|| কিছু মানুষের জ্ঞানচক্ষু এখনো খুললো না ||
নমস্কার বন্ধুরা
একটা সময় ছিল যখন মানুষের হাতে মোবাইল ফোন ছিল না, যখন মানুষ চাইলেও সব খবর খুব দ্রুত নিতে পারত না। তারপরও মানুষ যথেষ্ট সচেতন ছিল। কিন্তু বর্তমান যুগে প্রত্যেকটা মানুষের হাতে হাতে স্মার্টফোন এবং তার দরুন পুরো পৃথিবী তার হাতের মুঠোয় বলা চলে। আমরা নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের খবর শুনে সেটা ফেসবুক হোক কিংবা কোন নিউজ চ্যানেলই হোক। কিন্তু এই খবর শোনার পরেও আমরা ঠিক কতটা সচেতন হই তার প্রমাণ মোটামুটি এই এক মাসের ভিতর অনেকগুলো পাওয়া গেল। বর্তমান হলো রিয়াক্ট এর যুগ। অর্থাৎ আমরা বিভিন্ন পোস্টে রিয়াক্ট দিয়ে তারপর সেই সম্পর্কে সবকিছু ভুলে যাই। বিশেষ করে কয়দিন আগে বেইলি রোডের যে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো সেটা তো আমরা সকলেই জানি। এবং এই ঘটনাটা পুরো ফেসবুক ছেয়ে গেছিল। আমরা অনেকেই রয়েছি যেখানে স্যাড রিঅ্যাক্ট দিয়েছি, অনেক দুঃখ প্রকাশ করেছি। তবে তারপরও কি আমরা সচেতন হয়েছি...?
এইতো কয়দিন আগের কথা, আনন্দপুরের ঝুপড়ি তে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বেশ কিছু প্রাণ চলে গেল। আপনারা জানলে অবাক হবেন যে এই অগ্নিকাণ্ডের প্রধান কারণ কি ছিল। এখানেও ওই একই ব্যাপার অর্থাৎ গ্যাস সিলিন্ডার ব্লাস্ট করে তারপর আগুন ধরে গেছে। তাহলে আমরা নিয়মিত যে এই নিউজগুলো দেখছি তার দরুন আমরা সচেতন কতটা হয়েছি...? আমার নিজের চোখে দেখা অনেক মানুষ রয়েছে যারা গ্যাস সিলিন্ডার অন করে রান্না করতে করতে মোবাইলে সিরিয়াল দেখছে। অনেকে তো এমনও রয়েছে যে মোবাইল দেখার চক্করে রান্না করতে করতে গ্যাস অফ করতেই ভুলে গেছে। এরপর দেখা গেছে যে গ্যাসের উপর যা ছিল সব পুড়ে কালো হয়ে গেছে। কিন্তু এই মানুষগুলো কখনো একটা বার ভাবে না যে আমার একটা ভুলের জন্য শুধু আমার পরিবার নয়, আশেপাশের অনেক পরিবার রাস্তায় নেমে যেতে পারে।
বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৪৪ জনের প্রাণহানি ঘটে এবং কলকাতার এই অগ্নিকাণ্ড তে প্রায় ১৫ টা পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে যারা গৃহহীন হয়ে পড়েছে তারা প্রত্যেকে নিম্নবিত্ত এবং স্বল্প আয়ের মানুষ। এখন কথা হচ্ছে এই মানুষগুলোর ভরণপোষণের দায়িত্ব কে নেবে...? তবে অগ্নিকাণ্ড কিন্তু এখানেই থেমে থাকেনি, তারও কিছুদিন আগে কলকাতার একটা নামকরা ফ্যাক্টরিতে আগুন ধরে যায়। প্রথমে এসিতে শর্ট সার্কিট হয়ে ফ্যাক্টরি একটা অংশে আগুন ধরে যায় তারপর সেখান থেকে বেশ কয়েকটা গ্যাস সিলিন্ডার ব্লাস্ট করার পর পুরো ফ্যাক্টরিতে আগুন ধরে যায়। কিন্তু আমি মনে করি ওখানে যে মানুষগুলো থাকে তারা প্রত্যেকেই যথেষ্ট জ্ঞানী এবং যথেষ্ট সচেতন। তারা যদি খুব দ্রুত সেখান থেকে গ্যাস সিলিন্ডার গুলো সরিয়ে ফেলে দিত, তাহলে হয়তো এতটা বড় বিপদ হতে পারত না।
আমরা যতটা নিজেকে ভার্চুয়াল জগতের সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি, ততটাই আমাদের জ্ঞানচক্ষু গুলো দিন দিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এটা আমরা এখন বুঝতে না পারলেও আজ থেকে বছর দশেক পরে ঠিক বুঝতে পারব। একদিকে আমরা বন্ধু হারাচ্ছি অন্যদিকে আমাদের কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল সেটার বিচার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। পরপর এত অগ্নিকাণ্ড দেখার পরেও আমরা এখনো সচেতন নই, সেই একই ভুল বারবার করে যাচ্ছি। আমি মনে করি এখন থেকেই আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা উচিত। না হলে সুদূর ভবিষ্যতে আমাদের জন্য আর ভয়ঙ্কর কিছু অপেক্ষা করছে। জানিনা ভালো করে লিখতে পারলাম কিনা, তবে চেষ্টা করেছি আমার মনের কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
পোস্ট বিবরণ | জেনারেল রাইটিং |
---|
দিদি আমিও কিন্তু আপনার সাথে একমত। কিছু লোকের জ্ঞান চক্ষুর জন্যই কিন্তু আমাদের কে বিপদের পড়তে হচেছ। আপনি বেশ সুন্দর করে অগ্নিকান্ডের ঘটনা গুলোর সচেতনতার দিক তুলে ধরেছেন। বেশ সুন্দর লেখেন দিদি। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপু সচেতনতামূলক একটি পোস্ট উপহার দেয়ার জন্য। প্রথমেই আমি আপনার কথাগুলোর সাথে সহমত পোষণ করছি। আমরা অতি ডিজিটাল হতে গিয়ে আমাদের জ্ঞানচক্ষু হারাতে বসেছি। আর বিবেক বুদ্ধি ক্রমশ হ্রাস পেতে শুরু করেছে, যা ভবিষ্যতে আরো ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনবে। হময় থাকতে আমাদের সচেতন হতে হবে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু চমৎকার পোস্ট উপহার দেয়ার জন্য।
https://twitter.com/GhoshPuja2002/status/1768703838243139613?t=04DkP5N7u_wi1iRTLIBz0w&s=19
সত্যিই দিদি আমরা বিবেকবান হওয়া সত্ত্বেও আমাদের জ্ঞান চক্ষু এখনো খোলেনি। আমাদের সমাজের মানুষগুলো সোস্যাল মিডিয়া নিয়ে এতো বেশী ব্যস্ত হয়ে পরেছে।তারা বিপদে ভিডিও করতে ও ব্যস্ত হয়ে পরে।আর বিপদ চলে গেলে ভুলে যায় বিপদের কথা।এদের শুভ বুদ্ধি হবে বলে মনে হয় না।তবে যার যায় সেই ই বোঝে কষ্ট কাকে বলে।
কথাগুলো কিন্তু একেবারে ঠিক বলেছেন দিদি। আসলেই আমাদের যত সচেতনতা যত কথা যত লাফালাফি সব ঐ স্যোসাল মিডিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আমাদের মধ্যে ফোনের ব্যাপার টা এমনভাবে ঢুকে গিয়েছে এর ভয়াবহতা সত্যি অনেক কঠিন। সেটা ভেবে আমারও ভয় করছে। আপনি যে দুইটা ঘটনা বললেন দুইটা থেকেই আমাদের সাবধান হওয়ার আছে। কিন্তু কিছুদিন গেলে আমরা সেসব কিছুই একেবারে ভুলে যাব।
খুব সুন্দর একটি সচেতনতামূলক পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি৷ আসলে আমরা সকলে যেভাবে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম করার কথা বলি এবং তা চিন্তা করি, তবে তা কখনো বাস্তবে প্রয়োগ করি না৷ শুধুমাত্র তা আমাদের সোশ্যাল মিডিয়াতে সীমাবদ্ধ থাকে৷ আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের কথা বলি৷ যা আমরা বাস্তবে প্রয়োগ করতে পারি না। অথচ আপনি যে দুর্ঘটনার কথা বলেছেন সেখানে বেশিরভাগ দুর্ঘটনাই গ্যাস সিলিন্ডার ব্লাস্ট এর কারণে হয়েছে এবং এসিতে শর্ট সার্কিট হয়ে আগুন ধরার কারণে হয়েছে৷ এরকম বিভিন্ন ধরনের ঘটনাই প্রতিনিয়ত চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে৷ তবে কখনো কেউ এই বিষয় সমাধানে আগ্রহী নয়। মানুষ যেন সচেতন হয়ে যায় এবং সচেতনতার সাথে সকল কথা বলে তার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিৎ৷ তাহলে কখনো এরকম ঘটনা হবে না৷ অসংখ্যা ধন্যবাদ এরকম একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷