|| মেছো ভূতের গল্প(দ্বিতীয় পর্ব) ||

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

গত পর্বে যেখানে শেষ করেছিলাম-

যাইহোক সেটার ভেতর কেরোসিন তেল ভরে মোটামুটি আরো কিছুদূর আসতেই কুপির তেল শেষ হয়ে যায়। ঠাকুর দাদা এরপর বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখল এখনো বাড়ি যেতে প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার রাস্তা বাকি। এদিকে রাত প্রায় আটটা বেজে গেছে। যাইহোক কোন উপায় না পেয়ে দুজনে জোরে জোরে হাঁটা শুরু করে দিল বাড়ির উদ্দেশ্যে, ভগবানের নাম করে।

তারপর থেকে -👉

মোটামুটি ভগবানের নাম করে দুইজন সামনের দিকে অগ্রসর হলো। কিন্তু একটা বিপদ কাটলেও পরবর্তীতে কিন্তু আরো নতুন একটা বিপদের সম্মুখীন হলো, সেটা হলো যে কোন এক জমিদার বাড়ির বড় আম বাগান ছিল সে আমবাগানের ভেতর দিয়ে চলে গেছিল রাস্তাটা। আর সেই রাস্তা দিয়েই বাড়ি আসতে হয়েছিল। একদিকে তো প্রচন্ড অন্ধকার তার উপর নাকি এই বাগানকে ঘিরে অনেক ভয়ঙ্কর ঘটনা ছিল। ঠাকুর দাদার মাথায় ছিল বাজার ঘাট আর সব থেকে ভয়ের বিষয় যেটা ছিল সেটা হল মাথায় যে ঝুড়ি ছিল সেখানে বড় বড় সাইজের ইলিশ মাছ ছিল। অনেকের মুখে শুনেছি ভূতেরা নাকি কাঁচা ইলিশ অনেক পছন্দ করে। যাইহোক কিছুদূর আসতেই তারা এটা অনুভব করল যে তাদের শরীর ভারী হয়ে গেছে। আর আম বাগানের মাঝ পথে আসার পর তারা এটা অনুভব করল যে কেউ তাদের ফলো করছে এবং তাদের পিছন পিছন আসছে।

ai-generated-8579696_1280.webp

সোর্স

আসলে ঠাকুর দাদা, যতই দ্রুত সামনের দিকে এগোচ্ছিল বাগানকে পাস করার জন্য কিন্তু মনে হচ্ছিল পা যেন এগোচ্ছে না। আর যতই দ্রুত হাঁটছিল মনে হচ্ছিল যে আরও বেশি স্লো হয়ে যাচ্ছে তাদের চলাচল। মোটামুটি এভাবে কিছু দূর চলার পর তারা বিশাল বড় একটা আম বাগানের নিচে আসার পর দেখল যে বড় বড় দুটো পা মেলে দিয়ে সাদা শাড়ি পড়ে কোন এক মহিলা বসে রয়েছে এবং তাদের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে জোরে জোরে হাসছে। এটা দেখার পর আমার ঠাকুর দাদা এবং তার যে ভাই ছিল সে প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেল এবং বলল যে তুই কি চাস আমাদের কাছে। এরকম ভয় দেখাচ্ছিস কেন। তখন নাকি সেই সাদা শাড়ি পরা মহিলাটা বলেছিল যে তোদের কাছে যে ইলিশ মাছ দুটো আছে ওটা দিয়ে যা। তখন অবশ্য আমার ঠাকুর দাদারা গায়ে অনেক জোর ছিল তাই বলেছিল যে, না এগুলো আমার বাড়ি আত্মীয়-স্বজন এসেছে তাদের জন্য নিয়ে যাচ্ছি, তোকে কেন দিতে যাব।

এই কথা বলে যখন তারা সামনের দিকে এগোতে লাগল তখন পিছনে তাকিয়ে দেখল যে এত সময় গাছের উপর যে বসে ছিল, সে হঠাৎ করেই গায়েব হয়ে গেছে। তবে কিছুদূর আসার পর তারা আবার বুঝতে পারল যে তাদের সাথে সাথে কেউ আসছে। তখন আমার ঠাকুরদাদা নাকি মাথা থেকে ঝুড়ি নামিয়ে দেখেছিল সবকিছু ঠিক আছে নাকি। পরবর্তীতে দেখে সেখানে একটা ইলিশ মাছ কম আছে। প্রথমে তো এটা ভেবে নিজেদের সান্ত্বনা দিচ্ছিল যে হয়তো কোথাও পড়ে গেছে। কিন্তু পরবর্তীতে বুঝতে পারল যে এই ইলিশ মাছ ওই সাদা শাড়ি পড়া আত্মাটাই হয়তো নিয়েছে। যাই হোক এরপর আর তেমন কোন সমস্যা হয়নি তারপর নাকি ঠাকুর দাদা এবং সেই ভাইটা বাড়ি চলে এসেছিল এবং অনেক রাত হয়ে গেছিল।

যাইহোক এরপর যে ইলিশ মাছ ছিল সেগুলো কাটাকুটি করা হলো এবং পিঠা বানানোর জন্য সব কিছু রেডি করা হলো। তখনকার সময় আসলে যে রান্নাঘর ছিল সেগুলো বেড়ার তৈরি হত। অর্থাৎ বাঁশের তৈরি হত। তাই আমার ঠাকুরমা নাকি সবকিছু রেডি করে রান্নাবাড়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। প্রথমে নাকি পিঠা বানিয়েছিল তারপর হঠাৎ করেই কে যেন বেড়ার ভেতর থেকে হাত রান্না ঘরের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়ে বলল যে আমাকে দুই পিস খেতে দে। আমার ঠাকুরমা নাকি তখন কিছু মনে করেনি, ভেবেছিল হয়তো আশেপাশের কোন মহিলা হবে এজন্য কোন কিছু চিন্তা না করেই দিয়ে দিয়েছিল। তবে কিছু সময় পর নাকি ওই মহিলা আবারও রান্না ঘরের ভিতর হাত ঢুকিয়ে দিয়েছিল এবং বলছিল যে আরো পিঠা দেওয়ার জন্য। এইবার তো আনার ঠাকুরমা অনেকটা ভয় পেয়ে যায়, তাই চিৎকার করে বাড়ির লোক একত্রে জড়ো করে।

চলবে....👉👉


পোস্ট বিবরণগল্প লিখন

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।





🪔আমার পরিচয়🪔

InShot_20240217_224020693.jpg

আমি পূজা ঘোষ(রাজশ্রী)। বনগাঁতে বসবাস করি। আমি বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয় থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, বিজ্ঞান বিভাগে ।পাশাপাশি কম্পিউটার এবং স্পোকেন ইংলিশের কোর্স করেছি। বর্তমানে আমি ফার্মাসিতে অধ্যায়নরত । ভবিষ্যতে এইগুলো নিয়ে ভালো কিছু করার আশায় এগোচ্ছি। কবিতা আবৃত্তি করতে আমি খুবই ভালোবাসি। ছোটো বয়েস থেকেই কবিতা আবৃত্তি শিখছি। এছাড়া ছবি আঁকতে,ঘুরতে যেতে,নতুন নতুন খাবার খেতে,গান শুনতে,ফোটোগ্রাফি করতে আর মানুষের সাথে মিশতে ভালোবাসি।

🎯 সমাপ্ত🎯

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 3 months ago 

বেশ ইন্টারেস্টিং চরিএ তো ঐ সাদা শাড়ি পড়া ভূতটা। একেবারে বাড়ি পযর্ন্ত চলে এসেছে। আবার পিঠা পযর্ন্ত চাচ্ছে। প্রথম অবস্থায় আমার কাছে কেমন জানি গল্প মনে হচ্ছিল অর্থাৎ ঠিক বিশ্বাস করার মতো না। তবে বেশ লাগল পড়ে। পরবর্তী পর্বে আরও আকর্ষণীয় কিছু নিশ্চয়ই অপেক্ষা করছে। দ্রুত দিয়েন পরবর্তী পর্ব।

Posted using SteemPro Mobile

 3 months ago 

গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 months ago 

আপনার লেখা মেছো ভূতের গল্পের প্রথম পর্বটা পড়ে যদিও খুব একটা ভয় পাইনি, কিন্তু দ্বিতীয় পর্বটা পড়ে অনেক ভয় পেয়েছি। বিশেষ করে সাদা শাড়ি পড়া ওই আত্মাটার কথা শুনে একটু বেশি ভয় পেয়েছি। আমি তো শুনেছি পেত্নীরা নাকি ইলিশ মাছ বেশি পছন্দ করে। আমার মনে হচ্ছে সাদা শাড়ি পড়া মহিলাটা একটা পেত্নী। উনারা সুরক্ষিতভাবে শেষ পর্যন্ত বাড়ি আসতে পারলেও, পিঠা বানানোর সময় পেত্নীটা মনে হয় আবারো এসেছিল তাও আবার আপনার ঠাকুমার কাছে। সব লোক জড়ো হওয়ার পর কি হয়েছে এটা জানার ইচ্ছে হচ্ছে।

 3 months ago 

পরবর্তী পর্বটি এই সপ্তাতেই পোস্ট করব আপু। তবে আপনি দেখছি বেশ ভয় পেয়েছেন গল্পটি পড়ে।

 3 months ago 

আপনার শেয়ার করা ভূতের গল্পগুলো সত্যি খুব সুন্দর আর ভয়ানকও। আপনার ঠাকুর দাদার সাথে দেখছি অনেক ভয়ানক ঘটনা ঘটেছে। আমি ভুতুড়ে গল্পগুলো পড়তে এবং শুনতে খুব ভালোবাসি, তবে অনেক বেশি ভয়ও করে। আপনার গল্পটা পড়ার সময় মনে হচ্ছিল আপনার ঠাকুর দাদার জায়গায় আমি ছিলাম, আর ওই পেত্নীটা আমার পিছু নিয়েছিল। আপনার ঠাকুর দাদা তো একটু সাহসী ছিল তাই ওর সাথে কথা বলেছে আর জিজ্ঞেস করেছিল। কিন্তু আমি হলে তো মনে হয় মাথা ঘুরে ওখানেই পড়ে থাকতাম, না হলে সাথে সাথেই স্টক করে ফেলতাম। আপনার ঠাকুমা যখন মাছ রান্না করছিল তখন ও সেখানে এসেছে। এটা দেখে তো আরো ভয় পেয়েছি। পরবর্তী পর্বটা পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম তাহলে।

 3 months ago 

পরবর্তী পর্বটি এই সপ্তাতেই পোস্ট করব ভাই। আসলে আগেরকার দিনে এরকম ভয়ানক ঘটনা ঘটতো, কিন্তু এখনকার দিনে আসলে অনেক লাইটের ব্যবস্থা থাকায় এগুলো খুব একটা ঘটতে দেখা যায় না।

 3 months ago 

আসলে গল্পের এই পর্বের সবথেকে ভয়ংকর ছিল দুটো জায়গা। যার একটি হল, আম গাছের উপর সাদা শাড়ি পড়ে বসে নিচে পা মেলে দিয়ে থাকা এবং অন্যটি হল বেড়ার ফাঁক দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে পিঠা খেতে চাওয়া। আগেকার সময়ে গ্রামাঞ্চলে এই ধরনের ঘটনা ঘটত, এমনটা আমি শুনেছি। যাইহোক, গল্পটা সত্যিই বেশ ভয়ঙ্কর ছিল। দেখা যাক, পরবর্তী পর্বে আরো কি জানা যায়।

 3 months ago 

আসলেই এই গল্পগুলো যখন আমিও শুনেছিলাম ঠাকুরদাদার মুখে আমিও খুব ভয় পেয়েছিলাম ভাই। গল্পটা আপনার কাছে ভালো লেগেছে শুনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ।

 3 months ago 

এই ধরনের ভৌতিক গল্প আমিও আমার ঠাকুরদার মুখে অনেক শুনেছি। বেশ ভয় লাগতো ছোটবেলায় এই ধরনের গল্পগুলো শুনতে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 68029.30
ETH 3272.63
USDT 1.00
SBD 2.64