট করেছি। ধন্যবাদ।
একেবারে ভয় পাইয়ে দিলেন আপনি এই গল্পটা শেয়ার করে। ভূতের গল্প শুনতে অথবা পড়তে আমার কাছে ভালো লাগে। কিন্তু মাঝে মাঝে আবার ভয়ও করে। আপনার ঠাকুর দাদারা তো দেখছি বেশ ভালোই একটা বিপদে পড়েছিল। আসলে গল্পটার প্রথম অংশ পড়ে আমার নিজেরই হাত পা একেবারে ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। আমি তো ভাবতেছি আপনার ঠাকুর দাদাদের সাথে পরবর্তীতে কি হয়েছিল। গ্রামের এতটা পথ উনারা কিভাবে এসেছিল, আবার কিছু একটা তো দেখছি তাদের পিছু নিয়েছিল। আশা করছি পরবর্তী পর্ব টা তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন।
আপনার মত আমারও ভূতের গল্প পড়তে বা শুনতে ভয় করে আপু। কিন্তু আবার ভালোও লাগে সেই জন্য ভয় পেলেও শুনি।
আসলে ঠিক আগেকার দিনে গ্রামে বারোটা মানে গভীর রাত্রি। আপনার ঠাকুর দাদা মাতোব্বর হওয়ার কারণে সালিসি করতে হতো আর রাত্রির বেলা সালিসি শেষে আসছিলে আর বট গাছ থেকে একটা কান্নার আওয়াজে ওনারা বুঝতে পারলেন বিপদ হতে পারে তাই দৌড় দিয়েছেন। এবং বুঝতে পেলেন কিছু একটা পিছু নিয়েছে।গল্পটি পড়ে শরীরে কাটা দিয়ে উঠলো।চমৎকার গল্প শেয়ার করেছেন আপনি।ধন্যবাদ আপনাকে ভয়ংকর গল্পটি শেয়ার করার জন্য। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
পরবর্তী পর্বটিও পোস্ট করেছি দিদি।আপনার কাছে ভয়ংকর এই গল্পটি ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ।
প্রথমত গ্রাম তার উপর কোন ইলেকট্রিসিটি নেই রাত বারোটা মানে কী সেটা আমি বেশ ভালোই বুঝতে পারছি। ঐ রাতে আসার পথে পিছু কে নিয়েছে এটা আমার মধ্যে একটা উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে আপু। গল্পের দারুণ জায়গাই শেষ করেছেন একটা আকর্ষণ তৈরি হয়ে গেছে আমার মধ্যে। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
পরবর্তী পর্বটিও দুদিন আগে শেয়ার করেছি ভাই। পড়বেন। আশা করি আপনার কাছে ভালো লাগবে।
ভূতের গল্প শুনতে আমার কাছে খুব ভয় লাগে। তবে আপনার ঠাকুর দাদার সাথে ঘটে যাওয়া গল্পটি তুলে ধরেছেন আমাদের মাঝে। বটগাছের নিচে রাত্রেবেলা হাঁটতে এমনিতে অনেক ভয় করে। আর বট গাছের মধ্যে এমনিতে অনেক কিছু থাকে। তবে বলতে হবে আপনার ঠাকুর দাদার সাহস আছে ।সে বুঝার পরও সামনের দিকে হাঁটতেছে। তবে এটি ঠিক ওই সময় অনেক জায়গাতে হারিকেন ব্যবহার করত। তবে এখনো পর্যন্ত আপনার ঠাকুর দাদার পিছেকে আসতেছে বোঝা গেল না। যাইহোক পরের পর্বটি খুব তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন আপু।
ভূতের গল্প শুনতে আমার কাছেও বেশ ভয় লাগে, তবে আবার ইন্টারেস্টিংও লাগে ভাই।
ছোটকালে আমরাও আমাদের দাদুর কাছে ভুতের গল্প শুনতাম। তবে আগে গ্রামাঞ্চলে কারেন্ট ছিল না সবাই হানিকেল ব্যবহার করত। তবে আপনার ঠাকুরদাদা গ্রামে বিচার করতো। এই কারণে রাত্রে বেলাও বাইরে যেতে হতো। তবে অনেকের মুখে শুনেছি বটগাছের মধ্যে এমনিতে খারাপ কিছু থাকে। আপনার ঠাকুর দাদা বট গাছের নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় হয়তো বা কিছু আন্দাজ করার কারণে সে তাড়াতাড়ি হাটা শুরু করলো। আসলে আগেরকার সময় বিভিন্ন গাছের মধ্যে অনেক খারাপ কিছু থাকতো। দেখি আপু আপনার পরের পর্বে কি ঘটেছে আপনার ঠাকুর দাদার সাথে তার আশা করে জানতে পারবো।
পরবর্তী পর্বটিও পোস্ট করেছি আপু।পড়বেন। আশা করি ভালো লাগবে আপনার। ধন্যবাদ।
গল্প পড়তে আমার অনেক ভালো লাগে৷ আর ভূতের গল্প হলে তো আর কোন কথাই নেই৷ আপনি আজকে খুব সুন্দর একটি ভূতের গল্প শেয়ার করেছেন৷ এই গল্পের প্রথম পর্ব শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো৷ ছোটবেলায় আমরাও আমাদের দাদা দাদুর থেকে অনেক গল্প শুনেছি৷ উনারা আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের গল্প শোনাতেন৷ বিভিন্ন ভূতের গল্পও আমাদের শোনাতেন যাতে করে আমরা রাতের বেলা কোথাও বের না হয়ে যাই৷ যাতে করে সন্ধ্যা বেলায়ও আমরা তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসি৷ তাই ওনারা বলতেন বট গাছের মধ্যে ভূত থাকে। তাই ওনারা আমাদেরকে বলতেন, যাতে করে আমরা বট গাছের দিকে সন্ধ্যা বেলায় খেলা না করি এবং তাড়াতাড়ি যেন বাসায় ফিরে আসি। এখানে আপনার ঠাকুরদাও হয়তো বটগাছের মধ্যে কিছু আন্দাজ করতে পেরেছিলেন তার জন্য তিনি তাড়াতাড়ি করে হাঁটা শুরু করলেন৷ পরবর্তী পর্ব দেখার আশায় রইলাম৷ আশা করি পরবর্তীতে আরো অনেক মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারবো৷
ভূতের গল্প পড়তে আপনার ভালো লাগে আর আমার লেখা এই গল্পটি আপনার ভালো লেগেছে শুনে খুশি হলাম ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।
সত্যিই ভুতের গল্প পড়ার মাঝে একটি আলাদা ভালো লাগা কাজ করে৷
এই ধরনের ভুতের গল্প গুলো পড়তে কিন্তু খুব ভালো লাগে দিদি। বিশেষ করে রাতে যখন গ্রামের রাস্তা দিয়ে কেউ একা একা হেঁটে আসে, আর তার পেছনে পেছনে কিছু একটা হেঁটে আসে, এটা যে কতটা ভয়ঙ্কর সেটা তারাই উপলব্ধি করতে পারে যারা এই সিচুয়েশন এর মধ্যে দিয়ে গেছে। তবে আপনার ঠাকুরদাদার কিন্তু অনেক সাহস ছিল। অন্য কেউ হলে হয়তো অজ্ঞান হয়ে পড়ে যেত। যাইহোক, দিদি পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। আশা করি, এর থেকে ভয়ের কিছু আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
হ্যাঁ ভাই,আমার ঠাকুর দাদার অনেক সাহস ছিল বলা যায়। গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে শুনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ।
পরের পর্বে আপনার ঠাকুরদার সাহসের আরও অনেক গল্প জানতে পারবো, সেই অপেক্ষায় আছি দিদি।