|| হটাৎ করেই এক মুশকিলের সম্মুখীন ||
নমস্কার বন্ধুরা
সত্যিই ভীষণ মুশকিলের মধ্যে পড়েছিলাম, গতকাল বাইরে বেরিয়ে। সময় আর সুযোগ দুটোই পেলে মাঝে মধ্যে গঙ্গার ঘাটে বেরাতে যাই। বিশেষ করে যখন আশেপাশের সমস্ত মানুষের থেকে বিরক্ত হয়ে পড়ি, তখনই একলা সময় কাটানোর জন্য গঙ্গার পাড়ে গিয়ে বসে থাকি। এক অদ্ভুত শান্তি কাজ করে, নদীর শীতল বাতাসে। মনে হয় সেখানেই বসে থাকি। কিন্তু মুশকিলটা কী হলো সেটা বলি। আমাদের যেহেতু কিছুদিন আগে পরীক্ষা শেষ হয়েছে, তাই একটু আশেপাশে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল। সেই মতোই এই সপ্তাহে আমার আর আমার দুই বান্ধবীর ছুটির দিন দেখে আমরা গঙ্গার পাড়ে যাওয়ার জন্য একটা দিন ঠিক করলাম।আমাদের সাথে যেহেতু কোনো বড়ো কেউ ছিল না ,তাই বাড়ি থেকে দ্রুত ফিরে আসতে বলেছিল। আমরাও বাড়ি থেকে সেই মতো বলে দুপুরে বেরিয়ে পড়েছিলাম । কারণ ওই দিকের ট্রেন অনেক কম । আর আমাদের বাড়ি থেকে এটা অনেকটাই দূর।
দুপুর নাগাদ বেরিয়ে আমরা সদ্য বিকাল শুরু হতে হতেই পৌঁছে গেছিলাম। যদিও তখন খানিকটা রোদ্দুর ছিল,তাই খুব একটা ভালো লাগছিল না।সেইজন্য আমরা তিনজন একটা ছায়া জায়গায় গিয়ে রোদ্দুর চলে যাওয়ার অপেক্ষায় বসে থাকলাম । তারপর যখন রোদ্দুর কিছুটা হালকা হয়ে গেলো,আমরা গঙ্গার ধারে এসে বসে মনকে প্রশান্তি দিচ্ছিলাম। তারপর ৬:৩০ টা বাজতে না বাজতেই ট্রেন আসার সময় হয়ে গেল । আর ওই ট্রেনটা মিস করা যাবে না । যেহেতু আমরা তিনটে মেয়ে,আর ওই দূরের জায়গা তাই বাড়ী থেকে বারবার বলে দিয়েছিল তাড়াতাড়ি যেতে। কিন্তু আমরা স্টেশনে গিয়ে বসে আছি, কোনো ট্রেন আসছে না দেখে, প্রথমে ভাবলাম একটু লেট আছে হয়তো। তারপর টাইম দেখার জন্য মোবাইল বার করে ট্রেনটা কোথায় আছে দেখার চেষ্টা করলাম। কিন্তু তখন দেখলাম ট্রেন এখনও ছাড়েই নি ফার্স্ট স্টেশন থেকে তাহলে আমাদের কাছে কিভাবে পৌঁছাবে।
দেরি না করে, টিকিট কাউন্টারে জিজ্ঞেস করতে চলে গেলাম । সেখান থেকে শুনলাম দুপুরে নাকি কোনো একটা স্টেশন থেকে ট্রেনের চাকা ভেঙে গেছে, তাই সেটা পাল্টে চালু করতে করতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লেগেছিল। তাই অন্য ট্রেন ওই লাইন দিয়ে যাতায়াত করতে পারছিল না । তাই সব ট্রেন লেট। আর এই দিকের ট্রেন যেহেতু ৩-৪ টে মাত্র, তাই বারাসাত থেকে ট্রেন মাঝেরহাট পৌঁছালে তারপর মাঝেরহাট থেকে বারাসাত যাওয়ার ট্রেন ছাড়বে। কিন্তু বারাসাত থেকেই তখনও ট্রেন ছাড়েনি। শুনে আমাদের মাথায় হাত পড়ল।কিভাবে এবার বাড়ী যাবো!তখন জিজ্ঞেস করলাম, বাসে করে যাওয়ার ব্যবস্থা আছে কিনা ,তখন উনি বললেন সরাসরি বাস নেই , ওখান থেকে ১৫ মিনিট হেঁটে হাওড়া ব্রিজের উপর থেকে শিয়ালদা যাওয়ার বাস তারপর শিয়ালদা থেকে ট্রেন। যেটা আমাদের জন্য আরও ঘুর আর সময় প্রায় একই হয়ে যাবে।
তখন নিরুপায় হয়ে,ওখানেই বসে থাকলাম। আর বাড়িতে ফোন করে সবকিছু জানালাম । বাড়ীর লোকেরা তো টেনশন শুরু করে দিয়েছিল,সাথে আমরাও। তারপর দীর্ঘ অপেক্ষার পর ২ ঘণ্টা বাদে প্রায় ৮:৩০ টা নাগাদ ট্রেন আসলো আর আমাদের ঘরে ফিরতে ফিরতে প্রায় ১০ টা বেজে গিয়েছিল। সত্যি বলতে এরকম পরিস্থিতিতে এর আগে কখনো পড়তে হয়নি। হয়তো বা ৩০ মিনিট বড়জোর অপেক্ষা করতে হয়েছে । কিন্তু এটা ছিল তার ৪ গুণ। যেটা ছিল অনেকটা সময় সাপেক্ষ। তবে শেষ পর্যন্ত যে বাড়ি ফিরতে পারলাম আর কোনো সমস্যা ছাড়া এটাই ভালো।
বাড়ি পৌঁছাতে রাতের দশটা বাজলেও, ঠিকঠাক ভাবে তিনজনই বাড়িতে পৌঁছাতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো। আর আসলে এমন হুটহাট বিড়ম্বনায় পড়লে খুব টেনশন হয় আমারো, কিন্তু কিচ্ছু তো করার থাকে না আর।
হ্যাঁ দিদি ,এরকমভাবে হুটহাট করে অসুবিধার মধ্যে পড়লে ভীষণ টেনশনের মধ্যে পড়তে হয়।
আসলে আপু মাঝে মাঝে এমন হয়। তবে করার কিছুই থাকে না। তবে আপনি বাড়িতে জানিয়ে অনেক ভালো করেছেন।সত্যিই আপু তিনজন মেয়ে রাতে ফিরে আসা মুশকিলের কথা । যাইহোক দেরিতে হলে ভালো ভাবে পৌঁছাতে পেরেছেন জেনে অনেক ভালো লাগল। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু ,বাড়িতে না জানালে আসলে বাড়ির লোকেরা টেনশন করত। তাই বাড়িতে জানিয়ে দিয়েছিলাম।
এরকম সিচুয়েশনে পড়লে ভোগান্তির শেষ থাকে না। আপনারা ভালো করেছেন ট্রেনের জন্য ওখানেই অপেক্ষা করেছেন। অন্য জায়গা দিয়ে ঘুরাঘুরি করলে আরো সময় নষ্ট এবং কষ্ট বেশি হতো। তাছাড়া এরকম রাত হওয়াতে বাড়ির লোকজন তো টেনশন করবেই। যাক অবশেষে সুস্থ মতো বাড়ি পৌঁছতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো।
হ্যাঁ আপু ,অন্য জায়গা দিয়ে আসলে সময়ও বেশি নষ্ট হতো আর কষ্টও হতো । সেই জন্য ট্রেনের জন্যই অপেক্ষা করে গিয়েছিলাম । ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আমি আপনার সাথে একমত যে এই পরিস্থিতিটি খুব বিরক্তিকর। আমি আশা করি যে ভবিষ্যতে আপনি আর এরকম পরিস্থিতিতে পড়বেন না। আমাদের জীবনে এরকম অনেক অনেক ঘটনা থাকে যেগুলোতে দ্বিতীয়বার আর পড়তে ইচ্ছে করে না।
ধন্যবাদ আপু আপনাকে, আপনার মন্তব্যের জন্য।
আসলেই একটা ট্রেন এতোটা সময় লেট এটা একেবারে অনাকাঙ্খিত। আমাদের দেশে তো প্রায়ই এইরকম করে থাকে তাও আন্তনগর ট্রেনগুলো। আসলে বিপদ কপালে লেখা থাকলে কিছু করার থাকে না। দূর্ভোগে পড়তেই হয় । যাইহোক শেষমেশ বাড়িতে পৌছাতে পেরেছিলেন এটা ভালো।।
আপনাদের দেশে প্রায়ই এই ঘটনা ঘটে থাকে মানে তো আপনাদেরকে প্রায়ই এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আসলেই তাই বিপদ কপালে লেখা থাকলে কোনো কিছুই করার থাকেনা।