|| আমার শৈশবের স্মৃতিচারণ ||

in আমার বাংলা ব্লগlast year

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

আজ আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি আমার শৈশবের কিছু স্মৃতি নিয়ে। আমাদের প্রত্যেকেরই একটি মধুর শৈশব কাল রয়েছে। যা আমরা সকলেই হারিয়ে ফেলেছি অনেক আগেই চাইলেও আর কখনো সেটা ফেরত পাব না। এখন শুধু শৈশবের সেই ঘটনাগুলি মনে পড়লে মাঝে মাঝে একটা ভালো লাগা কাজ করে। তবে এর পুরোটাই আমার নিজের স্মৃতি থেকে বলছি না, কিছু কিছু ঘটনা মা-বাবার কাছ থেকে শুনে আমার আজকের এই শৈশবের স্মৃতিচারণ।


IMG20230814090222.jpg

ডিভাইস : samsung

প্রথমেই যে ঘটনাটার কথা বলবো , সেটা আজ থেকে প্রায় ১৯ বছর আগের কথা।তখন আমার বয়স মাত্র দুই বছর।আমি ১১ মাস বয়স থেকেই টুকটুক করে হাঁটতে পারতাম। তাও কারো কোল পেলে আর কে এই হাঁটাহাঁটির কষ্ট করে, তাই সবসময় অপেক্ষায় থাকতাম কে কোলে নেওয়ার জন্য এগোচ্ছে, একবার যদি উঠে বসতাম সে চাইলেও আর নামাতে পারত না। নামাতে গেলেই খুব জোড়ে জোড়ে কান্না শুরু করে দিতাম তাই সে বেচারা আর নামাতে পারতো না। এদিকে আবার বাড়ীতে অনেকগুলো ভাই - বোন আমরা। যার মধ্যে আমি সবচাইতে ছোটো, তাই বড়ো দাদারা, দিদিরা, জেঠিমা,কাকিমা ,কাকা সকলেই আমাকে কোলে নিয়ে চারদিকে ঘুরে বেড়াতো ।আবার আমাকে নিয়ে কাড়াকাড়িও চলতো শুনেছি কে আগে নেবে তাই নিয়ে।


সেরকমই একদিন মামার বাড়ি যাওয়ার সময় মা এর কোলে উঠে বসেছি আর নামার নামই নিচ্ছিলাম না। এদিকে মা তো নামানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল মাঝে মাঝে কিন্তু সে তাতে সফল হয়ে উঠতে পারছিল না। এদিকে কোলে উঠে আমি তো খুব মজা করে মামার বাড়ি যাচ্ছিলাম।আবার নাকি গানও করছিলাম, "মামার বাড়ি যাবো , আর দিদার কাছ থেকে গ্লাস নিয়ে প্রাণ ঢেলে খাবো"। এইভাবে গান করতে করতে বাস থেকে নেমে, নৌকা পার হয়ে অবশেষে আমার সুদূর প্রসারী মামার বাড়ি আমি পৌঁছে গেলাম।

কিন্তু সেখানে গিয়ে মামার বাড়ির পাশের এক মামা আমাকে কোলে নিয়ে চলে গেল আমার বড়ো মামার দোকানে। সেটা হলো ফার্স্ট ফুডের দোকান। সেখানে তো অনেক খাবার ছিল , তাই আমার কাছে মামা অনেকবার জিজ্ঞেস করেছিল ,আমি কোন খাবারটা নেবো, আমি বলেছিলাম না না কিছু নেবো না। তখন জিজ্ঞেস করেছিল, কেনো নেবো না, তখন কিছু বলছি না দেখে আমার হাতে এক প্যাকেট চিপস্ ধরিয়ে ধরিয়ে দিতে গেলে, আমি নাকি জোড়ে জোড়ে কান্না করে বলেছিলাম,"ও লোক, আমি তোমার দোকানের খাবার নেবো না। আমার কাছে টাকা নেই। কী দিয়ে কিনবো? এই শুনে মামা নাকি হাসতে হাসতে বলেছিল তোমার টাকা দিতে হবে না, নিয়ে যাও। আমি বলেছিলাম, না না নেবো না, বাড়ী গেলে মা বকা দেবে।

তারপর শেষ পর্যন্ত, কিছুতেই আমাকে সেখান থেকে কোনো খাবার খাওয়ানো গেলো না দেখে অবশেষে আমার সাথে যে আর একজন মামা ছিল, সে আমাকে নিয়ে বাড়ী চলে গেল । আর তারপর সমস্ত ঘটনা খুলে বললো । সবাই তো হাসতে হাসতে পাগল হয়ে গেল আর আমি বেচারা মনে হয় সবার মুখের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে বসেছিলাম আর ভাবছিলাম এরা এতো হাসছে কেনো!

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।

Sort:  
 last year 

ভারী পাকনা বুড়ি ছিলেন তো দেখি ছেলে বেলায়। বাপরে বাপ। গানও পারতেন। আবার দোকানে যেয়ে বোঝেও গেলেন যে নিজের নিজের টাকা না থাকরে কিছুই কেনা যায় না। আপনার গল্প পড়ছিলাম আর হাসছিলাম দিদি। আবার অপেক্ষায় রইলাম এমন মজার কোন গল্প শোনার জন্য।

 last year 

হ্যাঁ আপু একটু একটু পাকা ছিলাম ছোটবেলায়। এখন সেসব মনে পড়লে অনেক হাসি পায়। আপনার মন্তব্যটি পড়ে খুবই খুশি হলাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আপু আসলে ছোট বেলার কথা মনে পড়লে হাস আসা স্বাভাবিক। যাইহোক আপু আপনি তো দেখছি একেবারে আমার মেয়ের মতো, একবার কোলে উঠলে আর নামার নাম নেই। যাইহোক আপু অনেক ভালো লাগলো আপনার ছোট বেলার গল্প শুনতে পেয়ে।

 last year 

ঠিক বলেছেন আপু, ছোটবেলার মুহূর্ত গুলো পড়লে খুব হাসি পায় এখন।

 last year 

আপু আপনি আপনার ছোটবেলার দারুন কিছু স্মৃতি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। সত্যি বলতে ছোটবেলার স্মৃতি যদি এখন মনে পড়ে বেশ হাসি পায়। ১৯ বছর আগের কথাগুলো বেশ ভালোভাবেই মনে রেখেছেন দেখছি আপু। ঠিক বলেছেন আপু আপনি আসলে কোল থেকে কেউ নেমে হাঁটতে কষ্ট করে। আমিও নাকি ছোটবেলায় সহজে কল থেকে নামতে চাইতাম না। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

কিছু কিছু ঘটনা মনে আছে ভাই আর কিছু কিছু মা বাবার মুখ থেকে শুনেই লিখেছি। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

ছোটবেলায় তাহলে আমি পুরো তোমার উল্টো ছিলাম। কারণ দোকানে তো টাকা দিতামই না, তার পরিবর্তে খাবার ছিড়ে নিয়ে দৌড় দিতাম। আর যদি আমার নিজের কাউকে দোকানের সামনে পেতাম তাহলে তাকে দিয়ে খাবার কিনিয়ে তারপর সেখান থেকে আসতাম। হা হা হা...

 last year 

হা হা হা,,,খুব মজা পেলাম কমেন্টটা পড়ে। আমি ভয়ে মরে যেতাম এসব করা তো দূর।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 58544.56
ETH 2629.02
USDT 1.00
SBD 2.44