"জেনারেল রাইটিং", " রথ যাত্রা "

in আমার বাংলা ব্লগlast year

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

সব সময় একই ধরনের পোস্ট করতে ভালো লাগে না ।তাই মাঝে মধ্যে পোস্টের একটু ভ্যারিয়েশন আনার চেষ্টা করি। তাই আপনাদের মাঝে আজ আমি একটি জেনারেল রাইটিং নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করছি আমার আজকের লেখাটি আপনাদের কাছে খারাপ লাগবে না।

InShot_20230620_231248439.jpg


আমরা সকলেই জানি, জগন্নাথ বলরাম আর সুভদ্রা এই তিন ভাই বোনের হাত এবং পা নেই , কারণ কথিত আছে,ভগবান শ্রী কৃষ্ণ তাঁর ভক্ত, রাজা ইন্দ্রদ্যন্মুর সামনে হাজির হয়ে ,পুরীর সমুদ্রতটে ভেসে আসা একটি কাঠের টুকরো দিয়ে তাঁর মূর্তি নির্মাণের আদেশ দেন। তখন মূর্তিনির্মাণের জন্য রাজা একজন উপযুক্ত কাষ্ঠশিল্পীর সন্ধান করতে থাকেন।

তখন এক রহস্যময় বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ , কাষ্ঠশিল্পী তাঁর সম্মুখে উপস্থিত হন এবং মূর্তি নির্মাণের জন্য কয়েকদিন সময় চেয়ে নেন। তিনি রাজাকে জানিয়ে দেন, মূর্তি নির্মাণকালে কেউ যেন তার কাজে বাধা না দেন, বাধা দিলেই তিনি সেই মুহূর্তে তার কাজ বন্ধ করে দেবেন। বন্ধ দরজার আড়ালে শুরু হয় কাজ। রাজা ও রানি সহ সকলেই নির্মাণকাজের ব্যাপারে অত্যন্ত আগ্রহী হয়ে ওঠেন। প্রতিদিন তাঁরা বন্ধ দরজার কাছে যেতেন এবং শুনতে পেতেন ভিতর থেকে খোদাইয়ের আওয়াজ ভেসে আসছে।

IMG-20230620-WA0103.jpg


কিন্তু কয়েকদিন বাদে যখন রাজা বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন এমন সময় আওয়াজ বন্ধ হয়ে যায়, সেই মুহূর্তে রানী নিজেকে সংযত করতে না পেরে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে পড়েন। দেখেন মূর্তি তখনও পুরোপুরি সম্পূর্ণ হইনি , হাত ও পা বাকি থেকে গেছে এবং কাষ্ঠশিল্পী উধাও হয়ে গিয়েছে। আসলে এই রহস্যময় কাষ্ঠশিল্পী ছিলেন, দেবশিল্পী । কিন্তু তার কাজে বাঁধা পড়ায় তিনি কাজটি মাঝপথে ছেড়ে রেখেই চলে গিয়েছিলেন ,তাই সেই থেকেই নাকি হাত এবং পা ছাড়া এই দেবতার পূজা হয়ে আসছে।

রথযাত্রা বা রথদ্বিতীয়া হল, আষাঢ় মাসে অনুষ্ঠিত ,অন্যতম প্রধান হিন্দু উৎসব । সারা বিশ্বব্যাপী বিশেষ করে ভারতবর্ষে এই অনুষ্ঠান, খুব উত্তেজনার সাথে পালিত হয়।ভারতের সবচাইতে প্রসিদ্ধ রথযাত্রা হলো,ওড়িশার পুরী শহরের জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রা। সেখানে এত পরিমানে, লোকের ভিড় হয় যা চোখে না দেখলে ,বিশ্বাস করা যায় না। রথযাত্রা উপলক্ষে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে, বড় বড় মেলার আয়োজন হয়। সেখানে একসাথে, প্রচুর লোকের সমাবেশ ঘটে।

InShot_20230620_230928626.jpg


এই রথ যাত্রা উপলক্ষে মেলা ৭ দিন ধরে চলতে থাকে। প্রথম দিন অর্থাৎ শুরুর দিনে জগন্নাথ বলরাম আর সুভদ্রা তিন ভাইবোন মিলে, রথে চেপে মাসির বাড়িতে যান যেটি সোজা রথ নামে প্রচলিত এবং সাতদিন পর তারা আবার রথে চেপে মাসির বাড়ি থেকে ফিরে আসেন, এটিকে বলা হয় উল্টোরথ । রথের মেলায় সবচেয়ে প্রচলিত খাবার হল, পাঁপড় আর জিলিপি। খুব হই - হুল্লোড় আর উত্তেজনার সাথে সকল মানুষ একসাথে উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠে।

পোস্ট বিবরণজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসrealme 8i
ফটোগ্রাফার@pujaghosh

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি ।ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন । দেখা হবে , পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।

Sort:  
 last year 

হ্যাঁ দিদি ঠিক বলেছেন হাত পা ছাড়া জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা সম্পর্কে বেশ ভালোই লিখেছেন ৷ যেটা সত্য বলিছেন যে যদি দরজা না খুলতো তাহলে মূর্তি অসম্পূর্ণ থাকতো না৷ যা হোক গতকাল রথযাত্রা রথ টানতে গিয়েছিলাম ৷ ভাবছি আমিও লিখব এই বিষয়ে ৷

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

যেটা সত্য বলিছেন যে যদি দরজা না খুলতো তাহলে মূর্তি অসম্পূর্ণ থাকতো না৷

আমারও তাই মনে হয় ভাই। গতকাল আপনি রথ টানতে গিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

এ কেমন শিল্পী কাজের মাঝখানে রেখে চলে গেল। এই কাহিনী প্রথম আজকে শুনলাম। খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন আপু। তাছাড়া ওই অসম্পূর্ণ মূর্তিগুলোকে ফেলে না দিয়ে এমনভাবে পূজার সিস্টেম চালু হয়েছে। একবার কলকাতায় গিয়ে এই রথযাত্রা দেখেছিলাম। এত বড় হয় যে দেখে শেষ করা যায় না। ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। নতুন কিছু জানতে পারলাম।

 last year 

আপনি কাহিনীটি আজকে প্রথম বার আমার এই পোষ্টের মধ্যে দিয়ে জানতে পারলেন জেনে আমার ভালো লাগলো। হ্যাঁ আপু, কলকাতার রথযাত্রা এতটাই বড় হয় যে দেখে শেষ করা যায় না।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

জ্বী আপু আমরা নিউমার্কেটে সামনের বিগবাজার থেকে বের হওয়ার সময় এই রথযাত্রা সামনে পরেছিলো। কত সময় যে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিলো তার কোন হিসাব নেই। এত বড় ছিল রথযাত্রাটি।

 last year 

রথ যাত্রা নিয়ে অনেক সুন্দর একটা জেনারেল রাইটিং পোস্ট তুলে ধরেছেন আপনি। আসলে যে কাষ্ঠশিল্পীর ধারা মূর্তিটির নির্মাণ কাজ চলছিল তিনি সম্পূর্ণভাবে তৈরি করার আগে রানী দরজা খুলে ঢুকে গিয়েছিলেন। আর সেই কাষ্ঠশিল্পী ছিলেন দেবশিল্পী। জগন্নাথ বলরাম আর শুভদ্রা তিন ভাইবোন মিলে রথে চেপে মাসির বাড়িতে যায় প্রথম দিন। তারপরে সাত দিন পরে আবার মাসির বাড়ি থেকে রথে চেপে চলে আসে। অনেক কিছুই জানতে পারলাম আপনার এই পোষ্টের থেকে আপনাদের রথযাত্রা সম্পর্কে। ভালো লাগলো সম্পূর্ণটা।

 last year 

আপনি আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারলেন জেনে ,আমারও খুব ভালো লাগলো ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে অনেক সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

"রথ যাত্রা" সম্পর্কে আগে এত কিছু জানা ছিল না দিদি । নতুন করে অনেক কিছুই জানতে পারলাম এই পোষ্টের মাধ্যমে। এই রথের সময় বিভিন্ন জায়গায় মেলা হয় । গতকাল আমি এমন একটি মেলায় গেছিলাম, যে মেলাটি বারাসাতের হেলার বটতলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রথের মেলায় সবচেয়ে প্রচলিত খাবার হল পাঁপড় আর জিলিপি এটা কিন্তু একদম সত্যি কথা দিদি। আমি গতকাল রথের মেলায় গিয়ে পাঁপড় না খেলেও জিলাপি খেয়েছিলাম।

 last year 

আমার এই পোস্টটির মাধ্যমে তুমি অনেক কিছু জানতে পারলে জেনে আমার খুব ভালো লাগলো। আমিও বারাসাতের হেলা বটতলার রথের মেলাতেই গিয়েছিলাম ভাই। একটুর জন্য দেখা হলো না, দেখা হলেই আইসক্রিম কিনে নিতাম আপনার টাকায় 🤐।

 last year 

জানেন তো আমি রথ যাত্রা বা জগন্নাথ দেবের কাহিনীটা আবছা আবছা জানতাম। আজ অনেকটা স্পষ্ট হলো লেখাটা পড়ে। পুরীর সেই বিখ্যাত রথ যাত্রা দেখার খুব ইচ্ছে আছে আমার। সত্যি বলতে ইচ্ছে থাকলেও হয় না সব সময়, ঠাকুরেরও কৃপা পেতে হয়। দেখা যাক কি হয়। ভগবান সকলের মঙ্গল করুক 🙏
জয় জগন্নাথ 🙏🙏

 last year 

আমারও খুব ইচ্ছে আছে, একবার পুরীর রথযাত্রা দেখার। ঠিকই বলেছেন, ঠাকুরের কৃপা ছাড়া সব সময় ইচ্ছা থাকলেও হয় না সবকিছু। জয় জগন্নাথ 🙏।

রথযাত্রা কেন হয় এবং এর পেছনের গল্প আমি ছোটবেলায় অনেক শুনেছি আমার ঠাকুর মার মুখে। আরো একবার তোমার পোষ্টের মাধ্যমে ব্যাপারটা সুন্দর করে জেনে গেলাম। তুমি অনেক সুন্দর করে এই ব্যাপারটা উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছ, সত্যিই বেশ ভালো লাগলো তোমার লেখাটা পড়ে।

 last year 

রথযাত্রা সম্পর্কে আমার লেখাটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে, অনেক খুশি হলাম দাদা ।ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 62410.74
ETH 2445.09
USDT 1.00
SBD 2.67