|| বারাসাতের কালী পূজা ভ্রমণ (প্রথম পর্ব) ||
নমস্কার বন্ধুরা
কালী পূজা মানেই হলো বারাসাত। এই কথার প্রচলন তো আমি প্রথম থেকেই শুনে আসছি। তবে এই কথার সত্যতা কতটা রয়েছে সেটা জানতে হলে বা দেখতে হলে অবশ্যই আপনাকে আসতে হবে বারাসাত কালী পূজা দেখার জন্য। প্রতিবছরের মত এ বছরও বারাসাতে হয়েছিল হাজার হাজার লোকের সমাগম। যারা অধিকাংশ লোক কলকাতার বাইরে থেকে অথবা বারাসাতের বাইরে থেকে এসেছিল। বারাসাত এ কালীপুজোর এত নাম ডাক রয়েছে যে দেশের বাইরে থেকেও প্রচুর লোক আছে এখানে পুজো দেখতে। তবে শুধু যে নামে পুজো হয় তা কিন্তু নয়। এখানে প্রচুর ভেরিয়েশন থাকে পূজা মন্ডপের, সেটা আপনাদের সামনে আস্তে আস্তে শেয়ার করলে আপনারাও বুঝতে পারবেন, যে কতটা জাকজমক এবং কত টাকা খরচ করা হয় এই সময়টাতে পুজোর পেছনে।
প্রথমত একটা কথা বলতে চাই এই বছরও আমি বারাসাত পায়োনিয়ার পার্কের পুজো দেখার মাধ্যমে আমার পুজো ভ্রমণ শুরু করেছিলাম। সমস্যার বিষয় হলো যে পুজোর একদিন পরেই এই পাইনিয়ার পার্কের প্যান্ডেল বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। কারণ প্যান্ডেলের একটা বড় অংশ নাকি ভেঙ্গে গেছিল লোকের পায়ের চাপে। এজন্য অনেকটা হতাশাগ্রস্ত হয়ে মোটামুটি সামান্য একটা অংশ দেখতে পেরেছিলাম এবং সেখান থেকে বেরিয়ে রওনা দিয়েছিলাম অন্য একটা প্যান্ডেলের উদ্দেশ্য। ভিড় এত পরিমাণ ছিল যে একটা প্যান্ডেল থেকে বেরিয়ে অন্য প্যান্ডেলে যেতে রীতিমত আধা ঘন্টা করে সময় লাগছিল। তবে বারাসাতের একটা বড় চমক রয়েছে যে বড় প্যান্ডেল গুলো দেখতে যেমন সুন্দর হয় তার থেকেও ছোট ছোট প্যান্ডেল গুলো অনেকটা সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে একটা সুন্দর থিম তৈরি করে।
যাই হোক আজকে পাইনিয়ার পার্কের পাশেই একটা ছোট ছোট প্যান্ডেলের ব্যাপার নিয়ে কথা বলব। যদিও এই পূজা প্যান্ডেলটা আমার কাছে অজানা নয়। কারণ প্রতিবছরই পায়োনিয়ার পার্ক থেকে বেরিয়ে এই পূজা প্যান্ডেল দেখে তারপর অন্য জায়গায় যাওয়া হয়। তবে গত বছর সেখানে খুব ছোট পরিসরে এবং সামান্য একটা অস্থায়ী মন্দির করে পূজা সম্পন্ন করেছিল। কিন্তু এইবার এত সুন্দর থিম তৈরি করবে এটা আমি এক্সপেক্ট করিনি। দূর থেকেই দেখে পুরো প্যান্ডেলটা সবুজ মনে হচ্ছিল। তবে অন্যান্য জায়গার তুলনা এখানে আবার লোকের ভিড় বেশ কিছু কম ছিল। যেহেতু মানুষ বড় প্যান্ডেল দেখার পেছনে ছুটে বেড়ায় তাই এখানে তেমন লোকজন দেখা যায়নি। তারপরও মোটামুটি আমি লাইনে গিয়ে দাঁড়াতে দেখলাম যে আমার সামনে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ জন ছিল।
যাই হোক মোটামুটি কিছু সময় পর মন্দিরের ভিতরে ঢুকতে রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম। এবারে এই পূজা মন্ডপের কালীপুজোর থিম ছিল প্রকৃতি এবং পরিবেশ। ভিতরে আর্টিফিশিয়াল গাছ এবং পরিবেশ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছিল। যে কিভাবে আমরা আমাদের পরিবেশকে আরো অনেক বেশি সুন্দর এবং সবুজে ভরিয়ে তুলতে পারি এবং এই পরিবেশ আমাদের জন্য কত বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়াও এই প্রকৃতি যদি আমরা দিনের পর দিন নষ্ট করতে থাকি তাহলে ভবিষ্যতে আমাদের কি পরিণতির সাথে চলেছে। এটাই থিম ছিল এবার তাদের পুজোতে। পূজা মন্ডপের ভিতরে তেমন কোনো ডেকোরেশন আমি দেখতে পাইনি। আর মা কালীর মূর্তিটা অন্যান্য জায়গার মূর্তির তুলনায় অনেক বেশি ছোট এবং খুবই সাদামাটা ছিল। তবে এটা আমার কাছে বড় কোন বিষয় নয়। মায়ের মূর্তি যেরকমই হোক না কেন সেটা আমার কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এরপর সেখানে লোকের ভিড় হয়ে যাওয়ার কারণে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে অন্য পূজা মন্ডপের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
পোস্ট বিবরণ | লাইফ স্টাইল |
---|---|
ডিভাইস | realme 8i |
ফটোগ্রাফার | @pujaghosh |
বারাসাতের কাজী পূজা ভ্রমণ পর্ব পড়ে অনেক ভালো লাগলো দিদি। প্রকৃতি ও পরিবেশের থিমটা বেশ ভালো লেগেছে দিদি। অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি সুন্দর একটি পোষ্ট বিস্তারিতভাবে শেয়ার করার জন্য।
প্রকৃতি ও পরিবেশের থিমটা আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।