|| জেনারেল রাইটিং : মায়ের ভালোবাসা ||
নমস্কার বন্ধুরা
আপনারা স্ক্রিনের উপর যে বাচ্চা কুকুরটাকে দেখতে পাচ্ছেন, সে কিন্তু মৃত এবং তার পাশে তার মা শুয়ে আছে। আসলে কথাগুলো আজকে তাদের নিয়েই বলা। এই পৃথিবীতে সব থেকে যদি সন্তানকে কেউ বেশি ভালোবাসে তাহলে অবশ্যই তার মা। মায়ের মত ভালো পৃথিবীতে আর কেউ কখনো বাসতে পারে না। বাবার ভালোবাসাও অবশ্যই নিঃস্বার্থ, তবে মায়ের ভালোবাসা অন্যরকম। কারণ প্রত্যেকটা সন্তানই তার মায়ের নাড়ি ছেড়া সম্পদ। পৃথিবীর সব সম্পর্কও যদি আপনার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে মা কখনো তার সন্তান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে না। আসলে মায়ের ভালোবাসার দৃষ্টান্ত নিয়ে পৃথিবীতে অনেক উদাহরণ রয়েছে, যেগুলো বলে আসলে শেষ করা যাবে না। তবে আজকে সেইসব বিষয়ে আমি কথা বলব না। আজকে কথা বলব এই কুকুরগুলোকে নিয়ে। এদেরও আসলে কতটা সন্তান ভক্তি সেটা ভালো করে অবজার্ভ করলে বোঝা যায়।
আমাদের পাড়ায় বেশ কিছুদিন আগে চারটে কুকুরের বাচ্চা হয়েছে। আমার সামনে তারা বড় হচ্ছিল। খুব সম্ভবত এক সপ্তাহ ধরে আমি তাদের দেখেছি। আমি যখন ঘর থেকে বের হই কিংবা ঘরে ঢুকি তখন তারা লাফাতে লাফাতে আমার কাছে চলে আসতো এবং সাথে আসতো তার মা ও। ব্যাপারটা আমার কাছে খুব খুব উপভোগ্য লাগতো। কারণ কুকুরের বাচ্চা আমি অনেক বেশি পছন্দ করি। তবে হঠাৎ করেই দেখলাম একদিন চারটে কুকুরের বাচ্চার বদলে তিনটি কুকুরের বাচ্চা আমার সাথে সাথে আসতে লাগলো। যদিও আমার কাছে ব্যাপারটা অস্বাভাবিক মনে হয়নি। কারণ অন্য কুকুরের বাচ্চাটা হয়তো অন্য কোন জায়গায় থাকতেও পারে তার বাবার সাথে। তবে ঘটনাটা ঘটলো ঠিক তার একদিন পরে।
হঠাৎ করেই দেখি এই মা কুকুরটা তার একটা সন্তানকে কোলে নিয়ে শুয়ে আছে। তবে এটা তো অস্বাভাবিক কিছু নয়, তাই খুব বেশি একটা পাত্তা না দিয়ে নিজের কাজে চলে গেলাম। তবে বিকাল বেলা ঘরে ফেরার সময় দেখি ওই একইভাবে মা কুকুরটা এই বাচ্চাটাকে নিয়ে শুয়ে আছে এবং বাচ্চাটা মুখ হা করে ঘুমিয়ে থাকার মত অবস্থায় আছে আর তার মুখে মাছি অবিরত ঢুকছে আর বেরোচ্ছে। এটা দেখার পর আমার আসলে আর জানতে বাকি রইল না যে কুকুরের বাচ্চাটা মারা গেছে। সত্যি কথা বলতে ওই মুহূর্তে অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম। তবে সেখানে বেশি সময় না দাঁড়িয়ে আবার ঘরে চলে আসলাম। পরেরদিন সকালবেলা আবার গিয়ে দেখি ঠিক একই ভাবে কুকুরের বাচ্চাটাকে নিয়ে তার মা ঘুমিয়ে রয়েছে ওই একই জায়গায়। এদিকে কুকুরের বাচ্চা মরে পেট ফুলে গেছে এবং তার শরীর দিয়ে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। তারপরেও তার মা তাকে হাতছাড়া করেনি। ঠিক একই ভাবে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে নিয়ে শুয়ে আছে। হয়তো তার মা কোন মতেই এটা মানতে চাইছে না যে তার সন্তান মারা গেছে।
আমাদের পাশের বাড়ির কাকিমাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে এই কুকুরের বাচ্চাটা এখনো এখানে রয়েছে কেন। এগুলো পরিষ্কার করার কি কেউ নেই। তখন সেই কাকিমাটা আমাকে বলল যে আমরা কুকুরের বাচ্চাটাকে ধরে নিয়ে একটা জায়গায় ফেলে দিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু তার মা পিছনে পিছনে গিয়ে আবার সেই বাচ্চাটাকে নিয়ে এসেছে এবং একইভাবে এই জায়গায় বসে রয়েছে। সত্যি কথা বলতে সেই মুহূর্তে আমার মনটা কেন জানিনা অন্য রকম হয়ে গেল। আমি বুঝতে পারলাম যে একটা মা তার সন্তানকে কি পরিমাণ ভালবাসলে এরকম করতে পারে। বাকি তিনটে বাচ্চা কোথায় আছে কি করছে সেগুলোর দিকে কোন খেয়াল নেই। যেহেতু তারা জীবিত রয়েছে এবং এই বাচ্চাটা যেত মরে গেছে তাই তাকে নিয়ে এভাবে শুয়ে রয়েছে, যতই দুর্গন্ধ হোক না কেন। তাই আমি সবাইকে বলব যে প্রত্যেকটা সন্তানেরই উচিত তার মা-বাবাকে সবথেকে বেশি ভালোবাসা এবং তাদের যত্ন নেওয়া। কারণ এই মানুষ গুলোর থেকে আপন পৃথিবীতে আর কোন কিছু হয় না।
পোস্ট বিবরণ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m6 pro |
ফটোগ্রাফার | @pujaghosh |
ঘটনাটি পড়ে খুব খারাপ লাগলো দিদি।আসলে মায়ের ভালোবাসা এমনই হয়।মায়ের ভালোবাসা প্রতিটি সন্তানের উপলব্ধি করা দরকার।ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার ভাবে ঘটনাটি শেয়ার করার জন্য।
ঘটনাটি চোখের সামনে দেখে আমারও খুব খারাপ লাগছিল আপু। মায়ের ভালোবাসা সত্যিই আলাদা।
আপনার পোস্ট পড়ে আমারই তো কষ্ট লাগছে। কুকুরের বাচ্চাটি মারা গিয়েছে কিন্তু মা তারপরেও তার সন্তানটিকে আগলে রেখেছে। এজন্যই তো মায়ের কোন বিকল্প নেই। যদিও পোস্ট পড়ে একটু মন খারাপ হয়ে গেল তার পরেও সুন্দর ব্লগটি তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি।
আমার পোস্টটি পড়ে আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাই। আসলেই ঘটনাটি মন খারাপ হওয়ার মতো।
আপনার পোস্ট পড়ে অনেক খারাপ লাগলো দিদি।সত্যি মায়ের মতো আপন পৃথিবীতে আর কেউ নেই। কুকুর তো অবলা প্রাণী তাই হয়তো তার কষ্ট বলতে পারছে না।তবে সে তার সন্তান থেকে এক পা সরছে না।একেই বলে মা। ধন্যবাদ আপু অনেক সুন্দর লিখেছেন।
অবলা প্রাণীদের আসলেই অনেক বেশি যন্ত্রণা আপু। না পারে কিছু মুখ ফুটে বলতে, না পারে কিছু সইতে।
স্বার্থহীন ভালোবাসার একমাত্র উদাহরণ হল মা। মা হলো একমাত্র ব্যক্তি যিনি সন্তানের যে কোন মুহূর্তে যেকোনো পরিস্থিতিতে পাশে থাকেন। হোক সেটা মানুষ কিংবা কোন প্রাণীর ক্ষেত্রে। আপনার পোস্টে আপনি তুলে ধরেছেন। গা থেকে কুকুরের বাচ্চাটির দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল কিন্তু তার পরেও দিনের পর দিন মা কুকুরটি তাকে জড়িয়ে শুয়েছিল। এটা থেকে স্পষ্ট মা হচ্ছে একমাত্র ব্যক্তি যে কিনা ভালবাসা এক অকল্পনীয় দৃষ্টান্ত।
আসলেই,সমস্ত বিপদের মুহূর্তগুলোতে সকলে মুখ ফিরিয়ে নিলেও মা কখনো আমাদেরকে ফেলে দিতে পারেনা।
আসলে মায়ের ভালোবাসা থেকে মূল্যবান আর কিছু হতে পারে না৷ মা সবসময় আমাদেরকে ভালোবেসে থাকেন৷ তাদের ভালোবাসা কখনোই স্বার্থ নিয়ে হয় না৷ যেভাবে এই পোস্টের মধ্যে আপনি উল্লেখ করেছেন যে এই কুকুর মারা যাওয়ার পরেও তার মা তাকে ভালোভাবে আগলে রেখেছে৷ কোন মতে তাকে ছেড়ে দিতে চাচ্ছে না৷ এর দ্বারাই মায়ের ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে৷
পোস্টটি পড়ে অনেক সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
গল্পটা পড়তে পড়তে মনটা অনেকটাই খারাপ হয়ে গেল দিদি। এটা একেবারেই সত্যি কথা যে, মায়ের ভালোবাসার আসলেই কোন তুলনা হয় না। একটা মৃত কুকুরের বাচ্চাকে তার মা বুকে জড়িয়ে নিয়ে পড়ে রয়েছে এবং বাচ্চাটার শরীর পচে গিয়ে দুর্গন্ধ বেরিয়ে গেলেও তার মা তাকে ছেড়ে যায়নি, এমনকি তাকে ফেলে দিয়ে আসার পরেও আবার সেখান থেকে নিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে যা মায়ের ভালোবাসা প্রকাশ করে। আসলে পৃথিবীতে মায়ের বিকল্প কিছুই হতে পারে না।
ঠিক বলেছেন ভাই, মায়ের ভালোবাসার বিকল্প হিসাবে এই পৃথিবীতে আসলে কিছুই নেই। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
দিদি, আপনার শেয়ার করা এই ঘটনাটি পড়ার পর থেকেই যত বারই মনে পড়ছে, ততবারই খারাপ লাগছে। মায়ের অকৃত্রিম ভালবাসার এক দৃষ্টান্ত উদাহরণ হয়ে থাকবে এই ঘটনাটি।