||প্রচন্ড গরমে দুই ফোঁটা আশীর্বাদ||

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

নমস্কার বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভালো আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।



বেশ কিছুদিন ধরে প্রচন্ড গরমে জনজীবন একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছুদিন আগে আমাদের পশ্চিমবাংলায় ঝড়ের একটা পূর্বাভাস পেয়েছিলাম সেটার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে মন খারাপ হলেও কিছু কিছু দিক চিন্তা করে একটু হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পেরেছিলাম। সেটা হলো যে ঝড় হয়ে গেলে ক্ষতি হবে এটা ঠিক তবে পরিবেশটা কিছুদিনের জন্য হলেও ঠান্ডা হবে। কিন্তু সেই চিন্তা ধারাকে একেবারেই নষ্ট করে দিয়ে সেই ঝড় কিছুটা বাংলাদেশ এবং মায়ানমারের উপর দিয়ে চলে গেল। আমাদের পশ্চিমবাংলায় ঝড়ের তেমন কোন নাম গন্ধ পাওয়া গেল না। আসলে এই ব্যাপারটাতে তেমন মন খারাপ হয়নি, কারণ তার কিছুদিন পরেই টুকটাক বৃষ্টি হয়েছিল যেটার কারণে পরিবেশটা কিছুটা ঠাণ্ডা হয়ে যায়। আমি আসলে তখনই ভেবে নিয়েছিলাম যে হয়তো এরকমই থাকবে আবহাওয়া। এরপর বর্ষাকাল চলে আসবে অর্থাৎ গরমের আর কোন সম্ভাবনা নেই। তবে আমার সেই ধারণা একেবারেই ভুল প্রমাণ করে দিল বর্তমানে ভয়ংকর গরম ওয়েদার।

fire-and-water-2354583_1280.jpg
সোর্স

আপনার হয়তো অনেকেই জানেন যে আমার কলেজে ইন্টারনাল পরীক্ষা চলছে। তাই আমাকে মাঝে মধ্যেই কলেজে যেতে হচ্ছে। কিন্তু এটা যে আমার জন্য কতটা কষ্টকর আমি একাই সেটা বুঝতে পারছি। আমার রুমে এসি থাকলেও আমাকে দিনের অধিকাংশ সময় কলেজে কাটাতে হচ্ছে। তাছাড়াও এত বড় সময়ের জন্য ট্রেন জার্নি রীতিমতো আমাকে অসুস্থ করে দিচ্ছে। যখন সারাদিনের কাজ শেষ করে ঘরে ঢুকছি তখন তো রুমের ভেতর এসিতে ঢুকে যাচ্ছি কিন্তু যখন বাইরে থাকছি তখন প্রচন্ড গরম লাগছে। অর্থাৎ এই দুটোর কম্বিনেশন আমাকে আরো বেশি পরিমাণ অসুস্থ করে তুলছে। গতকাল একটা নিউজ দেখছিলাম যে পশ্চিমবাংলার প্রায় ৩০% লোক এই গরমে অসুস্থ হয়ে গেছে। অফিস আদালতে যারা যাচ্ছে তাদের বাড়ি ফেরার পর আসলে দেখার মতো পরিস্থিতি আর থাকছে না, এতটাই খারাপ অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিনের বেলার কথা তো বাদই দিলাম, রাতের বেলাতেও এত পরিমাণ গরম লাগছে বাইরে বেরোলে যে বলে বোঝানো যাবে না।

IMG-20230602-WA0010.jpg

সোর্স

আমার যখন প্রথম ইন্টারনাল পরীক্ষাটা হয়েছিল সেদিন মনে আছে হঠাৎ করেই ৩০ মিনিটের জন্য কারেন্ট চলে গেছে। রীতিমতো আমার পরীক্ষার খাতা ভিজে গেছে ঘামে এতটা কষ্ট হয়েছিল। এখানে একা একাই থাকি তাই যাবতীয় কাজবাজ আমাকে করতে হয় রান্নাবাড়া থেকে শুরু করে বাজার ঘাট সবকিছু। এই পরিস্থিতিতে আমি বাইরে বেরিয়ে ঘরে ঢুকলে কেমন যেন শরীর আর কোন কিছু সহ্য করতে পারছে না, প্রচন্ড দুর্বলতা লাগছে। তাছাড়াও দুপুর বেলা আমার কলেজের ক্লাস শেষ করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে প্রায় বিকাল হয়ে যাচ্ছে। এই সময়টা তো আসলে প্রচণ্ড রকম খারাপ লাগছে আর কি। বর্তমানে বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া যেখানেই দেখা হোক না কেন গরমের তীব্রতা প্রায় সমানভাবেই বিরাজমান এবং এই গরম তীব্রতা এখনো এক সপ্তাহ থাকবে তারপর নাকি সামান্য বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ততদিন বেঁচে থাকব কিনা সন্দেহ আছে। তবে হঠাৎ করে আজকে দুটো ঘটনাতে আমি কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পেরেছি।

nature-3125912_1280.jpg
সোর্স

আজ দুপুরের দিকে দেখলাম আমাদের কলেজ থেকে একটা নোটিশ দিয়েছে এবং সেখানে বলে দিয়েছে আমাদের ৮ তারিখে যে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল সেটা ১৬ তারিখের পরে গিয়ে হবে অর্থাৎ মাঝখানের এই দিনগুলো কলেজ ছুটি। অর্থাৎ আমাকে আর গরমের ভিতর অসুস্থ হয়ে কলেজে যেতে হবে না। এই ব্যাপারটা জানার পর থেকেই আসলে বেশ ভালো লাগছিল। তবে আরো একটা আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটলো, হঠাৎ করেই দেখলাম কুড়ি মিনিটের জন্য গুড়িগুড়ি করে বৃষ্টি হল যেটা সবার কাছেই একেবারে আনএক্সপেক্টেড ছিল। আমি তো বেশ মজা পাচ্ছিলাম তাই ব্যালকনিতে গিয়ে কিছু সময় দাঁড়িয়ে বৃষ্টি উপভোগ করছিলাম। কিছু সময়ের ভিতরেই পরিবেশটা যথেষ্ট ঠান্ডা হয়ে যায়। তবে আমার মনে হয় না এরকম বৃষ্টি আর খুব তাড়াতাড়ি হতে পারে। এই দুই একফোঁটা বৃষ্টি আমাদের পশ্চিম বাংলা তথা কলকাতার মানুষের জন্য হয়তো আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল। হয়তো মানুষ কিছুটা হলেও আশা খুঁজে পেয়েছে বৃষ্টির। আমাদের এখন কলকাতার তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি উঠানামা করছে। অর্থাৎ এই তাপমাত্রা যদি আরো কিছুদিন অব্যাহত থাকে তাহলে অধিকাংশ মানুষই অসুস্থ হয়ে যাবে। জানিনা এই সমস্যার পরিত্রাণ কবে হবে, সে অপেক্ষায় থাকলাম আর কি।

পোস্ট টাইপজেনারেল রাইটিং।

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি ।ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।

Sort:  
 2 years ago 

কলেজের এই সিদ্ধান্তটা কিন্তু ভালো একটা সিদ্ধান্ত। এই গরমে সবারই খুব কষ্ট হচ্ছে। যাইহোক একটু বৃষ্টি আবহাওয়া টাকে অনেকটাই ঠান্ডা করে দিয়ে গেছে।

 2 years ago 

হ্যাঁ বেশ ভালো একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ থেকে, প্রচন্ড গরমে তো খুবই কষ্ট পাচ্ছি আমরা সকলে ।আজকে দুপুরের দিকে একটু বৃষ্টি হলেও, গরমের তাপ খুব একটা কমেনি দাদা।

এই গরমে আসলেই জীবনযাত্রা অতিষ্ঠ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে তোমাদের কলেজের নেওয়া সিদ্ধান্তটা আমার কাছে একদম যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে। এই গরমে পরীক্ষা দেওয়া আসলেই অসম্ভব। আমার তো মাথায় কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। আর দুপুর নাগাদ সামান্য বৃষ্টি হওয়ার ফলে পরিবেশটা আসলেই হালকা একটু ঠান্ডা হয়েছে, না হলে কি যে হতো কে জানে।

 2 years ago 

হ্যাঁ, কলেজ থেকে কয়েক দিন ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত তা নিয়ে, ভালোই করেছে। প্রচন্ড গরমে বাইরে বেরোনোটা অসহ্যকর হয়ে উঠেছে ।দুপুরের দিকে বৃষ্টি হয়ে, পরিবেশটা একটু ঠান্ডা হলেও ।খুব একটা কিছু কাজ হয়েছে বলে আমার মনে হয় না।

 2 years ago 

আমাদের গাংনী মেহেরপুর ভোর সাতটার সময় হালকা বৃষ্টি পড়েছিল কয়েক ফোঁটা। এরপর সকাল সাড়ে ছয় টার সময় আবারও হালকা বৃষ্টির দেখা মিলেছিল। কিন্তু এই বৃষ্টিটা হওয়ার পরে যেন মনে হলো আরো গজব নাযিল হয়েছে আমাদের এখানে। গত কালকের চেয়ে আজকের গরমটা যেন আরো বেশি তীব্র ছিল তবে আকাশে তেমন রোদ ছিল না তারপরেও এতটা গরম অতিষ্ট করে ফেলেছে আমাদের।

 2 years ago 

তাহলে তো দেখছি আপনাদের ওখানে আরো বেশি গরম পড়েছিল । তবে আমাদের এখানে ঠিক তার উল্টোটা হতে শুরু করেছে, ওই দিন থেকে।

 2 years ago 

জি আপু আমি জানি যে আপনার কলেজে ইন্টারনাল পরীক্ষা চলতেছে। আর এরকম গরমের মাঝে প্রতিদিন কলেজে যাওয়াটা নিঃসন্দেহে খুবই কঠিন একটি কাজ। যাহোক শেষ পর্যন্ত আপনার পরীক্ষাটা কিছুদিনের জন্য ছুটি হয়েছে এবং পাশাপাশি স্বস্তির বৃষ্টিও নেমেছে। স্বস্তির বৃষ্টি এসে আমাদের সকলের গরমের অস্বস্তি থেকে রক্ষা করুক, এমনটাই আমি প্রত্যাশা করি। চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই এই গরমের মধ্যে পরীক্ষা কিছুদিনের জন্য বন্ধ হওয়ায় ,আর স্বস্তির বৃষ্টি পড়ায় ,গরমের অস্বস্তি থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পেয়েছি। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.34
JST 0.034
BTC 113817.85
ETH 4349.06
SBD 0.86