আপনারা সবাই এই প্রচন্ড গরমে কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও সুস্থ আছি। তবে এই গরমে আর ভালো আছি বলবো না। সকলেই আমরা প্রচন্ড গরমে খুব কষ্ট পাচ্ছি।এই গরমে বাইরে বেরোনো খুবই কষ্টকর। তাও যেটুকু না বেরোলে নয়। বছরের শেষে একবার মায়ের দর্শন না করলে মনটা শান্তি পাচ্ছিল না। তাই গরমে, রোদ্দুরে কষ্ট হলেও একবার মায়ের দর্শন করে আসলাম।
১১ ই এপ্রিল, মঙ্গলবার, সকাল ৭:৩০ টায় আমরা এই মন্দিরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম। আর সকাল ৯ টার মধ্যে আমরা মন্দির চত্বরে পৌঁছে গিয়েছিলাম।পরিবারের লোকদের সাথেই আমি এখানে পুজো করতে গিয়েছিলাম। তারই কিছু মুহূর্ত আপনাদের মাঝে আজ শেয়ার করবো।
চলুন তবে আর দেরি না করে শুরু করা যাক।

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার , কামারহাটি শহরে দক্ষিণেশ্বর মন্দির অবস্থিত। এটি হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত কালী মন্দির নামে পরিচিত। ১৮৫৫ সালে , রানী রাসমণি এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই মন্দিরে মা কালীকে ভবতারিণী রূপে পূজা করা হয়।

শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব এই মন্দিরে কালী সাধনা করতেন। এই মন্দিরটি তৈরি করতে প্রায় ৮ বছর সময় লাগে এবং এটি তৈরি করতে খরচ হয়েছিল প্রায় ৯ লক্ষ টাকা। শোনা যায়,রানী রাসমণি স্বপ্নে মা কালীর আদেশ পেয়ে দক্ষিণেশ্বর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।

এতো সুন্দর পরিবেশে ফোটো না তুললেই নয়। যদিও রোদ অনেক বেশি ছিল। যাইহোক,রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের দাদা, রামকুমার চট্টোপাধ্যায় ,রানী রাসমণিকে এই মন্দির তৈরিতে সাহায্য করেছিলেন। তিনি এই মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ছিলেন। মন্দিরের সমস্ত দায়-দায়িত্ব রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের দাদা রামকুমারের উপরে ছিল।

দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরে, মা কালীর মন্দির ছাড়াও আরো বারোটি শিব মন্দির রয়েছে। রাধাকৃষ্ণ মন্দির রয়েছে এবং মন্দিরের দক্ষিণে রয়েছে নাট মন্দির ।উত্তর-পশ্চিম কোণে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের বাস গৃহ রয়েছে । সেখানে তাঁর স্মৃতি বিজড়িত । তার শয়নের খাট এখনও সযত্নে রাখা আছে সেখানে। আরও কয়েকটি স্থান রয়েছে যা ধর্মস্থান রূপে বিবেচিত হয়।

মন্দিরের বাইরে একটি ছোট বাঁধানো পুকুরও আছে। যার চারিদিকে আছে অনেক গাছপালা। শীতকালে যখন প্রচন্ড ভিড় হয় পুজো দিতে, তখন সেই সুবিশাল লাইন এই এলাকাও ছাড়িয়ে যায়। এই জায়গার পরিবেশটা খুবই মনোরম।

আগেই বললাম,মন্দির চত্বরের উত্তর-পশ্চিম কোণে রয়েছে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের বাস গৃহ । আর তার কাছেই রয়েছে পঞ্চবটি। যাকে বলা হয়, রানী রাসমণি মন্দির। মন্দিরটিতে প্রবেশের আগে সুন্দর কাঠের বাঁধানো একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।

ছোট্ট এই মন্দিরটির পরিবেশ কত সুন্দর তা তো আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন। তবে রোদের তাপ কিছুটা কম হলে বেশি উপভোগ্য হতো। গরমে কালে রোদের তাপ কতটা কষ্টকর তা আমরা সকলেই জানি।

রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের প্রিয় শিষ্য ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। তিনি এই জগতে শিক্ষা এবং ধর্ম প্রচারে বিশেষ অবদান রাখেন। তাই স্বামী বিবেকানন্দের একটি মূর্তিও রয়েছে দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরের প্রাঙ্গনে।

এটি হলো পবিত্র গঙ্গার ঘাট ।পুজো করতে যাওয়ার আগে প্রায় সকল মানুষই পবিত্র গঙ্গার জলে স্নান করে নিজেকে শুদ্ধ করে ,তারপর মায়ের কাছে পুজো দিতে যান। অনেকে আবার মা গঙ্গার জলে টাকা ছুড়ে দেয়।
গরমে আর বেশি ঘোরাঘুরি না করে শীঘ্রই আমরা খাওয়া দাওয়া করে বাড়ি ফিরে এসেছিলাম। আর হ্যাঁ, মন্দিরের বাইরে অনেক দোকান আছে যেখান থেকে আপনারা পুজোর সমস্ত সামগ্রী কিনতে পারবেন। আর মন্দিরের ভিতরে ফোন নিয়ে যাওয়ার অনুমতি না থাকায় মন্দিরের ভিতরের কিছু দেখাতে পারলাম না ।
আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। সকলে খুব ভালো থাকবেন আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে হাজির হবো।
ডিভাইস | realme 8i |
ফটোগ্রাফার | @pujaghosh , লাবণ্য |
সময় | সকাল ১০ টা |
তারিখ | ১১/০৪/২০২৩ |
লোকেশন | কলকাতা,দক্ষিণেশ্বর |
আপনিই তো দেখছি আসল ভক্ত। 😰 এই গরমে আমি ঘর থেকে বেরোনোর সাহস পাচ্ছিনা, আর আপনি দক্ষিণেশ্বর চলে গেছেন মায়ের মন্দির দর্শন করতে।
তবে এই জায়গাটায় একটা আলাদা গেলে রকম তৃপ্তি কাজ করে। আমি তো মাঝেমধ্যেই সময় সুযোগ পেলেই দক্ষিণেশ্বর গঙ্গার ঘাটে গিয়ে বসে থাকি। তবে সেটা অবশ্যই শীতকাল অথবা অন্য সময়, যখন গরম পড়ে না।
হুম, আপনি একজন আসল ভক্তকে দেখতে পেলেন 😎।
বাহ্ দারুণ ব্যাপার তো আপনি প্রায়ই গঙ্গার ঘাটে গিয়ে বসে থাকেন গরম কাল বাদে। আমারও কাছাকাছি বাড়ি হলে হয়তো গিয়ে বসে থাকতে পারতাম।
পুজো দেওয়ার কিছু মুহূর্ত আপনি আজ আমাদের মাঝে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন এই ব্লগের মাধ্যমে, যা দেখে নতুন কিছু ধারনা অর্জন করতে পারলাম, নতুন কিছু দেখতে পারলাম জানতে পারলাম বুঝতে পারলাম। খুব ভালো লেগেছে আপনার এই পোস্ট পড়ে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।