|| জীবনে প্রথমবার সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিলাম ( প্রথম পর্ব) ||

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

জীবনে প্রথমবার বেশ ভালো রকমের বাস্তব অভিজ্ঞতা হলো। আসলে এর আগে আমি কখনো সরকারি চাকরি এর পরীক্ষায় বসিনি, এটাই আমার প্রথমবার। গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট হওয়ার পরে মোটামুটি সবারই চিন্তা থাকে যে একটা ভালো চাকরি। তবে আমার যে প্রস্তুতি খুব বেশি একটা ভালো ছিল তা বলবো না। কিন্তু একজনের অনুপ্রেরণায় পড়ে এই ফরম ফিলাপ করেছিলাম আমি। সবার আগে বলে দিতে চাই যে আজ আমার Public Service Commission(PSC) Foood S.I এর পরীক্ষা ছিল। যেহেতু আমি কিছু মাস আগে বারাসাতে থাকতাম তাই ফরম ফিলাপ করার সময় ওইখানকার এড্রেস দিয়েছিলাম। এজন্য আমার সিট মধ্যমগ্রামের বিবেকানন্দ কলেজে পড়েছিল। যেহেতু আমি এখন আমি বনগাঁতে থাকি, তাই এখান থেকে যাওয়াটা অনেক বেশি মুশকিল হয়ে গেছিল। তারপরে আজকে আবার রেল লাইনের উপর কাজ করার দরুন বেশকিছু ট্রেন বন্ধ ছিল।

dream-job-2904780_1280.jpg

সোর্স

সুতরাং সমস্যা হয়ে দাঁড়ালো তুমুল ভাবে। যদিও আগে থেকে সব জানতাম, ওই জন্য অনেকটা সকালেই বাড়ির থেকে বেরিয়ে পড়েছিলাম। আমার পরীক্ষা ছিল দুপুর সাড়ে বারোটা থেকে দুটো পর্যন্ত। সুতরাং যে করেই হোক আমাকে দশটার ভিতর মধ্যমগ্রামে পৌঁছাতে হতো। মোটামুটি তাও আমার মধ্যমগ্রামে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সাড়ে দশটার মতো বেজে যায়। এরপর সেখান থেকে গাড়ি ধরে চলে আসি মধ্যমগ্রাম চৌমাথা। যেহেতু আগে থেকে এই কলেজ আমি চিনতাম না, তাই অনেকটাই চিন্তা হচ্ছিল যে সময়ের আগে পৌঁছাতে পারবো কিনা। তবে অটোওয়ালার কাছে জিজ্ঞাসা করলে উনি বলে দিল যে, দিদি আপনি কোন চিন্তা করবেন না আপনাকে ঠিক জায়গায় পৌঁছে দিয়ে আসবো। যাইহোক তখন কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারলাম লোকটার কথা শুনে। যথারীতি এগারোটার কাছাকাছি সময় আমাকে বিবেকানন্দ কলেজের গেটের সামনে নামিয়ে দিল।

তবে সেখানেই কিন্তু শেষ নয়, এরপর সেখান থেকে আরও প্রায় ১০ মিনিট হেঁটে তারপর কলেজ পর্যন্ত যেতে হলো আমাকে। গিয়ে তো অনেকটাই অবাক হলাম যে এত স্টুডেন্ট একসাথে পরীক্ষা দিতে এসেছে। সবাই দেখছি পড়াশোনা করছে আর আমি একা সবার দিকে তাকিয়ে দেখছি শুধু। যাই হোক এরপর আরো একটা বিপত্তি হল যে কলেজের ভিতরে কোন ব্যাগ নিয়ে যাওয়া যাবে না। এমনকি পকেটের মোবাইল, হাতের ঘড়ি কোন কিছুই নিয়ে যাওয়া যাবে না। শুধুমাত্র অ্যাডমিট কার্ড এবং কলম তাই ছাড়া আর কোন কিছু ভেতরে এলাও না। যেহেতু প্রথম পরীক্ষা দিচ্ছিলাম, তাই এই সম্পর্কে আমার আইডিয়া ছিল না। তখন দেখলাম যে একটা জায়গায় ব্যাগ এবং মোবাইল রাখার জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোটামুটি ১০ টাকা দিয়ে সেখানে ব্যাগ এবং নিজের মোবাইল রেখে পরীক্ষার হলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

প্রথমে তো গেটে আমাদের একবার চেক করেছিল, তারপর ক্লাস রুমে ঢুকার আগেও একবার দেখলাম চেক করছে। আমি যে রুমে পড়েছিলাম সেই রুমটা ছিল অনেক বড় সুতরাং আমাকে নিজের রোল নাম্বার খুঁজতে গিয়ে অনেকটা কষ্ট করতে হয়েছিল। তারপর মোটামুটি খোঁজাখুঁজির পর নিজের বসার জায়গাটা পেলাম এবং যেটা ছিল একেবারেই লাস্ট বেঞ্চে। মোটামুটি আমার হাতে ৩০ মিনিটের মত সময় ছিল। কিন্তু হাতে পড়াশোনা করার জন্য কোনো বড় বই ছিল না তাই আশেপাশের পরিবেশটা একটু দেখার চেষ্টা করছিলাম। এরপর ঠিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কুড়ি মিনিট আগে দেখলাম যে ৪-৫ জন শিক্ষক রুমের ভিতর ঢুকলো। তারপর আমাদের সবার হাতে একটা করে OMR sheet দিয়ে দিয়েছিল। মোটামুটি OMR sheet এর সমস্ত কাজ গুছিয়ে কোয়েশ্চান পেপারের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।

চলবে....👉👉


পোস্ট বিবরণলাইফ স্টাইল পোস্ট

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।





🪔আমার পরিচয়🪔

InShot_20240217_224020693.jpg

আমি পূজা ঘোষ(রাজশ্রী)। বনগাঁতে বসবাস করি। আমি বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয় থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, বিজ্ঞান বিভাগে ।পাশাপাশি কম্পিউটার এবং স্পোকেন ইংলিশের কোর্স করেছি। বর্তমানে আমি ফার্মাসিতে অধ্যায়নরত । ভবিষ্যতে এইগুলো নিয়ে ভালো কিছু করার আশায় এগোচ্ছি। কবিতা আবৃত্তি করতে আমি খুবই ভালোবাসি। ছোটো বয়েস থেকেই কবিতা আবৃত্তি শিখছি। এছাড়া ছবি আঁকতে,ঘুরতে যেতে,নতুন নতুন খাবার খেতে,গান শুনতে,ফোটোগ্রাফি করতে আর মানুষের সাথে মিশতে ভালোবাসি।

🎯 সমাপ্ত🎯

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 5 months ago 

যাই হোক জীবনে প্রথম আপনার সরকারি চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার অভিজ্ঞতাটা আমাদের সাথে চমৎকারভাবে শেয়ার করেছেন। যদিও ট্রেনের বিড়ম্বনা থাকায় আপনার বেশ কষ্ট হয়েছে পরীক্ষা স্থলে পৌঁছাতে। আবার পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় বেশ কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে আপনাদের প্রবেশ করতে হয়েছে। যাইহোক ১০ টাকার বিনিময়ে আপনাদের জিনিসগুলো নিরাপদে রাখতে পেরেছেন, এটাই বড় বিষয়। আশা করি আপনার পরীক্ষাটা ভালো হয়েছে। ইনশাল্লাহ পরবর্তী পোস্টে বিস্তারিত আরও জানতে পারবো।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

আপনি জীবনের প্রথম চাকরির পরীক্ষা দিয়েছেন, দেখে আমার অনেক বেশি ভালো লাগলো। আমি ও কাল জীবনের প্রথম চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। আপনি প্রথম চাকরির পরীক্ষা দেয়ার অনুভূতি আমাদের সকলের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে অনেক বেশি ভালো লাগলো। আপনার অনুভূতি পড়ে আমার অনেক বেশি ভালো লাগলো।

 5 months ago 

জীবনে প্রথম সরকারী চাকুরীর পরীক্ষা দিতে গিয়ে দেখছি অনেক কিছুই ফেস করলেন। সময় মতো গিয়েছিলেন বটে।তবে এতো কিছু কড়াকড়ি তা আমার ও জানা ছিল না।ফোন,ব্যাগ ১০ টাকা দিয়ে এক জায়গায় রেখে হলে চলে গেলেন।অনেকেই এসেছিল এক্সাম দিতে।আপনি বই নিয়ে যাননি কোন তাই ঘুরে ঘুরে সবাইকে আর চারিপাশ দেখছিলেন।এরপর আসলে কি হয়েছিল তা জানতে হলে পরবর্তী পর্ব পড়তে হবে। ধন্যবাদ দিদি অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করার পরে একটি বড় হলরুমে আপনার সিট পড়েছিল আর যেহেতু রুমটা অনেক বড় তাই নিজের রোল নাম্বার খুঁজতে কষ্ট হয়েছিল। বেশ কিছু সময় হাতে থাকতেই আপনি আপনার সিট নাম্বার খুজে পেয়েছিলেন। যাই হোক পরবর্তী পর্বে যে ইন্টারেস্ট অপেক্ষা করছে সেটা জানার অপেক্ষায় রইলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

প্রথমেই আপনার জন্য শুভ কামনা রইল। যাই হোক জীবনে প্রথম চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার অনুভূতি আপনি বেশ সুন্দর করে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আপনার কাছে জীবনের প্রথম চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার অভিজ্ঞতা কিন্তু আমার কাছে বেশ দারুন লেগেছে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 5 months ago 

বাহ আপনাদের ওখানেও এই দশ টাকার সিস্টেম চালু আছে। আমাদের এখানেও পরীক্ষার হলের আশপাশে বেশ কিছু দোকান আছে যারা টাকার বিনিময়ে মোবাইল, ব‍্যাগ এগুলো রেখে থাকে। প্রথমবার যখন চাকরির পরীক্ষা দিলেন আশাকরি এটার অভিজ্ঞতা অনূভুতি বেশ আলাদা ছিল। দেখে বেশ ভালো লাগল। যদিও যাএাপথে আপনাকে বেশ অসুবিধায় পড়তে হয়েছিল।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

সরকারি চাকরি পরীক্ষা দেওয়ার পূর্ব মুহূর্তের কথাগুলো আপনি খুবই চমৎকার ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আসলে এরকম চাকরি পরীক্ষা দেওয়ার আগে নিজের রোল নম্বরটা খুঁজে নেওয়াটা বেশ কঠিন হয়। যাহোক আপনি কি রকম পরীক্ষা দিলেন সেটা জানার জন্য আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

জীবনে প্রথমবার সরকারি চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে মানুষের জীবনে অনেক কিছুই প্রথমবার হয়ে থাকে৷ প্রথমবার যখন কোন ধরনের কাজ করা হয় তখন অনেকটাই ভালো লাগা কাজ করে এবং কিছুটা ভয়ও কাজ করে৷ আপনিও পরীক্ষা দেওয়ার জন্য যখন একটি বড় হল রুমে প্রবেশ করলেন৷ তখন আপনার সিট নাম্বার খুঁজে পেতে অনেকটাই কষ্ট করতে হয়েছিল৷ কারণ এত বড় একটি রুমে সিট নাম্বার খুঁজে পাওয়া আসলে অনেক কষ্টের ব্যাপার৷ যাইহোক শেষ পর্যন্ত আপনি আপনার সিট নাম্বার খুঁজে পেয়েছেন৷ আশা করি পরবর্তীতে আরো অনেকগুলো বিষয় আপনার কাছ থেকে জানতে পারবো৷

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.031
BTC 60795.60
ETH 2627.31
USDT 1.00
SBD 2.58