|| বারাসাতের কালী পূজা (বন্ধু মহল) ||

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

আজ আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে শুরু করা যাক।


কালী পুজো মানেই হলো বারাসাত। এই কথার প্রচলন তো আমি জন্মের পর থেকে শুনে আসছি। তবে যেহেতু আমি কিছু বছর আগে পর্যন্ত বনগাঁয়ে ছিলাম। এজন্য বারাসাতের কালীপুজোর সেই আমেজ খুব বেশি একটা আমার চোখে পড়ে। তবে বারাসাতে আসার পর থেকে সেই ব্যাপারটা পুরোপুরি অনুভব করতে পেরেছি। বিগত দুই বছর ধরে বারাসাতের কালী পূজা দেখে আসছি এবং বারাসাতের কালী পূজা এতটাই বিখ্যাত যে কলকাতার দুর্গাপূজা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই কালীপুজোর ধুম পড়ে যায় এবং পুরো কলকাতা বাসি একসাথে এসে হুমড়ি খায় বারাসাতের এই বিখ্যাত কালী পুজোয়। তবে বর্তমানে এই কালী পুজো শুধু বারাসাতের ভেতরে সীমাবদ্ধ রয়েছে তা কিন্তু নয়, এটা রীতিমতো নীলগঞ্জ এবং তার পার্শ্ববর্তী কিছু অঞ্চল জুড়ে বেশ বিস্তৃত। অর্থাৎ কালী পূজা বারাসাতের পাশাপাশি নীলগঞ্জ এবং খড়িবাড়ি এসব অঞ্চলে বেশ বড় করে আয়োজন করা হয়। তবে সত্যি কথা বলতে সময়ের স্বল্পতা এবং ভিড়ের কারণে সব জায়গায় পুজো দেখা সম্ভব হয় না।


InShot_20231012_225215747.jpg


কিছুদিন আগেই বারাসাতের কালী পূজো নিয়ে একটা পর্ব আপনাদের সামনে আমি শেয়ার করে ফেলেছি এবং সেখানে বলেছিলাম যে হেলাবটতলা থেকে বেশ কিছুটা দূরে গিয়ে বড় বড় থিমের পূজা করা হয়। তবে আমি বাবা এবং মা যেহেতু একসাথে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম এবং আমাদের প্ল্যান ছিল বড় বড় পুজো মণ্ডপ গুলো ঘুরে দেখা তাই বারাসাতের পাশাপাশি নীলগঞ্জ গিয়ে পুজো দেখার ইচ্ছা আমাদের ভিতর বেশ কিছুটা নাড়া দিয়ে ওঠে। তবে সবথেকে বড় বাধ্যবাধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছিল যানবাহন ব্যবস্থা। কারণ পুজোর সময় এই জায়গা গুলো প্রচুর যানজট থাকে এবং গাড়ি ঘোড়া চলাচলে একেবারেই বন্ধ হয়ে যায় বললেই চলে। বিশেষ করে বারাসাত থেকে যে বাস গুলো নীলগঞ্জের দিকে যায় সেগুলো পুজোর সময় পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার পরিবর্তে চলে অটো এবং ভ্যান। তবে সেক্ষেত্রেও কিছুটা অসুবিধা রয়েছে সব সময় আবার এসব যানবাহন পাওয়া যায় না।


20221025_200301.jpg

20221025_200057.jpg


যাই হোক আমাদের কপাল ভাল ছিল তাই আমরা একটা অটো রিজার্ভ করে নিয়েছিলাম এবং সেখান থেকে ডিরেক্ট চলে গেছিলাম নীলগঞ্জে পুজো দেখার জন্য। নীলগঞ্জে এবার বেশ কিছু বড় বড় থিমের আয়োজন করা হয় বিশেষ করে বন্ধু মহল, সংহতি ক্লাব, নেতাজি ক্লাব সহ আরো বড় বড় কিছু ক্লাবের পূজা করা হয়। তবে সবথেকে চর্চা হচ্ছিল বন্ধু মহল নামের একটি পুজো ক্লাবের। তবে সেটা না হয়ে উপায় কি। আমি তো গিয়ে প্রথম দেখাতেই রীতিমত হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। এত সুন্দর ডেকোরেশন এবং এত নিখুঁতভাবে পুজো মন্ডপ সাজানো হয়েছে যেটা বলে বোঝানো যাবে না। খুব সম্ভবত এবার তাদের থিম ছিল ডিজনী ল্যান্ড। কারণ তারা সেই বিল্ডিংটাকে বা সেই মহলটাকে এত সুন্দর করে তৈরি করেছিলে এবং লাইট দিয়ে এত সুন্দর করে সজ্জিত করেছিল, যেটা দেখে রীতিমতো আমি হতভম্ব হয়ে যাই। দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছিল একটা জাদুর মহল। মনে হচ্ছিল একটা মায়াবী শহরের মাঝখানে একটা মায়াবী রংবেরঙের বিল্ডিং।


20221025_195859.jpg

20221025_200104.jpg


বেশ খানিকটা ভিড় ঠেলে আমরা ভেতরে প্রবেশ করার সৌভাগ্য পেলাম। এবং ভেতরে ঢুকে আরো অনেক বেশি অবাক হলাম ভেতরকার ডেকোরেশন দেখে। রীতিমতো চোখ হতভম্ব হয়ে যাচ্ছিল। বাস্তবেও এরকম সম্ভব যেটা আমরা বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠান বা কার্টুনের ভিতর দেখেছি এখন সেটা রীতিমতো সামনাসামনি দেখছি। মায়ের প্রতিমা দর্শন করার আগে বেশ কিছু চমকপ্রদ ব্যাপার ছিল। সেগুলো রীতিমতো ফটো তুলে নিয়েছিলাম। তাছাড়া ভেতরকার পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছিল কোন অজানা শহরের কোন অজানা জাদুমায় বিল্ডিং এর ভেতর ঢুকে পড়েছি। যাই হোক সেখান থেকে বেশ কিছু দূরে গিয়ে তারপর সব শেষ আমরা মায়ের মূর্তি দর্শন করতে পারলাম। সত্যি কথা বলতে মনের ভিতরে যতটুকু ইচ্ছা বাকি ছিল সেটা মায়ের মুখ দেখার পর পরিপূর্ণ হয়ে গেল। এর আগে আমি কখনো এই জায়গার ঠাকুর দেখতে আসিনি। এটাই ছিল আমার প্রথমবার এখানে আসা। তবে প্রথমবার এসেও যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলাম সেটা রীতিমত মনে রাখার মত, মনে দাগ কেটে দেওয়ার মতো। যাই হোক এরপর আমরা সেখান থেকে আবার বেশ কিছু মায়ের মূর্তি দেখে বাড়ি ফিরে আসি। তবে সেগুলো অন্য কোনো একটা পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করব।


20221025_195657.jpg

20221025_200151.jpg


পোস্ট বিবরণলাইফ স্টাইল
ডিভাইসrealme 8i
ফটোগ্রাফার@pujaghosh

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 10 months ago 

কালীপূজা মানেই বারাসাত ব‍্যাপারটা দেখে ভালো লাগল। আপনার পোস্ট দেখে বুঝতে পারলাম আসলে সেখানে কালীপূজা কতট জাকজমকপূর্ণভাবে হয়। পাশাপাশি মানুষের ভীড় অনেক ছিল। এবং দেখতে সত্যি চমৎকার লাগছে। কী সুন্দর রঙিন এবং জাকজমক। বেশ উপভোগ করার মতো। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে কথাগুলো শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

হ্যাঁ ভাই, সত্যিই খুব জাঁকজমক ভাবে হয় বারাসাতের কালীপুজো । ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59928.39
ETH 2649.32
USDT 1.00
SBD 2.42