//সুধার স্বপ্ন // পর্ব - ০১//
নমস্কার বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভালো আছেন ।আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।
ছোটবেলা থেকেই ,অভাব ,অনটন ,অশান্তি কোনোটাতেই তার কোন দিক দিয়ে কম ছিল না। তবুও আজ এখানে পৌঁছাতে পারলো সে, পূরণ করতে পারল নিজের ইচ্ছে, স্বপ্ন। ধরে রাখতে পারল নিজের জেদ । কিন্তু কিভাবে পারলো ? চলুন জেনে নেয়া যাক।
কৈলাসপুর গ্রামের এক অতি সাধারণ দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়েছিল সুধা। তাই ছোটবেলা থেকেই অভাবের মধ্যে দিয়েই বড় হয়েছে সে। সুধার বাবা ছিলেন একজন দিনমজুর, তাই স্বাভাবিকভাবেই কোনরকমে সংসার চলত তাদের। কোন কোন দিন ভাতের বদলে ,শুধুমাত্র ভাতের ফ্যান খেয়েই তাদের দিন চলে যেত। গ্রামের একটি ছোট্ট স্কুলে লেখাপড়া করত সুধা। মা ,বাবা ,বড় দিদি আর ঠাকুমার সঙ্গে গ্রামের শেষ মাথার একটি ছোট্ট কুটিরে কোনরকমে দিন চলছিল সুধার। কিন্তু হঠাৎ করেই তার বাবা প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়ে। এমনিতেই অভাব অনটনের মধ্যে দিয়ে দিন কাটে ,তার ওপর পরিবারের একমাত্র সম্বল, বাবা যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাহলে কিভাবে দিন চলবে তাদের ?কিভাবে করবে সে তার পড়াশোনা? এসব নানা চিন্তা যেন, সেই ছোট্ট সুধার মনে বাসা বেঁধে ফেলেছিল।
পরিবারের সকলে মিলে পেট চালানোর জন্য ,কোনরকমে ঘরে বসে টুকটাক কাজ করতে থাকলো। এতে মোটামুটি পেট চললেও বাড়তি, খরচা করার কোন উপায় ছিল না। এদিকে অসুস্থ বাবা, বয়স্ক ঠাকুমা, বিবাহযোগ্য দিদি, এতসব সামলে সে নিজের ইচ্ছে কিভাবে পূরণ করবে? কিভাবে হবে সে একজন বড় মাপের ডাক্তার? নিজের পড়াশোনার খরচা চালানোর জন্য, ১৩ বছর বয়সী সেই ছোট্ট মেয়ে সুধা, ফুলের মালা গাঁথার কাজ শুরু করলো। কারণ পরিবারের সকলের কোনোরকমে পেট চললেও, পড়াশোনার খরচা যোগানোর মতো সামর্থ্য তাদের ছিল না। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি রোজ সকালে স্কুলে যাওয়ার আগে, সে ফুলের মালা গাঁথতে শুরু করলো। আর তার বিবাহযোগ্য দিদি, সেই মালা বাড়ি বাড়ি ঘুরে বিক্রি করতে থাকলো।
বেশ কিছু দিন ,তাদের কাছ থেকে কেউ একটাও মালা কিনলো না। খুবই হতাশায় ভেঙে পড়েছিল তারা। কিন্তু এভাবে ভেঙ্গে পড়লে তো চলবে না? তাই সুধা আর তার দিদি মিলে ,আরেকটি নতুন উপায় বার করলো। তারা দুজন মিলে পাশের গ্রামের হাঁটে গিয়ে ,ফুলের মালা বিক্রি করতে থাকলো। বেশ ভালই টাকা উপার্জন করতে থাকলো তারা। তাই দিয়ে তার পড়াশোনার পাশাপাশি ,বাবার চিকিৎসার জন্যেও কিছুটা সহযোগিতা করতে পারল সে। কিন্তু এতোটুকু ছোট্ট মেয়েটা, কিভাবে এত কিছু সামলে নিজের পড়ার জন্য সময় বার করবে? তবুও চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকলো সুধা। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে ঘরের কাজে মায়ের সাথে কিছুটা সহযোগিতা করার পর, সেই ছোট্ট মেয়েটা তার পড়াশোনা চালিয়ে যেত।
পড়াশোনায় তুখর হওয়া সত্ত্বেও কিন্তু তার সহপাঠীরা তাকে নিয়ে নানা রকমের মন্তব্য করতে থাকলো। কেউ কেউ তাকে ফুলওয়ালি বলে ডাকতে থাকলো, কেউ কেউ আবার দরিদ্র ঘরের মেয়ে হওয়ায় সেটা নিয়েও হাসাহাসি করতে থাকলো। এটা কি আসলেই সুধার দোষ? যে সে দরিদ্র ঘরে জন্মেছে। কিন্তু ,সমাজ আত্মীয়-স্বজন, সকলেই তাকে এরকম নানা মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে পিছনের দিকে টানতে থাকলো।
(চলবে.......)
পোস্ট বিবরণ | স্টোরি রাইটিং |
---|
মনে হচ্ছে গল্পটা অনেক ইন্টারেস্টিং হবে। বিশেষ করে একজন গ্রামীণ মেয়ের সংগ্রামীচেতা জীবনের গল্প। যেখানে এতগুলো মানুষের দায়িত্ব অনেকটাই তার ঘাড়ে এসে পড়েছে। গরিব মানুষকে আসলেই সবাই ঠাট্টা উপহাস করে, এক্ষেত্রে বন্ধু বান্ধবও ছাড় দেয় না। যাই হোক গল্পটা খুব সুন্দর দিকে এগোচ্ছে, পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
আমার লেখা গল্পটি, তোমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে জেনে ,অনেক খুশি হলাম দাদা। একদমই তাই, গরীব মানুষকে কেউ কোনো কথা শোনাতে বাদ রাখে না। সেরকমই সুধা কেও বাদ রাখেনি। আশা করি, পরবর্তী পর্বগুলোতেও ভালো কিছু উপস্থাপন করতে পারব।
পরবর্তী পর্বে মনে হয় বেশি ইন্টারেস্টিং কোন ব্যাপার থাকবে, সেই অপেক্ষাতেই থাকলাম। এমনিতেও তোমার লেখাগুলো বেশি ভালো হয়।
আমার লেখাগুলো তোমার কাছে অনেক ভালো লাগে জেনে খুশি হলাম দাদা।
১৩ বছর বয়সের মেয়েটা পরিবারের খরচ এবং বাবার চিকিৎসার খরচ চালানোর জন্য, ফুলের মালা বিক্রি করতে থাকে। নিজের স্কুল এবং এই কাজগুলো সময় বের করে করতে থাকে সে। মেয়েটা গরিব হয়ে জন্মগ্রহণ করেছে এটা কি তার দোষ? আল্লাহ যাকে যেরকম পরিবারে পাঠিয়েছে এখানে ঠাট্টা তামাশা করার কোনই কিছু নেই। আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীরা তো সব কাজে ঠাট্টা তামাশা করে থাকে। পরবর্তী পর্ব দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম দিদি।
একদমই তাই, ভগবান যাকে যেমন ভাবে পাঠিয়েছে সেটা নিয়ে থাকা তামাশা করার কিছু নেই। যারা এগুলো করে তাদেরকে আমি অনেক নিচু মানসিকতার মানুষ বলে মনে করি। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আসলেই সংসারে একমাত্র উপার্জনখম ব্যক্তিটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তখন একেবারে দিশেহারা অবস্থা হতে হয়। সুধার ঘাড়ে তো আসলেই বিরাট দায়িত্ব। তারপরে আবার নিজের পড়াশোনাটাও তাকে চালিয়ে যেতে হবে। মানুষের কটু কোথায় কান না দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয় এসব মানুষের তাহলে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে। গল্পটা ভালই লেগেছে আপু পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
একদমই আপু ,পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি অসুস্থ হয়ে পড়লে, সেই পরিবারই বুঝতে পারে তারা কতটা খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমার লেখা গল্পটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হলাম । ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
পুরো গল্পটা পড়ে খুবই খারাপ লাগলো। সুধা এমনিতেও ছোট একটা মেয়ে, সে তবুও সবকিছু এক হাতে সামলাচ্ছে। তার বাবা অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পরে সে ফুলের মালা তৈরি করতে থাকে বিক্রি করার জন্য। তার বড় বোন গ্রামে হেঁটে হেঁটে সেই ফুলের মালা বিক্রি করতে গিয়েছিল। কিন্তু কেউই তাদের কাছ থেকে ফুলের মালা ক্রয় করেনি। তারপরে তারা হাটে গিয়ে বিক্রি করতে লাগে। সব মিলিয়ে খুব ভালোই একটা পোস্ট ছিল। পরবর্তী পর্বে আশা করছি আরো ইন্টারেস্টিং ব্যাপার নিয়ে উপস্থিত হবেন। সেই পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকলাম
সুধার গল্পটি লিখতে গিয়ে , সুধার জন্য আমার নিজেরও অনেক বেশি খারাপ লাগছিল। অনেক ধন্যবাদ আপু আমার গল্পটি পড়ে সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।
সুধা গরিবের ঘরে জন্ম নিয়েছে, আর এটা সুধার কোনো দোষ না। কারণ সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাতেই সবকিছু হয়েছে। তবে কথায় আছে জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো। সুধা চেষ্টা করে যাচ্ছে নিজের পরিবারকে চালানোর পাশাপাশি পড়ালেখা চালিয়ে যেতে। আমি মনে করি সুধা অবশ্যই একদিন সফল হবে। কারণ পরিশ্রম এবং মেধা কখনোই বৃথা যায় না। পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
আমিও তাই মনে করি ভাই, গরীব ঘরে জন্ম নেওয়াটা কারোর দোষ না। সেরকমই সুধার কোন না দোষ থাকলেও আশেপাশের লোকরা তাকে এটার জন্যই অনেক কথা শুনিয়ে দিয়েছিল। যাইহোক আমার পোস্টটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।