|| ইকোপার্ক ভ্রমণ ( প্রথম পর্ব) ||
নমস্কার বন্ধুরা
ইদানিং বাইরে ঘোরাঘুরি করা হয় না বললেই চলে। এজন্য সচরাচর ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট শেয়ার করা হয় না। আগে যখন বারাসাত থাকতাম তখন টুকটাক বাইরে একটু বেরোনো হতো। তবে বাড়ি আসার পর থেকে সেই সুযোগটা নেই। যেহেতু ইউনিভার্সিটি বন্ধ আপাতত সেই জন্য আরো বেশি ঘর বন্দী হয়ে পড়েছি। তবে হঠাৎ করেই দেখলাম গ্যালারিতে বেশ কিছু ফটো রয়েছে যেগুলো অনেক পুরনো। প্রায় বছরখানেক আগে আমি এবং আমার কয়েকজন বন্ধু মিলে ঘুরতে গিয়েছিলাম ইকোপার্ক। সেই ফটোগুলো দেখে আসলে পুরনো সেই স্মৃতি মনে পড়ে গেল। তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে একটা ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট শেয়ার করা যাক। সেই সময়ে যা যা ঘটেছিল তা তো পুরোপুরি মনে নেই তবে যতটুক মনে আছে সেটুকু আপনাদের সাথে বলার চেষ্টা করব আরকি। আমরা আসলে কোথাও ঘুরতে গেলে তার প্ল্যান অন্তত এক মাস আগে থেকে করা শুরু করি। তবে শেষে গিয়ে দেখা যায় যে দুই একজন বাদে আর কেউ সেই প্ল্যানে সামিল হতে চায় না। যাই হোক আমরা এগুলো দেখতে দেখতে অভ্যস্ত, এজন্য মোটামুটি ধরে নিয়েছিলাম যে শেষ পর্যন্ত দুই তিনজনই থাকবে।
যাই হোক তার আগে চলুন ইকোপার্ক সম্পর্কে দুই একটা তথ্য জেনে নেই। ইকো পার্ক বা প্রকৃতি তীর্থ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নিউ টাউনে একটি শহুরে উদ্যান এবং ভারতের বৃহত্তম উদ্যান এটা। এই পার্কের মোট আয়তন ৪৮০ একর এবং এর সঙ্গে একটি দ্বীপসহ ১০৪ একর আয়তনের জলাশয় বা জলাভূমি রয়েছে। সারাদিন মানুষ এই পার্কে ঘোরাঘুরি করলেও বিকাল হওয়ার সাথে সাথেই সবাই এই দ্বীপ বা লেকের পাড়ে চলে আসে আড্ডা গল্প দেওয়ার জন্য। আমরা যদিও দুপুর নাগাদ গিয়েছিলাম তবে আমাদের প্রধান টার্গেট ছিল যে সন্ধ্যা নাগাদ এই জায়গায় বসে আড্ডা দেবো। তবে সমস্যা হয়ে গিয়েছিল তখন, যখন আমরা ঘর থেকে বেরিয়েছিলাম। মোটামুটি সবাই যখন জড়ো হয়ে ঘর থেকে বেরিয়েছি তখন মুষলধারে বৃষ্টি এবং এই বৃষ্টি টানা এক ঘন্টা পড়েছিল যেটা এখনও আমার মনে আছে। আমরা তো প্রথমে ভেবেছিলাম যে আজকে বের হতেই পারব না। তবে মোটামুটি সাড়ে বারোটা কিংবা একটা নাগাদ বৃষ্টি থেমে যায়। এরপর আমরা সবাই মিলে বাড়ি থেকে গাড়ি ধরে ইকো পার্কের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম।
মোটামুটি টিকিট কেটে ভিতরে ঢুকতেই আমাদের দুটোর কাছাকাছি বেজে যায়। এরপর সেখান থেকে টুকটাক খাওয়া-দাওয়া করি। তবে বাইরের খাবারের দামের তুলনায় এখানের খাবারের দাম অনেক বেশি এবং কোয়ালিটি খুব বেশি একটা ভালো সেটা বলা যায় না। ইকো পার্কের ভিতর ঢুকলে আসলে আলাদা করে আর কোন টিকিট কাটা লাগে না, কোথাও যাওয়ার জন্য। যদিও বিশেষ তেমন কোন জায়গা নেই শুধুমাত্র নৌকায় চড়া ছাড়া। আমরা অবশ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে নৌকায় করে ঘোরাঘুরি করব। তবে সেটা করেছিলাম, হয়তো অন্য কোন একটা পর্বে আপনাদের সাথে সেই ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করব। তবে ইকো পার্কের বেশ কিছু আকর্ষণীয় জায়গা রয়েছে যেমন বাটারফ্লাই গার্ডেন, রোজ গার্ডেন, পোড়ামাটির তৈরীর বিল্ডিং, বনসাই গার্ডেন, মাস্ক গার্ডেন এবং সব থেকে আকর্ষণীয় জাপানিজ ফরেস্ট। আসলে জাপানিজ ফরেস্ট টা বাইরে থেকে দেখতে যেমন হোক না কেন ভেতরে গেলে অনেক ব্যাপার রয়েছে যেগুলো জাপানিদের কালচারের সাথে মিশে যায়। বিশেষ করে সেখানে একটা মন্দির ছিল এবং বেশ কিছু গাছপালা ছিল যেগুলো আমি আগে কখনো দেখিনি।
মোটামুটি আমাদের পুরো পার্ক ঘোরা হয়নি তবে যতটুকু ঘুরেছিলাম সেটুকু ঘুরতে ঘুরতে সন্ধ্যা হয়ে গেছিল। এরপর আমাদের প্রধান আকর্ষণ যেটা ছিল সেটা হল লেকের পাড়ে বসে আড্ডা দেওয়া এবং নৌকায় ঘোরাঘুরি করা। তবে বিকাল নাগাদ আমরা কিছুটা নৌকায় ঘুরে ছিলাম। আবার সন্ধ্যার দিকে প্লান করেছিলাম যে আরো কিছুটা সময় নৌকায় ঘোরাঘুরি করবো। তবে সন্ধ্যা নাগাদ নাকি এখানে নৌকায় ঘোরাঘুরি করা যায় না। এজন্য আমাদের সেই প্ল্যানটা ক্যান্সেল হয়ে যায়। কিন্তু সন্ধ্যা নামার পর একটা লঞ্চ যেটা পুরো লেক জুড়ে ঘুরে বেড়ায় ঘন্টাখানেক ধরে, ওটা ছিল। তবে আমাদের খুব বেশি একটা ইচ্ছা ছিল না লঞ্চে করে ঘোরাঘুরি করার। ইকো পার্কের ভিতরে অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে যেগুলো আমরা ঘুরেছিলাম, সেগুলো নিয়ে না হয় অন্য কোন পর্বে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। যাইহোক শেষ পর্যন্ত আমাদের আর মন ভালো হয়নি কারণ আমরা যে প্ল্যান নিয়ে গিয়েছিলাম সেটা খানিকটা সাকসেসফুল হয়নি। এজন্য লেকের পাড়ে বসে আইসক্রিম খাচ্ছিলাম আর লেকের দিকে তাকিয়ে সমস্ত লঞ্চ যেগুলো চলাচল করছিল ওগুলো দেখছিলাম।
পোস্ট বিবরণ | ভ্রমণ |
---|---|
ডিভাইস | poco m6 pro |
ফটোগ্রাফার | @pujaghosh |
https://twitter.com/GhoshPuja2002/status/1787903576393793975?t=K1HwpNEuMO_n3FnSzf4C_w&s=19