||আলিপুর চিড়িয়াখানা ভ্রমণ ( প্রথম পর্ব)||
নমস্কার বন্ধুরা
শীতকাল আসলেই চিড়িয়াখানা ভ্রমণ বা যে কোন জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার ধুম পুড়ে যায় কলকাতার মানুষের। তাছাড়া চিড়িয়াখানা সহ বিভিন্ন বড় বড় পার্কে দলে দলে পিকনিক করতে চলে আসে সবাই। এই সময়টাতে বেশ ভালই লাগে চিড়িয়াখানা ঘুরতে। গরমকাল হলেই বিভিন্ন পশুপাখি যেগুলো চিড়িয়াখানার ভেতর থাকে বেশিরভাগ সময় খাঁচার ভিতর থাকতে পছন্দ করে। তবে শীতকাল হলেই রোদ পোহানোর জন্য তারা সবাই বাইরে চলে আসে। ফলে এই সময়টাতে তাদের দেখা পাওয়া যায় হার হামেশা। বেশ কিছুদিন আগে আমিও গিয়েছিলাম চিড়িয়াখানা ঘুরতে। আসলে আলিপুর চিড়িয়াখানা পুরোটা ঘুরে দেখতে একদিন সময় লেগে যায়। তারপরেও অনেক জায়গা রয়েছে যেগুলো একদিন দেখে শেষ করা যায় না। তবে এই বছর গিয়ে দেখলাম যে কিছু কিছু জায়গা সাধারন জনগণের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সত্যি কথা বলতে বেশ খারাপ লাগছিল। কারণ যে জায়গাগুলো দেখার এক্সপেক্টেশন নিয়ে গেছিলাম সেটাই বন্ধ ছিল। আসলে এই সময়টাতে কুমিরের দেখা পাওয়া যায় সব থেকে বেশি। কারণ তারা জলের নিচে যত সময় থাকে তার থেকে বেশি সময় রোধে গা মিলিয়ে দিয়ে বসে থাকে ডাঙ্গার উপর।
চিড়িয়াখানার ভিতর ঢুকেই কিছুটা এগোতে প্রথমেই যে প্রাণীটার দেখা মিলল সেটা হল ঈগল পাখি। তারপর জিরাফ, জেব্রা সহ আরো অনেক কিছু। তার থেকে কিছুটা এগিয়ে শিম্পাঞ্জি। তবে সেই ফটোগুলো অন্য কোন একটা পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। এরপর ঘুরে বেশ কিছু দূরে এগোতেই হাতির দর্শন পেলাম। আমার চোখের সামনে দুটো হাতি দেখতে পেয়েছিলাম। আসলে লোকজন বেশি যে জায়গা ছিল সেখানে দেখলাম তারা হাঁটতে হাঁটতে প্রায় আমাদের কাছেই চলে এসেছিল। তাই সময় বুঝে বেশ কয়েকটা ফটো তুলে নিয়েছিলাম। আসলে এখানকার জীবজন্তুদের বাইরের খাবার দেওয়া allow না। তাই আমরা খাবার দিতে চাইলেও বা তারা খাবার খেতে আসতে চাইলেও আমরা দিতে পারছিলাম না। তারপর বেশ কিছু সময় হাতিটা দাঁড়িয়ে আমাদের থেকে খাবার না পেয়ে আবার অন্য জায়গায় চলে গেল। এরপর আমরা দেখা পেলাম ভারতের জাতীয় পাখি অর্থাৎ ময়ূরের। আমরা সাধারণত এক ধরনের ময়ূর সব সময় দেখে থাকি বা পরিচিত। তবে এখানে দেখলাম আরো কয়েক ধরনের ময়ূর রয়েছে।
সাদা রঙের ময়ূর এই আমি প্রথমবার দেখলাম চিড়িয়াখানায় গিয়ে। আসলে পুরুষ ময়ুর গুলো দেখতে অনেক বেশি সুন্দর হয়। তবে স্ত্রী ময়ূর গুলো একটু কম আকর্ষণীয় হয়, যেটা এখানে গিয়ে বুঝতে পারলাম। তবে তার থেকেও একটা আকর্ষণীয় জিনিস আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল সেটা হল পাখিদের কিচিরমিচির আওয়াজ এবং তাদের রংবেরঙের সুন্দর গঠন এবং চেহারা। এখানে গিয়ে টিয়া পাখির আওয়াজে আপনারা মনমুগ্ধ হতে বাধ্য। কারণ সবসময়ই দেখলাম টিয়া পাখিগুলো আওয়াজ করতে থাকে। আর এতগুলো টিয়া পাখি একসাথে দেখলে যে কারো মন ভালো হয়ে যাবেই। যাইহোক এখানে আরো কয়েক রকমের পাখির ছিল সেগুলো নতুন কোন একটা পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করব। তবে সেখানেই দেখলাম একটা বড় পুরুষ ময়ূর ছিল যেটা খুব সম্ভবত মন খারাপ করে বসেছিল উল্টো দিকে মুখ করে। আমরা এতবার ডাকার পরে আসলে সে শুনতে পাইনি। হয়তবা শুনলেও আমাদের কথাতে সাড়া দেয়নি।
এরপর সেখান থেকে বেরোতেই হঠাৎ করে চিৎকার শুনতে পেলাম যে বাঘ বেরিয়েছে, বাঘ বেরিয়েছে। প্রথমে তো ভয় পেয়ে গেছিলাম যে খাঁচার ভিতর থেকে বাঘ উন্মুক্ত জায়গায় বেরিয়ে গেল নাকি। পরে শুনলাম না যে ঘরের ভিতর থেকে বাঘ বেরিয়ে চারদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর মাঝে মাঝে বাঘের গর্জন দিচ্ছে।তাই এখান থেকে বেরিয়ে তৎক্ষণাৎ সেখানে চলে গেলাম। গিয়ে দেখি সত্যিই বাঘ বেরিয়ে গেছে এবং এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে বারবার পায়চারা দিয়ে বেড়াচ্ছে। এত কাছ থেকে বাঘ দেখলে যেকোনো মানুষের ভয় পাওয়ার কথা। কিন্তু আমার কেন জানি না ভয় থেকে বেশি আনন্দই লাগছিল। যাইহোক মুহূর্তের ভিতর দেখলাম সেখানে প্রচুর লোকের আগমন হয়ে গেল। বলতে গেলে চিড়িয়াখানার অর্ধেক লোক সেখানে চলে এসেছিল। এরপর বেশ কিছু সময় সেখানে দাঁড়িয়ে মনোমুগ্ধ হয়ে দেখলাম। তারপর সেখান থেকে চলে গেলাম ভাল্লুকের খাঁচার দিকে। তবে সেগুলো অন্য একটা পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল।
পোস্ট বিবরণ | ভ্রমণ |
---|---|
ডিভাইস | realme 8i |
ফটোগ্রাফার | @pujaghosh |
আলিপুরের চিড়িয়াখানা ভ্রমণের দারুন দৃশ্য এবং অনুভূতি আমাদের মাঝে ব্যক্ত করেছেন আপু। অনেক ভালো লেগেছে আপনার সুন্দর এই চিড়িয়াখানা ভ্রমণের দৃশ্য দেখতে পেরে যেখানে আপনি খুব সুন্দর ভাবে ক্যামেরা বন্দি করেছেন অনেক গুলো ফটো। যেখানে বিভিন্ন বন্য পাখি সহ হাতির দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেছেন এবং আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। বেশ ভালো লাগলো ফটোগুলো।
আলিপুর চিড়িয়াখানা ভ্রমণের প্রথম পর্ব টা পড়ে খুবই ভালো লেগেছে দিদি। চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখছি খুব ভালো সময় অতিবাহিত করেছিলেন। চিড়িয়াখানায় ঘুরাঘুরি করতে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। কারণ অনেক রকমের পশু পাখির সাথে পরিচিত হওয়া যায়। শীতের সময় এমনিতেই যে কোন জায়গায় ঘুরতে খুব ভালো লাগে। আপনি বেশ কিছু পশুপাখির ফটোগ্রাফি করেছেন দেখে ভালো লাগলো। পরবর্তী পর্বে আশা করছি আরো পশু পাখির ফটোগ্রাফি শেয়ার করবেন।
চিড়িয়াখানায় ভ্রমণ করতে আমি খুবই পছন্দ করি। আর বেশ কয়েকবার চিড়িয়াখানায় যাওয়া হয়েছিল। আপনি আলিপুর চিড়িয়াখানায় ভ্রমণ করেছিলেন। আর এটার প্রথম পর্ব সবার মাঝে ভাগ করে নিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো। প্রথম পর্বে অনেকগুলো পশুপাখি দেখতে পেয়েছি। শীতের সময় হওয়ার কারণে সব পশু পাখি বাহিরে ছিল। আর শীতের সময় চিড়িয়াখানায় গেলে এটার জন্যই বেশি ভালো হয়। সুন্দর একটা মুহূর্ত কাটিয়েছিলেন সেখানে সব পশু পাখির মাঝে। দ্বিতীয় পর্ব পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম তাহলে।