|| নবদ্বীপ ভ্রমণের গল্প কথা ||
নমস্কার বন্ধুরা
আজ আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি ,নবদ্বীপ ভ্রমণের কিছু মুহূর্ত নিয়ে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে শুরু করা যাক।
সময়টা ছিল আগস্ট মাসের ১২ তারিখ, যেদিন আমি এবং রুপাই গিয়েছিলাম নবদ্বীপ কৃষ্ণ মন্দির ঘুরতে। যদিও আমি এর আগে একটা পর্ব এখানে ঘোরাঘুরি নিয়ে তৈরি করেছি। তবে আজকের পর্ব টা একটু অন্যরকম এবং আজকের ভ্রমণ বিষয়ক পোস্টে আমি আলোচনা করব আমাদের রাস্তায় কি ধরনের সমস্যা হয়েছিল এবং আমরা কিভাবে শেষ পর্যন্ত মন্দির গিয়ে পৌছাই। ভ্রমণ বিষয়ক আজকের পোস্টে এটা নিয়ে আলোচনা হবে যে এরপর যদি কেউ এখানে ঘুরতে যায় তাহলে তারা সেখানে কি করে যাবে এবং কি ভাবে গেলে অনেক বেশি সুবিধা হবে। প্রথম দিকে তো আমাদের অনেক বেশি অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছিল। তবে অনেকটাই সামলে নিয়েছিল রুপাই। আসলে নবদ্বীপ যাওয়ার জন্য প্রায় দুটো তিনটে রাস্তা রয়েছে এর ভিতর বেশ কিছু রাস্তা মন্দিরে সরাসরি চলে যাওয়া যায় আবার অন্য একটা রয়েছে একটু ঘুরে যেতে হয়। তবে প্রত্যেকটা রাস্তায় যারা গাড়ি চালায় তারা অনেক বেশি চালাক এবং যদি আপনি সচেতন না হন তাহলে আপনাকে নিমিষেই ঠকিয়ে দেবে।
যাই হোক আমরা ট্রেন থেকে নেমেই একটা টোটো ধরে সরাসরি চলে গেলাম সরুপগঞ্জ হুলোর ঘাটে। তবে এই টোটোওয়ালা গুলো কিন্তু অনেক বেশি ঝামেলা করে। আপনি যদি আগে থেকে জেনে না যান যে কোথাকার ভাড়া কত তাহলে আপনার থেকে আরো অনেক বেশি টাকা নিয়ে নেবে। যেমনটা আমাদের সাথে হতে হতে বেঁচে গেছিলাম। যেহেতু আমরা কোথাও যাওয়ার আগে সেখানকার জায়গা সম্পর্কে টুকটাক ইনফরমেশন জোগাড় করে যাই, এজন্য আমাদের খুব বেশি একটা ঠকাতে পারিনি। তাই ঠিকঠাক দাম দিয়ে আমরা ঘাটে এসে পৌঁছায়। সত্যি কথা বলতে এখানে যে গাড়িগুলো থামে সেগুলো ঘাট থেকে বেশ কিছুটা দূরে। এরপর আবার সেখান থেকে হেঁটে গলি ধরে ঘাটে গিয়ে পৌঁছাতে হয়। এখানে এগুলো বেশ বড় সমস্যা। যারা চেনেন না তাদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি সমস্যা হতে পারে। এজন্য লোকজনের থেকে শুনে শুনে ওখানে যেতে হয়েছিল এতটাই ঘোরানো প্যাঁচানো জায়গা। যেহেতু রূপায় থাকলে আমার এইসব বিষয়ে খুব কিছু একটা অতিরিক্ত টেনশন মাথায় নিতে হয় না। এজন্য আমি তার পিছন পিছন ধরে ঘাটে গিয়ে পৌছালাম। সেখান থেকে ৩ টাকা করে দুটো টিকিট কেটে নিলাম। তারপর চলে গেলাম ঘাটে, কিন্তু সমস্যা হল ঘাটে গিয়ে দেখি সেখানে কোন নৌকা নেই।
যদিও এটা কোন বড় সমস্যা নয়, কারণ নৌকা যেটা যায় অন্য ঘাটে সেটা আবার ফিরে আসে। তাই আমাদের ১৫ মিনিট সময় ধরে ওখানে বসে থাকতে হয়েছিল। এরপর দেখলাম অপর ঘাট থেকে নৌকা এসে পারে ভিড়লো এবং সেখান থেকেই শুরু হলো আমাদের নবদ্বীপ ভ্রমণের সূচনা বা ভালোলাগা। নৌকার ভিতর কিছু বিদেশী লোকজন ছিল যারা মন্দিরে থাকে এবং তাদের বাচ্চাকাচ্চারা সেখানে থাকে, দেখে বেশ ভালো লাগছিল। এরপর আমরা নৌকায় উঠে পড়লাম এবং বেশি কিছু সময় পর নৌকা ছেড়ে দিল। আসলে যে নদীর উপর দিয়ে নৌকাটা যায় নদীটা খুব বেশি একটা বড় না। এজন্য আমরা মোটামুটি দুই মিনিটের ভিতর নদী পার হয়ে গেছিলাম। এর পর অপর প্রান্তে পৌঁছেই শুরু হলো আমাদের আসল জার্নি। আসলে নদীর ওই প্রান্ত থেকেই এত পরিমানে মন্দির ছিল যে, মনে হচ্ছিল হেঁটে হেঁটে পুরো ইসকনের মন্দির পর্যন্ত যাই। তবে বেশ কিছুটা দূর এজন্য আমাদের অটো ধরতে হয়েছিল। তবে যারা আগে দুই একবার গেছে তারা অটো না ধরেও হেঁটে হেঁটে যেতে পারে। এতে আরো সুবিধা বেশি। এক্ষেত্রে অনেক বেশি মন্দির যেগুলো রাস্তার পাশে রয়েছে ওগুলো দেখা যায়।
যাইহোক অটো ধরে টুকটুক করতে করতে আমরা শেষ পর্যন্ত মন্দিরের গেটে গিয়ে পৌঁছালাম। যেহেতু এটা আমার দ্বিতীয় বার ছিল ওখানে যাওয়া জন্য মন্দির দর্শনেই এতটা তৃপ্তি লাগছিল যেটা হয়তো আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না। বিশেষ করে ভেতরে ঢোকার আগে বেশ কিছু দোকানপাট রয়েছে যেখানে বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করা হয়। আমরা প্রথমে এগুলো একটু ঘুরে ঘুরে দেখলাম। তারপর দুজনে মাথায় তিলক নিয়ে ঢুকে পড়লাম মন্দিরের গেট দিয়ে। সেখানে ঢুকতেই দেখলাম নাম কীর্তন শুরু হয়ে গেছে। যদিও এটা দিন রাত ২৪ ঘন্টা হতেই থাকে এবং সেটা শুনতে অনেক বেশি ভালো লাগছিল। এই জন্য সেখানে দাঁড়িয়ে ৫-৭ মিনিট নাম কীর্তন শুনলাম। এরপর আমরা চলে গেলাম খাবারদাবারের সেকশনে। অর্থাৎ যেখান থেকে টোকেন সংগ্রহ করতে হবে যেহেতু আগে থেকে টোকেন সংগ্রহ না করলে খাবার পাওয়া যায় না। এজন্য তাড়াহুড়ো করে লাইনে দাঁড়িয়ে আগে খাবার এর টোকেন নিয়ে নিলাম। এরপর আমরা পুরো মন্দিরটা অনেক সুন্দর করে ঘুরে দেখেছিলাম।
পোস্ট বিবরণ | ভ্রমণ বিষয়ক |
---|---|
ডিভাইস | realme 8i |
ফটোগ্রাফার | @pujaghosh |
নবদ্বীপ ভ্রমণের অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে আপনার ভ্রমণ করা মন্দিরটি দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে। এ ধরনের মন্দির গুলো ঘুরে দেখতে খুবই ভালো লাগে। ভ্রমণের চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
মন্দিরটি দেখতে আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে, খুশি হলাম ভাই । ধন্যবাদ আপনাকে।
নবদ্বীপ ভ্রমণ নিয়ে খুবই দুর্দান্ত একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন পড়ে বেশ ভালই লাগলো আসলে আপনি ঠিকই বলেছেন যে কোন অচেনায় জায়গায় গেলে আগে যদি খোঁজখবর নিয়ে যাওয়া যায় তাহলে খুব একটা সমস্যা হয় না আর রাস্তাঘাটে কেউ ঠকাতে পারে না। আপনি ইসকনের মন্দিরে ঘুরতে গিয়ে নৌকা ভ্রমণ ও আপনার হয়ে গিয়েছে যদিও খুব অল্প সময়ের জন্য। অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু ,আগে থেকে খোঁজখবর নিয়ে যে কোনো জায়গায় গেলে বেশি একটা ঠকতে হয় না। যাইহোক ,ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
দিদি কাজের কাজ করেছেন আগে থেকে জায়গার ইনফরমেশন জেনে। না হয় টাকা বেশি রেখে দিত। টোটোগুলো ঝামেলাও করে বেশি, তারা বসেই থাকো সুযোগের অপেক্ষায়। তবে আপনারা নবদ্বীপে ভালো সময় কাটিয়েছেন বুঝায় যাচ্ছে। সাথে আমরাও উপভোগ করতে পারলাম
হ্যাঁ, ভাই নবদ্বীপে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছিলাম। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।