|| দক্ষিণেশ্বর, বেলুড় মঠ ভ্রমণ ||
নমস্কার বন্ধুরা
যারা দক্ষিণেশ্বর মন্দির ঘুরতে যায় তাদের হাতে যদি সময় থাকে তাহলে বেলুড় মঠ একবার ঘুরে অবশ্যই আসবে। বেশ কিছুদিন আগে আমি, মা এবং দাদা গিয়েছিলাম দক্ষিণেশ্বরে পুজো দিতে। আমরা যেহেতু খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে দক্ষিণেশ্বর চলে গিয়েছিলাম, এজন্য আমাদের মোটামুটি দুপুরের আগেই পুজো সম্পন্ন হয়ে গেছিল। এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে বাড়ি চলে যাব। তবে মা দেখলাম বলল যে অনেকদিন বেলুড়মঠ যাওয়া হয় না, ওখান থেকে ঘুরে আসলে কেমন হয়। আসলে আমরা প্রচন্ড ক্লান্ত ছিলাম তবে কেন জানিনা এই সব জায়গায় গেলে ক্লান্তি অনেকটাই কমে যায়। এরপর দেখলাম দাদা বলল যে তাহলে একবার ঘুরে আসা যাক। প্রথমে তো আমরা দক্ষিণেশ্বর থেকে একটা লঞ্চের টিকিট কাটলাম এবং সেখান থেকে বেলুড় মঠের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আমাদের টিকিটের মূল্য নিয়েছিল ১০ টাকা করে। সবথেকে বড় কথা হল নদীর এই পাড়ে হলো দক্ষিণেশ্বর এবং অপর পাড়ে হলো বেলুড় মঠ।
যাইহোক সবার আগে বেলুড় মঠ সম্পর্কে দু একটা কথা বলি। বেলুর মঠ হল রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের সদর দপ্তর, যা রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যাই হোক সেখান থেকে আমরা নৌকায় করে বেলুড় মঠের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সত্যি কথা বলতে গঙ্গা নদীর উপর দিয়ে এভাবে লঞ্চে করে যাওয়ার মজাই আলাদা ছিল। তার ওপর আবার ছিল একটা বালির ব্রিজ। যেটা দূর থেকে দেখতে অনেক বেশী সুন্দর লাগছিল। যাইহোক লঞ্চ ভ্রমণ নিয়ে একটা নতুন পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করব পরে। মোটামুটি আমরা ১৫ মিনিটের ভিতর বেলুড় মঠের ঘাটে এসে পৌঁছালাম এবং তারপর সেখান থেকে বেলুড় মঠের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। মোটামুটি আমরা একটা নাগাদ বেলুড় মঠে পৌঁছে গিয়েছিলাম। তবে আমরা যাওয়ার মনে হয় আর ১৫ মিনিট পরে গেট বন্ধ করে দিয়েছিল। এরপর আবার তিনটের পরে খোলা হয় এই গেট।
বেলুড় মঠের একটা স্পেশাল ব্যাপার হল ওখানে বিনামূল্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। তবে কেউ যদি চায় টাকা ডোনেট করতে তাহলে সে করতে পারে। আর না করলেও সমস্যা নেই। আমরা যেহেতু তিনজন ছিলাম এজন্য ভাবলাম যে ফ্রি কেন খাব, তার থেকে বরং ১০০ টাকা ডোনেট করা যাক। তাই আমরা তিনজনে মিলে ১০০ টাকা ডোনেট করলাম এবং আমাদের হাতে একটা স্লিপ ধরিয়ে দিল। যদিও সেটা খাওয়ার জন্য ব্যবহৃত স্লিপ না। এরপর শুরু হল প্রচন্ড লাইন অর্থাৎ খেতে যাওয়ার জন্য রীতিমত আমাদের প্রায় ২০০ লোকের পেছনে দাঁড়াতে হলো। তবে ভেতরে এতটাই জায়গা ছিল যে মোটামুটি ১০ মিনিটের ভিতরে পুরো ২০০ লোক বসার জায়গা হয়ে গেল।
যাইহোক সেখান থেকে খাওয়া-দাওয়া সম্পন্ন করে আমরা বেরিয়ে আসলাম। আমাদের খুব সম্ভবত খেতে দিয়েছিল একটা সবজি, ডাল, পায়েস, চাটনি। তবে যা খেয়েছিলাম সবটাই তৃপ্তি সহকারে। বেলুড় মঠের একদম প্রথমে যে ফটোগ্রাফি টা শেয়ার করেছি, ওটা হল এখানকার নতুন মন্দির,যেটা এখনো খোলা হয়নি। এজন্য আমরা ভিতরে ঢুকতে পারিনি এবং ফটোগ্রাফি তেমন একটা করতে পারিনি। আর এইসব জায়গায় সাধারণত ক্যামেরা এলাও থাকে না, এজন্য খুব বেশি একটা ফটোগ্রাফি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারলাম না। সত্যি কথা বলতে এই জায়গাটা এতটাই মনোমুগ্ধকর ছিল যে যাওয়ার সাথে সাথে সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে গিয়েছিল। মোটামুটি আমরা ওখান থেকে খেয়েদেয়ে একটু আশপাশ ঘুরে চারটা নাগাদ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সবমিলিয়ে আমাদের দক্ষিণেশ্বর এবং বেলুড় মঠ ঘোরার যে অভিজ্ঞতা ছিল সেটা সত্যিই দুর্দান্ত এবং মনে একটা আলাদা প্রশান্তি কাজ করছিল।
পোস্ট বিবরণ | ভ্রমণ বিষয়ক |
---|---|
ডিভাইস | poco m6 pro |
ফটোগ্রাফার | @pujaghosh |
https://twitter.com/GhoshPuja2002/status/1778102403172278474?t=lbRnSuDHcDAnFRMQJ74FnQ&s=19
দিদি, আমরা তো গত বছরই বেলুড় মঠ ভ্রমণ করতে গিয়েছিলাম। তবে তুমি, তোমার মা এবং দাদা এই জায়গায় গিয়ে ঘুরে এসেছো, জেনে ভালো লাগলো। তাছাড়া বেলুড় মঠে ফ্রি প্রসাদ দেওয়ার যে ব্যাপারটা, এটা আমার কাছে খুব ভালো লাগে। আর ওখানে মাঝেমধ্যে ডোনেট করতে হয় টাকা, তাহলে মনেও কিছুটা প্রশান্তি পাওয়া যায়। যাইহোক, অনেকদিন পর বেলুড় মঠের নতুন মন্দিরটা দেখে অনেক ভালো লাগলো।
ঠিকই বলেছেন ভাই, ওখানে মাঝে মধ্যে টাকা ডোনেটও করা হয়।এর মধ্যে দিয়ে সত্যি নিজেদের মধ্যে একটা ভালো লাগা কাজ করে। সুন্দর একটি গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য, ধন্যবাদ আপনাকে।
আমিও মাঝে মাঝে ঐসব জায়গায় টাকা ডোনেট করি দিদি, এই কাজটা আমাদের সবারই করা উচিত।